ইসলামী সংগঠনের লক্ষ্য
সংক্ষেপে বলা যায় ইসলামী সংগঠনের চূড়ান্ত লক্ষ্য হচ্ছে আল্লাহ প্রদত্ত জীবনবিধান রাসূলের (সা) প্রদর্শিত পন্থায় মানব সমাজ কায়েম করে আল্লাহর সন্তোষ অর্জন।
আল্লাহর সন্তোষ অর্জনের উপায় হচ্ছে আল্লাহ যেই উদ্দেশ্যে মানুষকে সৃষ্টি করেছেন সেই উদ্দেশ্য সাধন করা। আর মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই হচ্ছে আল্লাহর আব্দ হিসেবে আল্লাহর বিধান মোতাবেক আত্মগঠন, পরিবার গঠন, দল গঠন রাষ্ট্র গঠন।
মনে রাখা দরকার যে ইসলামী রাষ্ট্র দুনিয়ার বুকে মানুষের জন্য অতি বড় একটি নিয়ামত। সেই জনগোষ্ঠী এই নিয়ামতের কদর করতে প্রস্তুত নয়। আল্লাহ রাব্বুল আলামীন খামাখাই তাদের কে এত বড় নিয়ামত দান করেন না। তাই যুগে যুগেই অকৃতজ্ঞ কাওমগুলো ইসলামী রাষ্ট্রের মত বঞ্চিতই থেকে গেছে।
অকৃতজ্ঞ মানব গোষ্ঠী ইসলামী রাষ্ট্রের মত খাস নিয়ামত থেকে বঞ্চিত থাকলেও তাতে কিন্তু ইসলামী সংগঠনের কর্মীদের ব্যর্থতার কিছুই নেই। কারণ যারা ইখলাসের সাথে আল্লাহর প্রদত্ত জীবন বিধান প্রতিষ্ঠার নিরবিচ্ছিন সংগ্রাম চালিয়ে দুনিয়া থেকে নেয় আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন এবং আখেরাতের মহা পুরস্কার তাদের জন্য নিদিষ্ট করে রাখেন।
ইসলামী সরকার গঠন করে তার পৃষ্ঠপোষকতায় আল্লাহর দ্বীন কায়েম করার সুযোগ অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। কিন্তু সেই সুযোগ না পেলে তার জন্য হাহুতাশ করা মন ভাংগা হওয়া সেই ব্যক্তির পক্ষেই সম্ভব যার চিন্তাধারায় আখেরাতের প্রধান্য পায়নি।
ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্ব কাঠামো
ইসলামী সংগঠনে একটি বিশেষ নেতৃত্ব কাঠামো আছে। আল্লাহর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বাণী এবং আসহাবে রাসূলের অনুশীলন আমাদেরকে ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্ব কাঠামো সম্পর্কে সুস্পষ্ট ধারণা দান rts আল্লাহর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) জীবনের শেষভাগে করেন। তার পর কে নেতা হবেন এটাই ছিল তাদের জিজ্ঞাসা । তাদের নিকট এটা সুস্পষ্ট ছিলো যে আল্লাহর রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) পর একজন ব্যক্তিই হবেন তাদের নেতা। তবে কোন ব্যক্তি নেতা হলে ভালো হবে এটাই তাঁরা রাসূলের (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) কাছ থেকে জানতে চেয়েছিলেন। জবাবে আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেন,
ان نؤمروا آبا بگر تجذوهٔ آمیناز اهدافی الدنیا راغبا الی الاخرة. وان تؤمروا عمر تجدوه قویا امینا لاً یخاف فی الله لومة لأنيمر- وان تؤمروا عليا ولاً أراكم فاعلين تجذوة هاديا مهديا يأخذكم الطريق المستقيم –
“তোমরা যদি আবু বাকরকে আমীর বানাও তাকে পাবে আমানতদার, দুনিয়ার প্রতি নির্মোহ এবং আখিরাতের প্রতি আকৃষ্ট। তোমরা যদি উমারকে আমীর বানাও তাকে পাবে শক্তিধর, আমানতদার এবং আল্লাহর ব্যাপারে সে কোন নিন্দুকের নিন্দার পরোয়া করবে না। আর যদি আলীকে আমীর বানাও- আমার মনে হয় না তোমরা তা করবে- তাহলে তাকে পাবে পথ প্রদর্শনকারী ও পথ প্রদর্শিত ব্যক্তি। সে তোমাদেরকে সঠিক পথে চালাবে।”
