7/125 وَعَنْهُ، عَنِ النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «مَنْ غَدَا إِلَى المَسْجِد أَوْ رَاحَ، أَعَدَّ اللهُ لَهُ في الجَنَّةِ نُزُلاً كُلَّمَا غَدَا أَوْ رَاحَ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৭/১২৫। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘যে ব্যক্তি সকাল অথবা সন্ধ্যায় মসজিদে যায়, তার জন্য আল্লাহ মেহমানীর উপকরণ প্রস্তুত করেন। সকাল বা সন্ধা যখনই সে সেখানে যায়, তখনই তার জন্য ঐ মেহমানীর উপকরণ প্রস্তুত করা হয়।’’[1]
8/126 وعَنْهُ، قَالَ : قَالَ رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم): «يَا نِسَاءَ المُسْلِمَاتِ، لاَ تَحْقِرنَّ جَارَةٌ لِجَارَتِهَا وَلَوْ فِرْسِنَ شاةٍ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৮/১২৬। উক্ত আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘হে মুসলিম নারীগণ! কোন প্রতিবেশিনী যেন প্রতিবেশিনীর (উপঢৌকনকে) অবশ্যই তুচ্ছ না ভাবে। যদিও তা ছাগলের খুর হয়।’’[2]
9/127 وَعَنْهُ، عَنِ النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «الإيمانُ بِضْعٌ وَسَبعُونَ أَوْ بِضعٌ وسِتُونَ شُعْبَةً : فَأفْضَلُهَا قَولُ : لاَ إِلٰهَ إلاَّ اللهُ، وَأَدْنَاهَا إمَاطَةُ الأذَى عَنِ الطَّريقِ، والحياءُ شُعبَةٌ مِنَ الإيمان». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৯/১২৭। উক্ত আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘ঈমানের সত্তর অথবা ষাটের বেশী শাখা রয়েছে। তার মধ্যে সর্বোত্তম (শাখা) ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’ বলা এবং সর্বনিম্ন (শাখা) রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক জিনিস (পাথর কাঁটা ইত্যাদি) দূরীভূত করা। আর লজ্জা ঈমানের একটি শাখা।’’[3]
10/128 وعَنْهُ : أنَّ رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «بَينَما رَجُلٌ يَمشي بِطَريقٍ اشْتَدَّ عَلَيهِ العَطَشُ، فَوَجَدَ بِئراً فَنَزَلَ فِيهَا فَشرِبَ، ثُمَّ خَرَجَ فإذَا كَلْبٌ يَلْهَثُ يأكُلُ الثَّرَى مِنَ العَطَشِ، فَقَالَ الرَّجُلُ : لَقَدْ بَلَغَ هَذَا الكَلْبُ مِنَ العَطَشِ مِثلُ الَّذِي كَانَ قَدْ بَلَغَ مِنِّي، فَنَزَلَ البِئْرَ فَمَلأَ خُفَّهُ مَاءً ثُمَّ أمْسَكَهُ بفيهِ حَتَّى رَقِيَ، فَسَقَى الكَلْبَ، فَشَكَرَ الله لَهُ، فَغَفَرَ لَهُ»قالوا : يَا رَسُول اللهِ، إنَّ لَنَا في البَهَائِمِ أَجْراً ؟ فقَالَ: «في كُلِّ كَبِدٍ رَطْبَةٍ أجْرٌ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
وفي رواية للبخاري: «فَشَكَرَ اللهُ لَهُ، فَغَفَرَ لَهُ، فأدْخَلَهُ الجَنَّةَ»وفي رواية لهما: «بَيْنَما كَلْبٌ يُطِيفُ بِرَكِيَّةٍ قَدْ كَادَ يقتلُهُ العَطَشُ إِذْ رَأَتْهُ بَغِيٌّ مِنْ بَغَايَا بَنِي إسْرَائِيل، فَنَزَعَتْ مُوقَها فَاسْتَقَتْ لَهُ بِهِ فَسَقَتْهُ فَغُفِرَ لَهَا بِهِ».
১০/১২৮। উক্ত আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘একদা এক ব্যক্তি পথ চলছিল। তাকে খুবই পিপাসা লাগল। অতঃপর সে একটি কূপ পেল। সুতরাং সে তাতে নেমে পানি পান করল। অতঃপর বের হয়ে দেখতে পেল যে, (ওখানেই) একটি কুকুর পিপাসার জ্বালায় জিভ বের করে হাঁপাচ্ছে ও কাদা চাটছে। লোকটি (মনে মনে) বলল, ‘পিপাসার তাড়নায় আমি যে পর্যায়ে পৌঁছেছিলাম, কুকুরটিও সেই পর্যায়ে পৌঁছেছে।’ অতএব সে কূপে নামল তারপর তার চামড়ার মোজায় পানি ভর্তি করল। অতঃপর সে তা মুখে ধরে উপরে উঠল এবং কুকুরটিকে পানি পান করাল। আল্লাহ তা‘আলা তার এই আমলকে কবুল করলেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন।’’
সাহাবীগণ বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! চতুষ্পদ জন্তুর প্রতি দয়া প্রদর্শনেও কি আমাদের সওয়াব হবে?’ তিনি বললেন, ‘‘প্রত্যেক জীবের প্রতি দয়া প্রদর্শনে নেকী রয়েছে।’’
বুখারীর অন্য এক বর্ণনায় আছে যে, ‘‘আল্লাহ তা‘আলা তার এই আমলকে কবুল করলেন। অতঃপর তাকে ক্ষমা করে জান্নাতে প্রবেশ করালেন।’’
বুখারী-মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে, ‘‘কোন এক সময় একটি কুকুর একটি কূপের চারিপাশে ঘোরা-ফিরা করছিল। পিপাসা তাকে মৃতপ্রায় করে তুলেছিল। (এই অবস্থায়) হঠাৎ বনী ঈস্রাঈলের বেশ্যাদের মধ্যে এক বেশ্যা তাকে দেখতে পেল। অতঃপর সে তার চামড়ার মোজা খুলে তা হতে (কূপ থেকে) পানি উঠিয়ে তাকে পান করাল। সুতরাং এই আমলের কারণে তাকে ক্ষমা করা হল।’’[4]
11/129 وَعَنْهُ، عَنِ النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «لَقدْ رَأيْتُ رَجُلاً يَتَقَلَّبُ في الجَنَّةِ في شَجَرَةٍ قَطَعَهَا مِنْ ظَهْرِ الطَرِيقِ كَانَتْ تُؤذِي المُسْلِمِينَ». رواه مسلم
وفي رواية: «مَرَّ رَجُلٌ بِغُصْنِ شَجَرَةٍ عَلَى ظَهرِ طَرِيقٍ، فَقَالَ : وَاللهِ لأُنْحِيَنَّ هَذَا عَنِ المُسْلِمينَ لاَ يُؤذِيهِمْ، فَأُدخِلَ الجَنَّةَ».وفي رواية لهما: «بَيْنَمَا رَجُلٌ يَمْشي بِطَريقٍ وَجَدَ غُصْنَ شَوكٍ عَلَى الطريقِ فأخَّرَه فَشَكَرَ اللهُ لَهُ، فَغَفَرَ لَهُ».
১১/১২৯। উক্ত আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু হতেই বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘আমি এক ব্যক্তিকে জান্নাতে ঘোরাফেরা করতে দেখলাম। যে (পৃথিবীতে) রাস্তার মধ্য হতে একটি গাছ কেটে সরিয়ে দিয়েছিল, যেটি মুসলিমদেরকে কষ্ট দিচ্ছিল।’’[5]
অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘এক ব্যক্তি রাস্তার উপর পড়ে থাকা একটি গাছের ডালের পাশ দিয়ে পার হল। সে বলল, ‘আল্লাহর কসম! আমি এটিকে মুসলিমদের পথ থেকে অবশ্যই সরিয়ে দেব; যাতে তাদেরকে কষ্ট না দেয়। সুতরাং তাকে (এর কারণে) জান্নাতে প্রবেশ করানো হল।’’
বুখারী-মুসলিমের আর এক বর্ণনায় আছে, ‘‘একদা এক ব্যক্তি রাস্তা চলছিল। সে রাস্তার উপর একটি কাঁটাদার ডাল দেখতে পেল। অতঃপর সে তা সরিয়ে দিল। আল্লাহ তা‘আলা তার এই আমল কবুল করলেন এবং তাকে ক্ষমা করে দিলেন।’’
[1] সহীহুল বুখারী ৬৬২, মুসলিম ৪৬৭, ৬৬৯, আহমাদ ১০২৩০
[2] সহীহুল বুখারী ৬০১৭, ২৫৬৬, মুসলিম ১০৩০, তিরমিযী ২১৩০, আহমাদ ৭৫৩৭, ৮০০৫, ৯২৯৭, ১০০২৯
[3] সহীহুল বুখারী ৯, মুসলিম ৩৫, তিরমিযী ২৬১৪, নাসায়ী ৫০০৪, ৫০০৫, ৫০০৬, আবূ দাউদ ৪৬৭৬, ইবনু মাজাহ ৫৭, আহমাদ ৯০৯৭, ৯৪১৭, ৯৪৫৫, ১০১৩৪
[4] সহীহুল বুখারী ২৩৬৩, ১৭৪, ২৪৬৬, ৬০০৯, মুসলিম ২২৪৪, আবূ দাউদ ২৫৫০, আহমাদ ৮৬৫৭, ১০৩২১, ১০৩৭৩, মুওয়াত্তা মালেক ১৭২৯
[5] সহীহুল বুখারী ৬৫৪, ৭২১, ৬১৫, ২৪৭২, ২৬৮৯, ২৮২৯, ৫৭৩৩, মুসলিম ৪৩৭, ৪৩৯, ১৯১৪, তিরমিযী ২২৫, ১০৬৩, ১৯৫৮, নাসায়ী ৫৪০, ৬৭১, আবূ দাউদ ৫২৪৫, ইবনু মাজাহ ৯৭৯, আহমাদ ৭১৮৫, ৭৬৮০, ৭৭৮২, ১৫১, ২৯৫