জামায়াত অনলাইন লাইব্রেরি
  • নীড়
  • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
  • বিভাগ ভিত্তিক
    • আল কুরআন
    • আল হাদিস
    • ফিকাহ
    • ঈমান
    • ইসলাম
    • পারিবারিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ক
    • আন্দোলন ও সংগঠন
    • সীরাত ও ইতিহাস
    • সীরাতে সাহাবা
    • মহিলাদের বিশেষ বই
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • রুকন সিলেবাস
    • রুকন সিলেবাস (স্বল্প শিক্ষিত)
    • রুকন সিলেবাস (শিক্ষিত)
  • কর্মী সিলেবাস
  • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (শিক্ষিত)
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (স্বল্প শিক্ষিত)
  • উচ্চতর অধ্যয়ন
  • অডিও বই
  • অন্যান্য
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • আলোচনা নোট
    • বইনোট
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • বুলেটিন
    • স্মারক
    • ম্যাগাজিন
    • এপস
    • রিপোর্ট বই
    • ছাত্রী সিলেবাস
কোন ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
  • নীড়
  • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
  • বিভাগ ভিত্তিক
    • আল কুরআন
    • আল হাদিস
    • ফিকাহ
    • ঈমান
    • ইসলাম
    • পারিবারিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ক
    • আন্দোলন ও সংগঠন
    • সীরাত ও ইতিহাস
    • সীরাতে সাহাবা
    • মহিলাদের বিশেষ বই
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • রুকন সিলেবাস
    • রুকন সিলেবাস (স্বল্প শিক্ষিত)
    • রুকন সিলেবাস (শিক্ষিত)
  • কর্মী সিলেবাস
  • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (শিক্ষিত)
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (স্বল্প শিক্ষিত)
  • উচ্চতর অধ্যয়ন
  • অডিও বই
  • অন্যান্য
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • আলোচনা নোট
    • বইনোট
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • বুলেটিন
    • স্মারক
    • ম্যাগাজিন
    • এপস
    • রিপোর্ট বই
    • ছাত্রী সিলেবাস
জামায়াত অনলাইন লাইব্রেরি

ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা

অন্তর্গতঃ ঈমান, রুকন সিলেবাস (শিক্ষিত)
Share on FacebookShare on Twitter

ইসলামী সংস্কৃতির মর্মকথা

সাইয়েদ আবুল আ’লা মওদুদী (র)

