9/105 عن ابن مسعود رضي الله عنه، قَالَ : صَلَّيْتُ مَعَ النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم) لَيلَةً، فَأَطَالَ القِيامَ حَتَّى هَمَمْتُ بأمْرِ سُوءٍ ! قيل: وَمَا هَمَمْتَ بِهِ ؟ قَالَ : هَمَمْتُ أنْ أجْلِسَ وَأَدَعَهُ . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৯/১০৫। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, ‘আমি এক রাতে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে নামায পড়লাম। অতঃপর তিনি দীর্ঘ কিয়াম করলেন। এমনকি শেষ পর্যন্ত আমি খারাপ কাজের ইচ্ছা করলাম।’ তাঁকে প্রশ্ন করা হল যে, ‘আপনি কি ইচ্ছা করেছিলেন?’ তিনি বললেন, ‘আমি ইচ্ছা করেছিলাম যে, আমি বসে যাই এবং (তাঁর অনুসরণ) ছেড়ে দিই।’[1]
10/106 عَن أَنَسٍ رضي الله عنه، عَن رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «يَتْبَعُ المَيتَ ثَلاَثَةٌ : أهْلُهُ وَمَالُهُ وَعَملُهُ، فَيَرجِعُ اثنَانِ وَيَبْقَى وَاحِدٌ : يَرجِعُ أهْلُهُ وَمَالُهُ، وَيَبقَى عَملُهُ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১০/১০৬। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তিনটি জিনিস মৃত ব্যক্তির সঙ্গে যায়ঃ তার আত্মীয়-স্বজন, তার মাল ও তার আমল। অতঃপর দু’টি জিনিস ফিরে আসে এবং একটি জিনিস রয়ে যায়। তার আত্মীয়স্বজন ও তার মাল ফিরে আসে এবং তার আমল (তার সঙ্গে) রয়ে যায়।[2]
11/107 عَنِ ابنِ مَسعُودٍ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم): «الجَنَّةُ أَقْرَبُ إِلَى أَحَدِكُمْ مِنْ شِرَاكِ نَعْلِهِ، وَالنَّارُ مِثلُ ذلِكَ». رواه البخاري
১১/১০৭। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘জান্নাত তোমাদের জুতোর ফিতার চেয়েও অধিক নিকটবর্তী এবং জাহান্নামও তদ্রূপ।’’[3]
12/108 عَنْ أَبِي فِراسٍ رَبيعةَ بنِ كَعبٍ الأَسلَميِّ خَادِمِ رَسُولِ الله (صلى الله عليه و سلم)، وَمِن أَهلِ الصُّفَّةِ رضي الله عنه، قَالَ : كُنْتُ أبِيتُ مَعَ رَسُولِ الله (صلى الله عليه و سلم) فآتِيهِ بِوَضُوئِهِ وَحَاجَتِهِ، فَقَالَ: «سَلْنِي»فقُلْتُ : أَسْأَلُكَ مُرَافَقَتَكَ في الجَنَّةِ . فَقَالَ: «أَوَ غَيرَ ذلِكَ»؟ قُلْتُ : هُوَ ذَاكَ، قَالَ: «فَأَعِنِّي عَلَى نَفْسِكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ» رواه مسلم
১২/১০৮। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খাদেম ও আহলে সুফ্ফার বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব আবূ ফিরাস রাবীআহ ইবনে কা‘ব আসলামী থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সঙ্গে রাত কাটাতাম। আমি তাঁর কাছে ওযূর পানি এবং প্রয়োজনীয় বস্তু এনে দিতাম। (একদিন তিনি খুশী হয়ে) বললেন, ‘‘তুমি আমার কাছে কিছু চাও।’’ আমি বললাম, ‘আমি আপনার কাছে জান্নাতে আপনার সাহচর্য চাই।’ তিনি বললেন, ‘‘এ ছাড়া আর কিছু?’’ আমি বললাম, ‘বাস্ ওটাই।’ তিনি বললেন, ‘‘তাহলে তুমি, অধিকাধিক সিজদা করে (অর্থাৎ প্রচুর নফল নামায পড়ে) তোমার (এ আশা পূরণের) জন্য আমাকে সাহায্য কর।’’[4]
