হাদীস শরীফ – ২য় খন্ড
মাওলানা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (রহ)
প্রসঙ্গ কথা
ইসলামী জীবন ব্যবস্থার অবয়ব নির্মানে হাদীস এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার অধিকারী। কুরআনী নির্দেশাবলীর মর্মার্থ অনুধাবন এবং বাস্তব জীবনে উহার যথার্থ অনুশীলনে হাদীসের প্রত্যক্ষ সহযোগিতা একান্ত অপরিহার্য। এ কারণেই যুগে যুগে দেশে দেশে হাদীসের সংকলন, অনুবাদ ও বিশ্লেষণের উপর সমধিক গুরুত্ব আরোপ করা ইয়াছে। সময়ের চাহিদা মোতাবেক হাদীসের বিন্যাস ও ভাষ্য রচনার দুরূহ কাজও অনেক মনীষী সম্পাদন করিয়াছেন।
বাংলা ভাষায় হাদীসের কিছু কিছু প্রাচীন গ্রন্থের অনুবাদ হইলেও উহার যুগোপযগী বিন্যাস ও ভাষ্য রচনার কাজটি প্রায় উপেক্ষিতই ছিল দীর্ঘকাল যাবত।ফলে এতদাঞ্চলের সাধারণ দ্বীনদার লোকেরা এসব অনুবাদ পড়িয়া খুব বেশী উপকৃত হইতে পারিতেন না;উহা হইতে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা লাভও অনেকের পক্ষে সম্ভবপর হইতেননা। সৌভাগ্যক্রমে, এককালের মহান ইসলামী চিন্তাবিদ ও দার্শনিক হযরত আল্লামা মুহাম্মাদ আব্দুর রহীম (রহ) সূদীর্ঘ প্রায় পঁচিশ বৎসরব্যাপী অশেষ সাধনাবলে ‘হাদীস শরীফ’ নামক গ্রন্থমালা প্রণয়ন করিয়া বাংলা ভাষাভাষী মুসলমানদের দীর্ঘকালের এক বিরাট অভাব পূরণ করিয়াছেন।
এই গ্রন্থে তিনি হাদীসের বিশাল এক ভান্ডার হইতে অতি প্রয়াজনীয় হাদীসসমূহ চয়ন করিয়া একটি নির্দিষ্ট ধারাক্রম অনুসারে সাজাইয়া দিয়াছেন। এক্ষেত্রে আগাগোড়াই তিনি ইসলামের মৌল বৈশিষ্ট্যের পাশাপাশি আধুনিক মন-মানসের চাহিদার প্রতিও লক্ষ্য রাখিয়াছেন। ইহাতে সন্নিবিষ্ট হাদীসসমূহের তিনি শুধু প্রাঞ্জল অনুবাদ ও যুগোপযোগী ব্যাখ্যা প্রদান করিয়াই ক্ষান্ত হন নাই বরং ইহার আলোকে প্রাসঙ্গিক বিধি-বিধানগুলিও অতি চমৱকারভাবে বিবৃত করিয়াছেন। এই দিক দিয়া তিনি একই সঙ্গে মাহাদ্দিস ও মুজতাহিদ উভয়ের দায়িত্বই অতি নিপুনভঅবে পালন করিয়া গিয়াছেন।
‘হাদীস শরীফ’ নামক এই গ্রন্থমালার প্রণয়নের কাজ তিনি শুরু করিয়াছিলেন ষাটের দশকের গোড়ার দিকে। ইহার প্রথম খন্ডের প্রথম ভাগ পুস্তকাকারে প্রকাশিত হয় ১৯৬৪ সালে- আইয়ুব শাহীর কারাগারে তাঁহার অবস্থানকালে। আর দ্বিতীয় ভাগ প্রকাশিত হয় ১৯৬ সালে। অতঃপর বিগত দুই যুগে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা হইতে ইহার পাঁচটি সংস্করণ প্রকাশিত হইয়াছে। একইভাবে ইহার দ্বিতীয় খন্ডও প্রথমতঃ দুই ভাগে এবং পরে একত্রে প্রকাশিত হইয়াছে বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থা হইতে। অবশ্য ইহার তৃতীয় খন্ড এখনও প্রকাশিত হইতে পারে নাই। এক্ষণে ‘খায়রুন প্রকাশনী’ গ্রন্থটির সকল খন্ডের প্রকাশনার দায়িত্ব গ্রহণ করিয়াছে এবং সে অনুসারে প্রথম খন্ড ইতিপূর্বেই প্রকাশিত হইয়াছে। এক্ষণে দ্বিতীয় খন্ড পাঠকদের হাতে তুলিয়া দেওয়া হইতেছে।
