এই পরিচ্ছেদের সঙ্গে যে সব হাদীস সম্বন্ধ রাখে তার মধ্যে আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু-এর সেই হাদীসটিও অন্তর্ভুক্ত; যা পূর্বোক্ত পরিচ্ছেদের প্রথমে বর্ণিত হয়েছে। তাছাড়া আরো হাদীস রয়েছে, যার কিছু নিম্নরূপঃ-
1/172 عَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ : لَمَّا نَزَلَتْ عَلَى رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم) : ﴿ لِّلَّهِ مَا فِي ٱلسَّمَٰوَٰتِ وَمَا فِي ٱلۡأَرۡضِۗ وَإِن تُبۡدُواْ مَا فِيٓ أَنفُسِكُمۡ أَوۡ تُخۡفُوهُ يُحَاسِبۡكُم بِهِ ٱللَّهُۖ﴾ الآية [البقرة: ٢٨٤] اشْتَدَّ ذلِكَ عَلَى أصْحَابِ رَسُولِ الله (صلى الله عليه و سلم)، فَأتَوا رَسُولَ الله (صلى الله عليه و سلم) ثُمَّ بَرَكُوا عَلَى الرُّكَبِ، فَقَالُوا : أيْ رسولَ الله، كُلِّفْنَا مِنَ الأَعمَالِ مَا نُطِيقُ: الصَّلاةَ والجِهَادَ والصِّيامَ والصَّدَقَةَ، وَقَدْ أُنْزِلَتْ عَلَيْكَ هذِهِ الآيَةُ وَلا نُطيقُها. قَالَ رَسُول الله (صلى الله عليه و سلم): «أتُرِيدُونَ أنْ تَقُولُوا كَمَا قَالَ أَهْلُ الكتَابَينِ مِنْ قَبْلِكُمْ: سَمِعْنَا وَعَصَيْنَا ؟ بَلْ قُولُوا سَمِعنَا وَأَطَعْنَا غُفْرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيْكَ المَصِيرُ» فَلَمَّا اقْتَرَأَهَا القومُ، وَذَلَّتْ بِهَا ألْسنَتُهُمْ أنْزَلَ اللهُ تَعَالَى في إثرِهَا : ﴿ءَامَنَ ٱلرَّسُولُ بِمَآ أُنزِلَ إِلَيۡهِ مِن رَّبِّهِۦ وَٱلۡمُؤۡمِنُونَۚ كُلٌّ ءَامَنَ بِٱللَّهِ وَمَلَٰٓئِكَتِهِۦ وَكُتُبِهِۦ وَرُسُلِهِۦ لَا نُفَرِّقُ بَيۡنَ أَحَدٖ مِّن رُّسُلِهِۦۚ وَقَالُواْ سَمِعۡنَا وَأَطَعۡنَاۖ غُفۡرَانَكَ رَبَّنَا وَإِلَيۡكَ ٱلۡمَصِيرُ ٢٨٥﴾ [البقرة: ٢٨٥] فَلَمَّا فَعَلُوا ذلِكَ نَسَخَهَا اللهُ تَعَالَى، فَأنزَلَ الله – عز وجل – : ﴿لَا يُكَلِّفُ ٱللَّهُ نَفۡسًا إِلَّا وُسۡعَهَاۚ لَهَا مَا كَسَبَتۡ وَعَلَيۡهَا مَا ٱكۡتَسَبَتۡۗ رَبَّنَا لَا تُؤَاخِذۡنَآ إِن نَّسِينَآ أَوۡ أَخۡطَأۡنَاۚ ﴾ [البقرة: ٢٨٦] قَالَ : نَعَمْ ﴿ رَبَّنَا وَلَا تَحۡمِلۡ عَلَيۡنَآ إِصۡرٗا كَمَا حَمَلۡتَهُۥ عَلَى ٱلَّذِينَ مِن قَبۡلِنَاۚ ﴾ قَالَ : نَعَمْ ﴿ رَبَّنَا وَلَا تُحَمِّلۡنَا مَا لَا طَاقَةَ لَنَا بِهِۦۖ ﴾ قَالَ : نَعَمْ ﴿ وَٱعۡفُ عَنَّا وَٱغۡفِرۡ لَنَا وَٱرۡحَمۡنَآۚ أَنتَ مَوۡلَىٰنَا فَٱنصُرۡنَا عَلَى ٱلۡقَوۡمِ ٱلۡكَٰفِرِينَ ٢٨٦﴾ قَالَ : نَعَمْ . رواه مسلم
