19- بَابُ فِيْ مَنْ سَنَّ سُنَّةً حَسَنَةً أَوْ سَيِّئَةً
পরিচ্ছেদ -১৯ : যে ব্যক্তি ভাল অথবা মন্দ রীতি চালু করবে
মহান আল্লাহ বলেন,
﴿وَٱلَّذِينَ يَقُولُونَ رَبَّنَا هَبۡ لَنَا مِنۡ أَزۡوَٰجِنَا وَذُرِّيَّٰتِنَا قُرَّةَ أَعۡيُنٖ وَٱجۡعَلۡنَا لِلۡمُتَّقِينَ إِمَامًا ٧٤ ﴾ [الفرقان: ٧٣]
অর্থাৎ “যারা (প্রার্থনা করে) বলে, ‘হে আমাদের প্রতিপালক! আমাদের স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততিদেরকে আমাদের জন্য নয়নপ্রীতিকর কর এবং আমাদেরকে মুত্তাকীদের জন্য আদর্শস্বরূপ কর’।” (সূরা ফুরক্বান ৭৪ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ وَجَعَلۡنَٰهُمۡ أَئِمَّةٗ يَهۡدُونَ بِأَمۡرِنَا ﴾ [الانبياء: ٧٣]
অর্থাৎ “আর আমি তাদেরকে করলাম নেতা, তারা আমার নির্দেশ অনুসারে মানুষকে পথ প্রদর্শন করত।” (সূরা আম্বিয়া ৭৩ আয়াত)
1/176 عَنْ أَبِي عَمرٍو جَرِيرِ بنِ عَبدِ اللهِ رضي الله عنه، قَالَ: كُنَّا فِيْ صَدْرِ النَّهَارِ عِنْدَ رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) فَجَاءَهُ قَومٌ عُرَاةٌ مُجْتَابي النِّمَار أَوْ العَبَاء، مُتَقَلِّدِي السُّيُوف، عَامَّتُهُمْ مِن مُضَرَ بَلْ كُلُّهُمْ مِنْ مُضَرَ، فَتَمَعَّرَ رَسُولُ الله (صلى الله عليه و سلم) لمَاَّ رَأَى بِهِمْ مِنَ الفَاقَة، فَدَخَلَ ثُمَّ خَرَجَ، فَأَمَرَ بِلاَلاً فَأَذَّنَ وَأَقَامَ، فصَلَّى ثُمَّ خَطَبَ، فَقَالَ: «﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّاسُ ٱتَّقُواْ رَبَّكُمُ ٱلَّذِي خَلَقَكُم مِّن نَّفۡسٖ وَٰحِدَةٖ ﴾ إِلَى آخر الآية : ﴿ إِنَّ ٱللَّهَ كَانَ عَلَيۡكُمۡ رَقِيبٗا ١ ﴾ [النساء: ١] ، والآية الأُخْرَى التي في آخر الحَشْرِ : ﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَلۡتَنظُرۡ نَفۡسٞ مَّا قَدَّمَتۡ لِغَدٖۖ ﴾ [الحشر: ١٨] تَصَدَّقَ رَجُلٌ مِنْ دِينَارِهِ، مِنْ دِرهمِهِ، مِنْ ثَوبِهِ، مِنْ صَاعِ بُرِّهِ، مِنْ صَاعِ تَمْرِهِ – حَتَّى قَالَ – وَلَوْ بِشقِّ تَمرَةٍ»فَجَاءَ رَجُلٌ مِنَ الأَنْصَارِ بِصُرَّةٍ كَادَتْ كَفُّهُ تَعجِزُ عَنهَا، بَلْ قَدْ عَجَزَتْ، ثُمَّ تَتَابَعَ النَّاسُ حَتَّى رَأيْتُ كَومَيْنِ مِنْ طَعَامٍ وَثِيَابٍ، حَتَّى رَأيْتُ وَجْهَ رَسُولِ الله (صلى الله عليه و سلم) يَتَهَلَّلُ كَأنَّهُ مُذْهَبَةٌ. فَقَالَ رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم): «مَنْ سَنَّ في الإسلامِ سنَّةً حَسَنَةً فَلَهُ أجْرُهَا، وَأجْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا بَعْدَهُ، مِنْ غَيرِ أنْ يَنْقُصَ مِنْ أُجُورهمْ شَيءٌ، وَمَنْ سَنَّ في الإسْلامِ سُنَّةً سَيِّئَةً كَانَ عَلَيهِ وِزْرُهَا، وَوِزْرُ مَنْ عَمِلَ بِهَا مِنْ بَعْدِهِ، مِنْ غَيرِ أنْ يَنْقُصَ مِنْ أوْزَارِهمْ شَيءٌ». رواه مسلم