-মুসনাদে আহমাদ
আল্লাহর রাসূলের সাঃ এই জবাব থেকে আমরা দুটো মূলনীতি পাই। এথম মূলনীতি হচ্ছে মুসলিমদের আমীর একজনই হবেন। কমান্ডিং পজিশন একজনকেই দেয় হবে, একাধিক ব্যক্তিকে নয়। দ্বিতীয় মূলনীতি হচ্ছে, মুসলিমগণ তাঁদের মধ্য থেকে একজন আমীর নির্বাচিত করে নেবেন তাঁদের স্বাধীন মতামতের ভিত্তিতে।
সাহাবাগণের প্রশ্নের জবাবে আল্লাহর রাসূল (সা) তিনজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছেন। তিনি যদি মাত্র একজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করতেন তাহলে সাহাবাগণ সেই ব্যক্তিকে আমীর হিসেবে গ্রহণ করে বাইয়াত করার বাধ্যতামূলক মনে করতেন। আল্লাহর রাসূল (সা) মুসলিম উম্মাহকে আমীর নির্বাচনের ক্ষেতে স্বাধীন রেখেছেন। প্রকৃত পক্ষে আল্লাহর ইচ্ছাও ছিল তাই। তা না হলে আল্লাহ ওহী পাঠিয়ে তাঁর পছন্দীয় বিকল্প ব্যবস্থা রাসূলের (সা) মাধ্যমে উম্মাহকে জানিয়ে দিতেন।
ইসলামী সংগঠনে নেতৃত্ব নির্বাচন
ইসলামী সংগঠনে নেতৃত্বের ভূমিকা অত্যান্ত গুরুত্বপূর্ণ। যোগ্যতম ব্যক্তি যাতে গুরুত্বপূর্ণ আসনে আসীন হতে পারে সেদিকে সদস্যমন্ডলীকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হয়।
নেতৃত্ব নির্বাচনের ক্ষেত্রে ব্যক্তির তাকওয়া সর্ম্পকে ওয়াকিফহাল হতে হয় সর্বাগ্রে। তাকওয়া যদিও ব্যক্তির ভেতরের ব্যাপার তা ব্যক্তির কথাবার্তা, পোষাক পরিচ্ছদ, চাল চলন, লেন দেন এবং যাবতীয় কার্যকলাপের ওপর সুস্পষ্ট ছাপ রাখে। দীর্ঘকাল পর্যন্ত এগুলোর দিকে নজর রাখলেই ব্যক্তির তাকওয়া সর্ম্পকে ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়।
এখানে প্রসঙ্গক্রমে একটি ঘটনা উল্লেখ করা যেতে পারে। একদিন আল্লাহর রাসূল (সা) দেখতে পেলেন একব্যক্তি সালাত আদায় করছে আর তার দাড়ি নিয়ে খেলছে। তখন তিনি বললেন, “এই ব্যক্তির অন্তরে খুশু তাকলে তার অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের ওপরও খুশু পরিলক্ষিত হত। ”
প্রকৃত পক্ষে তাকওয়ার ব্যাপারটি ঠিক এমনই।
ইসলামী সংগঠনের নেতৃত্ব নির্বাচন কোন সাধারণ ব্যাপার নয়। এই নির্বাচনে কেউ প্রার্থী থাকে না। বরং পদপ্রার্থী হওয়া এই সংগঠনের দৃষ্টিতে মারাত্মক অন্যায়। তাই নির্বাচক মন্ডলিকে সংগঠনের সর্বত্র যোগ্যতম ব্যক্তি খুঁজে বেড়াতে হয়।
ইসলামী সংগঠনের সদস্যদের অন্যতম প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে এই নেতৃত্ব নির্বাচন। কারো পক্ষে বা বিপক্ষে কোন ক্যানভাস চলে না এখানে। নিজের বিচার বুদ্ধি ও উপলব্ধিকে সম্বল করেই নির্বাচকগণ এখানে ভূমিকা পালন করে। তাই তাদেরকে গভীরভাবে ভাবতে হয়। বিভিন্ন ব্যক্তির যোগ্যতা সর্ম্পকে ওয়াকিফহাল হতে হয়। নিজের বিচার বুদ্ধির সবটুকু প্রয়োগ করে বেছে নিতে হয় যোগ্যতম ব্যক্তিকে।
সকলের মত ব্যক্ত হওয়ার পর সংখ্যাগরিষ্ঠের আস্থা অর্জনকারী ব্যক্তিকে নেতা করা হয়। তখন সকলেই তাকে নেতারূপে গ্রহণ করে তাঁর নির্দেশে জামায়াতী যিন্দেগী যাপন করতে থাকে।
