13- بَابُ فِيْ بَيَانِ كَثْرَةِ طُرُقِ الْخَيْرِ
পরিচ্ছেদ -১৩ : পুণ্যের পথ অনেক
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَمَا تَفۡعَلُواْ مِنۡ خَيۡرٖ فَإِنَّ ٱللَّهَ بِهِۦ عَلِيمٞ ﴾ [البقرة: ٢١٥]
অর্থাৎ “তোমরা যে কোন সৎকাজ কর না কেন, আল্লাহ তা সম্যকরূপে অবগত।”(সূরা বাক্বারা ২১৫ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿وَمَا تَفۡعَلُواْ مِنۡ خَيۡرٖ يَعۡلَمۡهُ ٱللَّهُۗ ﴾ [البقرة: ١٩٧]
অর্থাৎ “তোমরা যে সৎকাজ কর, আল্লাহ তা জানেন।” (আল-বাক্বারাহ: ১৯৭ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ فَمَن يَعۡمَلۡ مِثۡقَالَ ذَرَّةٍ خَيۡرٗا يَرَهُۥ ٧ ﴾ [الزلزلة: ٧]
অর্থাৎ “কেউ অণু পরিমাণ সৎকর্ম করে থাকলেও সে তা দেখতে পাবে।” (সূরা যিলযাল ৭ আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ مَنۡ عَمِلَ صَٰلِحٗا فَلِنَفۡسِهِۦۖ ﴾ [الجاثية: ١٥]
অর্থাৎ “যে সৎকাজ করে, সে নিজ কল্যাণের জন্যই তা করে।” (সূরা জাসিয়াহ ১৫ আয়াত)
এ বিষয়ে আয়াত অনেক রয়েছে এবং হাদীসও অগণিত রয়েছে। তার মধ্যে কিছু আমরা বর্ণনা করব।
1/119 عَنْ أَبِي ذَرٍّ جُنْدبِ بنِ جُنَادَةَ رضي الله عنه، قَالَ: قُلْتُ : يَا رَسُولَ الله، أيُّ الأَعْمَالِ أفْضَلُ ؟ قَالَ: «الإيمانُ باللهِ وَالجِهادُ في سَبيلِهِ».قُلْتُ : أيُّ الرِّقَابِ أفْضَلُ ؟ قَالَ: «أنْفَسُهَا عِنْدَ أهلِهَا وَأكثَرهَا ثَمَناً».قُلْتُ : فإنْ لَمْ أفْعَلْ ؟ قَالَ: «تُعِينُ صَانِعاً أَوْ تَصْنَعُ لأََِخْرَقَ».قُلْتُ : يَا رَسُولَ الله، أرأيْتَ إنْ ضَعُفْتُ عَنْ بَعْضِ العَمَلِ ؟ قَالَ: «تَكُفُّ شَرَّكَ عَنِ النَّاسِ؛ فإنَّهَا صَدَقَةٌ مِنْكَ عَلَى نَفْسِكَ».مُتَّفَقٌ عليه
১/১১৯। আবূ যার্র জুনদুব ইবন জুনাদা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন যে, আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কোন্ আমল সর্বোত্তম?’ তিনি বললেন, ‘‘আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা ও তাঁর পথে জিহাদ করা।’’ আমি বললাম, ‘কোন্ গোলাম (কৃতদাস) স্বাধীন করা সর্বোত্তম?’ তিনি বললেন, ‘‘যে তার মালিকের দৃষ্টিতে সর্বশ্রেষ্ঠ ও অধিক মূল্যবান।’’ আমি বললাম, ‘যদি আমি এ সব (কাজ) করতে না পারি।’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি কোন কারিগরের সহযোগিতা করবে অথবা অকর্মন্যের কাজ করে দেবে।’’ আমি বললাম, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আপনি বলুন, যদি আমি (এর) কিছু কাজে অক্ষম হই (তাহলে কি করব)?’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি মানুষের উপর থেকে তোমার মন্দকে নিবৃত্ত কর। তাহলে তা হবে তোমার পক্ষ থেকে তোমার নিজের জন্য সাদকাহস্বরূপ।’’[1]