অনুবাদঃ মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান


স্ক্যান কপি ডাউনলোড


সূচীপত্র

  1. মুখবন্ধ
    1. ভুল ধারণা
    2. সংস্কৃতির সংজ্ঞা
    3. সংস্কৃতির মৌলিক উপাদানঃ
  2. পার্থিব জীবন সম্পর্কে ইসলামের ধারণা:
    1. মানুষের মূল পরিচয়ঃ
    2. বিশ্ব-প্রকৃতিতে মানুষের মর্যাদা:
    3. মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি
    4. প্রতিনিধি পদের গুরুত্বঃ
    5. জীবন সম্পর্কে ইসলামের ধারনা
    6. মানুষ প্রতিনিধি, মালিক নয়
    7. দুনিয়ার জীবনে সাফল্যের প্রাথমিক শর্ত:
    8. দুনিয়া ভোগ-ব্যবহারের জন্যই
    9. দুনিয়াবী জীবনের রহস্য:
    10. কৃতকর্মের দায়িত্ব ও জবাবদিহি
    11. ব্যক্তিগত দায়ীত্ব
    12. জীবনের স্বাভাবিক ধারণা
    13. বিভিন্নধর্ম ও মতাদর্শের ধারণা:
    14. ইসলামী ধারণার বৈশিষ্ট্য:
  3. জীবনের লক্ষ্য
    1. নির্ভুল সামগ্রিক লক্ষ্যের অপরিহার্য্য বৈশিষ্ট্য:
    2. মানুষের স্বাভাবিক জীবন লক্ষ্য
    3. দু’টি জনপ্রিয় সামগ্রিক লক্ষ্য এবং তার পর্যালোচনা
    4. ইসলামী সংস্কৃতির লক্ষ্য ও তার বৈশিষ্ট্য:
    5. পন্থা নিরূপণে লক্ষ্য নির্ধারণের প্রভাব
    6. ইসলামী সংস্কৃতির গঠন বিন্যাসে
  4. মৌলিক আকীদা ও চিন্তাধারা
    1. ১. ঈমানের তাৎপর্য ও গুরুত্ব
      1. চরিত্র ও তাঁর মানসিক ভিত্তি
      2. কর্ম-শৃঙ্খলার প্রথম শর্ত:
      3. ঈমানের অর্থ :
      4. সংস্কৃতির ভিত রচনায় ঈমানের স্থান:
      5. ঈমান দু’ প্রকার :
      6. ধর্মীয় ঈমান:
      7. পার্থিব ঈমান
      8. কতিপয় সাধারণ মূলনীতি
    2. ২।ইসলামে ঈমানের বিষয়
      1. যুক্তিবাদী সমালোচনা
      2. ইসলামে ঈমানের গুরুত্ব
      3. আমলের ওপর ঈমানের অগ্রাধিকার
      4. সারসংক্ষেপ
      5. একটি প্রশ্নঃ
      6. প্রশ্নের সত্যাসত্য নির্ণয়
    3. ৩. আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমান
      1. আল্লাহর প্রতি ঈমানের গুরুত্ব
      2. আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমানের বিস্তৃত ধারনা
      3. আল্লাহ্‌র প্রতি ঈমানের নৈতিক উপকার
      4. দৃষ্টির প্রশস্ততা
      5. আত্মসম্ভ্রম
      6. বিনয় ও নম্রতা
      7. অলীক প্রত্যাশার বিলুপ্তি
      8. আশাবাদ ও মানসিক শান্তি
      9. বীরত্ব
      10. অল্পে তুষ্টি ও আত্মতৃপ্তি
      11. নৈতিকতার সংশোধন ও কর্মের শৃংখলা
  5. ৪. ফেরেশতাদের প্রতি ঈমান
    1. ফেরেশতাদের প্রতি ঈমানের উদ্দেশ্যে
    2. ফেরেশতাদের প্রতি ঈমানের দ্বিতীয় উদ্দেশ্যে
      1. তৃতীয় উদ্দেশ্যে
  6. রসূলের প্রতি ঈমান
    1. নবুওয়াতের তাৎপর্য
    2. নবী এবং সাধারণ নেতাদের মধ্যে পার্থক্য
    3. আল্লাহর প্রতি ঈমান ও নবীর প্রতি ঈমানের সম্পর্ক
    4. কালেমার ঐক্য
    5. নবীর আনুগত্য ও অনুসরণ
    6. নবুওয়াত বিশ্বাসের গুরুত্ব
    7. নবুওয়াতে মুহাম্মদীর বিশিষ্ট প্রকৃতি
    8. পূর্ববর্তী নবুওয়াত ও নবুওয়াতে মুহাম্মাদীর পার্থক্য
    9. সাধারন দাওয়াত
    10. দ্বীন ইসলামের পরিপূর্ণতা
    11. পূর্ববর্তী দ্বীন সমূহের রহিতকরণ
    12. খতমে নবুওয়াত
    13. নবুওয়াতে মুহাম্মাদীর প্রতি বিশ্বাসের আবশ্যিক উপাদান
  7. কিতাবের প্রতি ঈমান
    1. নবুওয়াত ও কিতাবের সম্পর্ক
    2. আলোকবর্তিকা ও পথপ্রদর্শকের কুরআনী দৃষ্টান্ত
    3. সকল আসমানী কিতাবের প্রতি ঈমান
    4. নিছক কুরআনের অনুসরন
    5. কুরআন সংক্রান্ত বিস্তৃত প্রত্যয়
    6. ইসলামী সংস্কৃতির ভিত্তিপ্রস্তর
  8. শেষ দিবসের প্রতি ঈমান
    1. কতিপয় স্বাভাবিক প্রশ্ন
    2. পরকালীন জীবনের অস্বীকৃতি
    3. চরিত্রের উপর পরকাল-অবিশ্বাসের প্রভাবঃ
    4. জন্মান্তরবাদ
    5. বুদ্ধিবৃত্তিক সমালোচনা
    6. সমাজ ও তমদ্দুনের ওপর জন্মান্তরবাদের প্রভাব
    7. পরলৌকিক জীবনের বিশ্বাস
    8. বুদ্ধিবৃত্তিক তত্ত্ব অনুসন্ধানের নির্ভুল পন্থা
    9. পরকালীন জীবন সম্পর্কে অবিশ্বাসীদের প্রশ্ন
    10. কুরআন মাজীদের যুক্তিধারা
    11. পরকালীন জীবনের সম্ভাবনা
    12. বিশ্বব্যবস্থা একটা বিচক্ষণ ব্যবস্থা
    13. বিচক্ষণ ব্যবস্থাপনা লক্ষ্যহীন ও নিরর্থক হতে পারে না
    14. প্রজ্ঞার দাবীতে বিশ্বব্যবস্থার কি পরিণতি হওয়া উচিত
    15. বিশ্বব্যবস্থার পরিসমাপ্তি
    16. পরকালীন জীবনের ব্যবস্থাপনা কি হবে?
    17. পরকাল বিশ্বাসের আবশ্যকতা
    18. দুনিয়ার ওপর পরকালের অগ্রাধিকার
    19. আমলনামা ও আল্লাহর আদালত
    20. পরকাল বিশ্বাসের উপকার
  9. ইসলামী সংস্কৃতিতে ঈমানের গুরুত্ব
    1. ঈমানী বিষয়বস্তুর সামগ্রিক পর্যালোচনা
    2. ইসলামী সংস্কৃতির কাঠামো
    3. ইসলামী সংস্কৃতিতে ঈমানের গুরুত্ব
    4. মুনাফেকীর ভয়
  10. পারলৌকিক জীবন

