স্বামী স্ত্রীর অধিকার
স্ত্রীর অধিকার
স্বামী ও স্ত্রীর পানাহার এবং পোশাকের মান সমান হওয়া চাই
(আরবী************************)
মুয়াবিয়ার পুত্র হাকীম তাঁর পিতা মুয়াবিয়া থেকে বর্ণনা করেন, মুয়াবিয়া বলেছেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ (সা) কে জিজ্ঞেস করলাম, স্বামীর নিকট স্ত্রীর হক (অধিকার) কি কি? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেনঃ তার হক এই যে, তুমি যখন আহার করবে, তখন তাকেও আহার করাবে, তুমি যখন পোশাক পরিধান করবে, তখন তাকেও পোশাক দেবে, তার মুখে কখনো প্রহার করবে না, তাকে কখনো বদদোয়া করবে না বা অভিশাপ দেবে না। আর তার সাথে কখনো সাময়িক সম্পর্কচ্ছেদ করলে তাকে বাড়ীতে রেখেই করবে। (আবু দাউদ)
অর্থাৎ যে মানের খাদ্য তুমি আহার করবে, সেই মানের খাদ্য তাকেও আহার করাবে, যে মানের পোশাক তুমি পরবে, সেই মানের পোশাক তাকেও পরাবে।
শেষ বাক্যটির ব্যাখ্যা এই যে, স্ত্রী যদি অবাধ্যতা প্রদর্শন ও অসদাচরণ করে, তবে কোরআনের নির্দেশ অনুসারে প্রথমে তাকে নম্র ও কোমল ভাষায় বুঝাতে হবে, তাতেও যদি ভালো না হয় তবে বিছানা আলাদা করে নেবে। কিন্তু উভয়ের বিছানা বাড়ীর ভেতরেই থাকা চাই। উভয়ের ভেতরের অসন্তোষের বিষয়টি বাইরে ফাঁস হতে দেবে না। কেননা এটা পারিবারিক সম্মান ও মর্যাদার পরিপন্থী। এতেও ভালো না হলে স্ত্রীকে মৃদু প্রহার করা যেতে পারে। তবে মুখমণ্ডল বাদ দিয়ে শরীরের অন্যান্য অংশে। তাও এতটা সাবধানে মারতে হবে যেন কোন ক্ষত না হয় বা হাড় না ভাঙ্গে।
স্ত্রীর সাথে দাসীবাঁদীর মত আচরণ করা চলবে না
(আরবী*********************************)
১৪৯.লোকিত বিন সাবেরা (রা) বলেন, আমি বললাম, হে রাসূলুল্লাহ, আমার স্ত্রী খুবই কটুভাষী। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেনঃ তালাক দিয়ে দাও। আমি বললাম আমাদের একটা সন্তান রয়েছে। তা ছাড়া আমরা এক সাথে বহু দিন কাটিয়ে এসেছি। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেনঃ তাহলে তাকে উপদেশ দিতে থাক। তার ভেতরে সৎ পথ অবলম্বনের যোগ্যতা থাকলে সে তোমার উপদেশ মেনে নেবে। সাবধান, তোমার স্ত্রীকে দাসীবাঁদীর মত মারপিট করবে না। (আবু দাউদ)
এ হাদীসের শেষ বাক্যটার অর্থ এটা নয় যে, দাসীবাঁদীদেরকে যেমন ইচ্ছা মারপিট করা যাবে। এর অর্থ এই যে, সচরাচর দাসীবাঁদীর সাথে যে রকম আচরণ করা হয়ে থাকে, স্ত্রীর সাথে সে রকম আচরণ করা উচিত নয়।
প্রহারকারী স্বামীরা সর্বোত্তম মানুষ নয়
(আরবী*******************)
