86- بَابُ الْوَفَاءِ بِالْعَهْدِ وَإِنْجَازِ الْوَعْدِ
পরিচ্ছেদ – ৮৬: চুক্তি পূরণ, প্রতিশ্রুতি রক্ষা ও অঙ্গীকার
পালন করার গুরুত্ব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَأَوۡفُواْ بِٱلۡعَهۡدِۖ إِنَّ ٱلۡعَهۡدَ كَانَ مَسُۡٔولٗا﴾ [الاسراء: ٣٤]
অর্থাৎ “আর প্রতিশ্রুতি পালন করো; নিশ্চয়ই প্রতিশ্রুতি সম্পর্কে কৈফিয়ত তলব করা হবে।” (সূরা বানী ইস্রাঈল ৩৪ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেছেন,
﴿ وَأَوۡفُواْ بِعَهۡدِ ٱللَّهِ إِذَا عَٰهَدتُّمۡ ﴾ [النحل: ٩١]
অর্থাৎ “তোমরা যখন পরস্পর অঙ্গীকার কর তখন আল্লাহর অঙ্গীকার পূর্ণ কর।” (সূরা নাহ্ল ৯১ আয়াত)
তিনি অন্য জায়গায় বলেছেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُوٓاْ أَوۡفُواْ بِٱلۡعُقُودِۚ ﴾ [المائدة: ١]
অর্থাৎ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা চুক্তিসমূহ পূর্ণ কর।” (সূরা মাইদাহ ১ আয়াত)
তিনি আরো বলেছেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ لِمَ تَقُولُونَ مَا لَا تَفۡعَلُونَ ٢ كَبُرَ مَقۡتًا عِندَ ٱللَّهِ أَن تَقُولُواْ مَا لَا تَفۡعَلُونَ ٣ ﴾ [الصف: ٢، ٣]
অর্থাৎ “হে বিশ্বাসীগণ! তোমরা যা কর না, তা তোমরা বল কেন? তোমরা যা কর না তোমাদের তা বলা আল্লাহর নিকট অতিশয় অসন্তোষজনক।” (সূরা স্বাফ্ফ ২-৩ আয়াত)
1/694 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أنَّ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: « آيَةُ المُنَافِقِ ثَلاَثٌ: إِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا وَعَدَ أخْلَفَ، وَإِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ ». متفقٌ عَلَيْهِ .
زَادَ في رِوَايةٍ لمسلم: « وإنْ صَامَ وَصَلَّى وَزَعَمَ أنَّهُ مُسْلِمٌ » .
১/৬৯৪। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মুনাফিকের চিহ্ন হল তিনটি (১) কথা বললে মিথ্যা বলে। (২) ওয়াদা করলে তা খেলাপ করে। এবং (৩) আমানত রাখা হলে তাতে খিয়ানত করে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
মুসলিমের এক বর্ণনায় আছে, ‘‘যদিও সে রোযা রাখে এবং নামায পড়ে ও ধারণা করে যে, সে মুসলিম।’’
2/695 وَعَن عَبدِ اللهِ بنِ عَمرِو بنِ العَاصِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: أنَّ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: « أرْبَعٌ مَنْ كُنَّ فِيهِ كَانَ مُنَافِقاً خَالِصاً، وَمَنْ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنْهُنَّ كَانَتْ فِيهِ خَصْلَةٌ مِنَ النِّفَاقِ حَتَّى يَدَعَهَا: إِذَا اؤْتُمِنَ خَانَ، وَإِذَا حَدَّثَ كَذَبَ، وَإِذَا عَاهَدَ غَدَرَ، وَإِذَا خَاصَمَ فَجَرَ ». متفقٌ عَلَيْهِ
২/৬৯৫। ‘আব্দুল্লাহ ইবনে ‘আমর ইবনুল ‘আস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যার মধ্যে চারটি স্বভাব পাওয়া যাবে, সে খাঁটি মুনাফেক হয়ে যাবে। আর যার মধ্যে এগুলোর একটি স্বভাব থাকবে, তার মধ্যে মুনাফেকীর একটি স্বভাব থেকে যাবে; যতক্ষণ না সে তা বর্জন করবে। (১) তাকে আমানত দেওয়া হলে সে খিয়ানত করবে। (২) কথা বললে মিথ্যা বলবে। (৩) ওয়াদা করলে খেলাপ করবে। এবং (৪) ঝগড়া করলে গালি-গালাজ করবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [2]
3/696 وَعَن جَابِرٍ رضي الله عنه، قَالَ: قَالَ لِي النَّبِيُّ (صلى الله عليه و سلم): « لَوْ قَدْ جَاءَ مَالُ الْبَحْرَيْنِ أعْطَيْتُكَ هَكَذَا وَهَكَذَا وَهكَذَا » فَلَمْ يَجِئْ مَالُ الْبَحْرَينِ حَتَّى قُبِضَ النَّبيُّ (صلى الله عليه و سلم)، فَلَمَّا جَاءَ مَالُ الْبَحْرَيْنِ أمَرَ أَبُو بَكْرٍ رضي الله عنه فَنَادَى: مَنْ كَانَ لَهُ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) عِدَةٌ أَوْ دَيْنٌ فَلْيَأتِنَا، فَأتَيْتُهُ وَقُلْتُ لَهُ: إنَّ النَّبيَّ (صلى الله عليه و سلم) قَالَ لِي كَذَا وَكَذَا، فَحَثَى لِي حَثْيَةً فَعَدَدْتُهَا، فَإِذَا هِيَ خَمْسُمِئَةٍ، فَقَالَ لِي: خُذْ مِثْلَيْهَا . متفقٌ عَلَيْهِ
৩/৬৯৬। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ‘‘বাহরাইন থেকে মাল এলে তোমাকে এতটা, এতটা এবং এতটা দেব।’’ অতঃপর বাহরাইনের মাল আসার পূর্বেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মারা গেলেন। তারপর বাহরাইনের মাল এসে গেলে আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ঘোষণা করলেন, ‘যার রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট প্রাপ্য কোন প্রতিশ্রুতি অথবা ঋণ আছে, সে আমার নিকট আসুক।’ (ঘোষণা শুনে) আমি (জাবের) তাঁকে বললাম যে, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে এতটা মাল দেওয়ার ওয়াদা করেছিলেন।’ অতঃপর তিনি আঁজলা ভরে আমাকে দিলেন। আমি তা গুণে পাঁচশ’ পেলাম। তারপর তিনি বললেন, ‘এর দ্বিগুণ আরো নাও।’ (বুখারী ও মুসলিম) [3]
[1] সহীহুল বুখারী ৩৩, ২৬৮২, ২৭৪৯, ৩১৭৮, মুসলিম ৫৮, তিরমিযী ২৬৩২, নাসায়ী ৫০২০, আবূ দাউদ ৪৬৮৮, আহমাদ ৬৭২৯, ৬৮২৫, ৬৮৪০
[2] সহীহুল বুখারী ৩৪, ২৪৫৯, ৩১৪৯, ৬০৯৫, মুসলিম ৫৮, তিরমিযী ২৬৩২, নাসায়ী ৫০২০, আবূ দাউদ ৪৬৮৮, আহমাদ ৬৭২৯, ৬৮২৫-৬৮৪০
[3] সহীহুল বুখারী ২২৯৬, ২৫৯৮, ২৬৮৩, ৩১৩৭, ৩১৬৫, ৪৩৮৩, মুসলিম ২৩১৪