মুখবন্ধ

পাশ্চাত্য লেখকগন এবং তাঁদের প্রভাবাধীন প্রাচ্যপণ্ডিতদেরও একটি বিরাট দল এইধারণা পোষণ করে থাকে যে, ইসলামী সংস্কৃতি তার পূর্ববর্তী সংস্কৃতিসমূহ, বিশেষত গ্রীক ও রোমান সংস্কৃতি থেকে উৎসারিত এবং যেহেতু আরবীয় মানস এই পুরনো উপাদান গুলোকে এক নতুন ভঙ্গিতে বিন্যস্ত করে এর বহিরাকৃতিকে বদলে দিয়েছে, এজন্যই এ এক স্বতন্ত্র সংস্কৃতির রুপ পরিগ্রহ করেছে। এহেন দৃষ্টিভঙ্গির কারণেই এই শ্রেনীর লোকেরা পারসিক, বেবিলনীয়, সারমেনীয়, ফিরিসীয়, মিশরীয় এবং গ্রীক ও রোমান সংস্কৃতির ভেতর ইসলামী সংস্কৃতির উপাদান তালাশ করে থাকে। অতঃপর যে মানসিকতা এই সংস্কৃতিগুলো থেকে আপন সুবিধামত মাল-মশলা নিয়ে তাকে নিজস্ব ভংগিতে বিন্যস্ত করে নিয়েছে, আরবীয় প্রকৃতিতে সেই মানসিকতার উপাদান খুঁজে বেড়ায়।

