এই ৫ম যুগের অপর কতিপয় মোহাদ্দেছ
১। মাওলানা ছৈয়দ গোলাম আলী আজাদ বিলগ্রামী (মৃঃ ১২০০ হিঃ)। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা ছৈয়দ তোফাইল আহমদ বিলগ্রামীর নিকট এবং হাদীছসহ উচ্চ শিক্ষা আপন নানা ছৈয়দ আবদুল জলীল বিলগ্রামীর নিকট লাভ করেন। অতঃপর তিনি মদীনায় শায়খ হায়াত সিন্ধী মদনী হইতে হাদীছের ‘এজাজত’ হাছিল করেন।
হাদীছে তাঁহার ‘জুউদদারারী’ (আরবী*********) নামে বোখারী শরীফের একটি আরবী শরাহ্ রহিয়াছে। (অসম্পন্ন) এতদভিন্ন তাঁহার বিভিন্ন বিষয়ে বহু মূল্যবান কিতাব রহিয়াছে। তাঁহার ‘ছাবহাতুল মারজান’ (আরবী*******) পাক-ভারত ইতিহাসের একটি অমূল্য গ্রন্থ।
২। মাওলানা খায়রুদ্দীন সুরতী (মৃঃ ১২০৬ হিঃ)। তিনি ফনুনাতের যাবতীয এলম স্বদেশ বোম্বাই-এর সুরতেই শিক্ষা করেন। অতঃপর হজ্জ উপলক্ষে হেজাজে যাইয়া হাদীছ তথায় শায়খ মোহাম্মদ হায়াত সিন্ধীর নিকট অধ্যয়ন করেন। তথা হইতে দেশে ফিরিয়া ৫০ বৎসরকাল সুরতে হাদীছ শিক্ষা দেন। তিনি এ যুগের একজন বিশিষ্ট মোহাদ্দেছ। হাদীছে তাঁহার বহু শাগরিদ রহিয়াছে।
৩। মাওলানা আবদুল বাছেত ইবনে রুস্তম আলী কন্নুজী (মৃঃ ১২২৩ হিঃ)। হাদীছে তাঁহার দুইটি কিতাব রহিয়াছে –(ক) ‘নাজমুল লাআলী’ (আরবী*********) চল্লিশ হাদীছের শরাহ।
৪। মাওলানা আলীমুদ্দীন কন্নুজী (মৃঃ ১২২৩ হিঃ)। তিনি আবদুল বাছেত কন্নুজীর শাগরিদ ছিলেন।
৫। মাওলানা আবদুল আলী ‘বাহরুল উলুম’ ফিরিঙ্গী মহল্লী (মৃঃ ১২২৫ হিঃ)। তিনি পাক-ভারতের প্রসিদ্ধ দরছে নেজামিয়া-এর প্রতিষ্ঠানা মোল্লা নেজামুদ্দীন ছেহালবীর পুত্র। দরছে নেজামিয়ার যাবতীয় বিষয় তিনি তাঁহার পিতার নিকট শিক্ষা করেন, অতঃপর তাঁহার শাগরিদ মোল্লা কামালের নিকট সে সকলের পুনরালোচনা করেন। তিনি যথাক্রমে শাহজাহানপুর, বুহার (বর্ধমান) ও মাদ্রাজে শিক্ষাদান করেন। তিনি পাক-ভারতের শ্রেষ্ঠ আলেমদের অন্যতম। তাঁহার কিতাব ‘আরকানে আরবাআ’ (আরবী*******) হাদীছে তাঁহার গভীর জ্ঞানের পরিচায়ক। তিনি ৮৩ বৎসর বয়সে মাদ্রাজে এন্তেকাল করেন।
মির্জা হাছান আল লক্ষৌবী
[মৃঃ ১২২৬ হিঃ মোঃ ১৮১১ ইং]
০৬। মির্জা হাছান আলী (ছগীর) মোহদ্দেছ লক্ষৌর ইয়াহইয়াগঞ্জের অধিবাসী ছিলেন। তিনি হাদীছ শাহ আবদুল আজীজী দেহলবী ও শাহ রফীউদ্দীন দেহলবীর নিকট শিক্ষা করেন এবং আজীবন লক্ষৌতে হাদীছ শিক্ষা দেন। ফিরিঙ্গী মহল্লার আলেমগণ তাঁহার নিকট হাদীছ শিক্ষা করেন। হাদীছে তাঁহার বহু শাগরিদ রহিয়াছে। নীচে কতিপয় প্রসিদ্ধ শাগরিদের নাম দেওয়া গেলঃ
তাঁহার শাগরিদগণঃ
মাওলানা মোহাম্মদ আল মলীহাবাদী। তিনি মলীহাবাদ ও টংকে হাদীছ শিক্ষা দেন।
মাওলানা আবুর কায়ের মুঈনুদ্দীন মাশহাদী।
মাওলানা কাদেম আলী ছন্দিলী।
মাওলানা শাহ মোহাম্মদ ছাঈদ ছাদেকপুরী।
মাওলানা ছৈয়দ আওলাদ হাছান কন্নুজরী। পরে তিনি শাহ্ আবদুল আজীজ দেহলবীর খেদমতে পৌঁছেন।
মাওলানা হোছাইন আহমদ মলীহাবাদী। তিনিও পরে শাহ্ আবদুল আজীজ দেহলবীর খেদমতে পৌঁছেন।
শাহ্ আবদুর রাজ্জাক ফিরিঙ্গী মহল্লী।
মাওলানা মহীউদ্দীন কাকুরবী।
