111- بَابُ أَدَبِ الشُّرْبِ
পরিচ্ছেদ – ১১১: পান করার আদব-কায়দা
পানপাত্রের বাইরে নিঃশ্বাস ফেলা উত্তম এবং তার ভিতরে নিঃশ্বাস ফেলা মকরূহ। পানপাত্র ডান দিক থেকে পরিবেশন করা উত্তম।
1/761 عَن أَنَسٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) كَانَ يَتَنَفَّسُ فِي الشَّرابِ ثَلاَثاً . متفق عَلَيْهِ
১/৭৬১। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পানি পান করার সময় তিনবার দম নিতেন। (অর্থাৎ তিনি পান পাত্রের বাইরে তিনবার নিঃশ্বাস ফেলতেন।) (বুখারী ও মুসলিম)[1]
2/762 وَعَنْ اِبْنِ عَبَّاسٍ رَضِيَ اللهُ عَنْهُمَا قَالَ: قَالَ (صلى الله عليه و سلم): «لَا تَشْرَبُوْا واحِداً كَشُرْبِ البَعِيْرِ، وَلٰكِنْ اشْرَبُوْا مَثْنىٰ وَثُلَاثَ، وَسَمُّوْا إِذَا أَنْتُمْ شَرِبْتُمْ، وَاحْمَدُوْا إِذَا أَنْتُمْ رَفَعْتُمْ» رواه الترمذي وقال: حديث حسن.
২/৭৬২। ইবনু ‘আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, উঁটের ন্যায় তোমরা এক নিঃশ্বাসে পানি পান করো না, বরং দুই তিনবার (শ্বাস নিয়ে) পান করো। আর যখন তোমরা পানি পান করা শুরু কর তখন বিসমিল্লাহ বলো এবং যখন পান করা শেষ করো তখন ‘আল-হামদুলিল্লাহ’ বলো। হাদীসটি তিরমিযী বর্ণনা করেছেন এবং বলেছেন এটি হাসান হাদীস।[2]
3/763 وَعَن أَبي قَتَادَةَ رضي الله عنه: أَنَّ النَّبِيَّ (صلى الله عليه و سلم) نَهَى أنْ يُتَنَفَّسَ فِي الإِنَاءِ . متفق عَلَيْهِ
৩/৭৬৩। আবূ ক্বাতাদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম পান পাত্রে নিঃশ্বাস ফেলতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম)[3]
4/764 وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) أُتِيَ بِلَبَنٍ قَدْ شِيبَ بِمَاءٍ، وَعَن يَمِينهِ أعْرَابيٌّ، وَعَن يَسَارِهِ أَبُو بَكْر رضي الله عنه، فَشَرِبَ، ثُمَّ أعْطَى الأَعْرَابيَّ، وَقَالَ: « اَلأَيْمَنُ فَالأَيْمَنُ ». متفق عَلَيْهِ
৪/৭৬৪। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর নিকট পানি মিশ্রিত দুধ আনা হল। (তখন) তাঁর ডান দিকে এক বেদুঈন ছিল ও বাম দিকে আবূ বকর রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু (বসে) ছিলেন। বস্তুত তিনি তা পান করে বেদুঈনকে দিলেন এবং বললেন, ‘‘ডান দিকের ব্যক্তির অগ্রাধিকার রয়েছে, তারপর তার ডান দিকের ব্যক্তির অগ্রাধিকার রয়েছে।’’ (বুখারী ও মুসলিম)[4]
5/765 وَعَن سَهلِ بنِ سَعدٍ رضي الله عنه: أَنَّ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) أُتِيَ بِشَرَابٍ، فَشَرِبَ مِنْهُ وَعَن يَمِينِهِ غُلاَمٌ، وَعَن يَسَارِهِ أَشْيَاخٌ، فَقَالَ لِلغُلاَمِ: « أتَأْذَنُ لِي أنْ أُعْطِيَ هؤُلاَءِ ؟ » فَقَالَ الغُلامُ: لاَ وَاللهِ، لاَ أُوثِرُ بِنَصِيبِي مِنْكَ أَحَداً . فَتَلَّهُ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) فِي يَدِهِ . متفقٌ عَلَيْهِ
৫/৭৬৫। সাহল ইবনে সা‘দ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সামনে শরবত পরিবেশন করা হল। তিনি তা থেকে পান করলেন। আর তাঁর ডান দিকে ছিল একটি বালক। আর বাম দিকে ছিল কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠ ব্যক্তি। তখন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বালকটিকে বললেন, ‘‘তুমি কি আমাকে অনুমতি দেবে, আমি ঐ বয়স্ক লোকগুলিকে আগে পান করতে দিই?’’ বালকটি বলল, ‘আল্লাহর কসম! আপনার কাছ থেকে আমার ভাগে আসা জিনিসের ক্ষেত্রে আমি কাউকে আমার উপর অগ্রাধিকার দেব না।’ বর্ণনাকারী বলেন, ‘নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তখন পেয়ালাটি তার হাতে তুলে দিলেন।’ (বুখারী ও মুসলিম)[5]
* উক্ত বালক ইবনে আব্বাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ছিলেন।
[1] সহীহুল বুখারী ৫৬৩১, মুসলিম ২০২৮, তিরমিযী ১৮৮৪, ইবনু মাজাহ ৩৪১৬, আহমাদ ১১৭২৩, ১১৭৭৬, ১১৭৮৩, ১১৮৮৬, ১২৫১২, দারেমী ২১২০
[2] আমি (আলবানী) বলছিঃ হাদীসটির সনদ দুর্বল যেমনটি আমি ‘‘তাখরীজুল মিশকাত’’ গ্রন্থে (নং ৪২৭৮) বলেছি। কারণ এর বর্ণনাকারী ইবনু আতা ইবনে আবী রাবাহ্ দুর্বল। তিনি হচ্ছেন ইয়াকূব। আর ইয়াযীদ ইবনু সিনান জাযারী হচ্ছেন আবূ ফারওয়াহ্ আররাহাবী। তার সম্পর্কে নাসাঈ বলেনঃ তিনি মাতরূকুল হাদীস আর ইবনু আদী বলেনঃ তার অধিকাংশ হাদীস নিরাপদ নয়। দেখুন ‘‘সিলসিলাহ্ সহীহাহ্’’ (৬১৯৫) নং হাদীসের ব্যাখ্যা।
[3] সহীহুল বুখারী ১৫৬, ১৫৪, ৫৬৩০, মুসলিম ২৬৭, তিরমিযী ১৫, ১৮৮৯, নাসায়ী ২৪, ২৫, ৪৭, আবূ দাউদ ৩১, ইবনু মাজাহ ৩১০, আহমাদ ১৮৯১৭, ২২০১৬, ২২০৫৯, ২২১২৮, ২২১৪১, দারেমী ৬৭৩
[4] সহীহুল বুখারী ২৩৫২, ২৫৭০, ৫৬১২ , ৫৬১৯, মুসলিম ২০২৯ , তিরমিযী ১৮৯৩, আবূ দাউদ ৩৭২৬, ইবনু মাজাহ ৩৪২৫, আহমাদ ১১৬৬৭, ১১৭১১, ১২৬২৬, ১৩০০৯, ১৩১০০, মুওয়াত্তা মালেক ১৭২৩
[5] সহীহুল বুখারী ২৩৫১, ২৩৬৬, ২৪৫১, ২৬০২, ২৬০৫, ৫৬২০, মুসলিম ২০৩০, আহমাদ ২২৩১৭, ২২৩৬০, মুওয়াত্তা মালেক ১৭২৪