ভুল ধারণা

কিন্ত এ এক মারাত্মক রকমের ভুল ধারণা। কারণ, একথা যদিও সত্য যে, মানুষের বর্তমানকাল চিরদিনই অতীতকাল দ্বারা প্রভাবিত হয়ে থাকে এবং সেহেতু প্রত্যেক নবরুপায়নেই পূর্ববর্তী গঠন উপাদান থেকে সাহায্য গ্রহন করা হয়। তথাপি একথা অনস্বীকার্য যে, ইসলামী সংস্কৃতি আপন প্রাণসত্তা ও মৌলিক উপাদানের দিক থেকেই সম্পূর্ণরুপে ইসলামী এবং এর ওপর কোন অনৈসলামী সংস্কৃতির অণুমাত্রও প্রভাব নেই। অবশ্য এর বাইরের খুটিনাটি বিষয়ে আরবীয় মনন, আরবীয় ঐতিহ্য এবং পূর্ববর্তী ও পরবর্তী সংস্কৃতিগুলোর কিছু না কিছু প্রভাব অবশ্যই পড়েছে। ইমারতের একটা দিক হচ্ছে তার নক্সা, তার নির্মাণকৌশল, উদ্দেশ্য মোতাবেক তার গড়ে ওঠা; এটিই হচ্ছে তার আসল ও মূল জিনিস। আর একটি দিক হচ্ছে তার বর্ণ, বৈচিত্র, তার কারুকার্য এবং তারশোভা-সৌন্দর্য, এটি হচ্ছে তার খুঁটিনাটি ও ছোট-খাট ব্যাপার। সুতরাং সংস্কৃতিসৌধ সম্পূর্ণতঃ জিনিসের দিক দিয়ে বিচার করলে দেখা যায় যে, ইসলামী সংস্কৃতি সৌধ সম্পূর্ণতঃ ইসলামের গঠনক্রিয়ার ফল। তার নক্সা তার নিজস্ব। অন্য কোন নক্সা থেকে এব্যাপারে সাহায্য নেয়া হয়নি। তার নির্মাণ কৌশল তার নিজেরই উদ্ভাবিত, এক্ষেত্রে অপর কোন নমুনার অনুকরণ করা হয়নি। তার নির্মাণ উদ্দেশ্য সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র ও অভিনব; উদ্দেশ্যে। আর কোন ইমারত না এর আগে নির্মাণ হয়েছে, নাপরে।

অনুরুপভাবেই এ উদ্দেশ্য হাসিল করার জন্যে যে ধরনের গঠনকার্যের প্রয়োজন ছিল, ইসলামী সংস্কৃতি ঠিক সেই রুপেই রুপায়িত হয়েছে। এ উদ্দেশ্যে সে যা কিছু নির্মাণ করেছে, তাতে বাইরের কোন প্রকৌশলী না কোন সংস্কার-সংশোধনের ক্ষমতা রাখে, আর না রাখে কোন সংযোজনের। বাকী থাকে খুঁটিনাটি ও ছোটখাট বিষয়গুলো;

এ ব্যাপারেও ইসলাম অন্যান্য সংস্কৃতি থেকে খুব কম জিনিসই গ্রহণ করেছে। এমন কি বলা যেতে পারে যে, এরও বেশীরভাগ ইসলামেরই নিজস্ব জিনিস। অবশ্য মুসলমানরা অন্যান্য সংস্কৃতি থেকে বর্ণ, বৈচিত্র, কারুকার্য এবং শোভাসৌন্দর্যের উপকরন নিয়ে এদিককার সমৃদ্ধি কিছুটা বাড়িয়েছে। আর এটাই দর্শকদের চোখে এতখানি প্রকট হয়ে ওঠেছে যে, গোটা ইমারতের ওপরই তারা অনুকরণের অপবাদ চাপিয়ে দেবার প্রয়াস পাচ্ছে।

সংস্কৃতির সংজ্ঞা

এ বিষয়ের মীমাংসা করতে হলে সবার আগেই প্রশ্নের জবাব পেতে হবে যে, সংস্কৃতি কাকে বলে? লোকেরা মনে করে যে, সংস্কৃতি বলতে বুঝায় কোন জাতির জ্ঞান-বিজ্ঞান, সাহিত্য-দর্শন, শিল্প-কারিগরী, ললিতকলা, সামাজিকরীতি, জীবনপদ্বতি, রাষ্ট্রনীতি ইত্যাদি, কিন্তু প্রকৃত পক্ষে এগুলো সংস্কৃতির আসল প্রানবস্তু নয়, তার ফলাফল ও বহিঃপ্রকাশ মাত্র। সংস্কৃতি বৃক্ষের মূলও নয় কাণ্ড নয়, তার শাখা-প্রশাখা ও পত্র-পল্লব মাত্র। এসব বাহ্যিক লক্ষণ ও খোলসের ভিত্তিতে কোন সংস্কৃতির মূল্যমান নির্ধারিত করা যায় না। তাই এগুলো বাদ দিয়ে আমাদেরকে সংস্কৃতির প্রাণবস্তু অবধি পৌছা দরকার, তার মূলভিত্তি ও মৌলিক উপাদান গুলো তালাশ করা প্রয়োজন।