বর্তমানে কাগজ-কালির অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির দরুণ মুদ্রণ ব্যয় বহুলাংশে বাড়িয়া গিয়াছে। কিন্তু পাঠকদের ক্রয়-ক্ষমতার প্রতি লক্ষ্য রাখিয়া প্রকাশক গ্রন্থটির মূল্য যথাসম্ভব যুক্তিসঙ্গত সীমার মধ্যে রাখার চেষ্টা করিয়াছেন। এজন্য গ্রন্থের কলেবর সম্পূর্ণ অক্ষুন্ন রাখিয়া ইহার পৃষ্ঠা সংখ্যা কিছুটা হ্রাস করা হইয়াছে। অন্যদিকে, ইহার মুদ্রণ পারিপাট্য পূর্বাপেক্ষা অনেকাংশে বৃদ্ধি পাইয়াছে। আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, গ্রন্থের এই সংস্করণটি পাঠকদের ানকট অধিকতর সমাদৃত হইবে।
আল্লাহ রাব্বুল আলামীন গ্রন্থকারের এই দ্বীনী খিদমত কবুল করুন এবং তাঁহাকে জান্নাতুল ফিরদৌসে স্থান দিন, ইহাই আমাদের সানুনয় প্রর্থণা।
নভেম্বর ১৯৯১ ইং | মুহাম্মদ হাবীবুর রহমান
সেক্রেটারী মাওলানা আব্দুর রহীম ফাউন্ডেশন |
ভূমিকা
‘হাদীস শরীফ’ নামে সহীহ্ হাদীসের সংকলন, তরজমা ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ পর্যায়ে আজ হইতে পনর বৎসর পূর্বে যে গ্রন্থ রচনা শুরু করেছিলাম, ইতিপূর্বে বিগত ষাট দশকের প্রথমার্ধে উহার প্রথম খন্ডের দুইটি ভাগ প্রকাশিত হইয়া সুধিী পাঠকদের হাতে পৌঁছিয়াছে। বর্তমানে ইহার দ্বিতীয় খন্ডটি দুইটি ভাগে বিভক্ত হইয়া ঢাকাস্থ ‘মাহবুব প্রকাশনী’ কর্তুক প্রকাশিত হইল। হাদীস শরীঅফের এই খন্ডও আমি সুধী মন্ডলীর সম্মুখে পেশ করিতে পারিয়াছি, এই জন্য আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের অশেষ শোকরিয়া আদায় করিতেছি এবং যাঁহার বাণী ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এই গ্রন্থ. সেই বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মদ (সা) এর প্রতি জানাইতেছি অসংখ্য দরূদ ও সালাম।
‘হাদীস শরীফের’ প্রথম দুই ভাগের ভূমিকায় নিবেদন করিয়াছি যে, হাদীস কুরআনের অবিচ্ছেদ্য অংশ। দ্বীন ইসলামের প্রথম উৎস কুরআন, দ্বিতীয় ইৎস হাদীস। অতএব কুরআন বুঝিবার সঙ্গে সঙ্গে হাদীস সম্পর্কেও প্রত্যক্ষ জ্ঞান অর্জন করা মুসলমানদের পক্ষে একান্তই কর্তব্য। বস্তুত কুরআন বুঝিবার জন্যও হাদীস জানা অপরিহার্য্য, হাদীস না জানিলে কুরআন জানাও সম্ভব নায়। দ্বীন ইসলাম জানার জন্য কুরআন হইতে পাওয়া জ্ঞানও সম্পূর্ণ নয় হাদীসের জ্ঞান ব্যতীত। ব্যক্তিগত ভাবে আমি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের শোকরিয়া এই জন্যও আদায় করিতেছি যে, দেশবাসীর সমীপে পূর্ণাঙ্গ দীন ইসলামের দাওয়াত পেশ করিতে গিয়া দুইটি বড় খিদমত সুসম্পন্ন করার তওফিক আল্লাহ তা’আলা আমাকে দিয়াছেন। অন্মধ্যে একটি হইল, কুরআন মাজীদের যথোপযোগী ও আধুনিকতম জ্ঞানে সুসমৃদ্ধ তফসীর ‘তাফহীমুল কুরআন’ আর দ্বিতীয়টি হইল, হাদীসের এই বিরাট সংকলন।