১/১৭২। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, যখন রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উপর এই আয়াত অবতীর্ণ হল, অর্থাৎ ‘‘আকাশমণ্ডলী ও ভূমণ্ডলের মধ্যে যা কিছু রয়েছে তার সবই আল্লাহর মালিকানাধীন। যদি তোমরা তোমাদের মনের কথা প্রকাশ কর অথবা তা গোপন কর, আল্লাহ তোমাদের নিকট হতে তার হিসাব গ্রহণ করবেন।’’ (সূরা বাক্বারাহ ২৮৪ আয়াত) তখন এটি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সাহাবীদের জন্য প্রচণ্ড ভারী মনে হল। ফলে তাঁরা রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর নিকট এলেন এবং তাঁরা হাঁটুর উপর ভর দিয়ে বসে গিয়ে বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! আমরা (এমন) অনেক কাজের আদিষ্ট হয়েছি, যা (সম্পাদন) করা আমাদের ক্ষমতাধীন; (যেমন) নামায, জিহাদ, রোযা ও সাদকাহ। আর এই আয়াতটি যে আপনার উপর অবতীর্ণ করা হয়েছে, তা আমাদের ক্ষমতার বাইরে।’ রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, ‘‘তোমরা কি তোমাদের পূর্ববর্তী আহ্লে কিতাব (ইয়াহুদী ও খৃষ্টান)দের মত বলতে চাও যে, ‘আমরা শুনলাম এবং অমান্য করলাম?’ বরং তোমরা বল, ‘আমরা শুনলাম ও মান্য করলাম। হে আমাদের প্রতিপালক। আমরা তোমার ক্ষমা প্রার্থনা করি এবং তোমার দিকেই প্রত্যাবর্তনস্থল।’ সুতরাং যখন লোকেরা আয়াতটি পড়ল এবং তাদের জিভে সেটি পঠিত হতে থাকল, তখন আল্লাহ তা‘আলা তারপর এই আয়াতটি অবতীর্ণ করলেন, ‘‘রাসূল তার প্রতি তার প্রতিপালকের পক্ষ থেকে যা অবতীর্ণ করা হয়েছে তাতে সে বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং বিশ্বাসিগণও। সকলে আল্লাহতে, তাঁর ফিরিশ্তাগণে, তাঁর কিতাবসমূহে এবং তাঁর রাসূলগণে বিশ্বাস স্থাপন করেছে। (তারা বলে,) ‘আমরা তাঁর রাসূলগণের মধ্যে কোন পার্থক্য করি না।’ আর তারা বলে, ‘আমরা শুনলাম ও মান্য করলাম! হে আমাদের প্রতিপালক! আমরা তোমার ক্ষমা চাই, আর তোমারই দিকে (আমাদের) প্রত্যাবর্তন হবে।’’ (সূরা বাক্বারা ২৮৫ আয়াত) যখন তাঁরা এ কাজ করলেন, তখন পূর্ববর্তী আয়াতটিকে আল্লাহ মনসূখ (রহিত) করে দিলেন। অতঃপর (তার পরিবর্তে) অবতীর্ণ করলেন, ‘‘আল্লাহ কাউকেও তার সাধ্যের অতিরিক্ত দায়িত্ব অর্পণ করেন না। যে ভাল উপার্জন করবে সে তার (প্রতিদান পাবে) এবং যে মন্দ উপার্জন করবে সে তার (প্রতিফল পাবে)। হে আমাদের প্রতিপালক! যদি আমরা বিস্মৃত হই অথবা ভুল করি, তাহলে তুমি আমাদেরকে অপরাধী করো না।’ আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ! ‘হে আমাদের রব! আমাদের পূর্ববর্তিগণের উপর যেমন গুরুদায়িত্ব অর্পণ করেছিলে, আমাদের উপর তেমন দায়িত্ব অর্পণ করো না।’ আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ! ‘হে আমাদের রব! এমন ভার আমাদের উপর অর্পণ করো না, যা বহন করার শক্তি আমাদের নেই।’ আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ! ‘আর তুমি আমাদেরকে ক্ষমা কর, আমাদের পাপ মোচন কর এবং আমাদের প্রতি দয়া কর। তুমি আমাদের অভিভাবক। অতএব সত্য প্রত্যাখ্যানকারী (কাফের) সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে আমাদেরকে (সাহায্য ও) জয়যুক্ত কর।’ আল্লাহ বললেন, হ্যাঁ![1]
[1] মুসলিম ১২৫, আহমাদ ২৭৯০৪