প্রতিবেশীর অধিকার
প্রতিবেশীকে কষ্ট দেয়া ঈমানদারীর লক্ষণ নয়
(আরবী*******)
১৮০. রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেঃ আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়, আল্লাহর কসম, সে মুমিন নয়। জিজ্ঞেস করা হলোঃ হে রাসূলুল্লাহ, কে? তিনি বললেনঃ যার প্রতিবেশী তার কষ্টদায়ক আচরণ থেকে নিরাপদ থাকে না।
প্রতিবেশীর অধিকার সম্পর্কে জিবরীলের পুনঃপুনঃ তাগিদ
(আরবী********)
১৮১.রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন জিবরীল আমাকে প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করার জন্য এত ঘনঘন উপদেশ দিতে থাকেন যে, আমি ভেবেছিলাম হয়তো শেষ পর্যন্ত প্রতিবেশীকে সম্পত্তির উত্তরাধিকারী করা হবে।
প্রতিবেশীকে ক্ষুধার্ত রেখে নিজে তৃপ্তি সহকারে খাওয়া ঈমানের লক্ষণ নয়
(আরবী*******)
১৮২.ইবনে আব্বাস (রা) বলেনঃ আমি রাসুলুল্লাহ (সা) কে বলতে শুনেছি সেই ব্যক্তি মুমিন ন যে নিজে তৃপ্তি সহকারে আহার করে, অথচ তার প্রতিবেশী তার পাশেই অনাহারে থাকে। (মেশকাত)
প্রতিবেশীকে রান্না করা খাবার দেয়ার উপদেশ
(আরবী*******)
১৮৩. রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন হে আবু যর, তুমি যখন ঝোল রান্না করবে, তখন তাতে পানি বেশী করে দাও এবং তা দিয়ে প্রতিবেশীর খবর নাও। (মুসলিম)
প্রতিবেশীকে দেয়া উপহার সামান্য হলেও তুচ্ছ নয়
(আরবী********)
১৮৪.রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ হে মুসলিম নারীগণ, কোন প্রতিবেশিনী অপর প্রতিবেশিনীকে যত সামান্য উপহারই দিক, তাকে তুচ্ছ মনে করা উচিত নয়, এমনকি তা যদি ছাগলের একটা ক্ষুরও হয়। (বোখারী, মুসলিম)
মহিলাদের মানসিকতা সচরাচর এ রকম হয়ে থাকে যে, কোন মামুলী জিনিস প্রতিবেশিনীর বাড়তে পাঠানো পছন্দ করে না। সব সময় খুব ভালো জিনিস পাঠাতে চায়। এ জন্য রাসূলুল্লাহ (সা) মহিলাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন যে, যত সামান্য জিনিসই হোক, প্রতিবেশীর কাছে পাঠাতে দ্বিধা বোধ করো না। আর যে মহিলার কাছে প্রতিবেশীর কাছ থেকে কোন উপহার আসে, সে যেন তা নগণ্য হলেও সাদরে গ্রহণ করে। অবজ্ঞা করা বা সমালোচনা করা ঠিক নয়।
নিকটতর প্রতিবেশীকে অধিকতর অগ্রাধিকার দিতে হবে
(আরবী*******)
১৮৫. হযরত আয়েশা (রা) বলেনঃ আমি বললাম, হে রাসূলুল্লাহ, আমার দুজন প্রতিবেশী রয়েছে, তন্মধ্যে কার কাছে উপহার পাঠাবো? রাসূল (সা) বললেন, তাদের মধ্যে যে জনের দরজা তোমার নিকটতর তার কাছে। (বোখারী)
প্রতিবেশীত্বের এলাকা চল্লিশ বাড়ী পর্যন্ত বিস্তৃত। এদের মধ্যে যে বাড়ী নিকটতর, তার অধিকার অগ্রগণ্য।
প্রতিবেশীর সাথে সৎ ব্যবহার দ্বারা আল্লাহর ভালোবাসা পাওয়া যায়
(আরবী******)
১৮৬.রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেনঃ যে ব্যক্তি এটা পছন্দ করে যে, আল্লাহ ও আল্লাহর রাসূল তাকে ভালবাসুক, সে যেন সব সময় সত্য কথা বলে, তার কাছে কোন জিনিস আমানত রাখা হলে তা তার মালিকের নিকট অক্ষতভাবে ফেরত দেয় এবং নিজের প্রতিবেশীর সাথে ভালো ব্যবহার করে।
প্রতিবেশীকে কটু কথা বললে নামায রোযাও বৃথা
(আরবী************************)
১৮৭. এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ(সা) কে বললোঃ হে রাসূলুল্লাহ, অমুক মহিলা প্রচুর নফল নামায, রোযা ও সদকার জন্য প্রসিদ্ধ, কিন্তু প্রতিবেশীকে কটু কথা বলার মাধ্যমে কষ্ট দেয়। রাসূল(সা) বললেনঃ সে জাহান্নামে যাবে। লোকটি আবার বললেন হে রাসূলুল্লাহ, অমুক মহিলা সম্পর্কে খ্যাতি রয়েছে যে, সে খুবই কম নফল নামায, রোযা ও সদকা করে এবং পনিরের দু একটা টুকরো সদকা করে থাকে। কিন্তু নিজের জিহ্বা দিয়ে কাউকে কষ্ট দেয় না। রাসূল (সা) বললেনঃ সে জান্নাতে যাবে।
প্রথমোক্ত মহিলার দোযখে যাওয়ার কারণ এই যে, সে বান্দাহর হক বা অধিকার হরণ করেছে। প্রতিবেশীর অধিকার এই যে, তাকে কষ্ট দেয়া যাবে না। সে এ অধিকার সংরক্ষণ করে নি এবং দুনিয়ার জীবনে সে নিজের প্রতিবেশীর কাছে ক্ষমাও চায়নি। তাই জাহান্নামই তার উপযুক্ত আবাসস্থল।
কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম দুই প্রতিবেশীর বিরোধের বিচার হবে
(আরবী*******)
১৮৮.রাসূলুল্লাহ(সা) বলেছেন কেয়ামতের দিন সর্ব প্রথম যে দুই ব্যক্তির মামলা আল্লাহর আদালতে বিচারার্থে পেশ করা হবে তারা হবে দুজন প্রতিবেশী। (মেশকাত)
অর্থাৎ বান্দার হক সংক্রান্ত বিরোধের বিচারের জন্য কেয়ামতের দিন আল্লাহর আদালতের সামনে সর্ব প্রথম এমন দুই ব্যক্তি দাঁড়াবে। যারা পৃথিবীতে পরস্পরের প্রতিবেশী ছিল এবং একে অপরকে কষ্ট দিয়েছে ও যুলুম করেছে। তাদের মামলাই সর্ব প্রথম বিচারে জন্য পেশ করা হবে।