১৫০.রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন তোমরা আল্লাহর বাঁদিদেরকে (অর্থাৎ স্ত্রীদেরকে) মারপিট করো না। এরপর ওমর (রা) এলেন। তিনি বললেন, আপনার এই আদেশের কারণে স্বামীরা মারপিট করা একেবারেই বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে স্ত্রীরা স্বামীদের মাথায় চড়ে বসেছে এবং তাদের ধৃষ্টতা সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে। এ কথা শুনে রাসূল (সা) পুনরায় প্রহারের অনুমতি দিলেন। এরপর রাসূলুল্লাহর (সা) সহধর্মিণীদের কাছে বহু মহিলা আসতে লাগলো এবং তাদের স্বামীরা তাদেরকে মারপিট করে বলে অভিযোগ করতে লাগলো। এরপর রাসূলুল্লাহ (সা) বললেনঃ আমার স্ত্রীদের কাছে বহু মহিলা তাদের স্বামীদের মারপিটের অভিযোগ নিয়ে আসছে। মারপিটের স্বামীরা সর্বোত্তম মানুষ নয়। (আবু দাউদ, আয়াস ইবনে আবদুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত)
স্ত্রীদের মধ্যে শুধু দোষ থাকেনা গুণও থাকে
(আরবী*********************)
১৫১.রাসূলূল্লাহ (সা) বলেনঃ কোন মুমিন স্বামীর নিজের মুমিন স্ত্রীকে ঘৃণা করা উচিত নয়। তার একটা অভ্যাস যদি স্বামীর খারাপ লাগে, তবে অন্য একটা অভ্যাস ভালো লাগবে। (মুসলিম)
অর্থাৎ স্ত্রী যদি সুদর্শনা না হয়ে থাকে কিংবা অন্য কোন দোষ ত্রুটি তার ভেতরে থেকে থাকে, তাহলে সেজন্য তৎক্ষণাৎ সম্পর্কচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেল না। একজন নারীর ভেতরে যদি কোন দিক দিয়ে কোন কমতি বা অসন্তোষজনক ব্যাপার থেকে থাকে, তবে অন্য বহু দিক এমনও থাকতে পারে, যা দিয়ে সে স্বামীর হৃদয় জয় করে নিতে সক্ষম, যদি তাকে সময় ও সুযোগ দেয়া হয় এবং তার একটি ত্রুটির কারণে মনে তার প্রতি চিরস্থায়ী ঘৃণা ও বিদ্বেষ বদ্ধমূল করে না নেয়া হয়।
স্বামী স্ত্রী উভয়ের অধিকার আছে
(আরবী******)
১৫২.আমর বিন আহওয়াস জুশামী(রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বিদায় হজ্জে রাসূলের (সা) ভাষণ শুনেছেন। প্রথমে তিনি আল্লাহর প্রশংসা করলেন, তারপর বিভিন্ন রকমের উপদেশ দিলেন, অবশেষে বললেনঃ হে জনতা শোন, স্ত্রীদের সাথে উত্তম আচরণ কর। কেননা তারা তোমাদের কাছে কয়েদীর মত। তারা খোলাখুলি অবাধ্যতা প্রদর্শন না করা পর্যন্ত তাদের সাথে কঠোর ব্যবহার করবে না। যখন তা করবে, তখন তাদের সাথে বিছানায় সম্পর্ক ছিন্ন কর। (অর্থাৎ দুজনের বিছানা আলাদা কর অথবা একই বিছানায় পৃথক পৃথকভাবে শয়ন কর। –অনুবাদক) আর তাদেরকে এমনভাবে প্রহার করতে পার যা খুব কঠোর অর্থাৎ ক্ষত সৃষ্টিকারী না হয়। এরপর যদি তারা তোমাদের অনুগত হয় তাহলে আর তাদেরকে কষ্ট দেয়ার বাহানা খুঁজো না। শুনে নাও, তোমাদের কাছেও তোমাদের স্ত্রীদের কিছু অধিকার প্রাপ্য আছে, আর তোমাদের স্ত্রীদের কাছেও তোমাদের কিছু অধিকার প্রাপ্য রয়েছে। তাদের কাছে তোমাদের প্রাপ্য অধিকার এই যে, তোমরা পছন্দ করো না এমন কাউকে যেন তোমাদের বিছানা মাড়াতে না দেয় এবং তোমরা পছন্দ করোনা না এমন কাউকে তোমাদের বাড়ীতে যেন আসতে না দেয়। আর শুনে নাও, তোমাদের কাছে তাদের প্রাপ্য অধিকার এই যে, তোমরা তাদেরকে যথাযথভাবে খোরপোষ দেবে। (তিরমিযি)