সংস্কৃতির মৌলিক উপাদানঃ

এই দৃষ্টিতে কোন সংস্কৃতির ভেতর সর্বপ্রথম যে জিনিসটি তালাশ করা দরকার তা হচ্ছে এই যে, দুনিয়াবী জীবন সম্পর্কে তার ধারণা কি? এই দুনিয়ায় সে মানুষকে কি মর্যাদা প্রদান করে? তার দৃষ্টিতে দুনিয়া বস্তুটা কি? এই দুনিয়ার সাথে মানুষের সম্পর্ক কি? মানুষ এ দুনিয়াকে ভোগ-ব্যবহার করবে কিভাবে? বস্তুত জীবনের তামাম ক্রিয়া-কান্ডের ওপরেই এগুলো গভীরভাবে প্রভাবশীল হয়ে থাকে। এই দর্শন বদলে গেলে সংস্কৃতির গোটা স্বরূপ মূলগতভাবেই বদলে যায়।

জীবন দর্শনের সাথে দ্বিতীয় যে প্রশ্ন গভীরভাবে সম্পৃক্ত, তা হচ্ছে জীবনের চরম লক্ষ্য। দুনিয়ার মানবজীবনের উদ্দেশ্য কি? মানুষের এতো ব্যবস্থা, এতো প্রয়াস-প্রচেষ্টা, এতো শ্রম-মেহনত, এতো দ্বন্দ্ব-সংগ্রাম কিসের জন্য? কোন অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে মানুষের ছুটে চলা উচিত? কোন লক্ষ্যস্থলে পৌছার জন্য আদম সন্তানের চেষ্টা-সাধনা করা কর্তব্য? কোন পরিণতির কথা মানুষের প্রতিটি কাজে, প্রতিটি প্রয়াস-প্রচেষ্টা স্মরণ রাখা উচিত? বস্তুত এই লক্ষ্য ও আকাংখার প্রশ্নই মানুষের বাস্তব জীবনের গতিধারাকে নির্ধারিত ও নিয়ন্ত্রিত করে থাকে আর তার অনুরুপ কর্মপদ্বতি ও কামিয়াবীর পন্থা জীবনের অবলম্বিত হয়ে থাকে।

তৃতীয় প্রশ্ন এই যে, আলোচ্য সংস্কৃতিতে কোন বুনিয়াদী ও ধ্যান-ধারণার ভিত্তিতে মানবীয় চরিত্র গঠন করা হয়? মানুষের মন-মানসিকতাকে ছাঁচে ঢালাই করে? মানুষের মন ও মস্তিস্কে কি ধরনের চিন্তা সৃষ্টি করে? এবং তার ভেতর এমন কি কার্যকর শক্তি রয়েছে, যা তার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের পরিপ্রেক্ষিতে মানুষকে এক বিশেষ ধরনের বাস্তব জীবন ধারণার জন্য উদ্বুদ্ধ করে? এ ব্যাপারে কোন বিতর্কের অবকাশ নেই যে, মানুষের কর্মশক্তি তার চিন্তাশক্তিরই প্রভাবাধীন। যে চেতনা তার হাত ও পা-কে ক্রিয়াশীল করে তোলে, তা আসে তার মন ও মস্তিস্ক থেকে। আর যে আকীদা-বিশ্বাস, চিন্তা-ভাবনা, ধ্যান-ধারণা, তার মন ও মস্তিষ্কে চেপে বসবে, তার গোটা কর্মশক্তি ঠিক তারই প্রভাবাধীনে সক্রিয় হয়ে ওঠবে। অন্য কথায় তার মন-মানস যে ছাঁচে গড়ে ওঠবে, তার ভেতর আবেগ-অনুভুতি ও ইচ্ছা স্পৃহা ও ঠিক তেমনি পয়দা হবে এবং তারই আজ্ঞাধীনে তার অঙ্গ প্রত্যঙ্গগুলো কাজ করতে থাকবে। বস্তুত দুনিয়ার কোন সংস্কৃতিই একটি মৌলিক আকীদা এবং একটি বুনিয়াদী চিন্তাধারা ছাড়া প্রতিষ্ঠা লাভ করতে পারেনা। এ হিসেবে যেকোন সংস্কৃতিকে বুঝতে এবং তাঁর মূল্যায়ন করতে হলে প্রথমত তাঁর আকীদা ও চিন্তাধারাকে বুঝে তার উৎকর্ষ-অপকর্ষ পরিমাপ করা প্রয়োজন – যেমন কোন ইমারতের দৃঢ়তা ও স্থায়িত্বের কথা জানতে হলে তার ভিত্তির গভীরতা ও দৃঢ়তার কথা জানা আবশ্যক।