৭। শায়খ ছালামুল্লাহ রামপুরী (মৃতঃ ১২২৯ হিঃ)। তিনি শায়খ আবদুল হক মোহাদ্দেছ দেহলবীর ৭ম অধঃস্তন পুরুষ। শায়খ দেহলবীর বংশধরগণের মধ্যে যাঁহারা শিক্ষাদান বা কিতাব রচনার মাধ্যমে হাদীছের খেদমত করিয়াছেন তিনি তাঁহাদের সর্বশেষ ব্যক্তি বলিয়া মনে হয়। তিনি হযরত শাহ্ আবদুল আজীজ দেহলবীর সমসাময়িক ছিলেন। হাদীছে তাঁহার নিম্নলিখিত কিতাব-সমূহ রহিয়াছে –(ক) ‘আল মোহাল্লা’ মোআত্তা ইমাম মালেকের শরাহ্। (খ) ‘রেছালায়ে উছুলে হাদীছ’ (আরবী******)। (গ) বোখারী শরীফের ফারছী তরজমা। (ঘ) ‘তরজমায়ে শামায়েলে তিরমিজী’। (ঘ) ‘তরজমায়ে শামায়েলে তিরমিজী’।
৮। মাওলানা আবু ইছহাক আজমগড়ী (মৃঃ ১২৩৪ হিঃ)। তিনি শাহ্ নাছের এলাহাবাদী ও শাহ্ ফাখের এলাহাবাদীর শাগরিব ছিলেন। হাদীছে তাঁহার কিতাব হইল ‘নূরুল আইনাইন’ –(আরবী****************)।
৯। শায়খ ওলীউল্লাহ্ ফোররখাবাদী (মৃঃ ১২৪৯ হিঃ)। তাঁহার ‘আল্ মাতরুছছাজ্জাজ’ –(আরবী*******) নামে মোছলেম শরীফের একটি শরাহ্ রহিয়াছে।
১০। মাওলানা ইরতেজা আলী গোপামুবী (মৃঃ ১২৫১ হিঃ)। তিনি হায়দর আলী ছন্দিলীর শাগরিদ ছিলেন। ‘মাদারিজুল ইছনাদ’ তাঁহার হাদীছের কিতাব।
১১। শায়খ মোহাম্মদ আহছান ওরফে ‘হাফেজ দরাজ’ পেশাওয়ারী (মৃঃ ১২৬৩ হিঃ)। তিনি প্রায় যাবতীয় এলম তাঁহার মাতার নিকট শিক্ষা করেন এবং সমগ্র জীবন উহার শিক্ষা ও রচনায় ব্যয় করেন। হাদীছে তাঁহার ‘মানহুল বারী’ (আরবী******) বোখারী শরীফের একটি মূল্যবান শরাহ। -আনওয়ারুল বারীর ভূমিকা-২০১ পৃঃ
১২। মাওলানা ছাখাওয়াত আলী জৌনপুরী (মৃতঃ ১২৭৪ হিঃ)। তিনি হাদীছসহ যাবতীয় এলম মাওলানা কুদরত আলী রুদলবী, মাওলানা আবদুল হাই দেহলবী, মাওলানা মোহাম্মদ ঈমাঈল শহীদ দেহলবী ও মাওলানা আহমদুল্লাহ আনামীর নিকট শিক্ষাক করেন। তিনি আজীবন এলম শিক্ষায় রত ছিলে। হজ্জ করিতে যাইয়া তিনি ১২৭৪ সনে মক্কা শরীফে এন্তেকাল করেন। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁহার বহু কিতাবরহিয়াছে। ‘আল কাবীম’ (আরবী**********) তাঁহার হাদীছের কিতাব। তাঁহার শাগরিদের সংখ্যা বহু। বঙ্গের প্রসিদ্ধ ধর্মপ্রচারক মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরীও তাঁহার শাগরিদ।
১৩। মাওলানা আব্দুল হালীম ফিরিঙ্গী মহল্লী (মৃঃ ১২৮৫ হিঃ)। তিনি ফিরিঙ্গী মহল্লার (লক্ষৌ) প্রসিদ্ধ এলমী খান্দানে (কুতবুদ্দীন শহীদ ছেহালবীর খান্দান) ১২৩৯ হিঃ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রাথমিক শিক্ষা তাঁহার পিতা মোল্লা আমীনুল্লাহ ফিরিঙ্গী মহল্লীয় নিকট এবং দরছে নেজামিয়ার উচ্চ শিক্ষা আপন চাচা মাওলানা মুফতী ইউছুফ লক্ষৌবী ও আপন নানা মুফতী জহুরুল্লা লক্ষৌবীর নিকট লাভ করেন। হাদীছ তিনি শাহ্ আবদুল আজীজ দেহলবীর শাগরিদ মির্জা হাছান আলী ছগীর মোহাদ্দেছ লক্ষৌবী ও মাওলানা হোছাইন আহমদ মলীহাবাদীর নিকট অধ্যায়ন করেন। অতঃপর তিনি মক্কা মদীনার বহু মোহাদ্দেছ হইতে উহার ‘এজাজত’ লাভ করেন। তিনি বিভিন্ন মাদ্রাছায় আজীবন হাদীছ-তফছীর প্রভৃতি এলম শিক্ষাদানে ব্যাপৃত ছিলেন। বিভিন্ন বিষয়ে তাঁহার বহু মূল্যবান কিতাব রহিয়াছে। তাঁহার শাগরিদের সঙখ্যা অনেক। তাঁহার সুযোগ্য পুত্র ও স্বনামখ্যাত আলেম মাওলানা আবদুল হাই লক্ষৌবী তাঁহার শাগরিদ।
