16/564 وَعَن أَسمَاءَ بِنتِ أَبي بَكرٍ الصِّدِّيقِ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَت: قَالَ لِي رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «لاَ تُوكِي فَيُوكَى عَلَيْكِ». وَفِي رِوَايَةٍ: «أنفقي أَوِ انْفَحِي، أَوْ انْضَحِي، وَلاَ تُحصِي فَيُحْصِي اللهُ عَلَيْكِ، وَلاَ تُوعي فَيُوعي اللهُ عَلَيْكِ ». متفقٌ عَلَيْهِ
১৬/৫৬৪। আসমা বিনতে আবূ বকর (রাদিয়াল্লাহু ‘আনহুমা) বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ‘‘তুমি সম্পদ বেঁধে (জমা করে) রেখো না, এরূপ করলে তোমার নিকট (আসা থেকে) তা বেঁধে রাখা হবে।’’ অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘খরচ কর, অথবা ছেড়ে দাও, অথবা প্রবাহমান কর, গুনে গুনে রেখো না, এরূপ করলে আল্লাহও তোমাকে গুনে গুনে দেবেন। আর তুমি জমা করে রেখো না, এরূপ করলে আল্লাহও তোমার প্রতি (খরচ না করে) জমা করে রাখবেন।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
17/565 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أنَّه سَمِعَ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، يَقُولُ: «مَثَل البَخِيلِ وَالمُنْفِقِ، كَمَثَلِ رَجُلَيْنِ عَلَيْهِمَا جُنَّتَانِ مِنْ حَدِيدٍ مِنْ ثُدِيِّهِمَا إِلَى تَرَاقِيهِمَا، فَأَمَّا المُنْفِقُ فَلاَ يُنْفِقُ إِلاَّ سَبَغَتْ – أَوْ وَفَرَتْ – عَلَى جِلْدِهِ حَتَّى تُخْفِيَ بَنَانَهُ، وَتَعْفُو أثرَهُ، وأمَّا البَخِيلُ، فَلاَ يُرِيدُ أَنْ يُنْفِقَ شَيْئاً إِلاَّ لَزِقَتْ كُلُّ حَلْقَةٍ مَكَانَهَا، فَهُوَ يُوسِّعُهَا فَلاَ تَتَّسِعُ ». متفقٌ عَلَيْهِ
১৭/৫৬৫। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘‘কৃপণ ও দানশীলের দৃষ্টান্ত এমন দুই ব্যক্তির মত, যাদের পরিধানে দু’টি লোহার বর্ম রয়েছে। যা তাদের বুক থেকে টুঁটি পর্যন্ত বিস্তৃত। সুতরাং দানশীল যখন দান করে, তখনই সেই বর্ম তার সারা দেহে বিস্তৃত হয়ে যায়, এমনকি (তার ফলে) তা তার আঙ্গুলগুলোকেও ঢেকে ফেলে এবং তার পদচিহ্ন (পাপ বা ত্রুটি) মুছে দেয়। পক্ষান্তরে কৃপণ যখনই কিছু দান করার ইচ্ছা করে, তখনই বর্মের প্রতিটি আংটা যথাস্থানে এঁটে যায়। সে তা প্রশস্ত করতে চাইলেও তা প্র্রশস্ত হয় না।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [2]
18/566 وَعَنهُ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «مَنْ تَصَدَّقَ بعَدلِ تَمْرَةٍ مِنْ كَسْبٍ طَيِّبٍ، وَلاَ يَقْبَلُ اللهُ إِلاَّ الطَّيبَ، فَإنَّ اللهَ يَقْبَلُهَا بِيَمِينِهِ، ثُمَّ يُرَبِّيهَا لِصَاحِبِهَا كَمَا يُرَبِّي أحَدُكُمْ فَلُوَّهُ حَتَّى تَكُونَ مِثْلَ الجَبَلِ ». متفقٌ عَلَيْهِ
