12/560 وَعَن جُبَيرِ بنِ مُطعِمٍ رضي الله عنه، قَالَ: بَيْنَمَا هُوَ يَسِيرُ مَعَ النَّبيِّ (صلى الله عليه و سلم) مَقْفَلَهُ مِنْ حُنَيْن، فَعَلِقَهُ الأعْرَابُ يَسْألُونَهُ، حَتَّى اضْطَرُّوهُ إِلَى سَمُرَةٍ، فَخَطِفَت رِدَاءَهُ، فَوَقَفَ النَّبيُّ (صلى الله عليه و سلم)، فَقَالَ: « أعْطُونِي رِدَائي، فَلَوْ كَانَ لِي عَدَدُ هذِهِ العِضَاهِ نَعَماً، لَقَسَمْتُهُ بَينَكُمْ، ثُمَّ لاَ تَجِدُونِي بَخِيلاً وَلاَ كَذّاباً وَلاَ جَبَاناً ». رواه البخاري
১২/৫৬০। জুবাইর ইবনে মুত্বইম রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, তিনি হুনাইনের যুদ্ধ থেকে ফিরার সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সঙ্গে আসছিলেন। (পথিমধ্যে) কতিপয় বেদুঈন তাঁর নিকট অনুনয়-বিনয় করে চাইতে আরম্ভ করল, এমন কি শেষ পর্যন্ত তারা তাঁকে বাধ্য করে একটি বাবলা গাছের কাছে নিয়ে গেল। যার ফলে তাঁর চাদর (গাছের কাঁটায়) আটকে গেল। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেমে গেলেন এবং বললেন, ‘‘তোমরা আমাকে আমার চাদরখানি দাও। যদি আমার নিকট এসব (অসংখ্য) কাঁটা গাছের সমান উঁট থাকত, তাহলে আমি তা তোমাদের মধ্যে বণ্টন করে দিতাম। অতঃপর তোমরা আমাকে কৃপণ, মিথ্যুক বা কাপুরুষ পেতে না।’’ (বুখারী) [1]
13/561 وَعَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه: أنَّ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «مَا نَقَصَتْ صَدَقَةٌ مِنْ مَالٍ، وَمَا زَادَ اللهُ عَبْداً بِعَفْوٍ إِلاَّ عِزّاً، وَمَا تَواضَعَ أحَدٌ للهِ إِلاَّ رَفَعَهُ اللهُ – عز وجل – ». رواه مسلم
১৩/৫৬১। আবূ হুরাইরা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘সাদকাহ করলে মাল কমে যায় না এবং ক্ষমা করার বিনিময়ে আল্লাহ তা‘আলা (ক্ষমাকারীর) সম্মান বৃদ্ধি করেন। আর কেউ আল্লাহর (সন্তুষ্টির) জন্য বিনয়ী হলে, আল্লাহ আয্যা অজাল্ল তাকে উচ্চ করেন।’’ (মুসলিম) [2]
14/562 وَعَن أَبي كَبشَةَ عَمرِو بنِ سَعدٍ الأنمَارِي رضي الله عنه: أنّه سَمِعَ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، يَقُولُ: «ثَلاَثَةٌ أُقْسِمُ عَلَيْهِنَّ، وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثاً فَاحْفَظُوهُ: مَا نَقَصَ مَالُ عَبْدٍ مِنْ صَدَقَةٍ، وَلاَ ظُلِمَ عَبْدٌ مَظْلَمَةً صَبَرَ عَلَيْهَا إِلاَّ زَادَهُ اللهُ عِزّاً، وَلاَ فَتَحَ عَبْدٌ بَابَ مَسألَةٍ إِلاَّ فَتَحَ اللهُ عَلَيْهِ بَابَ فَقرٍ» – أَوْ كَلِمَةً نَحْوَهَا- «وَأُحَدِّثُكُمْ حَدِيثاً فَاحْفَظُوهُ» قَالَ: «إنَّمَا الدُّنْيَا لأرْبَعَةِ نَفَرٍ: عَبْدٍ رَزَقَهُ اللهُ مَالاً وَعِلماً، فَهُوَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ، وَيَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ، وَيَعْلَمُ للهِ فِيهِ حَقَّاً، فَهَذَا بِأَفضَلِ المَنَازِلِ . وَعَبْدٍ رَزَقهُ اللهُ عِلْماً، وَلَمْ يَرْزُقْهُ مَالاً، فَهُوَ صَادِقُ النِّيَّةِ، يَقُولُ: لَوْ أنَّ لِي مَالاً لَعَمِلتُ بِعَمَلِ فُلانٍ، فَهُوَ بنيَّتِهِ، فأجْرُهُمَا سَوَاءٌ . وَعَبْدٍ رَزَقَهُ الله مَالاً، وَلَمَ يَرْزُقْهُ عِلْماً، فَهُوَ يَخبطُ في مَالِهِ بغَيرِ عِلْمٍ، لاَ يَتَّقِي فِيهِ رَبَّهُ، وَلاَ يَصِلُ فِيهِ رَحِمَهُ، وَلاَ يَعْلَمُ للهِ فِيهِ حَقّاً، فَهذَا بِأَخْبَثِ المَنَازِلِ . وَعَبْدٍ لَمْ يَرْزُقْهُ اللهُ مَالاً وَلاَ عِلْماً، فَهُوَ يَقُولُ: لَوْ أنَّ لِي مَالاً لَعَمِلْتُ فِيهِ بعَمَلِ فُلاَنٍ، فَهُوَ بنِيَّتِهِ، فَوِزْرُهُمَا سَوَاءٌ». رواه الترمذي، وقال: «حديث حسن صحيح »
১৪/৫৬২। আবূ কাবশাহ ‘আমর ইবনে সা‘দ আনসারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছেন, ‘‘আমি তিনটি জিনিসের ব্যাপারে শপথ করছি এবং তোমাদেরকে একটি হাদীস বলছি তা স্মরণ রাখোঃ (১) কোন বান্দার মাল সাদকাহ করলে কমে যায় না। (২) কোন বান্দার উপর কোন প্রকার অত্যাচার করা হলে এবং সে তার উপর ধৈর্য-ধারণ করলে আল্লাহ নিশ্চয় তার সম্মান বাড়িয়ে দেন, আর (৩) কোন বান্দা যাচ্ঞার দুয়ার উদ্ঘাটন করলে আল্লাহ তার জন্য দরিদ্রতার দরজা উদ্ঘাটন করে দেন।’’ অথবা এই রকম অন্য শব্দ তিনি ব্যবহার করলেন।
‘‘আর তোমাদেরকে একটি হাদীস বলছি তা স্মরণ রাখো।’’ তিনি বললেন, ‘‘দুনিয়ায় চার প্রকার লোক আছে; (১) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ ধন ও (ইসলামী) জ্ঞান দান করেছেন। অতঃপর সে তাতে আল্লাহকে ভয় করে এবং তার মাধ্যমে নিজ আত্মীয়তা বজায় রাখে। আর তাতে যে আল্লাহর হক রয়েছে তা সে জানে। অতএব সে (আল্লাহর কাছে) সবচেয়ে উৎকৃষ্ট স্তরে অবস্থান করবে। (২) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ (ইসলামী) জ্ঞান দান করেছেন; কিন্তু মাল দান করেননি। সে নিয়তে সত্যনিষ্ঠ, সে বলে যদি আমার মাল থাকত, তাহলে আমি (পূর্বোক্ত) অমুকের মত কাজ করতাম। সুতরাং সে নিয়ত অনুসারে বিনিময় পাবে; এদের উভয়ের প্রতিদান সমান। (৩) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ মাল দান করেছেন; কিন্তু (ইসলামী) জ্ঞান দান করেননি। সুতরাং সে না জেনে অবৈধরূপে নির্বিচারে মাল খরচ করে; সে তাতে আল্লাহকে ভয় করে না, তার মাধ্যমে নিজ আত্মীয়তা বজায় রাখে না এবং তাতে যে আল্লাহর হক রয়েছে তাও সে জানে না। অতএব সে (আল্লাহর কাছে) সবচেয়ে নিকৃষ্ট স্তরে অবস্থান করবে। আর (৪) ঐ বান্দা, যাকে আল্লাহ ধন ও (ইসলামী) জ্ঞান কিছুই দান করেননি। কিন্তু সে বলে, যদি আমার নিকট মাল থাকত, তাহলে আমিও (পূর্বোক্ত) অমুকের মত কাজ করতাম। সুতরাং সে নিয়ত অনুসারে বিনিময় পাবে; এদের উভয়ের পাপ সমান।’’ (তিরমিযী হাসান সহীহ সূত্রে) [3]
* অর্থাৎ আয়েশা রাদিয়াল্লাহু আনহা বললেন, ‘তার সবটুকু মাংসই সাদকা করে দেওয়া হয়েছে এবং কেবলমাত্র কাঁধের মাংস বাকী রয়ে গেছে।’ উত্তরে তিনি বললেন, ‘‘কাঁধের মাংস ছাড়া সবই আখেরাতে আমাদের জন্য বাকী আছে।’’ (আসলে যা দান করা হয়, তাই বাকী থাকে।)
[1] সহীহুল বুখারী ২৮২১, ৩১৪৮, আহমাদ ১৬৩১৫, ১৬৩৩৪
[2] মুসলিম ২৫৮৮, তিরমিযী ২০২৯, আহমাদ ৭১৬৫, ৮৭৮২, ৯৩৬০, মুয়াত্তা মালিক ১৮৮৫, দারেমী ১৬৭৬
[3] তিরমিযী ২৩২৫, ইবনু মাজাহ ৪২২৮, আহমাদ ১৭৫৭০