পরিবারের পেছনে ব্যয় সদকাস্বরুপ
(আরবী******)
১৫৩. রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন পরকালে সওয়াব পাওয়া যাবে এই নিয়তে কোন ব্যক্তি যখন নিজ পরিবারে পেছনে অর্থ ব্যয় করে, তখন তা সদকায় পরিণত হয়। (বোখারী ও মুসলিম)
পোষ্যদেরকে নষ্ট হতে দেয়া উচিত নয়
(আরবী****************)
১৫৪.রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন মানুষের গুনাহগার তওয়ার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, সে যাদের ভরণ পোষণ করে তাদেরকে নষ্ট হতে (অর্থাৎ বিপথগামী হতে ) দেবে। (আবু দাউদ। )
একাধিক স্ত্রীর মধ্যে সুবিচার না করার পরিণাম
(আরবী***************)
১৫৫. আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত। রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন যে ব্যক্তির দুজন স্ত্রী রয়েছে, সে যদি তাদের সাথে সুবিচার না করে তবে সে কেয়ামতের দিন তার অর্ধেক দেহ ফেলে রেখে আসবে। (তিরমিযি)
যে স্ত্রীর ন্যায্য অধিকার সে দেয়নি, সে তো তার দেহেরই অংশ ছিল। তার প্রতি অবিচার করার মাধ্যমে সে তো তার দেহেরে অর্ধাংশ দুনিয়াতেই কেটে রেখে এসেছে। কাজেই কেয়ামতের দিন সে পূর্ণাঙ্গ দেহ পাবে কোথায়?
স্বামীর অধিকার
স্বামীর আনুগত্য স্ত্রীর বেহেশতে যাওয়ার অন্যতম উপায়
(আরবী**********)
১৫৬.রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন স্ত্রী যখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায পড়বে, রমযানের রোযা রাখবে, লজ্জাস্থানের হেফাজত করবে এবং স্বামীর আনুগত্য করবে, তখন সে বেহেশতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছা প্রবেশ করবে। (মেশকাত)
সর্বোত্তম স্ত্রী
(আরবী*************)
১৫৭.রাসূলুল্লাহ (সা) কে জিজ্ঞেস করা হলো, সর্বোত্তম স্ত্রী কে? রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন যে স্ত্রীর দিকে তাকালেই স্বামী খুশী হয়, স্বামী নির্দেশ দিলেই তা পালন করে এবং নিজের ও নিজের সহায় সম্পদের ক্ষেত্রে এমন কোন কর্মপন্থা অবলম্বন করে না, যা স্বামী অপছন্দ করে। (নাসায়ী)
এখানে নিজের সহায় সম্পদ দ্বারা সেই সম্পদ সম্পত্তিকে বুঝানো হয়েছে, যা স্বামী গৃহকত্রী হিসাবে স্ত্রীর কাছে সোপর্দ করেছে।
স্বামীর অনুমতি ছাড়া স্ত্রীর নফল রোযা রাখা জায়েয নেই
(আরবী*********************)