চতুর্থ প্রশ্ন এই যে, আলোচ্য সংস্কৃতি মানুষকে একজন মানুষ হিসেবে কি ধরনের মানুষ রুপে গড়ে তোলে? অর্থাৎ কি ধরনের নৈতিক ট্রেনিং- এর সাহায্যে সে মানুষকে তার নিজস্ব আদর্শ মোতাবেক স্বার্থক জীবন যাপনের জন্য তৈরি করে? কোন ধরনের স্বভাব-প্রকৃতি, গুনরাজি ও মন-মানস সে মানুষের মধ্যে পয়দা করে এবং তার বিকাশ বৃ্দ্ধির চেষ্টা করে? তার বিশেষ নৈতিক তালিম- এর সাহায্যে মানুষ কি ধরনের পরিণত হয়? সংস্কৃতির আসল উদ্দেশ্য যদিও সমাজব্যবস্থার পুনর্গঠন, কিন্তু ব্যক্তির উপাদান দিয়েই সে সমাজ সৌধনির্মিত হয়। আর সে সৌধটির দৃঢ়তা ও স্থায়িত্ব নির্ভর করে তার প্রতিটি পাথরের সঠিক রুপে কাটা, প্রতিটি ইটের পাকা-পোক্ত হওয়া, প্রতিটি কড়িকাঠের মজবুত হওয়া, কোথাও ঘুনে ধরা না লাগানো এবং কোথাও অপক্ক-নিকৃস্ট ও দুর্বল উপকরণ ব্যাবহার না করার ওপর। পঞ্চম প্রশ্ন এই যে, সে সংস্কৃতিতে বিভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে মানুষে মানুষে কিভাবে সম্পর্ক স্থাপন করা হয়? তার আপন খান্দানের সঙ্গে, তার পাড়া-পড়শীর সঙ্গে, তার বন্ধু-বান্ধবের সঙ্গে, তার সাথে বসবাসকারী লোকদের সঙ্গে, তার অধীনস্থ লোকদের সঙ্গে, তার উপরস্থ লোকদের সঙ্গে, তার নিজ সংস্কৃতি অনুসারীদের সঙ্গে এবং তার সংস্কৃতি বহির্ভূত লোকদের সঙ্গে কি ধরনের সম্পর্ক রাখা হয়েছে? অন্যান্য লোকদের ওপর তার কি অধিকার এবং তার ওপর অন্যান্য লোকদের কি অধিকার নির্দেশ করে দেয়া হয়েছে? তাকে কোন কোন সীমারেখার অধীন করে দেয়া হয়েছে? তাকে আজাদী হলে কতখানি আজাদী দেয়া হয়েছে আর বন্দী করা হলে কতদূর বন্দী করা হয়েছে? বস্তুত এ প্রশ্নগুলোর ভেতর নৈতিক চরিত্র, সামাজিকতা, আইন-কানুন, রাজনীতি এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সকল বিষয়ই এসে যায়। আর আলোচ্য সংস্কৃতি কি ধরনের খান্দান, সমাজ ও রাষ্ট্র গঠন করে, তা এ থেকেই জানা যেতে পারে।