ইসলাম সম্পর্কিত অন্যান্য বহু মৌলিক গ্রন্থ প্রণয়ন ও অনুবাদের প্রসঙ্গ না হয় এখানে অনুল্লিখিতই থাকিল।
হাদীস শরীফের এই দ্বিতীয় খন্ড দুইটি ভাগে বিভক্ত। প্রথম ভাগে ‘তাহারাত ও নামায’ সংক্রান্ত হাদীস এবং দ্বিতীয় ভাগে ‘রোযা, যাকাত, হজ্জ ও কুরবানী’ সংক্রান্ত হাদীসসমূহ সংকলিত হইয়াছে ও সবিস্তারে ব্যাখ্যা দেওয়াছে।
এই ইভয় ভাগের হাদীসসমূহের ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ এবং আলোচনা ও পর্যালোচনা পর্যায়ে আমি জরুরী সব কথাই লিপিবদ্ধ করিতে চেষ্টা করিয়াছি। এই ব্যাপারে প্রধাণত সিয়াহ সিত্তা ছাড়াও অন্যান্য বহু কয়খানি মৌলিক হাদীস গ্রন্থ হইতে বাছিয়া বাছিয়া সহীহমত হাদীসসমূহ সংকলিত করিয়াছি এবং উহার ব্যাখ্যা পর্যায়ে প্রখ্যাত ব্যাখ্যা গ্রন্থসমূহ মন্থন করিয়া ইসলামী মরীয়তের মনি-মুক্তা আহরণ করিতে ও তাহা এই গ্রন্থে সন্নিবেশিত করিতে চেষ্টা পাইয়াছি। এই কারণে গ্রন্থাবলীর নাম প্রত্যেক হাদীস ও উহার শেষে উল্লেখ করিয়াছি এবং স্বতন্ত্রভাবে সমস্ত গ্রন্থের তালিকা গ্রন্থপঞ্জী শিরোনামায় এক সঙ্গে সংযোজিত করিয়া দিয়াছি।
দ্বিতীয় খন্ড হাদীস গ্রন্থের এই দুইটি ভাগে যেসব হাদীস সংকলিত হইয়াছ, একটি শব্দে উহার শিরোনাম হইতেছে ‘ইবাদত’। অর্থাৎ আল্লাহ তা’আলা মানুষকে সর্বাত্মকভাবে তাঁহার প্রকৃত বান্দা বানাইবার জন্য এবং সমগ্র জীবন আল্লাহর ইবাদত পালনে উদ্বুদ্ধ করার উদ্দেশ্যে যেসব বুনিয়াদী ইবাদতের অনুষ্ঠান চিরস্থায়ীভাবে ফরয করিয়া দিয়াছেন, এই দুইটি ভাগে সেই সংক্রান্ত হাদীসসমূহই সংকলিত হউয়াছে। এই সব বিষয়ে রাসূলে করীম (স) নিজ ভাষায় যে ব্যাখ্যা দিয়াছেন ও কথা বুঝাইয়াছেন, তাহাই এই গ্রন্থে আলেঅচ্য বিষয়রূপে গ্রহণ করা হইয়াছে।
এই আরোচনাকে এক কথায় বলা যাইতে পারে ‘ফিকাহ’। কেননা কুরআন ও হাদীস হইতে মানুষের ব্যবহারিক জীবনের জন্য যেসব আইন-বিধান পাওয়া যায় ও উহার ভিত্তিতে যেসব খুটিনাটি মসলা জানা যায়, তাহারই অপর নাম ‘ফিকাহ’। ফিকাহর এই সব মসলা সাধারণভাবে প্রত্যেক মুসলমানেরই জানিয়া লওয়া আবশ্যক। কিন্তু শুধু মসলামাসায়েল শিক্ষা দেওয়াই এই গ্রন্থের উদ্দেশ্য নয়। মুসলমানের ব্যবহারিক জীবনের নিয়ম-নীতি ও আইন বিধান যে ফিকাহ রচয়িতাদের মনগড়া ও স্বকল্পিত নয়, বরং তাহার সবই মূলত কুরআন ও হাদীস হইতে নিঃসৃত ও উৎসারিত, মূল দলীলের ভিত্তিতে তাহা জানাইয়া দেওয়া এই গ্রন্থের অন্যতম লক্ষ্য। কুরআনের সঙ্গে সঙ্গে হাদীস জানা ও শেখা যে মুসলমানের পক্ষ্যে কতখানি গুরুত্বপডূর্ণ, তাহা এই গ্রন্থ আদ্যেঅপান্ত পাঠ করিলে স্পষ্টরূপে বুঝিতে পারা যাইবে। এই উদ্দেশ্যে আমরা এক একটি হাদীসের ব্যাখ্যা প্রসঙ্গে সেই সংক্রান্ত অন্যান্য হাদীসেরও