হাদীসসমূহ:
1/160 عَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، عن النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «دَعُونِي مَا تَرَكْتُكُمْ، إِنَّمَا أهْلَكَ مَنْ كَانَ قَبْلَكُمْ كَثْرَةُ سُؤالِهِمْ واخْتِلافُهُمْ عَلَى أنْبيَائِهِمْ، فَإِذَا نَهَيْتُكُمْ عَنْ شَيْء فَاجْتَنِبُوهُ، وَإِذَا أمَرْتُكُمْ بأمْرٍ فَأْتُوا مِنْهُ مَا اسْتَطَعْتُمْ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১/১৬০। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমি যে ব্যাপারে তোমাদেরকে (বর্ণনা না দিয়ে) ছেড়ে দিয়েছি, সে ব্যাপারে তোমরা আমাকে ছেড়ে দাও (অর্থাৎ সে ব্যাপারে আমাকে প্রশ্ন করো না)। কারণ, তোমাদের পূর্ববর্তীরা তাদের অধিক প্রশ্ন করার এবং তাদের নবীদের সঙ্গে মতভেদ করার ফলে ধ্বংস হয়ে গেছে। সুতরাং আমি যখন তোমাদেরকে কোন জিনিস থেকে নিষেধ করব, তখন তোমরা তা হতে দূরে থাক। আর যখন আমি তোমাদেরকে কোন কাজের আদেশ দেব, তখন তোমরা তা সাধ্যমত পালন কর।’’[1] (বুখারী ও মুসলিম)
2/161 عَنْ أَبِي نَجيحٍ العِرباضِ بنِ سَارِيَةَ رضي الله عنه قَالَ : وَعَظَنَا رسولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) مَوعظةً بَليغَةً وَجِلَتْ مِنْهَا القُلُوبُ، وَذَرَفَتْ مِنْهَا العُيُونُ، فَقُلْنَا: يَا رسولَ اللهِ، كَأَنَّهَا مَوْعِظَةُ مُوَدِّعٍ فَأوْصِنَا، قَالَ: «أُوصِيكُمْ بِتَقْوَى اللهِ، وَالسَّمْعِ وَالطَّاعَةِ وَإنْ تَأمَّر عَلَيْكُمْ عَبْدٌ حَبَشِيٌّ، وَإِنَّهُ مَنْ يَعِشْ مِنْكُمْ فَسَيَرَى اختِلافاً كَثيراً، فَعَليْكُمْ بسُنَّتِي وسُنَّةِ الخُلَفاءِ الرَّاشِدِينَ المَهْدِيِيِّنَ عَضُّوا عَلَيْهَا بالنَّواجِذِ، وَإِيَّاكُمْ وَمُحْدَثَاتِ الأُمُورِ ؛ فإنَّ كلَّ بدعة ضلالة». رواه أَبُو داود والترمذي، وَقالَ: «حديث حسن صحيح»
২/১৬১। আবূ নাজীহ আল-ইরবাদ ইবনে সারিয়াহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এমন মর্মস্পর্শী বক্তৃতা শুনালেন যে, তাতে অন্তর ভীত হল এবং চোখ দিয়ে অশ্রু বয়ে গেল। সুতরাং আমরা বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! এ যেন বিদায়ী ভাষণ মনে হচ্ছে। তাই আপনি আমাদেরকে অন্তিম উপদেশ দিন।’ তিনি বললেন, ‘‘আমি তোমাদেরকে আল্লাহভীতি এবং (রাষ্ট্রনেতার) কথা শোনার ও তার আনুগত্য করার উপদেশ দিচ্ছি; যদিও তোমাদের উপর কোন নিগ্রো (আফ্রিকার কৃষ্ণকায় অধিবাসী) রাষ্ট্রনেতা হয়। (স্মরণ রাখ) তোমাদের মধ্যে যে আমার পর জীবিত থাকবে, সে অনেক মতভেদ বা অনৈক্য দেখবে। সুতরাং তোমরা আমার সুন্নত ও সুপথপ্রাপ্ত খুলাফায়ে রাশেদীনের রীতিকে আঁকড়ে ধরবে এবং তা দাঁত দিয়ে মজবূত করে ধরে থাকবে। আর তোমরা দ্বীনে নব উদ্ভাবিত কর্মসমূহ (বিদ‘আত) থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ, প্রত্যেক বিদ‘আতই ভ্রষ্টতা।’’[2]
3/162 عَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه أنَّ رَسُولَ الله (صلى الله عليه و سلم) قَالَ: «كُلُّ أُمَّتِي يَدخُلُونَ الجَنَّةَ إلاَّ مَنْ أبَى».قيلَ : وَمَنْ يَأبَى يَا رَسُول الله ؟ قَالَ: «مَنْ أَطَاعَنِي دَخَلَ الجَنَّةَ، وَمَنْ عَصَانِي فَقَدْ أبَى». رواه البخاري
৩/১৬২। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমার উম্মতের সবাই জান্নাতে যাবে; কিন্তু সে নয় যে অস্বীকার করবে।’’ জিজ্ঞাসা করা হল, ‘হে আল্লাহর রাসূল! (জান্নাতে যেতে আবার) কে অস্বীকার করবে?’ তিনি বললেন, ‘‘যে আমার অনুসরণ করবে, সে জান্নাতে যাবে এবং যে আমার অবাধ্যতা করবে, সেই জান্নাতে যেতে অস্বীকার করবে।’’[3]
