7/502 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: خَرَجَ رَسُول اللهِ (صلى الله عليه و سلم) ذَاتَ يَوْمٍ أَوْ لَيْلَةٍ، فَإذَا هُوَ بأَبِي بَكْرٍ وَعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، فَقَالَ:«مَا أَخْرَجَكُمَا مِنْ بُيُوتِكُما هَذِهِ السَّاعَةَ ؟ » قَالاَ: الجُوعُ يَا رَسُولَ اللهِ. قَالَ: «وَأَنَا، وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لأَخْرَجَنِي الَّذِي أَخْرَجَكُما، قُومَا»، فقَامَا مَعَهُ، فَأتَى رَجُلاً مِنَ الأَنْصَارِ، فَإِذَا هُوَ لَيْسَ في بيْتِهِ، فَلَمَّا رَأَتْهُ المَرْأَةُ، قَالَت: مَرْحَبَاً وَأهلاً .فَقَالَ لَهَا رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «أيْنَ فُلاَنُ ؟ » قَالَت: ذَهَبَ يَسْتَعْذِبُ لنَا المَاءَ . إِذْ جَاءَ الأَنْصَارِيُّ، فَنَظَرَ إِلَى رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) وَصَاحِبَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: الحَمْدُ للهِ، مَا أَحَدٌ الْيَوْمَ أكْرَمَ أضْيَافاً مِنِّي، فَانْطَلَقَ فَجَاءَهُمْ بِعِذْقٍ فِيهِ بُسْرٌ وَتَمْرٌ وَرُطَبٌ، فَقَالَ: كُلُوا، وَأَخَذَ الْمُدْيَةَ، فَقَالَ لَهُ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): « إيْاكَ وَالْحَلُوبَ » فَذَبَحَ لَهُمْ، فَأكَلُوا مِنَ الشَّاةِ وَمِنْ ذَلِكَ العِذْقِ وَشَرِبُوا . فَلَمَّا أنْ شَبِعُوا وَرَوُوا قَالَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) لأَبي بَكْر وَعُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا: «وَالَّذِي نَفْسِي بِيَدِهِ، لَتُسْأَلُنَّ عَنْ هَذَا النَّعِيمِ يَوْمَ القِيَامَةِ، أَخْرَجَكُمْ مِنْ بُيُوتِكُمُ الْجُوعُ، ثُمَّ لَمْ تَرْجِعُوا حَتَّى أصَابَكُمْ هَذَا النَّعِيمُ ». رواه مسلم
৭/৫০২। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন একদিন অথবা কোন এক রাতে (ঘর থেকে) বের হলেন, অতঃপর অকস্মাৎ আবূ বকর ও উমার (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা)এর সঙ্গে তাঁর দেখা হল। তিনি বললেন, ‘‘এ সময় তোমরা বাড়ী থেকে কেন বের হয়েছ?’’ তাঁরা বললেন, ‘ক্ষুধার তাড়নায় হে আল্লাহর রসূল!’ তিনি বললেন, ‘‘সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে। আমিও সেই কারণে বাড়ি থেকে বের হয়েছি, যে কারণে তোমরা বের হয়েছ। তোমরা ওঠো (এবং আমার সঙ্গে চল)।’’ অতঃপর তাঁরা দু’জনে তাঁর সঙ্গে চলতে লাগলেন। তারপর তিনি এক আনসারীর বাড়ী এলেন। আনসারী সে সময় বাড়ীতে ছিলেন না। যখন তাঁর স্ত্রী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে দেখলেন তখন অভ্যর্থনা ও সবাগত জানালেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, ‘‘অমুক (আনসারী) কোথায়?’’ তিনি বললেন, ‘আমাদের জন্য মিঠা পানি আনতে গেছেন।’ এর মধ্যে আনসারী এসে গেলেন। তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীদ্বয়কে দেখে বললেন, ‘আলহামদু লিল্লাহ, আজ আমার (বাড়ীর) চেয়ে সম্মানিত মেহমান কারো (বাড়ীতে) নেই।’ অতঃপর তিনি চলে গেলেন এবং খেজুরের একটা কাঁদি আনলেন, যাতে কাঁচা, শুকনো এবং পাকা (টাটকা) খেজুর ছিল। অতঃপর আনসারী বললেন, ‘আপনারা খান এবং তিনি নিজে ছুরি ধরলেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাঁকে বললেন, ‘‘দুধালো ছাগল জবাই করো না।’’ অতঃপর তিনি (ছাগল) জবাই করলেন। তাঁরা ছাগলের (মাংস) খেলেন, ঐ খেজুর কাঁদি থেকে খেজুর খেলেন এবং পানি পান করলেন। তারপর তাঁরা যখন (পানাহার করে) পরিতৃপ্ত হলেন, তখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আবূ বকর ও উমার (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা)কে বললেন, ‘‘সেই সত্তার কসম, যাঁর হাতে আমার প্রাণ রয়েছে! নিশ্চয় তোমাদেরকে কিয়ামতের দিন নিয়ামত সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। ক্ষুধা তোমাদেরকে বাড়ী থেকে বের করেছিল, কিন্তু এখন এ নিয়ামত উপভোগ করে নিজেদের (বাড়ী) ফিরে যাচ্ছ।’’ (মুসলিম) [1]
উক্ত আনসারীর নাম ছিলঃ আবুল হাইসাম তাইয়িহান; যেমন তিরমিযীতে আছে। আর উক্ত জিজ্ঞাসাবাদ গণনার উদ্দেশ্যে করা হবে, ধমকি বা শাস্তি দেওয়ার উদ্দেশ্যে নয়।
8/503 وَعَن خَالِدِ بنِ عُمَيْرٍ العَدَوِيِّ، قَالَ: خَطَبَنَا عُتْبَةُ بنُ غَزْوَانَ، وَكَانَ أمِيراً عَلَى البَصْرَةِ، فَحَمِدَ الله وَأثْنَى عَلَيْهِ، ثُمَّ قَالَ: أَمَّا بَعْدُ، فَإِنَّ الدُّنْيَا قَدْ آذَنَتْ بِصُرْمٍ، وَوَلَّتْ حَذَّاءَ، وَلَمْ يَبْقَ مِنْهَا إِلاَّ صُبَابَةٌ كَصُبَابَةِ الإنَاءِ يَتَصَابُّهَا صَاحِبُهَا، وَإِنَّكُمْ مُنْتَقِلُونَ مِنْهَا إِلَى دَارٍ لاَ زَوَالَ لَهَا، فَانْتَقِلُوا بِخَيرِ مَا بِحَضْرَتِكُمْ، فَإِنَّهُ قَدْ ذُكِرَ لَنَا أنَّ الحَجَرَ يُلْقَى مِنْ شَفِيرِ جَهَنَّمَ فَيَهْوِي فِيهَا سَبْعِينَ عَاماً، لاَ يُدْرِكُ لَهَا قَعْراً، وَاللهِ لَتُمْلأَنَّ أَفَعَجِبْتُمْ ؟! وَلَقدْ ذُكِرَ لَنَا أنَّ مَا بَيْنَ مِصْرَاعَيْنِ مِنْ مَصَارِيعِ الْجَنَّةِ مَسيرَةُ أرْبَعِينَ عَاماً، وَليَأتِيَنَّ عَلَيْهَا يَوْمٌ وَهُوَ كَظِيظٌ مِنَ الزِّحَامِ، وَلَقَدْ رَأيْتُنِي سَابعَ سَبْعَةٍ مَعَ رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، مَا لَنَا طَعَامٌ إِلاَّ وَرَقُ الشَّجَرِ، حَتَّى قَرِحَتْ أشْدَاقُنَا، فَالتَقَطْتُ بُرْدَةً فَشَقَقْتُهَا بَيْنِي وَبَيْنَ سَعْدِ بْنِ مَالِكٍ، فاتَّزَرْتُ بِنِصْفِهَا، وَاتَّزَرَ سَعْدٌ بِنِصْفِهَا، فَمَا أصْبَحَ اليَوْمَ مِنَّا أحَدٌ إِلاَّ أَصْبَحَ أمِيراً عَلَى مِصرٍ مِنَ الأَمْصَارِ، وَإنِّي أعُوذُ بِاللهِ أنْ أكُونَ فِي نَفْسِي عَظِيماً، وَعِنْدَ اللهِ صَغِيراً . رواه مسلم
৮/৫০৩। খালেদ ইবনে উমাইর আদাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, একদা বাসরার গভর্নর উতবাহ ইবনে গাযওয়ান খুতবাহ দিলেন। তিনি (খুতবায় সর্বপ্রথমে) আল্লাহর প্রশংসা করলেন, অতঃপর বললেন, ‘আম্মা বাদ! নিশ্চয় দুনিয়া তার ধ্বংসের কথা ঘোষণা করে দিয়েছে এবং সে মুখ ফিরিয়ে দ্রুতগতিতে পলায়মান আছে। এখন তার (বয়স) পাত্রের তলায় অবশিষ্ট পানীয়ের মত বাকী রয়ে গেছে, যা পাত্রের মালিক (সবশেষে) পান করে। (আর তোমরা এ দুনিয়া থেকে এমন (আখেরাতের) গৃহের দিকে প্রত্যাবর্তন করছ যার ক্ষয় নেই, সুতরাং তোমরা তোমাদের সামনের উত্তম জিনিস নিয়ে প্রত্যাবর্তন কর। কারণ, আমাদেরকে জানানো হয়েছে