১৪। মুফতী মোহাম্মদ ইউছুফ ফিরিঙ্গী মহল্লী (১২২৩-১২৮৬ হিঃ)। তিনি ফিরিঙ্গী মহল্লার এলমী খান্দানের মুফতী মোহাম্মদ আছগর ছাহেবের পুত্র। তিনি আজীবন শিক্ষাদান ও কিতাব রচনায় ব্যাপত ছিলেন। হাদীছে তাঁহার বোখারী শরীফের একটি ‘তা’লীকাত’ রহিয়াছে।
১৫। ছৈয়দ আমীর হাছান ছাহছাওয়ানী মোহাদ্দেছ (১২২৩-১২৯১ হিঃ)। তিনি মুফতী ছদরুদ্দীন খাঁ দেহলবী, শায়খ আবদুল হক বেনারসী, খাজা আবদুল গনী মুজাদ্দেদী ও মিঞা ছাহেব প্রমুখ বিখ্যাত মোহাদ্দেছগণের নিকট হাদীছ ও অন্যান্য এলম শিক্ষা করেন। অতঃপর তিনি সমগ্র জীবন হাদীছ-কোরআন শিক্ষাদানে আত্মনিয়োগ করেন।
১৬। মাওলানা শাহ আবদুর রাজ্জাক ফিরিঙ্গী মহল্লী (১২৩৬-১৩০৩ হিঃ)। তিনি যাবতীয় ফনুনাত আপন খান্দানের আলেমদের নিকট শিক্ষা করেন এবং হাদীছ শাহ্ আবদুল আজীজ দেহলবীর শাগরিদ মির্জা হাছান আলী মোহাদ্দেছ ও মাওলানা হোছাইন আহমদ মলীহাবাদীর নিকট অধ্যয়ন করেন। মাওলানা আদুল হাই লক্ষৌবীর পিতা মাওলানা আবদুল হালীম তাঁহার সমপাঠী ছিলেন। তিনি আজীবন হাদীছ ও ফেকাহ্ শিক্ষাদানে ব্রতী থাকেন। মাওলানা আবদুল বাকী ফিরিঙ্গী মহল্লী তাঁহার নিকট হাদীছ শিক্ষা করেন। তিনি একজন বড় ওলীআল্লাহ ছিলেন।
নওয়াব ছিদ্দীক হাছান খাঃ
[১২৪৮-১৩০৭ হিঃ মোঃ ১৮৩২-১৮৯০ ইং]
১৭। নওয়াব ছিদ্দীক হাছান খাঃ বেরেলবীর এক সম্ভ্রান্ত ছৈয়দ বংশে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতা ছৈয়দ আওলাদ হাছান কন্নুজী শাহ্ রফীউদ্দিন দেহলবীর শাগরিদ ও ছৈয়দ শহীদ বেরেলবীর খলীফা ছিলেন। তিনি (নওয়াব ছাহেব) ফনুনাত তাঁহার ভ্রাতা ছৈয়দ আহমদ হাছান আর্শী ও মৌলবী মোহাম্মদ হোছাইন শাহ্জাহানপুরী প্রমুখ বিশিষ্ট আলেমগণের নিকট শিক্ষা করেন এবং হাদীছের বোখারী শরীফের বেশীর ভাগ তিনি শাহ্ আবদুল আজীজ দেহলবীর শাগরিদ মুফতী ছদরুদ্দীন খাঁ দেহলবীর নিকট অধ্যয়ন করেন। অতঃপর কাজী শাওকানী ইয়ামানীর শাগরিদ শায়খ আবদুল হক বেনারসী প্রমুখ বিশিষ্ট আলেমগণ হইতে উহার ‘এজাজত’ লাভ করেন।
ভূপালের বিধবা নওয়াব শাহজাহান বেগমের সহিত তাঁহার দম্পত্য সম্পর্ক স্থাপিত হওয়ার পর তিনি অগাধ সম্পত্তি অধিকারী হন এবং এলমে দ্বীনের প্রচার ও দ্বীনী কিতাবের প্রকাশে উহা ব্যয় করেন। তিনি বিভিন্ন বিষয়ে দুই শতের অধিক কিতাব লিখিয়াছেন। হাদীছ সম্পর্কেও তাঁহার অনেক কিতাব রহিয়াছে। নিম্নে ইহার কতিপয়ের নাম দেওয়া গেল। (ক) ‘আও নুল বারী’ (আরবী*******************) দুই খণ্ডে সমাপ্ত। (খ) ‘আছছিরাজুল ওহহাজ’ –(আরবী******************************************) দুই খণ্ডে। (গ) ‘ফতহুল আল্লাম (আরবী***********) (ঘ) ‘মিনহাজুল ওছুল” (আরবী**********) (ঙ) ‘আররাহমাতুল মোহদাত’ (আরবী***********************)। -প্রকাশিত (চ) ‘নুজলুল আবরার’ (আরবী***************) (ছ) ‘ফতহুল মুগীছ’ (আরবী*************)
১৮। মাওলানা বশীর ছাহ্ছাওয়ানী (মৃঃ ১৩২৬ হিঃ মোঃ ১৯০৮ ইং)