১/১৭৬। আবূ ‘আমর জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা দিনের প্রথম ভাগে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট ছিলাম। অতঃপর তাঁর নিকট কিছু লোক এল, যাদের দেহ বিবস্ত্র ছিল, পশমের ডোরা কাটা চাদর (মাথা প্রবেশের মত জায়গা মাঝে কেটে) পরে ছিল অথবা ‘আবা’ (আংরাখা) পরে ছিল, তরবারি তারা নিজেদের গর্দানে ঝুলিয়ে রেখেছিল। তাদের অধিকাংশ মুদ্বার গোত্রের (লোক) ছিল; বরং তারা সকলেই মুদ্বার গোত্রের ছিল। তাদের দরিদ্রতা দেখে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। সুতরাং তিনি (বাড়ির ভিতর) প্রবেশ করলেন এবং পুনরায় বের হলেন। তারপর তিনি বেলালকে (আযান দেওয়ার) আদেশ করলেন। ফলে তিনি আযান দিলেন এবং ইকামত দিলেন। অতঃপর তিনি নামায পড়ে লোকদেরকে (সম্বোধন ক’রে) ভাষণ দিলেন। তিনি বললেন, ‘‘হে মানব সম্প্রদায়! তোমরা তোমাদের রবকে ভয় কর, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি হতে সৃষ্টি করেছেন ও তা হতে তার সঙ্গিনী সৃষ্টি করেছেন, যিনি তাদের দু’জন থেকে বহু নরনারী (পৃথিবীতে) বিস্তার করেছেন। সেই আল্লাহকে ভয় কর, যার নামে তোমরা একে অপরের নিকট যাচ্ঞা কর এবং জ্ঞাতি-বন্ধন ছিন্ন করাকে ভয় কর। নিশ্চয় আল্লাহ তোমাদের উপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি রাখেন।’’ (সূরা নিসা ১ আয়াত) অতঃপর দ্বিতীয় আয়াত যেটি সূরা হাশরের শেষে আছে সেটি পাঠ করলেন, ‘‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। আর প্রত্যেকেই ভেবে দেখুক যে, আগামীকালের (কিয়ামতের) জন্য সে কি অগ্রিম পাঠিয়েছে। তোমরা আল্লাহকে ভয় কর। নিশ্চয় তোমরা যা কর আল্লাহ সে সম্পর্কে অবহিত।’’ (সূরা হাশর ১৮ আয়াত)
‘‘সুতরাং প্রত্যেক ব্যক্তি যেন নিজ দীনার (স্বর্ণমুদ্রা), দিরহাম (রৌপ্যমুদ্রা), কাপড়, এক সা’ গম ও এক সা’ খেজুর থেকে সাদকাহ করে।’’ এমনকি তিনি বললেন, ‘‘খেজুরের আধা টুকরা হলেও (তা যেন দান করে)।’’ সুতরাং আনসারদের একটি লোক (চাঁদির) একটি থলে নিয়ে এল, লোকটির করতল যেন তা ধারণ করতে পারছিল না; বরং তা ধারণ করতে অক্ষমই ছিল। অতঃপর (তা দেখে) লোকেরা পরস্পর দান আনতে আরম্ভ করল। এমনকি খাদ্য সামগ্রী ও কাপড়ের দু’টি স্তূপ দেখলাম। পরিশেষে আমি দেখলাম যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর চেহারা যেন সোনার মত ঝলমল করছে। অতঃপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘যে ব্যক্তি ইসলামে ভাল রীতি চালু করবে, সে তার নিজের এবং ঐ সমস্ত লোকের সওয়াব পাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের সওয়াবের কিছু পরিমাণও কম করা হবে না। আর যে ব্যক্তি ইসলামে কোনো মন্দ রীতির প্রচলন করবে, তার উপর তার নিজের এবং ঐ লোকদের গোনাহ বর্তাবে, যারা তার (মৃত্যুর) পর তার উপর আমল করবে। তাদের গোনাহর কিছু পরিমাণও কম করা হবে না।’’[1]
[1] মুসলিম ১০১৭, তিরমিযী ২৬৭৫, নাসায়ী ২৫৫৪, ইবনু মাজাহ ২০৩, আহমাদ ১৮৬৭৫, ১৮৬৯৩, ১৮৭০১, ১৮৭২৪, দারেমী ৫১২, ৫১৪