উদ্ধৃতি দিয়াছি এবং সেই হাদীসের সঙ্গে কুরআন মাজীদের যে যে আয়াতের কোন না কোন সম্পর্ক আছে, প্রসঙ্গত সেই আয়াতটিরও উল্লেখ করিয়াছি। শুধু তাহাই নয়, আলেঅচ্য হাদীসের প্রতিপাদ্য বিষয়ে মুহাদ্দিস ও ফিকাহবিদগণের অভিমত তাঁহাদের প্রত্যেকের দলীল-প্রমাণসহ উল্লেখ করিতে চেষ্টা করিয়াছি। কোন কোন ক্ষেত্রে দলীলের ভিত্তিতে যে মতটি অগ্রাধিকার পাোয়ার যোগ্য, তাহাও চিহ্নিত করিয়াছি।
আমি আমার অতীব নগণ্য সামান্য জ্ঞান ও বুঝিবার যোগ্যতা অনুযায়ী হাদীস সমূহের তরজমা ও ব্যাখ্যঅ করিয়াছি এবং উহার ভিত্তিতে সর্বজনমান্য মুহাদ্দিস, ফিকাহবিদ ও ইমামগণের মতামতের নির্ভরযোগ্য গ্রন্থাবলীর তথ্যানুযায়ী উল্লেখ করিয়অছি। কোথাও ভুর হইয়া থাকিলে সেইজন্য এখনই আল্লাহর নিকট তওবা করিতেছি এবং কোন বিজ্ঞ পাঠক আমার ভুল ধরাইয়া দিলে তাহা সংশোধনের জন্য প্রস্তুত থাকার কথা সবিনয়ে জানাইয়া দিতেছি।
আমার এই ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা যদি আল্লাহ রাব্বুল আ’লামীনের নিকট গৃহীত হয়, রাসূলে করীম (স)-ও যদি ইহাকে দ্বীনের যথার্থ খিদমত রূপে পছন্দ করেন, মুসলমান ভাইগণ ইহার সাহায্যে দ্বীন ইসলামের অন্যতম মৌল উৎসের ও উহার আসল ভাষার সহিত পরিচিতি হওয়ার সুযোগ লাভ করেন এবং ইসলামী ইবাদতের সৌন্দর্য মাহাত্ম্য অনুধাবন করিয়া উহা পালন করার প্রেরণা পান, তাহা হইলে আমার এই শ্রম সার্থক হইয়াছে বলিয়া মনে করিব।
ইহার কারণেও যদি আল্লাহ তা’আলা পরকালে আমাকে নাজাত দেন তাহা হইলে উহা আমার প্রতি তাঁহার বিশেষ অনুগ্রহের প্রকাশ হইবে, এই ভরসা অন্তরে গভীরভাবে পোষণ করিতেছি।
এই সঙ্গে পাঠক সমাজকে জানাইয়া দেওয়া প্রয়োজন মনে করিতেছি যে, হাদীস শরীফের তৃতীয় খন্ড (সামাজিক জীবন সংক্রান্ত হাদীসসমূহের সংকলন) বর্তমানে তৈরীর পথে। ইনশা’ আল্লাহ উহাও যথাসময়ে প্রকাশিত হইবে।
১৯৭৫ ইং | মুহাম্মদ আব্দুর রহীম |
রাসূলে কারীম (স) বলিয়াছেনঃ আল্লাহ তা’আলা সেই লোকের মুখমন্ডল উজ্জ্বল-উদ্ভাসিত করিবেন, চির সবুজ চির তাজা করিয়া রাখিবেন, যে আমার কথা শুনিয়া মুখস্ত করিয়া রাখিবে কিংবা স্মৃতিপটে সংরক্ষিত রাখিবে এবং অপর লোকের নিকট তাহা পৌছাইয়া দিবে। জ্ঞানের বহু ধারকই প্রকৃত জ্ঞানী নহে, তবে জ্ঞানের বহু ধারক উহা এমন ব্যক্তির নিকট পৌছাইয়া দেয় যে তাহার অপেক্ষা অধিক সমঝদার।
-আবু দাউদ
***************************
আল্লাহ তা’আলা ধন্য করিবেন সেই ব্যক্তিকে, যে আমার নিকট হইতে কোন কিছু শুনিল এবং উহা যেভাবে শুনিল সেই ভাবেই অন্য লোকের নিকট পৌছাইয়া দিল। কেননা প্রথম শ্রোতার অপেক্ষঅ উহা পরে যাহার নিকট পৌছায় সে-ই উহার সংরক্ষণকারী হইয়া থাকে।
-তিরমিযী
হাদীস শরীফ
দ্বিতীয় খন্ড
কুরআন ও হাদীস পাঠ করে দ্বীন-ইসলাম সম্পর্কে সরাসরি জ্ঞান অন্বেষণকারীদের হাতে