তিনি হাদীছ হযরত মিঞা ছাহেব দেহলবীর নিকট শিক্ষা করেন। তিনি শায়খ হোছাইন আরব ইয়ামানী, ভূপালী হইতে উহার এজাজত লাভ করেন। তিনি প্রথমে আগ্রার সেন্ট জেমস কলেজের অধ্যায়পক নিযুক্ত হন, অতঃপর ভূপালের শিক্ষা ডিরেক্টরের পদ লাভ করেন। ১৩০৭ সালে নওয়াব ছিদ্দীক হাছান খাঁর এন্তেকালের পর তিনি দিল্লীর হাওজওয়ালী মসজিদে হাদীছ- তফছীর শিক্ষায় আত্মনিয়োগ করেন। ভূপালে অবস্থান কালেও তিনি ও ব্যাপারে সুযোগের সদ্ব্যবহার করিতেন।
মাওলানা শামছুল হক ডয়ানবী
[১২৭৩-১৩২৯ হিঃ মোঃ ১৮৫৬-১৯১১ ইং]
১৯। মাওলানা আবু তৈয়্যব শামছুল হক ডয়ানবী ইবনে শায়খ আমীর আলী পাটনার আজীমাবাদে ১২৭৩ হিঃ জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ফনুনাত মাওলানা লুতফুল আলী (?) বিহারী, মাওলানা ফজলুল্লাহ লক্ষৌবী ও মাওলানা কাজী বশীরুদ্দীন জন্নুজী প্রমুখ আলেমগণের নিকট শিক্ষা করেন এবং হাদীছ মাওলানা ছৈয়দ নজীর হোছাইন ওরফে ‘মিঞা ছাহেব’ দেহলবী, কাজী শায়খ হোছাইন আরব ইয়ামানী ভূপানী, আল্লামা আহমদ আবদুর রহমান ছেরাজ তায়েফী ও আল্লামা নো’মানী আফেন্দী বাগদাদী প্রমুখ মনীষীবৃন্দের নিকট অধ্যায়ন করেন।
হাদীছে তাঁহার কিতাব –(ক) ‘গায়াতুল মাকছুদ’ (আরবী******************) ১৯৮ পৃষ্ঠার এক খণ্ড মাত্র প্রকাশিত হইয়াছে। (খ) ‘আওনুল মা’বুদ’ (আরবী**************) তাঁহার ভ্রাতা শরফুল হকের নামে প্রকাশিত। (গ) ‘আতা’লীকুল মুগনী’ -(আরবী**************) (আরবী**************) প্রভৃতি।
২০। মাওলানা হাফেজ আবদুল্লাহ গাজীপুরী (মৃঃ ১৩৩৭ হিঃ)। তিনি হাদীছ মিঞা ছাহেব দেহলবীর নিকট শিক্ষা করেন এবং গাজীপুরের ‘চশমায়ে রহমত’ মাদ্রাছায় উহা শিক্ষাদান করেন। তিনি মিঞা ছাহেব মরহুমের একজন বিশিষ্ট শাগরিদ ও বড় মোহাদ্দেছ ছিলেন। তাঃহার শাগরিদের সঙখ্যা অনেক। নিম্নে কতিপয় প্রসিদ্ধ শাগরিদের নাম দেওয়া গেল।
মাওলানা ছাঈদ বেনারসী।
মাওলানা আবদুননুর হাজীপুরী।
মাওলানা শাহ্ আইনুল হক।
মাওলানা আবদুছ্ছালাম মোবারকপুরী।
মাওলানা আবদুর রহমান মোবারকপুরী।
২১। মাওলানা শরফুদ্দীন পাঞ্জাবী দেহলবী। তিনি পাঞ্জাবের গুজরাটে জন্মগ্রহণ করেন এবং দিল্লীতে জীবন অতিবাহিত করেন। তিনি হাদীছ মাওলানা আবদুল হক মোহাদ্দেছ মুলতানীর নিকট শিক্ষা করেন এবং শায়খ হোছাইন আরব হইতে উহার ‘এজাজত’ লাভ করেন। তিনি প্রথমে দিল্লীর ‘রিয়াজুল উলুম’ মাদ্রাছায় মিঞা ছাহেবের স্থলে হাদীছ শিক্ষা দেন, অতঃপর ‘মাদ্রাছায়ে ছাঈদিয়া’ নামে দিল্লীতে এক নূতন মাদ্রাছা স্থাপন করেন। হাদীছে তাঁহার কতিপয় মূল্যবান কিতাব রহিয়াছে। যথা –(ক) ‘তানকীহুর রুওয়াত’ (আরবী**************)। (খ) ‘শরহে মোছনাদে ইমাম আহমদ’। ইহাতে তিনি মোছনাদকে বোখারী শরীফের রীতি অনুসারে বিষয় অনুপাতে সাজাইয়া পরে উহার ব্যাখ্যা করিয়াছেন। নিৎসন্দেহে ইহা একটি বিরাট কাজ। ইহার প্রথম দিকে ৬০ পৃষ্ঠা পর্যন্ত ছাপা হইয়াছে। -তাজকেরায়ে ওলামায়ে হাদীছে হিন্দ-১৮১ পৃঃ
ছৈয়দ মোহাম্মদ শাহ্ রামপুর
[১৩৩৮ হিঃ মোঃ ১৯২০ ইং]