এ আলোচনা থেকে জানা গেছে যে, যে বস্তুটিকে সংস্কৃতি বলে অভিহিত করা হয়, তা গঠিত হয় পাঁচটি মৌলিক উপাদান দ্বারাঃ

(১) দুনিয়াবী জীবন সম্পর্কে ধারণা,

(২) জীবনের চরম লক্ষ্য,

(৩) বুনিয়াদীআকীদাওচিন্তাধারা

(৪) ব্যক্তিপ্রশিক্ষণ এবং (৫) সমাজব্যবস্থা।

দুনিয়ার প্রত্যেক সংস্কৃতি এই পাঁচটি মৌলিক উপাদান দিয়েই গঠিত হয়েছে। বলাবাহুল্য, ইসলামী সংস্কৃতিরও সৃষ্টি হয়েছে এই উপাদানগুলোর সাহায্যেই। বর্তমান গ্রন্থে আমি ইসলামী সংস্কৃতির তিনটি উপাদান পর্যালোচনা করে বলেছি যে, এই সংস্কৃতি জীবন সম্পর্কে কোন বিশিষ্ট ধারণা, কোন বিশেষ জীবন লক্ষ্য এবং কোন মৌলিক প্রত্যয় ও চিন্তাধারার ওপর কায়েম করা হয়েছে এবং এগুলো কিভাবে তাকে দুনিয়ার অন্যান্য সংস্কৃতি থেকে স্বতন্ত্র এক বিশেষ ধরনের সংস্কৃতির রুপ দিয়েছে। অবশিষ্ট দু’টি উপাদান সম্পর্কে এ গ্রন্থে কোন আলোচনা করা হয়নি। এর ভেতর ব্যক্তি সংগঠন সম্পর্কে আমার লিখিত “ইসলামী ইবাদতপর এক তাহকীকী নযর” এবং “খুতবাত’ *১ (২০ থেকে ২৮ নম্বর খোতবা) নামক পুস্তুক দু’খানি উপকারী হবে। বাকী “সমাজ ব্যবস্থা সম্পর্কে ‘ইসলামকা নেজামে হায়াত’ (ইসলামের জীবন পদ্ধতি) নামে প্রকাশিত আমার বেতার বক্তৃতা গুলোয় একটা মোটামুটি চিত্র পাওয়া যাবে।

সুত্রঃ

১: এটি লেখকের নয়টি বক্তৃতার সমষ্টি এটা বিভিন্ন পুস্তিকা আকারে প্রকাশিত হয়েছে যথাঃ ইসলামের হাকীকত, ঈমানের হাকীকত, জিহাদের হাকীকত, হজ্জের হাকীকত, যাকাতের হাকীকত ও নামায রোযার হাকীকত

 

Page 1 of 12
12...12Next

© Bangladesh Jamaat-e-Islami

  • আমাদের সম্পর্কে
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • যোগাযোগ
কোন ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
  • নীড়
  • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
  • বিভাগ ভিত্তিক
    • আল কুরআন
    • আল হাদিস
    • ফিকাহ
    • ঈমান
    • ইসলাম
    • পারিবারিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ক
    • আন্দোলন ও সংগঠন
    • সীরাত ও ইতিহাস
    • সীরাতে সাহাবা
    • মহিলাদের বিশেষ বই
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • রুকন সিলেবাস
    • রুকন সিলেবাস (স্বল্প শিক্ষিত)
    • রুকন সিলেবাস (শিক্ষিত)
  • কর্মী সিলেবাস
  • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (শিক্ষিত)
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (স্বল্প শিক্ষিত)
  • উচ্চতর অধ্যয়ন
  • অডিও বই
  • অন্যান্য
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • আলোচনা নোট
    • বইনোট
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • বুলেটিন
    • স্মারক
    • ম্যাগাজিন
    • এপস
    • রিপোর্ট বই
    • ছাত্রী সিলেবাস

@BJI Dhaka City South