১৮/৫৬৬। উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি (তার) বৈধ উপায়ে উপার্জিত অর্থ থেকে একটি খেজুর পরিমাণও কিছু দান করে—আর আল্লাহ তো বৈধ অর্থ ছাড়া অন্য কিছু গ্রহণই করেন না—সে ব্যক্তির ঐ দানকে আল্লাহ ডান হাতে গ্রহণ করেন। অতঃপর তা ঐ ব্যক্তির জন্য লালন-পালন করেন; যেমন তোমাদের কেউ তার অশব-শাবককে লালন-পালন করে থাকে। পরিশেষে তা পাহাড়ের মত হয়ে যায়।’’ (বুখারী-মুসলিম) [3]
19/567 وَعَنهُ، عَنِ النَّبِيِّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشِي بِفَلاَةٍ مِنَ الأَرْضِ، فَسَمِعَ صَوْتاً في سَحَابَةٍ، اِسقِ حَدِيقَةَ فُلانٍ، فَتَنَحَّى ذَلِكَ السَّحَابُ فَأفْرَغَ مَاءَهُ فِي حَرَّةٍ، فإِذَا شَرْجَةٌ مِنْ تِلْكَ الشِّرَاجِ قَدِ اسْتَوْعَبَت ذَلِكَ الماءَ كُلَّهُ، فَتَتَبَّعَ المَاءَ، فإذَا رَجُلٌ قَائمٌ في حَدِيقَتِهِ يُحَوِّلُ الماءَ بِمِسحَاتِهِ، فَقَالَ لَهُ: يَا عَبْدَ اللهِ، مَا اسمُكَ ؟ قال: فُلانٌ لِلاِسمِ الَّذِي سَمِعَ في السَّحَابَةِ، فَقَالَ لَهُ: يَا عَبدَ اللهِ، لِمَ تَسْألُنِي عَنِ اسْمِي؟ فَقَالَ: إنِّي سَمِعْتُ صَوتْاً فِي السَّحَابِ الَّذِي هَذَا مَاؤُهُ، يَقُولُ: اِسْقِ حَدِيقَةَ فُلاَنٍ لاِسمِكَ، فَمَا تَصْنَعُ فِيهَا، فَقَالَ: أمَا إِذ قُلتَ هَذَا، فَإنِّي أنْظُرُ إِلَى مَا يَخْرُجُ مِنْهَا، فَأتَصَدَّقُ بِثُلُثِهِ، وَآكُلُ أنَا وَعِيَالِي ثُلُثاً، وَأردُّ فِيهَا ثُلُثَهُ ». رواه مسلم
১৯/৫৬৭। উক্ত রাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘এক ব্যক্তি বৃক্ষহীন প্রান্তরে মেঘ থেকে শব্দ শুনতে পেল, ‘অমুকের বাগানে বৃষ্টি বর্ষণ কর।’ অতঃপর সেই মেঘ সরে গিয়ে কালো পাথুরে এক ভূমিতে বর্ষণ করল। তারপর (সেখানকার) নালাসমূহের মধ্যে একটি নালা সম্পূর্ণ পানি নিজের মধ্যে জমা করে নিল। লোকটি সেই পানির অনুসরণ করে কিছু দূর গিয়ে দেখল, একটি লোক কোদাল দ্বারা নিজ বাগানের দিকে পানি ঘুরাচ্ছে। সে তাকে জিজ্ঞাসা করল, ‘তোমার নাম কি ভাই?’ বলল, ‘অমুক।’ এটি ছিল সেই নাম, যে নাম মেঘের আড়ালে সে শুনেছিল। বাগান-ওয়ালা বলল, ‘ওহে আল্লাহর বান্দা! তুমি আমার নাম কেন জিজ্ঞাসা করলে?’ লোকটি বলল, ‘আমি মেঘের আড়াল থেকে তোমার নাম ধরে তোমার বাগানে বৃষ্টি বর্ষণ করতে আদেশ শুনলাম। তুমি কি এমন কাজ কর?’ বাগান-ওয়ালা বলল, ‘এ কথা যখন বললে, তখন বলতে হয়; আমি এই বাগানের উৎপন্ন ফল-ফসলকে ভেবে-চিন্তে তিন ভাগে ভাগ করি। অতঃপর তার এক ভাগ দান করি, এক ভাগ আমি আমার পরিজন সহ খেয়ে থাকি এবং বাকী এক ভাগ বাগানের চাষ-খাতে ব্যয় করি।’’ (মুসলিম) [4]
[1] সহীহুল বুখারী ১৪৩৩, ১৪৩৪, ২৫৯০, ২৫৯১, মুসলিম ১০২৯, তিরমিযী ১৯৬০, নাসায়ী ২৫৫১, আবূ দাউদ ১৬৯৯, আহমাদ ২৪৫৫৮, ২৬৩৭২, ২৬৩৮২, ২৬৩৯৪, ২৬৪৩০, ২৬৪৪০, ২৬৪৪৭
[2] সহীহুল বুখারী ১৪৪৪, ২৯১৭, ৫৭৯৭, মুসলিম ১০২১, নাসায়ী ২৫৪৭, ২৫৪৮, আহমাদ ৭৪৩৪, ৮৮১৪, ১০৩৯১
[3] সহীহুল বুখারী ১৪১০, মুসলিম ১০১৪, তিরমিযী ৬৬১, নাসায়ী ২৫২৫, ইবনু মাজাহ ১৮৪২, আহমাদ ৭৫৭৮, ৮১৮১, ৮৭৮৩, ৮৯৯২, ৯১৪২, ৯১৪৯, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৭৪, দারেমী ১৬৭৫