২২। ছৈয়দ মোহাম্মদ শাহ্ অনুমান ১২৫৫ হিঃ রামপুরের এক সম্মানিত ছৈয়দ পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। হাদীছ ও অপর যাবতীয় এলম তিনি তাঁহার পিতা ছৈয়দ হাছান শাহ্ রামপুরীর নিকট শিক্ষা করেন। মিঞা হাছান শাহ্ হযরত শাহ্ ইছহাক দেহলবীর শাগরিদ ছিলেন। মোহাম্মদ শাহ্ প্রথমে টঙকের নওয়াবের মাদ্রাছায়, পরে নিজ বাড়ীতে পূর্ণ অর্ধশতাব্দীকাল হাদীছ শিক্ষা দেন। হাদীছের রামপুরী ছিলছিলা তাঁহার মাধ্যমেই বিস্তার লাভ করে। তিনি মাওলানা কারামত আলী জৌনপুরীর খলীফা ছিলেন।
তাঁহার শাগরিদঃ
তাঁহার শাগরিদের সংখ্যা অনেক। নীচে তাঁহার কতিপয় প্রসিদ্ধ শাগরিদের নাম দেওয়া গেলঃ
হাফেজ ওজীর মোহাদ্দেছ।
হাফেজ আবদুল ওহহাব খাঁ।
মিয়াঁ নেজাফত আলী।
মোল্লা আজীমুদ্দীন বাঙ্গালী।
মাওলানা মোহাম্মদ রেজা খাঁ (রাজা খাঁ)।
হাফেজ মোহাম্মদ ওমর খাঁ।
মাওলানা আবদুল ওয়াজেদ বেলায়েতী।
মাওলানা কাজী-জাদা সুরতী।
মাওলানা শরাফতুল্লাহ।
ছৈয়দ হামেদ শাহ রামপুরী (ছৈয়দ ছাহেবের পুত্র)।
মাওলানা মোনাব্বার আলী। ইনি প্রথমে রামপুর আলিয়া মাদ্রাছায় এবং পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইছলামী বিভাগের মোহাদ্দেছ ছিলেন। ঢাকা আলিয়া মাদ্রাছার অবসরপ্রাপ্ত হেড মাওলানা শামছুল ওলামা বেলায়েত হোছাইন ছাহেব তাঁহার নিকট হাদীছ শিক্ষা করেন। এছাড়া হাদীছে তাঁহার আরও বহু শাগরিদ রহিয়াছে। -তারাজেম-৫০৪ পৃঃ
ছৈয়দ আবদুল হাই বেরেলবী
[১২৮৬-১৩৪১ হিঃ মোঃ ১৮৬৯-১৯২২ ইং]
২৩। ছৈয়দ আবদুল হাই বেরেলবী ১২৮৬হিঃ বেলেবীর এক সম্ভ্রান্ত ছৈয়দ বংশে (ছৈয়দ শহীদ বেরেলবীর বংশে) জন্মগ্রহণ করেন। ইংরেজীর মেডেল পর্যন্ত এবং উর্দু ও ফারছীর প্রাথমিক শিক্ষা তিনি বেলেবীর শিক্ষকবৃন্দের নিকটই লাভ করেন। ফনুনাতের মধ্য-উচ্চ শিক্ষা তিনি লক্ষৌতে মাওলানা ছৈয়দ আমীর আলী মলীহাবাদী, মাওলানা আলতাফ হোছাইন ও মাওলানা নয়ীমুল্লাহ ফিরিঙ্গী মহল্লী এবং ভূপালের কাজী আবদুল হক, মাওলানা ছৈয়দ আহমদ দেওবন্দী ও শায়খ মোহাম্মদ আরব প্রমুখ মনীষীবৃন্দের নিকট লাভ করেন। হাদীছ তিনি ভূপালে শায়খ হোছাইন ইবনে মুহছিন আরব ইয়ামানীর নিকট অধ্যয়ন করেন এবং মাওলানা রশীদ আহমদ গঙ্গুহী ও ক্বারী আবদুর রহমান পানীপাত্তী (পানিপথী) ও ছৈয়দ নজীর হোছাইন দেহলবী হইতে উহার ‘এজাজত’ লাভ করেন।
শিক্ষা সমাপ্তির এক বৎসর পর ১৩১৩ হিঃ তিনি নুদওয়াতুল ওলামা লক্ষৌর ‘নাজেমে আ’লা’ বা প্রধান পরিচালকের পদ গ্রহণ করেন এবং প্রায় জীবনের শেষ অবধি উক্ত পদে নিয়োজিত থাকেন। মাওলানা, ছুফী, হাকীম ও ডাক্তার ছৈয়দ আবদুল আলী বি,এস সি; এম, বি, বি এস ও মাওলানা ছৈয়দ আবুল হাছান আলী নদবী তাঁহার সুযোগ্য সন্তান।
ইতিহাস, ভূগোল, আরবী ও উর্দু সাহিত্য, তিব্ব ও সমাজ সংস্কার বিষয়ে তাঁহার বহু মূল্যবান কিতাব রহিয়াছে। তাঁহার কিতাব ‘নুজহাতুল খাওয়াতিব’ (আরবী*****************) এ উপমহাদেশের ওলানা, মাশায়েখ ও রাজা-বাদশাহদের ইতিহাস সম্পর্কে একটি অমূল্য কিতাব। আরবী ভাষায় লিখিত ও ৭ খণ্ডে সমাপ্ত। ‘মাআরিফুল আওয়ারিফ’-
(আরবী**************) নামক কিতাবে তিনি সমস্ত এলমের ইতিহাস এবং পাক-ভারতে রচিত প্রায় সমস্ত কিতাবের নামের ফিরিস্তি দিয়াছেন। আরবীতে লিখিত।
