29/524 وَعَنْ أَسْمَاءَ بِنْتِ يَزِيْدٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهَا قَالَتْ: كَانَ كُمُّ قَمِيْصِ رَسُوْلِِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) إِلىٰ الرُّسْغِ. رواه أبو داؤد والترمذي وقال: حديث حسن.
২৯/৫২৪। আসমা বিনতু ইয়াযীদ রাদিয়াল্লাহু আনহা হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জামার হাতা ছিলো কব্জি পর্যন্ত। (তিরমিযী হাদীসটিকে হাসান বলেছেন)[1]
30/525 وَعَن جَابِرٍ رضي الله عنه، قَالَ: إنَّا كُنَّا يَوْمَ الْخَنْدَقِ نَحْفِرُ، فَعَرَضَتْ كُدْيَةٌ شَدِيدَةٌ، فَجَاؤُوا إِلَى النَّبِيِّ (صلى الله عليه و سلم)، فَقَالَوا: هَذِهِ كُدْيَةٌ عَرَضَتْ في الخَنْدَقِ . فَقَالَ: «أنَا نَازِلٌ » ثُمَّ قَامَ، وَبَطْنُهُ مَعْصُوبٌ بِحَجَرٍ، وَلَبِثْنَا ثَلاَثَة أيّامٍ لاَ نَذُوقُ ذَوَاقاً فَأخَذَ النَّبِيُّ (صلى الله عليه و سلم) المِعْوَلَ، فَضَرَبَ فَعَادَ كَثِيباً أهْيَلَ أَو أهْيَمَ، فَقُلتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، ائْذَنْ لِي إِلَى البَيْتِ، فَقُلتُ لامْرَأتِي: رَأيْتُ بالنَّبيِّ (صلى الله عليه و سلم) شَيئاً مَا في ذَلِكَ صَبْرٌ فَعِنْدَكِ شَيْءٌ ؟ فَقَالَت: عِنْدي شَعِيرٌ وَعَنَاقٌ، فَذَبَحْتُ العَنَاقَ وَطَحَنْتُ الشَّعِيرَ حَتَّى جَعَلْنَا اللَّحْمَ في البُرْمَةِ، ثُمَّ جِئْتُ النَّبِيَّ (صلى الله عليه و سلم)، وَالعَجِينُ قَدِ انْكَسَرَ، وَالبُرْمَةُ بَيْنَ الأثَافِيِّ قَدْ كَادَتْ تَنْضِجُ، فَقُلتُ: طُعَيْمٌ لِي، فَقُمْ أنْتَ يَا رَسُولَ اللهِ وَرَجُلٌ أَوْ رَجُلانِ، قَالَ: «كَمْ هُوَ » ؟ فَذَكَرْتُ لَهُ، فَقَالَ:«كَثِيرٌ طَيِّبٌ قُل لَهَا لاَ تَنْزَعِ البُرْمَةَ، وَلاَ الخُبْزَ مِنَ التَّنُّورِحَتَّى آتِي » فَقَالَ: «قُومُوا »، فَقَامَ المُهَاجِرُونَ وَالأنْصَارُ، فَدَخَلْتُ عَلَيْهَا فَقُلتُ: وَيْحَكِ قَدْ جَاءَ النبيُّ (صلى الله عليه و سلم) وَالمُهَاجِرُونَ وَالأنْصَارُ وَمَن مَعَهُمْ ! قَالَت: هَلْ سَألَكَ ؟ قُلْتُ: نَعَمْ، قَالَ: «ادْخُلُوا وَلاَ تَضَاغَطُوا » فَجَعَلَ يَكْسرُ الخُبْزَ، وَيَجْعَلُ عَلَيْهِ اللَّحْمَ، وَيُخَمِّرُ البُرْمَةَ وَالتَّنُّورَ إِذَا أخَذَ مِنْهُ، وَيُقَرِّبُ إِلَى أصْحَابِهِ ثُمَّ يَنْزِعُ، فَلَمْ يَزَلْ يِكْسِرُ وَيَغْرِفُ حَتَّى شَبِعُوا، وَبَقِيَ مِنْهُ، فَقَالَ: «كُلِي هَذَا وَأهِدي، فَإنَّ النَّاسَ أصَابَتْهُمْ مَجَاعَةٌ ». متفقٌ عَلَيْهِ