13/109 عَنْ أَبِي عَبدِ اللهِ، وَيُقَالُ : أَبُو عَبدِ الرَّحمَانِ ثَوبَانَ ـ مَولى رَسُولِ الله (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ : سَمِعْتُ رَسولَ الله (صلى الله عليه و سلم) يَقُولُ: «عَلَيْكَ بِكَثْرَةِ السُّجُودِ ؛ فَإِنَّكَ لَنْ تَسْجُدَ للهِ سَجْدَةً إلاَّ رَفَعَكَ اللهُ بِهَا دَرجَةً، وَحَطَّ عَنكَ بِهَا خَطِيئةً». رواه مسلم
১৩/১০৯। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর খাদেম সাওবান রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, তিনি বলেছেন, ‘‘তুমি অধিকাধিক সাজদাহ করাকে অভ্যাস বানিয়ে নাও। কারণ, তুমি যে কোন সাজদাহ করবে, আল্লাহ তা‘আলা তার দ্বারায় তোমাকে মর্যাদায় এক ধাপ উঁচু করে দেবেন এবং তোমা থেকে একটি গোনাহ মিটিয়ে দেবেন।’’[5]
14/110 عَنْ أَبِي صَفوَانَ عَبدِ اللهِ بنِ بُسْرٍ الأسلَمِي رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «خَيرُ النَّاسِ مَنْ طَالَ عُمُرهُ، وَحَسُنَ عَمَلُهُ». رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث حسن»
১৪/১১০। আবূ সাফওয়ান আব্দুল্লাহ ইবনে বুসর আসলামী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘সর্বোত্তম মানুষ সেই ব্যক্তি যার বয়স দীর্ঘ হয় এবং আমল সুন্দর হয়।’’[6]
15/111 عَنْ أَنَسٍ رضي الله عنه، قَالَ: غَابَ عَمِّي أَنَسُ بْنُ النَّضْرِ رضي الله عنه عَنْ قِتَالِ بَدْرٍ، فَقَالَ: يَا رَسُولَ الله، غِبْتُ عَنْ أَوَّلِ قِتال قَاتَلْتَ المُشْرِكِينَ، لَئِن اللهُ أَشْهَدَنِي قِتَالَ المُشركِينَ لَيُرِيَنَّ اللهُ مَا أَصْنَعُ . فَلَمَّا كَانَ يَومُ أُحُدٍ انْكَشَفَ المُسْلِمونَ، فَقَالَ : اَللهم أعْتَذِرُ إلَيْكَ مِمَّا صَنَعَ هؤُلاَءِ ـ يعني : أصْحَابهُ ـ وَأبْرَأُ إلَيْكَ مِمَّا صَنَعَ هؤُلاَءِ ـ يَعني : المُشركِينَ ـ ثُمَّ تَقَدَّمَ فَاسْتَقْبَلهُ سَعدُ بْنُ مُعاذٍ، فَقَالَ : يَا سعدَ بنَ معاذٍ، الجَنَّةُ وَرَبِّ الكعْبَةِ إنِّي أَجِدُ ريحَهَا مِنْ دُونِ أُحُدٍ . قَالَ سعدٌ : فَمَا اسْتَطَعتُ يَا رسولَ الله مَا صَنَعَ ! قَالَ أنسٌ : فَوَجَدْنَا بِهِ بِضْعاً وَثَمانينَ ضَربَةً بالسَّيفِ، أَوْ طَعْنةً بِرمْحٍ، أَوْ رَمْيَةً بسَهْمٍ، وَوَجَدْنَاهُ قَدْ قُتِلَ وَمَثَّلَ بِهِ المُشْرِكونَ فما عَرَفهُ أَحَدٌ إلاَّ أُخْتُهُ بِبَنَانِهِ . قَالَ أنس : كُنَّا نَرَى أَوْ نَظُنُّ أَنَّ هَذِهِ الآيَة نَزَلَت فِيهِ وَفِي أشبَاهِه : ﴿مِّنَ ٱلۡمُؤۡمِنِينَ رِجَالٞ صَدَقُواْ مَا عَٰهَدُواْ ٱللَّهَ عَلَيۡهِۖ ﴾ [الاحزاب: ٢٣] إِلَى آخِرها . