3/210. وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ الله عَنهُمَا، قَالَ : كُنَّا نَتَحَدَّثُ عَنْ حَجَّةِ الوَدَاعِ، والنَّبيُّ (صلى الله عليه و سلم) بَيْنَ أظْهُرِنَا، وَلا نَدْرِي مَا حَجَّةُ الوَدَاعِ حَتَّى حَمِدَ اللهَ رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم) وَأثْنَى عَلَيهِ ثُمَّ ذَكَرَ المَسْيحَ الدَّجَّال فَأطْنَبَ في ذِكْرِهِ، وَقَالَ: «مَا بَعَثَ اللهُ مِنْ نَبيٍّ إلاَّ أنْذَرَهُ أُمَّتَهُ، أنْذَرَهُ نُوحٌ وَالنَّبِيُّونَ مِنْ بَعْدِهِ، وَإِنَّهُ إنْ يَخْرُجْ فِيكُمْ فَما خَفِيَ عَليْكُمْ مِنْ شَأنِه فَلَيْسَ يَخْفَى عَليْك ُ عَيْنِ اليُمْنَى، كَأنَّ عَيْنَهُ عِنَبَةٌ طَافِيَةٌ . ألا إنَّ الله حَرَّمَ عَلَيْكُمْ دِمَاءكُمْ وَأمْوَالَكُمْ كحُرْمَةِ يَوْمِكُمْ هَذَا، في بَلَدِكُم هَذَا، في شَهْرِكُمْ هَذَا، ألا هَلْ بَلّغْتُ ؟»قالُوا : نَعَمْ، قَالَ: «اَللهم اشْهَدْ» ثلاثاً« وَيْلَكُمْ – أَوْ وَيْحَكُمْ – انْظُروا : لا تَرْجعُوا بَعْدِي كُفّاراً يَضْرِبُ بَعْضُكُمْ رِقَابَ بَعْضٍ». رواه البخاري، وروى مسلم بعضه
৩/২১০। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আমরা বিদায়ী হজ্জ্বের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করেছিলাম। এমতবস্থায় যে, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের মাঝে উপস্থিত ছিলেন। আর আমরা জানতাম না যে, বিদায়ী হজ্জ কী? পরিশেষে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আল্লাহর প্রশংসা করলেন। অতঃপর কানা দাজ্জালের কথা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করলেন। তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহ যে নবীই পাঠিয়েছেন, তিনি নিজ জাতিকে তার ব্যাপারে ভয় দেখিয়েছেন। নূহ ও তাঁর পরে আগমনকারী নবীগণ তার ব্যাপারে ভীতি প্রদর্শন করেছেন। যদি সে তোমাদের মধ্যে বের হয়, তবে তার অবস্থা তোমাদের কাছে গোপন থাকবে না। তোমাদের কাছে এ কথা গোপন নয় যে, তোমাদের প্রভু কানা নয়, আর দাজ্জাল কানা হবে। তার ডান চোখ কানা হবে, তার চোখটি যেন (গুচ্ছ থেকে) ভেসে ওঠা আঙ্গুর। সতর্ক হয়ে যাও, নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের প্রতি তোমাদের রক্ত ও মাল হারাম করে দিয়েছেন। যেমন তোমাদের এদিন হারাম তোমাদের এই শহরে, তোমাদের এই মাসে। শোনো! আমি কি (আল্লাহর পয়গাম) পৌঁছে দিয়েছি?’’ সাহাবীগণ বললেন, ‘হ্যাঁ।’ অতঃপর তিনি তিনবার বললেন, ‘‘হে আল্লাহ! তুমি সাক্ষী থাক। (অতঃপর বললেন,) তোমাদের জন্য বিনাশ অথবা আফশোস। দেখো, তোমরা আমার পর এমন কাফের হয়ে যেও না যে, তোমরা একে অপরের গর্দান মারবে।’’[1]
4/211. وَعَن عَائِشَةَ رَضِيَ الله عَنهَا : أَنَّ رَسُولَ الله (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «مَنْ ظَلَمَ قَيدَ شِبْرٍ مِنَ الأرْضِ، طُوِّقَهُ مِنْ سَبْعِ أرَضِينَ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৪/২১১। আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহ থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি কারো জমি এক বিঘত পরিমাণ অন্যায়ভাবে দখল করে নেবে, (কিয়ামতের দিন) সাত তবক (স্তর) যমীন তার গলায় লটকে দেওয়া হবে।’’[2]