হাদীছে তাঁহার রচনাঃ
(ক) ‘তালখীছুল আখবার’ (আরবী**********)। ইহাতে সমাজ, সভ্যতা, চরিত্র ও শাসন ইত্যাদি বিষয়ের হাদীছ সংগ্রহ করা হইয়াছে। (খ) ‘মোন্তাহাল আফকার’ –(আরবী***************) তালখীছের শরাহ। (গ) ‘তা’লীকাতে আবি দাউদ’ (আরবী******************) আবু দাউদ শরীফের শরাহ। -অসমাপ্ত
মাওলানা আবদুল বারী ফিরিঙ্গী মহল্লী
[১২৯৫-১৩৪৪ হিঃ মোঃ ১৮৭৮-১৯২৬ ইং]
২৪। মাওলানা কেয়ামুদ্দীন আবদুল বারী ১২৯৫ হিঃ মোঃ ১৮৭৮ খৃঃ ফিরিঙ্গী মহল্লার বিখ্যাত এলমী খান্দানে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি যাবতীয় ফনুনাত আপন খান্দানের আলেমদের নিকট অধ্যয়ন করেন। হাদীছ প্রথমে মাওলানা আবদুল বাকী ফিরিঙ্গী মহল্লী অতঃপর আপন খালাত ভাই মাওলানা আবদুল হাই লক্ষৌবীর নিকট শিক্ষা করেন। তিনি ১৩১৩ হিঃ ‘নেজামিয়া মাদ্রাছা’ নামে ফিরিঙ্গী মহল্লায় একটি মাদ্রাছা স্থাপন করেন এবং ১৩৪৪ হিঃ পর্যন্ত তথায় হাদীছ-তফছীর প্রভৃতি এলম শিক্ষা দেন।
দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁহার বিরাট দান রহিয়াছে। তিনি জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের প্রথম সভাপতি ছিলেন। ঢাকার প্রসিদ্ধ শিল্পপতি মাওলানা জামালুদ্দীন আবদুল ওহহাব ওরফে ‘জামাল মিয়া’ তাঁহার পুত্র।
বিভিন্ন বিষয়ে তাঁহার শতের মত মূল্যবান কিতাব রহিয়াছে। হাদীছেও ১৩/১৪টি কিতাব রহিয়াছে। নীচে কতিপয়ের নাম দেওয়া গেলঃ
হাদীছে তাঁহার কিতাবঃ
(ক) ‘আল আছারুল মোহাম্মাদিয়াহ্’। (খ) ‘আল আছারুল মোত্তাছেলাহ’। (গ) ‘আদ্ দুররাতুল বাহেরাহ’ (আরবী**********************************)। (ঘ) ‘আল ইরশাদ’ (আরবী*************) (ঙ) ‘আল হায়াকেলুল মা’নুবিয়াহ’ (আরবী***************)। (চ) ‘আল আরবায়ীনুজ জাজেরাহ’ (আরবী***************)। (ছ) ‘আছারুল ইমামাহ’ (আরবী*********)। (জ) ‘আল হাদীয়াতুত তাইয়্যেবাহ্’ (আরবী****************)।
তাঁহার শাগরিদগণঃ
তাঁহার শাগরিদের সংখ্যা অনেক। নিম্নে তাঁহাদের কতিপয় মশহুর লোকের নাম দেওয়া গেলঃ
মাওলানা কুতুব মিয়া।
মাওলানা আদুর কাদের।
মাওলানা ছিবগাতুল্লাহ।
মাওলানা হজ্জাতুল্লাহ মোহাম্মদ শফী। তিনি নেজামিয়ায় শিক্ষা সমাপ্ত করার পর এলাহাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ে, পুনঃ নেজামিয়ায়, অতঃপর কলিকাতা ও ঢাকা ও ঢাকা আলিয়া মাদ্রাছায় অধ্যাপনার কাজ করেন।
মাওলানা হায়াতুল্লাহ।
মাওলানা রুহুল্লাহ।
খাজা লতীফুদ্দীন।
মাওলানা ছামছাম আলী।
মাওলানা ইনায়েতুল্লাহ আনছারী ফিরিঙ্গী মহল্লী।
মাওলানা আহমদুল্লাহ প্রতাবগড়ী
[১৩৬৩ হিঃ মোঃ ১৯৪৩ ইং]
২৫। মাওলানা আহমদুল্লাহ প্রতাপগড়ের মোবারকপুরে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁহার পিতা মাওলানা আমীরুল্লাহ একজন বিশিষ্ট আলেম ছিলেন। মাওলানা আহমদুল্লাহ ফনুনাত মাওলানা হেদায়েতুল্লাহ জৌনপুরী, মাওলানা লুতফর রহমান বর্ধমানী, মাওলানা মুনীরুদ্দীন খাঁ, মাওলানা ইছহাক রামপুরী ও ডিপটী নজীর আহমদ দেহলবী প্রমুখ এর নিকট শিক্ষা করেন। হাদীছ তিনি শায়খ হোছাইন আরব ইয়ামানী, মাওলানা ছালামতুল্লাহ জয়রাজপুরী, মাওলানা আবদুল কাইউম বুঢানবীর শাগরিদ মাওলানা আহমদ সিন্ধী ও মাওলানা কাজী আইউব ভূপালীর নিকট অধ্যয়ন করেন এবং উহার ‘এজাজত’ মিঞা ছাহেব দেহলবী, মাওলানা শামছুল হক ডয়ানবী ও কাজী শায়খ মোহাম্মদ মাছলী শহরী এবং ১৩৪৫ হিঃ হজ্জের সফরে শায়খ আবদুল লতীফ নজদী হইতে লাভ করেন।