وَفِي رِوَايَةٍ قَالَ جَابِرٍ: لَمَّا حُفِرَ الخَنْدَقُ رَأيْتُ بِالنَّبِيِّ (صلى الله عليه و سلم) خَمَصاً، فَانْكَفَأْتُ إِلَى امْرَأتِي، فَقُلتُ: هَلْ عِنْدَكِ شَيْءٌ ؟ فَإنّي رَأيْتُ بِرَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) خَمَصاً شَديداً، فَأخْرَجَتْ إلَيَّ جِرَاباً فِيه صَاعٌ مِنْ شَعِيرٍ، وَلَنَا بَهِيمَةٌ دَاجِنٌ فَذَبَحْتُهَا، وَطَحَنتِ الشَّعِيرَ، فَفَرَغَتْ إِلَى فَرَاغي، وَقَطَعْتُهَا فِي بُرْمَتِهَا، ثُمَّ وَلَّيْتُ إِلَى رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، فَقَالَت: لاَ تَفْضَحْنِي بِرَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) وَمَنْ مَعَهُ، فَجِئتُهُ فَسَارَرْتُهُ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللهِ، ذَبَحْنَا بَهِيمَةً لَنَا، وَطَحَنْتُ صَاعاً مِنْ شَعِيرٍ، فَتَعَالَ أنْتَ وَنَفَرٌ مَعَكَ، فَصَاحَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، فَقَالَ: «يَا أهلَ الخَنْدَقِ: إنَّ جَابِراً قَدْ صَنَعَ سُؤْراً فَحَيَّهَلاً بِكُمْ» فَقَالَ النَّبِيُّ (صلى الله عليه و سلم): «لاَ تُنْزِلُنَّ بُرْمَتَكُمْ وَلاَ تَخْبِزُنَّ عَجِينَكُمْ حَتَّى أجِيءَ » فَجِئْتُ، وَجَاءَ النَّبِيُّ (صلى الله عليه و سلم) يَقْدُمُ النَّاسَ، حَتَّى جِئْتُ امْرَأتِي، فَقَالَتْ: بِكَ وَبِكَ ! فقُلْتُ: قَدْ فَعَلْتُ الَّذِي قُلْتِ . فَأخْرَجَتْ عَجِيناً، فَبسَقَ فِيهِ وَبَاركَ، ثُمَّ عَمَدَ إِلَى بُرْمَتِنا فَبصَقَ وَبَارَكَ، ثُمَّ قَالَ:« ادْعِي خَابزَةً فَلْتَخْبِزْ مَعَكِ، وَاقْدَحِي مِنْ بُرْمَتِكُمْ، وَلاَ تُنْزِلُوهَا » وَهُم ألْفٌ، فَأُقْسِمُ بِاللهِ لأَكَلُوا حَتَّى تَرَكُوهُ وَانْحَرَفُوا، وَإنَّ بُرْمَتَنَا لَتَغِطُّ كَمَا هِيَ، وَإنَّ عَجِينَنَا لَيُخْبَزُ كَمَا هُوَ .