2/120 عَنْ أَبِي ذَرٍّ أيضاً رضي الله عنه : أنَّ رَسُولَ الله (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «يُصْبحُ عَلَى كُلِّ سُلامَى منْ أَحَدِكُمْ صَدَقةٌ : فَكُلُّ تَسبيحَةٍ صَدَقَةٌ، وَكُلُّ تَحمِيدةٍ صَدَقَة، وَكُلُّ تَهْلِيلَةٍ صَدَقَةٌ، وَكُلُّ تَكبيرَةٍ صَدَقَةٌ، وَأمْرٌ بِالمعرُوفِ صَدَقةٌ، ونَهيٌ عَنِ المُنْكَرِ صَدَقةٌ، وَيُجزِىءُ مِنْ ذلِكَ رَكْعَتَانِ يَركَعُهُما مِنَ الضُّحَى». رواه مسلم
২/১২০। আবূ যার্র রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে প্রত্যেকের প্রত্যেক (হাড়ের) জোড়ের পক্ষ থেকে প্রাত্যহিক (প্রদেয়) সাদকাহ রয়েছে। সুতরাং প্রত্যেক তাসবীহ (সুবহানাল্লাহ বলা) সাদকাহ, প্রত্যেক তাহমীদ (আলহামদু লিল্লাহ বলা) সাদকাহ, প্রত্যেক তাহলীল (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ বলা) সাদকাহ, প্রত্যেক তাকবীর (আল্লাহু আকবার বলা) সাদকাহ এবং ভাল কাজের আদেশ প্রদান ও মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করা সাদকাহ। এ সব কাজের পরিবর্তে চাশ্তের দু’রাক্আত নামায যথেষ্ট হবে।’’[2]
3/121 عَنْهُ، قَالَ : قَالَ النَّبيُّ (صلى الله عليه و سلم): «عُرِضَتْ عَلَيَّ أعْمَالُ أُمَّتِي حَسَنُهَا وَسَيِّئُهَا فَوَجَدْتُ في مَحَاسِنِ أعْمَالِهَا الأذَى يُمَاطُ عَنِ الطَّريقِ، وَوَجَدْتُ في مَسَاوِىءِ أَعمَالِهَا النُّخَاعَةَ تَكُونُ في المَسْجِدِ لاَ تُدْفَنُ». رواه مسلم
৩/১২১। ঐ আবূ যার্র রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমার উম্মতের ভালমন্দ কর্ম আমার কাছে পেশ করা হল। সুতরাং আমি তাদের ভাল কাজের মধ্যে ঐ কষ্টদায়ক জিনিসও পেলাম, যা রাস্তা থেকে সরানো হয়। আর তাদের মন্দ কর্মসমূহের তালিকায় মসজিদে ঐ কফও পেলাম, যার উপর মাটি চাপা দেওয়া হয়নি।’’[3]
* মাটি চাপা দেওয়ার কথা তিনি এই জন্য বলেছেন যে, সে যুগে মসজিদের মেঝে মাটিরই ছিল। বর্তমানে পাকা মেঝে কাপড় অথবা পানি দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে।
[1] সহীহুল বুখারী ২৫১৮, মুসলিম ৮৪, নাসায়ী ৩১২৯, ইবনু মাজাহ ২৫২৩, আহমাদ ২০৮২৪, ২০৯৩৮, ২০৯৮৯, দারেমী ২৭৩৮
[2] মুসলিম ৭২০, আবূ দাউদ ১২৮৫১২৮৬
[3] মুসলিম ৫৫৩, ইবনু মাজাহ ৩৬৮৩, আহমাদ ২১০৩৯, ২১০৫৭