১৫৮.আবু সাঈদ(রা) বলেন রাসূলুল্লাহ (সা) এর কাছে আমরা বসেছিলাম। এমতাবস্থায় এক মহিলা তাঁর কাছে এল। সে বললো সাফওয়ান ইবনুল মুয়াত্তাল আমার স্বামী। আমি নামায পড়লে আমাকে মারপিট করে, রোযা রাখলে রোযা ভাংতে বলে। আর সূর্য না ওঠা পর্যন্ত ফজরের নামায পড়ে না। এ সময়ে সাফওয়ান ওখানেই বসা ছিলেন। রাসূল (সা) সাফওয়ানকে জিজ্ঞেস করলেন, তার স্ত্রীর অভিযোগ সম্পর্কে তার বলার কি আছে। সাফওয়ান বললেনঃ হে রাসূলুল্লাহ, নামায পড়লে মারপিটের যে অভিযোগ সে করেছে, তার প্রকৃত রহস্য এই যে, সে নামাযে দুটো সূরা পড়ে। অথচ আমি তা করতে থাকে নিষেধ করেছি। রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন একটা সূরা পড়াই যথেষ্ট। সাফওয়ান বললেন রোযা ভাঙ্গনের অভিযোগের রহস্য এই যে, সে ক্রমাগত ভাবে রোযা রাখতে থাকে, অথচ আমি যুবক মানুষ। ধৈর্য ধারণ করতে পারি না। রাসূল (সা) অতঃপর বললেনঃ কোন স্ত্রী স্বামীর অনুমতি ছাড়া (নফল) রোযা রাখতে পারেনা। অতঃপর সাফওয়ান বললেনঃ সূর্য ওঠার পর নামায পড়া সম্পর্কে আমার বক্তব্য এই যে, আমার এমন এক গোত্রের লোক যার সম্পর্কে সবাই জানে যে, আমরা সূর্য ওঠার আগে জাগতে পারি না। রাসূল (সা) বললেন হে সাফওয়ান ঘুম থেকে যখনই জাগবে তখনই নামায পড়ে নিও। (আবু দাউদ)
এ হাদীস থেকে কয়েকটি বিষয় স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে-
১.স্ত্রীকে ফরয নামায পড়তে নিষেধ করার অধিকার তো কোন স্বামীর নেই, তবে স্বামীর প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখা স্ত্রীর কর্তব্য। দ্বীনদারীর আবেগে লম্বা লম্বা সূরা কিরাত পড়া তার উচিত নয়। নফল নামাযের বেলায়ও স্বামীর প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। তার অনুমতি চাড়া নফল নামাযে নিয়োজিত থাকা ঠিক নয়। অনুরূপভাবে নফল রোযাও তার অনুমতি ছাড়া রাখা যাবে না।
২.সাফওয়ান বিন মুয়াত্তাল রাত জেগে মানুষের ক্ষেত খামারে পানি দিতেন। রাতের একটা বিরাট অংশ জুড়ে এ ধরনের পরিশ্রম করলে ঠিক সময়ে জেগে ফজরের নামায পড়া যে সম্ভব নয়, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সাফওয়ান বিন মুয়াত্তাল (রা) উচুস্তরের সাহাবী। তাঁর সম্পর্কে এ কথা বলা যায় না যে, তিনি ফজরের নামাযের ব্যাপারে শিথিল, অসতর্ক বা বেপরোয়া ছিলেন। সম্ভবত ঘটনাক্রমেই এমন হতো যে, রাতে দেরীতে ঘুমিয়েছেন, সকালে কেউ জাগায়নি, ফলে ফজরের নামায কাযা হয়ে গেছে। এ রকম পরিস্থিতির কারণেই রাসূল (সা) বলেছেন, হে সাফওয়ান যখনই ঘুম থেকে ওঠো, নামায পড়ে নিও। নতুবা রাসূলের দৃষ্টিতে তিনি যদি নামাযের ব্যাপারে শিথিল ও অসাবধান হতেন, তাহলে তাঁর ওপর তিনি অসন্তোষ প্রকাশ করতেন।
নারীর অকৃতজ্ঞতার ব্যাধি
(আরবী************)
১৫৯.আসমা বিনতে ইয়াজিদ(রা) বলেন আমি আমার সমবয়স্কা কয়েকটি মেয়ের সাথে বসেছিলাম। এমতাবস্থায় রাসূলুল্লাহ(সা) আমাদের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি আমাদেরকে সালাম করলেন এবং বললেন তোমরা সদাচারী স্বামীর অকৃতজ্ঞতা থেকে দূরে থাক। তোমাদের অনেকের এমন হয়ে থাকে যে, দীর্ঘদিন মা বাবার বাড়ীতে কুমারী অবস্থায় কাটিয়ে দেয়, তারপর আল্লাহ তাকে স্বামী দান করেন, তাঁর পক্ষ থেকে তার সন্তানাদিও হয়, তারপর কোন এক ব্যাপারে সে রেগে যায় এবং স্বামীকে বলেঃ তোমার কাছ থেকে কখনো শান্তি পেলামনা, তুমি আমার সাথে কখনো ভালো আচরণ করলে না। (আদাবুল মুফরাদ)