৩০/৫২৫। জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, খন্দক যুদ্ধের সময় আমরা পরিখা খনন করছিলাম। সেই সময় এক খন্ড কঠিন পাথর বেরিয়ে এলে (যা ভাঙ্গা যাচ্ছিল না) সকলেই নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এসে বললেন, ‘খন্দকের মধ্যে এক খন্ড পাথর বেরিয়েছে (আমরা তা ভাঙ্গতে পারছি না)।’ এ কথা শুনে তিনি বললেন, ‘‘আমি নিজে খন্দকে অবতরণ করব।’’ অতঃপর তিনি দাঁড়ালেন। সে সময়ে তাঁর পেটে একটি পাথর বাঁধা ছিল। আর আমরাও অনাহারে ছিলাম; তিনদিন কোন কিছুই খাইনি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম (এসে) একটি গাঁইতি হাতে নিয়ে পাথরের উপর আঘাত করলেন, ফলে তৎক্ষণাৎ তা চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে বালুকা রাশিতে পরিণত হল। অতঃপর আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমাকে বাড়ী যাওয়ার জন্য অনুমতি দিন।’ (তিনি অনুমতি দিলে বাড়ী পৌঁছে) আমার স্ত্রীকে বললাম, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর মধ্যে আমি এমন কিছু দেখেছি, যা আমি সহ্য করতে পারছি না। তোমার নিকট কোন খাবার আছে কি?’ সে বলল, ‘আমার নিকট কিছু যব ও একটি বকরীর বাচ্চা আছে।’
সুতরাং বকরীর বাচ্চাটি আমি যবেহ করলাম এবং সে যব পিষে দিল। অতঃপর গোশ্ত ডেকচিতে দিয়ে আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট এলাম। সে সময় আটা খামির হচ্ছিল এবং ডেকচি চুলার ঝিঁকের উপর ছিল ও গোশ্ত প্রায় রান্না হয়ে এসেছিল। তখন আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমার (বাড়ীতে) সামান্য কিছু খাবার আছে। ফলে একজন বা দু’জন সাথে নিয়ে আপনি উঠে আসুন।’ তিনি বললেন, ‘‘ কী পরিমাণ খাবার আছে?’’ আমি তাঁর নিকট সব খুলে বললে তিনি বললেন, ‘অনেক এবং উত্তম আছে।’ অতঃপর তিনি আমাকে বললেন, ‘‘তুমি তোমার স্ত্রীকে গিয়ে বল, সে যেন আমি না আসা পর্যন্ত ডেকচি চুলা থেকে না নামায় এবং রুটি তৈরী না করে।’’ তারপর (সকলের উদ্দেশ্যে) তিনি বললেন, ‘‘তোমরা উঠ! (জাবির তোমাদেরকে খাবারের দাওয়াত দিয়েছে।)’’ মুহাজির ও আনসারগণ উঠলেন (এবং চলতে লাগলেন)। অতঃপর আমি আমার স্ত্রীর নিকট গিয়ে বললাম, ‘তোমার সর্বনাশ হোক! (এখন কী হবে?) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তো মুহাজির, আনসার এবং তাদের অন্য সাথীদের নিয়ে চলে আসছেন।’ তিনি (জাবেরের স্ত্রী) বললেন, ‘তিনি কি আপনাকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন?’ আমি বললাম, ‘হ্যাঁ।’ (স্ত্রী বললেন, ‘তাহলে আল্লাহ ও তাঁর রসূল অধিক জানেন। আমাদের কাছে যা আছে তা তো আপনি তাঁকে জানিয়ে দিয়েছেন।’ জাবের বলেন, তখন আমার কিংকর্তব্যবিমূঢ়তা দূর হল। আমি বললাম, ‘তুমি ঠিকই বলেছ।’) তারপর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উপস্থিত হয়ে বললেন, ‘‘তোমরা সকলেই প্রবেশ কর এবং ভিড় করো না।’’ এ বলে তিনি রুটি টুকরো করে তার উপর গোশ্ছ দিয়ে সাহাবাদের মাঝে বিতরণ করতে শুরু করলেন। (এগুলো পরিবেশন করার সময়) তিনি ডেকচি ও চুলা ঢেকে রেখেছিলেন। এভাবে তিনি রুটি টুকরো করে হাত ভরে বিতরণ করতে লাগলেন। এতে সকলে তৃপ্তি সহকারে খাবার পরেও কিছু বাকী রয়ে গেল। তিনি (জাবেরের স্ত্রীকে) বললেন, ‘‘এ তুমি খাও এবং অন্যকে উপহার দাও। কেননা, লোকদেরকে [ুধা পেয়েছে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [2]