তিনি ২০ বৎসর যাবৰ দিল্লীতে আলীজান মসজিদে হাদীছ-তফছীর প্রভৃতি এলম শিক্ষা দেন। অতঃপর ১৩৩৯ হিঃ দিল্লীতে দারুল হাদীছ রহমানিয়া (দারুল-হাদীছ রহমানিয়া’- ১৩৩৯ হিঃ মোঃ ১৯২০ ইং দিল্লীর সম্ভ্রান্ত ও বিত্তশালী পরিবারের সুসন্তান আলহাজ্ব শায়খ আবদুর রহমান ও তদীয় কষ্ঠি ভ্রাতা আলহাজ্জ শায়খ আতাউর রহমান কর্তৃক স্থাপিত হয়। ইহার প্রথম শায়খুল হাদীছ নিযুক্ত হন মাওলানা আবু তাহের বিহারী। অতঃপর উক্ত পদে নিয়োজিত হন মাওলানা আহমদুল্লাহ প্রতাবগড়ী। তিনি এই পদে ১৭/১৮ বৎসরকাল সমাসীন থাকেন। অতঃপর ইহার শায়খুল হাদীছরূপে বরিত হন তাঁহার সুযোগ্য শাগরিদ মাওলানা উবায়দুল্লাহ রহমানী মোবারকপুরী। ১৯৪৭ সালে পাকিস্তান প্রতিষ্ঠিত হইলে মাদ্রাছার পরিচালক ও প্রতিষ্ঠাতা পরিবার পাকিস্তানে হিজরত করেন এবং ১৯৪৮ সালে শায়খ আতউর রহমান ছাহেবের মধ্যম পুত্র আলহাজ্ব শায়খ আবদুল ওহহাব দেহলবী করাচীতে এই নামেই একটি নতুন মাদ্রাছা প্রতিষ্ঠা করেন। মাওলানা আবদুর গাফ্ফার হাছান উমরপুরী রহমানী ইহার শায়খুল হাদীছ। মাদ্রাছাটি দিল্লীর রহমানিয়ার স্থান অধিকার করিবে বলিয়া আশা করা যায়।
রহমানিয়া মাদ্রাছা হইতে বহু যশস্বী আলেম বাহির হইয়া পাক-ভারত ও নজদ প্রভৃতি স্থানে কোরাআন-হাদীছের খেদমতে আত্মনিয়োগ করিয়াছেন। নিম্নে ইহাদের কতিপয়ের নাম উর্লেখ করা গেল।
১। মাওলানা ওবায়দুল্লাহ রহমানী। আহমদুল্লাহ প্রতাবগড়ীর পর তিনি রহমানিয়ার শায়খুল হাদীছ নিয়োজিত হন। তিনি ‘মেরআতুল মাফাতীহ’ (আরবী**********************) নামে মেশকাত শরীফের একটি শরাহ করিয়াছেন।
২। মাওলানা নজীর আহমদ রহমানী। তিনি প্রথমে রহমানিয়া মাদ্রাছায় হাদীছ প্রভৃতি বিষয়ের অধ্যাপক ছিলেন। বর্তমানে বেনারসের দারুল হাদীছ মাদ্রাছার শায়খুল হাদীছ।
৩। মাওলানা আবদুল জলীল রহমানী।
৪। মাওলানা ছা’দ ওক্কাছ রহমানী, অধ্যাপক বানিয়াগাছা মাদ্রাছা।
৫। মাওলানা সুজাউদ্দীন রহমানী, রাজশাহী। তিনি দুই বৎসরকাল ঢাকার মাদ্রাছাতুল হাদীছের মহোদ্দেছ ছিলেন। বর্তমানে রাজশাহীতে হাদীছের খেদমত করিতেছেন।
৬। মরহুম মাওলানা কবীরুদ্দীন রহমানী। তিনি দীর্ঘদিন বিভিন্ন মাদ্রাছায় হাদীছ-তফছীর শিক্ষা দিয়াছেন। ঢাকা আলিয়া মাদ্রাছায় অধ্যাপনাকালে তিনি ১৯৬৩ ইং ইন্তেকাল করেন।
৭। মাওলানা আনিছুর রহমান রহমানী দেওবন্দী। হাদীছে তাঁহার একটি কিতাব রহিয়াছে।
৮। মাওলানা আবুল কাছেম রহমানী হুগলী। ঢাকা মাদ্রাছাতুল হাদীছের বর্তমান মোহাদ্দেছ।
৯। মাওলানা আহমদুল্লাহ ওরফে রুস্তম আলী রহমানী। তিনি আরামনগর টাইটেল মাদ্রাছার বর্তমান মোহাদ্দেছ।
১০। মাওলানা হাবীবুল্লাহ খাঁ রহমানী। আরামনগর মাদ্রাছার মোহাদ্দেছ।