5/212. وَعَنْ أَبِي مُوسَى رضي الله عنه قَالَ: قَالَ رَسُولُ الله (صلى الله عليه و سلم): «إنَّ الله لَيُمْلِي لِلظَّالِمِ، فَإِذَا أخَذَهُ لَمْ يُفْلِتْهُ»، ثُمَّ قَرَأَ: ﴿ وَكَذَٰلِكَ أَخۡذُ رَبِّكَ إِذَآ أَخَذَ ٱلۡقُرَىٰ وَهِيَ ظَٰلِمَةٌۚ إِنَّ أَخۡذَهُۥٓ أَلِيمٞ شَدِيدٌ ١٠٢ ﴾ [هود: ١٠٢] مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৫/২১২। আবূ মূসা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় আল্লাহ তা‘আলা অত্যাচারীকে অবকাশ দেন। অতঃপর যখন তিনি তাকে পাকড়াও করেন, তখন তাকে ছাড়েন না।’’ তারপর তিনি এই আয়াত পড়লেন—যার অর্থ, ‘‘তোমার প্রতিপালকের পাকড়াও এরূপই হয়ে থাকে। যখন তিনি অত্যাচারী জনপদকে পাকড়াও করে থাকেন। নিশ্চয়ই তাঁর পাকড়াও কঠিন যন্ত্রণাদায়ক।’’ (সূরা হূদ ১০২ আয়াত, বুখারী-মুসলিম)[3]
6/213. وَعَن مُعَاذٍ رضي الله عنه، قَالَ : بَعَثَنِي رَسُولُ الله (صلى الله عليه و سلم)، فَقَالَ: «إنَّكَ تَأتِي قَوْماً مِنْ أهلِ الكِتَابِ فَادْعُهُمْ إِلَى شَهَادَةِ أنْ لا إِلٰهَ إلاَّ الله، وَأنِّي رسولُ الله، فَإنْ هُمْ أَطَاعُوا لِذلِكَ، فَأعْلِمْهُمْ أنَّ اللهَ قَدِ افْتَرضَ عَلَيْهِمْ خَمْسَ صَلَواتٍ في كُلِّ يَوْمٍ وَلَيلَةٍ، فَإِنْ هُمْ أطَاعُوا لِذَلِكَ، فَأعْلِمْهُمْ أنَّ اللهَ قَدِ افْتَرَضَ عَلَيْهِمْ صَدَقَةً تُؤخَذُ مِنْ أغْنِيَائِهِمْ فَتُرَدُّ عَلَى فُقَرَائِهِمْ، فَإنْ هُمْ أطَاعُوا لِذَلِكَ، فَإِيَّاكَ وَكَرَائِمَ أمْوَالِهِمْ، وَاتَّقِ دَعْوَةَ المَظْلُومِ ؛ فإِنَّهُ لَيْسَ بَيْنَها وَبَيْنَ اللهِ حِجَابٌ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৬/২১৩। মু‘আয রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে (ইয়ামানের শাসকরূপে) পাঠাবার সময় বলেছিলেন, ‘‘তুমি আহলে কিতাব সম্প্রদায়ের নিকট যাচ্ছ। সুতরাং তুমি তাদেরকে ‘আল্লাহ ব্যতীত কোন সত্য উপাস্য নেই এবং আমি আল্লাহর রাসূল’ এ কথার সাক্ষ্যদানের প্রতি দাওয়াত দেবে। যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে, আল্লাহ তাদের উপর প্রতি দিন ও রাতে পাঁচ ওয়াক্ত নামায ফরয করেছেন। তারা যদি এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তাদেরকে জানিয়ে দেবে যে, আল্লাহ তাদের সম্পদের ওপর সাদকাহ (যাকাত) ফরয করেছেন। তাদের মধ্যে যারা সম্পদশালী তাদের থেকে যাকাত উসূল করে যারা দরিদ্র তাদের মাঝে বিতরণ করা হবে। যদি তারা এ কথা মেনে নেয়, তাহলে তুমি (যাকাত নেওয়ার সময়) তাদের উৎকৃষ্ট মাল নেওয়া থেকে দূরে থাকবে। আর অত্যাচারিতের বদ-দো‘আ থেকে বাঁচবে। কারণ তার বদ-দো‘আ এবং আল্লাহর মাঝে কোন পর্দা নেই (অর্থাৎ শীঘ্র কবুল হয়ে যায়)।’’[4]
[1] সহীহুল বুখারী ৪৪০৩, ১৭৪২, ৬০৪৩, ৬১৬৬, ৬৭৭৫, ৬৮৫৮, ৭০৭৭, মুসলিম ৬৬, নাসায়ী ৪১২৫, ৪১২৬, ৪১২৭, ইবনু মাজাহ ৩৯৪৩, আহমাদ ৪৭৮৯, ৬১০৯, ৬১৫০, ৬৩২৯, (বুখারী, কিছু অংশ মুসলিম)
[2] সহীহুল বুখারী ২৪৫৩, ৩১৯৫, মুসলিম ১৬১২, আহমাদ ২৩৮৩২, ২৫৬১২, ২৫৬৯২
[3] সহীহুল বুখারী ৪৬৮৬, মুসলিম ২৫৮৩, তিরমিযী ৩১১০, ইবনু মাজাহ ৪০১৮
[4] সহীহুল বুখারী ১৩৯৫, ১৪৫৮, ১৪৯৬, ২৪৪৮, ৪৩৪৭, ৭৩৭১, ৭৩৭২, মুসলিম ১৯, তিরমিযী ৩১১০, ৬২৫, ২০১৪, নাসায়ী ২৪৩৫, আবূ দাউদ ১৫৮৪, ইবনু মাজাহ ১৭৮৩, আহমাদ ২০৭২, দারেমী ১৬১৪