অন্য এক বর্ণনায় আছে, জাবের রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, যখন পরিখা খনন করা হল, তখন আমি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে ভুখা দেখলাম। অতঃপর আমি আমার স্ত্রীর নিকট গিয়ে বললাম, ‘তোমার নিকট কোন (খাবার) জিনিস আছে কি? কেননা, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে প্রচন্ড ক্ষুধার্ত দেখলাম।’ সুতরাং সে একটি চামড়ার থলি বের করল, যাতে এক সা’ (আড়াই কিলো পরিমাণ) যব ছিল। আর আমাদের নিকট একটি গৃহপালিত ছাগলের বাচ্চা ছিল। আমি তা জবাই করলাম এবং আমার স্ত্রী যব পিষল। আমার (মাংস বানানোর কাজ সম্পন্ন করা পর্যন্ত) সেও যব পিষার কাজ সেরে নিল। পুনরায় আমি মাংস টুকরো টুকরো করে হাঁড়িতে রাখলাম। তারপর রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট যেতে লাগলাম। সে বলল, ‘আপনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও তাঁর সাথীদের কাছে আমাকে লাঞ্ছিত করবেন না।’ সুতরাং আমি তাঁর নিকট এলাম এবং চুপি চুপি বললাম, ‘হে আল্লাহর রসূল! আমরা আমাদের একটি ছাগল জবাই করেছি এবং আমার স্ত্রী এক সা যব পিষেছে। সুতরাং আপনি আসুন এবং আপনার সাথে কিছু লোক।’ এ কথা শুনে রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চিৎকার করে বললেন, ‘‘হে পরিখা খননকারীরা! জাবের খাবার তৈরী করেছে, তোমরা এসো।’’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ‘‘যে পর্যন্ত আমি না আসি, সে পর্যন্ত তুমি চুলা থেকে ডেকচি নামাবে না এবং আটার রুটি তৈরী করবে না।’’ অতঃপর আমি এলাম এবং নবী @ও এলেন। তিনি লোকদের আগে আগে হাঁটতে লাগলেন। পরিশেষে আমি আমার স্ত্রীর নিকট এলাম (এবং তাকে সকলের আসার সংবাদ দিলাম)। সে আমাকে ভৎর্সনা করতে লাগল। আমি বললাম, ‘(এতে আমার দোষ কি?) আমি তো তা-ই করেছি যা তুমি আমাকে বলেছিলে।’ (যাই হোক) সে খমীর বের করে দিল। তিনি তাতে থুতু মারলেন এবং বরকতের দো‘আ করলেন। তারপর তিনি আমাদের ডেকচির নিকট গিয়ে তাতেও থুতু মারলেন এবং বরকতের দো‘আ করলেন। আর তিনি (আমার স্ত্রীকে) বললেন, ‘‘একজন মহিলা ডাকো; সে তোমার সাথে রুটি তৈরী করুক এবং তুমি ডেচকি থেকে (মাংস) পাত্রে দিতে থাক, কিন্তু চুলা থেকে তা নামাবে না।’’
তাঁরা সংখ্যায় এক হাজার ছিলেন। জাবের বলেন, আমি আল্লাহর কসম খেয়ে বলছি যে, ‘সকলেই খাবার খেলেন এমনকি শেষ পর্যন্ত তারা কিছু অবশিষ্ট রেখে চলে গেলেন। আর আমাদের ডেকচি আগের মত ফুটতেই থাকল এবং আমাদের আটা থেকে রুটি প্রস্তুত হতেই রইল।’
[1] আমি (আলবানী) বলছিঃ এর মধ্যে দুর্বলতা রয়েছে। দেখুন ‘‘সিলসিলাহ্ য‘ঈফা’’ (২৪৫৮)। এর সনদের মধ্যে শাহ্র ইবনু হাওশাব নামক এক বর্ণনাকারী রয়েছেন তিনি মন্দ হেফ্য শক্তির কারণে দুর্বল। হাফেয ইবনু হাজার ‘‘আত্তাক্বরীব’’ গ্রন্থে বলেনঃ তিনি সত্যবাদী, বেশী বেশী মুরসাল এবং সন্দেহমূলক বর্ণনাকারী। আবূ হাতিম ও ইবনু আদী প্রমুখও বলেছেন তার হেফ্য শক্তিতে দুর্বলতা ছিল। [দেখুন ‘‘য‘ঈফা’’ হাদীস নং ৬৮৩৬]।
[2] সহীহুল বুখারী ৩০৭০, ৪১০১, ৪১০২, মুসলিম ২০৩৯, তিরমিযী ২৮৪২, আহমাদ ১৩৭৯৯, ১৩৮০৯, ১৪৬১০, দারেমী ৪২