১১। মাওলানা মোনতাছের আহমদ রহমানী। তিনি আরামনগর ও ঢাকা মাদ্রাছাতুল হাদীছে হাদীছ প্রভৃতি এলম শিক্ষা দিয়াছেন। বর্তমানে তিনি রচনাকার্যে আত্মনিয়োগ করিয়াছেন। ঈমান, রোজা, হজ্জ ও জাকাত সম্পর্কে তাঁহার কতিপয় বাঙলা রেছালা প্রকাশিত হইয়াছে।
১২। মাওলানা আফতাব আহমদ রহমানী এম, এ। তিনি কিছুকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইছলামিয়াত বিভাগের আধ্যাপক ছিলেন। বর্তমানে তিনি রাজশাহী বিম্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক। তিনি হাফেজুল হাদীছ ইবনে হাজার আছকালানীর হাদীছের খেদমত সম্পর্কে একটি থিসিস (গবেষণামূরক প্রবন্ধ) লিখিয়াছেন।
১৩। মাওলানা বেলায়েত হোছাইন রহমানী মরহুম। তিনি দীর্ঘদিন যাবৎ মহিমাগঞ্জ মাদ্রাছায় হাদীছ শিক্ষা দিয়াছেন।
১৪। মাওলানা আহমদুল্লাহ রহমানী। আবদুল্লাহপুর কওমী মাদ্রাছার মোহাদ্দেছ।
১৫। মাওলানা আবদুল হাফফার হাছান রহমানী। করাচী রহমানিয়া মাদ্রাছার শায়খুল হাদীছ।
১৬। মাওলানা জহুর আহমদ রহমানী। দারভাঙ্গা ছলফিয়া মাদ্রাছার মোহদ্দেছ।
-মাওলানা মোনতাছের আহমদ রহমানী প্রমুখাৎ বর্ণিত
স্থাপিত হইলে তিনি উহার শায়খলু হাদীছ- রূপে বরিত হন। হাদীছে তাঁহার ‘আল বুরহানুল উজাব’ (আরবী***************) নামে একটি কিতাব রহিয়াছে। তাঁহার শাগরিদের সংখ্যা অনেক।
মাওলানা আবদুর রহমান মোবারকপুরী
[১৩৫৩ হিঃ মোঃ ১৯৩৫ ইং]
২৬। মাওলানা আবুর উলা আবদুর রহমান মোবারকপুরী ইবনে মাওলানা হাফেজ আবদুর রহীম মোবারকপুরী প্রাথমিক এলম মাওলানা খোদা বখশ আজমগড়ী, মাওলানা হাফেজ আবদুর রহীম মোবারকপুরী প্রাথমিক এলম মাওলানা খোদা বখশ আজমগড়ী, মাওলানা হাজী মোহাম্মদ ছলীম ফরয়াবী ও মাওলানা আবদুর রহমান জয়রাজপুরী প্রমুখ আলেমগণের নিকট শিক্ষা করেন। হাদীছ তিনি মাওলানা হাফেজ আবদুল্লাহ গাজীপুরী, হযরত মিয়া ছাহেব ও শায়খ হোছাইন আরব ইয়ামানীর নিকট অধ্যয়ন করেন এবং কাজী মোহাম্মদ মাছলী শহরী হইতে উহার ‘এজাজত’ লাভ করেন। তিনি আরা আহমদিয়া মাদ্রাছা, বলরামপুর মাদ্রাছা, গুণ্ডাহ্ মাদ্রাছা, কলুটোলা মাদ্রাছা ও মোবারকপুরে হাদীছ শিক্ষা দেন এবং মাওলানা শামছুল হক ডয়ানবীর ‘আওনুল মা’বুদ’ রচনায় সাহায্য করেন।
হাদীছ প্রভৃতি এলমে তাঁহার ১৮/১৯টি ছোট-বড় কিতাব রহিয়াছেন। নিম্নে তাঁহার কতিপয় প্রসিদ্ধ কিতাবের নাম দেওয়া গেল।
(ক) ‘তোহফাতুল আহুজী (আরবী**********************)। (খ) ‘শাফাউল গালাল’ (আরবী****************)। (গ) ‘এবকারুল মেনান’ (আরবী*****************)। (ঘ) ‘তাহকীকুল কালাম’ (আরবী*******************)।
তাঁহার শাগরিদগণঃ
তাঁহার বহু শাগরিদ রহিয়াছে। নিম্নে তাঁহাদের কতিপয় প্রসিদ্ধ ব্যক্তির নাম দেওয়া গেলঃ
মাওলানা আবদুছ চালাম মোবারকপুরী।
মাওলানা উবাইদুল্লাহ ইবনে আবদুছ ছালাম মোবারকপুরী। দিল্লী রহমানিয়া মাদ্রাছার শায়খুল হাদীছ।
মাওলানা নজীর আহমদ।
মাওলানা মোহাম্মদ বশীর।
মাওলানা আবদুছ ছামাদ মোবারকপুরী।
মাওলানা নেয়ামতুল্লাহ বাঙ্গালী।
মাওলানা আবদুর জব্বার খণ্ডলবী।
মাওলানা শায়খ তকীউদ্দীন জিলানী মরাকুশী।
মাওলানা শায়খ আবদুল্লাহ।