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৫/১১১। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন যে, আমার চাচা আনাস ইবনে নাদর বদরের যুদ্ধে অনুপস্থিত ছিলেন। (যার জন্য তিনি খুবই দুঃখিত হয়েছিলেন।) অতঃপর তিনি একবার বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! প্রথম যে যুদ্ধ আপনি মুশরিকদের বিরুদ্ধে করলেন তাতে আমি অনুপস্থিত থাকলাম। যদি (এরপর) আল্লাহ আমাকে মুশরিকদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে হাজির হওয়ার সৌভাগ্য দান করেন, তাহলে আমি কী করব আল্লাহ তা অবশ্যই দেখাবেন (অথবা দেখবেন)।’ অতঃপর যখন উহুদের দিন এল, তখন মুসলিমরা (শুরুতে) ঘাঁটি ছেড়ে দেওয়ার কারণে পরাজিত হলেন। তিনি বললেন, ‘হে আল্লাহ! এরা অর্থাৎ সঙ্গীরা যা করল তার জন্য আমি তোমার নিকট ওযর পেশ করছি। আর ওরা অর্থাৎ মুশরিকরা যা করল, তা থেকে আমি তোমার কাছে সম্পর্কহীনতা প্রকাশ করছি।’ অতঃপর তিনি আগে বাড়লেন এবং সামনে সা‘দ ইবনে মু‘আযকে পেলেন। তিনি বললেন, ‘হে সা‘দ ইবনে মু‘আয! জান্নাত! কা‘বার প্রভুর কসম! আমি উহুদ অপেক্ষা নিকটতর জায়গা হতে তার সুগন্ধ পাচ্ছি।’ (এই বলে তিনি শত্রুদের মাঝে ঝাঁপিয়ে পড়লেন এবং যুদ্ধ করতে করতে শাহাদত বরণ করলেন।) সা‘দ বলেন, ‘হে আল্লাহর রসূল! সে যা করল, আমি তা পারলাম না।’ আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, ‘আমরা তাঁর দেহে আশীর চেয়ে বেশি তরবারি, বর্শা বা তীরের আঘাত চিহ্ন পেলাম। আর আমরা তাকে এই অবস্থায় পেলাম যে, তাকে হত্যা করা হয়েছে এবং মুশরিকরা তাঁর নাক-কান কেটে নিয়েছে। ফলে কেউ তাঁকে চিনতে পারেনি। কেবল তাঁর বোন তাঁকে তাঁর আঙ্গুলের পাব দেখে চিনেছিল।’ আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, আমরা ধারণা করতাম যে, (সূরা আহযাবের ২৩নং) এই আয়াত তাঁর ও তাঁর মত লোকদের ব্যাপারে অবতীর্ণ হয়েছে। ‘‘মু’মিনদের মধ্যে কিছু আল্লাহর সঙ্গে তাদের কৃত অঙ্গীকার পূরণ করেছে, ওদের কেউ কেউ নিজ কর্তব্য পূর্ণরূপে সমাধা করেছে এবং কেউ কেউ প্রতীক্ষায় রয়েছে। ওরা তাদের লক্ষ্য পরিবর্তন করেনি।’’[7]
[1] সহীহুল বুখারী ১১৩৫, মুসলিম ৭৭৩, ইবনু মাজাহ ১৪১৮, ১৩৩৮, ৩৭৫৭, ৩৯২৭
[2] সহীহুল বুখারী ৬৫১৪, মুসলিম ২৯৬০, তিরমিযী ২৩৭৯, নাসায়ী ১৯৩৭, আহমাদ ১১৬৭০
[3] সহীহুল বুখারী ৬৪৮৮, আহমাদ ৩৫৮, ৩৯১৩, ৪২০৬
[4] সহীহুল বুখারী ৪৮৯, তিরমিযী ৩৪১৬, নাসায়ী ১১৩৮, ১৬১৮, আবূ দাউদ ১৩২০, ইবনু মাজাহ ৩৮৭৯, আহমাদ ১৬১৩৮
[5] মুসলিম ৪৮৮, তিরমিযী ৩৮৮, নাসায়ী ১১৩৯, ইবনু মাজাহ ১৪২৩, আহমাদ ২১৮৬৫, ২১৯০৫, ২১৯৩৬
[6] তিরমিযী ২৩২৯, আহমাদ ১৭২২৭, ১৭২৪৫, (তিরমিযী, হাসান)
[7] সহীহুল বুখারী ২৮০৫, ২৭০৩, ৪০৪৮, ৪৪৯৯, ৪৫০০, ৪৬১১, ৪৭৮৩, ৬৮৯৪, মুসলিম ১৯০৩, নাসায়ী ৪৭৫৫, ৪৭৫৬, ৪৭৫৭, আবূ দাউদ ৪৫৯৫, ইবনু মাজাহ ২৬৪৯, আহমাদ ১১৮৯৩, ১২২৯৩, ১২৬০৩