যে, জাহান্নামের উপর কিনারা থেকে একটি পাথর নিক্ষেপ করা হয়েছে, তা ওর মধ্যে সত্তর বছর পর্যন্ত পড়তে থাকবে, তবুও তা তার গভীরতায় (শেষ প্রান্তে) পৌঁছতে পারবে না। আল্লাহর কসম! জাহান্নামকে (মানুষ দিয়ে) পরিপূর্ণ করে দেওয়া হবে। তোমরা এটা আশ্চর্য মনে করছ? আর আমাদেরকে এও জানানো হয়েছে যে, জান্নাতের দুয়ারের দু’টি চৌকাঠের মধ্যভাগের দূরত্ব চল্লিশ বছরের পথ। তার উপর এমন এক দিন আসবে যে, তাতে লোকের ভিড়ে পরিপূর্ণ থাকবে।
আমি (ইসলাম প্রচারের শুরুতে) রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে সাত জনের মধ্যে একজন ছিলাম। (তখন আমাদের এ অবস্থা ছিল যে,) গাছের পাতা ছাড়া আমাদের অন্য কিছুই খাবার ছিল না। এমনকি (তা খেয়ে) আমাদের কশে ঘা হয়ে গেল। (সে সময়) আমি একখানি চাদর কুড়িয়ে পেলাম, অতঃপর তা আমি দু’টুকরো করে আমার এবং সা‘দ ইবনে খালেদের মধ্যে ভাগ করে নিলাম। তারপর আমি তার অর্ধেকটাকে লুঙ্গী বানিয়ে পরলাম এবং সা‘দও অর্ধেক লুঙ্গী বানিয়ে পরলেন। কিন্তু আজ আমাদের মধ্যে প্রত্যেকেই কোন না কোন শহরের শাসনকর্তা হয়ে আছে। আর আমি নিজের কাছে বড় এবং আল্লাহর কাছে ছোট হওয়া থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করছি।’ (মুসলিম) [2]
9/504 وَعَن أَبي مُوسَى الأَشعَرِي رضي الله عنه، قَالَ: أخْرَجَتْ لَنَا عَائِشَةُ رَضِيَ اللهُ عَنهَا كِسَاءً وَإزاراً غَلِيظاً، قالَتْ: قُبِضَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) في هَذَيْنِ . متفقٌ عَلَيْهِ
৯/৫০৪। আবূ মূসা আশআরী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা আমাদের জন্য একখানি চাদর এবং একখানি মোটা লুঙ্গী বের করে বললেন, ‘এ দু’টি (পরে থাকা অবস্থা)তেই রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মৃত্যুবরণ করেছেন।’ (বুখারী-মুসলিম) [3]
10/505 وَعَن سَعدِ بنِ أَبي وَقَّاصٍ رضي الله عنه، قَالَ: إنِّي لأَوَّلُ الْعَرَبِ رَمَى بِسَهْمٍ في سَبِيلِ اللهِ، وَلَقَدْ كُنَّا نَغْزُو مَعَ رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) مَا لَنَا طَعَامٌ إِلاَّ وَرَقُ الْحُبْلَةِ، وَهذَا السَّمُرُ، حَتَّى إنْ كَانَ أحَدُنَا لَيَضَعُ كَمَا تَضَعُ الشَّاةُ مَا لَهُ خَلْطٌ . متفقٌ عَلَيْهِ
১০/৫০৫। সা‘দ ইবনে আবী অক্কাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আমিই প্রথম ব্যক্তি যে আল্লাহর পথে তীর নিক্ষেপ করেছি। আমরা যখন আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সাথে থেকে যুদ্ধ করি, তখন আমাদের অবস্থা এরূপ ছিল যে, হুবলাহ গাছের পাতা ও এই বাবলা ছাড়া আমাদের অন্য কিছুই খাবার ছিল না। এ জন্য আমাদের প্রত্যেকেই ছাগলের লাদির মত মলত্যাগ করতেন; যার একটি আরেকটির সাথে মিশত না।’ (বুখারী ও মুসলিম) [4]
[1] মুসলিম ২০৩৮, তিরমিযী ২৩৬৯, ইবনু মাজাহ ৩১৮০
[2] মুসলিম ২৯৬৭, তিরমিযী ২৫৭৫, ইবনু মাজাহ ৪১৫৬, আহমাদ ১৭১২৩, ২০০৮৬
[3] সহীহুল বুখারী ৩১০৮, ৫৮১৮, মুসলিম ২০৮০, তিরমিযী ১৭৩৩, আবূ দাউদ ৪০৩৬, ইবনু মাজাহ ৩৫৫১, আহমাদ ২৩৫১৭, ২৪৪৭৬
[4] সহীহুল বুখারী ৭৫৫, ৭৫৮, ৭৭০, ৩৭২৮, ৫৪১২, ৬৪৫৩, মুসলিম ৪৫৩, ২৯৬৬, তিরমিযী ২৩৬৫, নাসায়ী ১০০২, ১০০৩, আবূ দাউদ ৮০৩, ইবনু মাজাহ ১৩১, আহমাদ ১৫১৩, ১৫৫১, ১৫৬০