এ হাদীসে মহিলাদেরকে অকৃতজ্ঞতা থেকে দূরে থাকার শিক্ষা দেয়া হয়েছে। এটা মহিলাদের একটা সাধারণ ব্যাধি। তাই মহিলাদের এটি থেকে বেঁচে থাকার সর্বাত্মক চেষ্টা করা উচিত।
নেককার স্ত্রী সর্বোত্তম সম্পদ
(আরবী*************)
১৬০.ছাওবান (রা) থেকে বর্ণিত তিনি বলেনঃ যখন এ আয়াত নাযিল হলো, যারা সোনা, রুপা সঞ্চয় করে রাখে—– তখন আমাদের কেউ কেউ বললো এ আয়াত তো সোনা রুপা সঞ্চয় করা সম্পর্কে নাযিল হয়েছে, যা দ্বারা বুঝা গেল, সোনা, রুপা সঞ্চয় করা ভালো কাজ নয়। আমরা যদি জানতাম কোন সম্পদ উত্তম, তাহলে সেটাই সঞ্চয় করার কথা ভাবতাম। রাসূল (সা) বললেন সর্বোত্তম সম্পদ হলো আল্লাহকে স্মরণকারী জিহ্বা, আল্লাহর শোকরকারী মন এবং নেককার স্ত্রী যে স্বামীকে ইসলামের পথে টিকে থাকতে সাহায্য করে। (তিরমিযি)
এ হাদীস দ্বারা জানা গেল যে, আল্লাহর যিকির বা স্মরণ জিহ্বা দ্বারা করা উচিত, আর যে যিকির শোকরে মনোভাব নিয়ে করা হয় সেই যিকিরই কাঙ্ক্ষিত। এও জানা গেল যে, যে স্ত্রী নিজের দ্বীনদার স্বামীর সাথে দুঃখ কষ্ট ও বিপদ মুসিবতেও সংগ দেয় দ্বীনের পথে চলতে উৎসাহ উদ্দীপনা জোদায় এবং পথের বাধা হয়ে দাড়ায় না, সেই স্ত্রী আল্লাহর মস্ত বড় নেয়ামত।
স্ত্রী স্বামীর বাড়ী ও সন্তানের তত্ত্বাবধায়ক
(আরবী**********)
১৬১.রাসূলুল্লাহ(সা) বলেছেন তোমাদের প্রত্যেকেই রক্ষক ও তত্ত্বাবধায়ক। যারা তোমাদের অধীন, তাদের সম্পর্কে তোমাদেরকে জিজ্ঞেস করা হবে। শাসকও তত্ত্বাবধায়ক এবং তাকে তার শাসিতদের সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হবে। স্বামী তার পরিবারপরিজনের তত্ত্বাবধায়ক এবং স্ত্রী তার স্বামীর বাড়ী ও সন্তানদের তত্ত্বাবধায়ক। মোটকথা তোমাদের প্রত্যেকেই তত্ত্বাবধায়ক এবং নিজ নিজ অধীনস্থদের ব্যাপারে জবাবদিহি করতে বাধ্য। কোন কোন বর্ণনায় আরো আছেঃ চাকরও তার মনিবের সম্পদের তত্ত্বাবধায়ক।
হাদীসের এ অংশটি বিশেষভাবে লক্ষণীয় যে, স্ত্রী তার স্বামীর সন্তান ও ঘরবাড়ীর তত্ত্বাবধায়ক। এ হাদীস থেকে জানা যায় যে, স্বামী তার স্ত্রীর শুধু খাদ্য পানীয়ের দায়্ত্বিশীল নয়। বরং তার দ্বীনদারী ও চরিত্রেরও রক্ষণাবেক্ষণ তার দায়িত্বের আওতাভুক্ত। আর স্ত্রীর দায়িত্ব তার দ্বিগুণ। সে স্বামীর বাড়ী ও সম্পদের রক্ষক তো আছেই, তার সন্তানদের লালন পালনের বিশেষ দায়িত্বও তার ওপর অর্পিত। কেননা স্বামী তো জীবিকা উপার্জনের তাগিদে বেশীর ভাগ সময় বাইরে কাটাতে বাধ্য হয়। বাড়ীতে ছেলেমেয়েরা মায়ের প্রতিই অধিকতর অনুরক্ত থাকে। তাই ছেলেমেয়েদের লালন পালনের অতিরিক্ত দায়িত্ব তাদের মায়ের ওপরই অর্পিত।