4/163 عَنْ أَبِي مُسلِمٍ، وَقِيلَ : أَبي إيَاسٍ سَلَمَةَ بنِ عَمرِو بنِ الأكوَعِ رضي الله عنه : أَنَّ رَجُلاً أَكَلَ عِنْدَ رَسُولِ الله (صلى الله عليه و سلم) بِشِمَالِهِ، فَقَالَ: «كُلْ بِيَمِينكَ»قَالَ : لاَ أسْتَطيعُ . قَالَ: «لاَ استَطَعْتَ»مَا مَنَعَهُ إلاَّ الكِبْرُ فَمَا رَفَعَهَا إِلَى فِيهِ . رواه مسلم
৪/১৬৩। আবূ মুসলিম মতান্তরে আবূ ইয়াস সালামাহ ইবনে ‘আমর ইবনে আকওয়া’ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বর্ণনা করেন যে, এক ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকটে বাম হাতে খাবার খেল। তিনি বললেন, ‘‘তুমি তোমার ডান হাতে খাও।’’ সে বলল, ‘আমি পারব না।’ তখন তিনি বললেন, ‘‘তুমি যেন না পারো।’’ একমাত্র অহংকার তাকে ডান হাতে খাওয়া থেকে বাধা দিয়েছিল। অতঃপর সে তার ডান হাত তার মুখ পর্যন্ত উঠাতে পারেনি।[4]
5/164 عَنْ أَبِي عَبدِ الله النُّعمَانِ بنِ بَشِير رَضِيَ الله عنهما، قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ الله (صلى الله عليه و سلم)، يقول: «لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ، أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وفي رواية لمسلم : كَانَ رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم) يُسَوِّي صُفُوفَنَا حَتَّى كأنَّما يُسَوِّي بِهَا القِدَاحَ حَتَّى إِذَا رَأَى أَنَّا قَدْ عَقَلْنَا عَنْهُ . ثُمَّ خَرَجَ يَوماً فقامَ حَتَّى كَادَ أنْ يُكَبِّرَ فرأَى رَجلاً بَادياً صَدْرُهُ، فَقَالَ: «عِبَادَ الله ! لَتُسَوُّنَّ صُفُوفَكُمْ أَوْ لَيُخَالِفَنَّ اللهُ بَيْنَ وُجُوهِكُمْ».
৫/১৬৪। নু‘মান ইবন বাশীর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, ‘‘তোমরা তোমাদের (নামাযের) কাতার অবশ্যই সোজা কর, নতুবা আল্লাহ তোমাদের চেহারা পরিবর্তন করে দেবেন। (অথবা তোমাদের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে দেবেন।)’’ (বুখারী-মুসলিম)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদের কাতারসমূহ এমনভাবে সোজা করতেন, যেন তিনি তার দ্বারা তীর সোজা করছেন। যতক্ষণ না তিনি অনুভব করতেন যে, আমরা তাঁর নিকট থেকে এর গুরুত্ব বুঝে নিয়েছি। অতঃপর একদিন তিনি (নামায পড়ার জন্য) বের হয়ে তিনি (ইমামের জায়গায়) দাঁড়ালেন। এমনকি তিনি তকবীর বলে নামায শুরু করতে যাচ্ছেন, এমতাবস্থায় তিনি একটি লোককে দেখলেন যে, সে তার বুক কাতার থেকে বের করে রেখেছে। সুতরাং তিনি বললেন, ‘‘হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা অবশ্যই তোমাদের কাতারসমূহ সোজা করবে, নচেৎ তিনি তোমাদের চেহারা পরিবর্তন করে দেবেন। (অথবা তোমাদের মধ্যে ভেদাভেদ সৃষ্টি করে দেবেন।)’’[5]
[1] নাসায়ী ১৭১৯, ১৭২০, ১৭২১, ১৭২২, ১৭২৩, ১৭২৪, ১৭২৫, ১৭৮৯, ২১৭৭, ২১৭৮, ২১৭৯, ২৬১৯, আবূ দাউদ ২৪৩৪
[2] আবূ দাউদ ৪৬০৭, দারেমী ৯৫, (আবূ দাউদ, তিরমিযী, হাসান সহীহ)
[3] সহীহুল বুখারী ৭২৮০, মুসলিম ১৮৩৫, নাসায়ী ৪১৯৩, ৫৫১০, ইবনু মাজাহ ৩, আহমাদ ৫৩১১
[4] মুসলিম ২০২১, আহমাদ ১৬০৫৮, ১৬০৫৪, ১৬০৯৫, দারেমী ২০৩২
[5] সহীহুল বুখারী ৭১৭, মুসলিম ৪৩৬, তিরমিযী ২২৭, নাসায়ী ৮১০, আবূ দাউদ ৬৬২, ৬৬৩, ৬৬৫, ইবনু মাজাহ ৯৯৪, আহমাদ ১৭৯১৮, ১৭৯৫৯