4- بَابُ الصِّدْقِ
পরিচ্ছেদ – ৪ : সত্যবাদিতার গুরুত্ব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ ٱتَّقُواْ ٱللَّهَ وَكُونُواْ مَعَ ٱلصَّٰدِقِينَ ١١٩ ﴾ [التوبة: ١١٩]
অর্থাৎ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় কর এবং সত্যবাদীদের সঙ্গী হও।” (সূরা তাওবাহ ১১৯ আয়াত)
তিনি অন্যত্র বলেন,
﴿ وَٱلصَّٰدِقِينَ وَٱلصَّٰدِقَٰتِ ﴾ [الاحزاب: ٣٥]
অর্থাৎ “—সত্যবাদী পুরুষ ও সত্যবাদিনী নারী —এদের জন্য আল্লাহ ক্ষমা ও মহাপ্রতিদান রেখেছেন।” (সূরা আহযাব ৩৫ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ فَلَوۡ صَدَقُواْ ٱللَّهَ لَكَانَ خَيۡرٗا لَّهُمۡ ﴾ [محمد: ٢١]
অর্থাৎ “সুতরাং যদি তারা আল্লাহর সাথে সত্য বলত, তাহলে তাদের জন্য এটা মঙ্গলজনক হত।” (সূরা মুহাম্মাদ ২১ আয়াত)
এ বিষয়ে উল্লেখনীয় হাদীসসমূহ:
1/55 عَنِ ابنِ مَسْعُودٍ رضي الله عنه، عن النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «إنَّ الصِّدقَ يَهْدِي إِلَى البرِّ، وإنَّ البر يَهدِي إِلَى الجَنَّةِ، وإنَّ الرَّجُلَ لَيَصدُقُ حَتَّى يُكْتَبَ عِنْدَ اللهِ صِدِّيقاً . وَإِنَّ الكَذِبَ يَهْدِي إِلَى الفُجُورِ، وَإِنَّ الفُجُورَ يَهدِي إِلَى النَّارِ، وَإِنَّ الرَّجُلَ لَيَكْذِبُ حَتَّى يُكتَبَ عِنْدَ الله كَذَّاباً» مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১/৫৫। ইবনে মাসউদ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘নিশ্চয় সত্য পুণ্যের পথ দেখায় এবং পুণ্য জান্নাতের দিকে নিয়ে যায়। একজন মানুষ (অবিরত) সত্য বলতে থাকে। শেষ পর্যন্ত আল্লাহর কাছে তাকে খুব সত্যবাদী বলে লিখা হয়। পক্ষান্তরে মিথ্যা পাপের পথ দেখায় এবং পাপ জাহান্নামের দিকে নিয়ে যায়। একজন মানুষ (সর্বদা) মিথ্যা বলতে থাকে, শেষ অবধি আল্লাহর নিকটে তাকে মহা মিথ্যাবাদী বলে লিপিবদ্ধ করা হয়।’’[1]
2/56 عَنْ أَبِي مُحَمَّدٍ الحَسَنِ بنِ عَليِّ بنِ أبي طَالِبٍ رَضِيَ الله عَنهُما، قَالَ : حَفظْتُ مِنْ رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم): «دَعْ مَا يَرِيبُكَ إِلَى مَا لاَ يَرِيبُكَ ؛ فإنَّ الصِّدقَ طُمَأنِينَةٌ، وَالكَذِبَ رِيبَةٌ»رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث صحيح»
২/৫৬। আবূ মুহাম্মাদ হাসান ইবনে আলী ইবনে আবী ত্বালেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে এই শব্দগুলি স্মরণ রেখেছি যে, ‘‘তুমি ঐ জিনিস পরিত্যাগ কর, যে জিনিস তোমাকে সন্দেহে ফেলে এবং তা গ্রহণ কর যাতে তোমার সন্দেহ নেই। কেননা, সত্য প্রশান্তির কারণ এবং মিথ্যা সন্দেহের কারণ।’’[2]
3/57 عَنْ أَبِي سفيانَ صَخرِ بنِ حربٍ رضي الله عنه في حَدِيثِهِ الطَّوِيلِ في قِصَّةِ هِرَقْلَ، قَالَ هِرَقْلُ : فَمَاذَا يَأَمُرُكُمْ – يعني : النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم) قَالَ أبو سفيانَ : قُلْتُ : يقولُ: «اعْبُدُوا اللهَ وَحدَهُ لا تُشْرِكوُا بِهِ شَيئاً، وَاتْرُكُوا مَا يَقُولُ آبَاؤُكُمْ، ويَأْمُرُنَا بالصَلاةِ، وَالصِّدْقِ، والعَفَافِ، وَالصِّلَةِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৩/৫৭। আবূ সুফিয়ান সাখর ইবনে হারব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু ঐ দীর্ঘ হাদীস বর্ণনা করেন যাতে (রোমের বাদশাহ) হিরাক্লিয়াসের ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। হিরাক্লিয়াস আবূ সুফিয়ানকে জিজ্ঞাসা করলেন (তখন তিনি ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেননি) ‘তিনি—অর্থাৎ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম—তোমাদেরকে কোন্ কাজের আদেশ করছেন?’ আবূ সুফিয়ান বলেন, আমি বললাম, ‘তিনি বলছেন যে, ‘‘তোমরা মাত্র এক আল্লাহর উপাসনা কর, তাঁর সাথে কাউকে অংশীদার করো না এবং ঐসব কথা পরিহার কর, যা তোমাদের বাপ-দাদারা বলত (এবং করত)।’’ আর তিনি আমাদেরকে নামায পড়া, সত্য কথা বলা, চারিত্রিক পবিত্রতা রক্ষা করা এবং আত্মীয়তার বন্ধন অটুট রাখার আদেশ দেন।’[3]
4/58 عَنْ أَبِي ثَابِتٍ، وَقِيلَ: أبي سَعِيدٍ، وَقِيلَ : أبي الوليد، سَهْلِ بن حُنَيْفٍ وَهُوَ بدريٌّ رضي الله عنه : أنَّ النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم) قَالَ: «مَنْ سَأَلَ الله تَعَالَى الشَّهَادَةَ بِصِدْقٍ بَلَّغَهُ مَنَازِلَ الشُّهَدَاءِ وَإِنْ مَاتَ عَلَى فِرَاشِهِ». رواه مسلم
৪/৫৮। আবূ সাবেত, মতান্তরে আবূ সাঈদ বা আবুল অলীদ সাহ্ল ইবনে হুনাইফ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, (আর তিনি বাদরী সাহাবী ছিলেন) নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘যে ব্যক্তি সত্য অন্তর নিয়ে আল্লাহর নিকট শাহাদত প্রার্থনা করবে, তাকে আল্লাহ তা‘আলা শহীদদের মর্যাদায় পৌঁছাবেন; যদিও তার মৃত্যু নিজ বিছানায় হয়।’’[4]
[1] সহীহুল বুখারী ৬০৯৪, মুসলিম ২৬০৬, ২৬০৭, তিরমিযী ১৯৭১, আবূ দাউদ ৪৯৮৯, ইবনু মাজাহ ৪৬, আহমাদ ৩৬৩১, ৩৭১৯, ৩৮৩৫, মুওয়াত্তা মালিক ১৮৫৯, দারেমী ২৭১৫
[2] তিরমিযী ২৫১৮, নাসায়ী ৫৭১১, আহমাদ ২৭৮১৯, দারেমী ২৫৩২
[3] সহীহুল বুখারী ৭, ৫১, ২৬৮১, ২৮০৪, ২৯৩৬, ২৯৪১, ৩১৭৪, ৪৫৯৩, মুসলিম ১৭৭৩, তিরমিযী ২৭১৭, আবূ দাউদ ৫১৩৬, আহমাদ ২৩৬৬
[4] মুসলিম ১৯০৯, তিরমিযী ১৬৫৩, নাসায়ী ৩১৬২, আবূ দাউদ ১৫২০, ইবনু মাজাহ ২৭৯৭, দারেমী ২৪০৭