ইসলামী নেতৃত্বের গুণাবলী
ইসলামী সংগঠনে নেতৃত্বের গুরুত্ব অপরিসীম। নেতৃত্বকে কেন্দ্র করেই গোটা কর্মী বাহিনী আবর্তিত হয়। নেতৃত্বের গুণাবলী কর্মী বাহিনীর ওপর প্রতিবিম্বিত হয়। এখানে নেতৃত্বের কয়েকটি বুনিয়াদী গুণের কথা আলোচিত হচ্ছে অতি সংক্ষেপে।
জ্ঞানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্ব
ইসলামী নেতৃত্বকে জ্ঞানের ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠত্বের অধিকারী হতে হয়। ইসলামী জীবন দর্শন ও জীবন বিধান সর্ম্পকে তার ব্যাপক জ্ঞান থাকা প্রয়োজন। সংগে সংগে ইবলীসী চিন্তা প্রসূত যেসব মতবাদ দুনিয়ার মানুষকে বিভ্রান্ত করে রেখেছে জীবন ও জগত, মানব জীবনের উদ্দেশ্য ও কর্তব্য সর্ম্পকে সেই মতবাদ গুলোর বক্তব্য এবং সেগুলো সমাজ জীবনে প্রতিষ্ঠিত থাকার কারণে মানবগোষ্ঠী কোন কোন সমস্যার সম্মুখীন- এসব কিছুর সর্ম্পকে তাঁর সুস্পষ্ট ধারণা থাকা প্রয়োজন। সাধারণ জ্ঞানের দৈন্যও তাঁর থাকা উচিত নয়। তদুপরি নেতাকে যেহেতু মানুষ চালাতে হয় সেই জন্য মানব মনকে বোঝার যোগ্যতাও তাঁর থাকা উচিত। তাই মনোবিজ্ঞানও তাঁর ভালোভাবে পড়া প্রয়োজন। জ্ঞানই শক্তি কথাটা নি:সন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ। জ্ঞানের শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারলে নেতার পক্ষে কেবল কর্মী বাহিনীর ওপরই নয়, এর বাইরে যে বিশাল মানবগোষ্ঠী রয়েছে সেখানেও প্রভাব বিস্তার করা সহজ হয়।
উন্নত আমল
নেত কে হতে হবে ইসলামের মূর্ত প্রতীক। তাঁর চিন্তা-ভাবনা, কথাবার্তা, আচার-আচরণ এবং যাবতীয় কাজকর্মে ইসলামের সঠিক রূপ প্রতিফলিত হওয়া প্রয়োজন। এই ক্ষেত্রে মুসলিম উম্মাহর মূল নেতা মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহর (সা) চরিত্র সকলের জন্য উদাহরণ। তিনি ছিলেন বিমূর্ত আল কুরাআন। মসুলিম জীবনের যেই রূপটি আল কুরআন অংকন করেছে আল্লাহর রাসূল (সা) ছিলেন তারই জীবন্ত রূপ। তাঁর জীবনের বৈশিষ্টগুলোতে ইসলামের যেই সৌন্দর্য ফুটে উঠেছিলো প্রধানত: তাতে আকৃষ্ট হয়েই অমুসলিমগণ ইসলাম গ্রহণ করতো।
নম্র ব্যবহার
রুক্ষ ভাষা এবং রূঢ় আচরণ মানুষকে আহত করে। রূঢ় আচরণে অভ্যস্ত ব্যক্তি কখনো মানুষের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারে না। ইসলামী নেতার পক্ষে রূঢ় আচরণ বড়ো রকমের অযোগ্যতা। কর্মীগণ সাংগঠনিক শৃঙ্খলার খাতিরে এই ধরনের নেতার আনুগত্য করলেও তাদের অন্তরে তীব্র বেদনা থাকে। বেদনাহত কর্মীরা স্বত:স্ফূর্তভাবে গতিশীল হয়ে কাজ করতে পারে না। তাই নেতাকে অবশ্যই নম্র ব্যবহারের অধিকারী হতে হবে। তাঁর আচরণের সৌন্দর্য কর্মীদের তাঁর দিকে চুম্বকরে মত আকর্ষণ করে নিয়ে আসবে। এতে করে সংগঠনের আভ্যন্তরীণ সংহতি অত্যন্ত মজবুত হবে, এটাই স্বাভাবিক।
সাহসিকতা
ইসলামী সংগঠনের নেতা আল্লাহ ছাড়া আর কাউকে ভয় করবেন না। প্রকৃত পক্ষে তাকওয়ার দাবীও এটাই। যেই হৃদয়ে আল্লাহর ভয় থাকবে সেই হৃদয় অন্য কাউকে ভয় করবে, তার অবকাশ কোথায়! আল্লাহর রাসূল সো) বলেন, “ যেই ব্যক্তি আল্লাহকে ভয় করে দুনিয়ার সবকিছু থাকে ভয় করে। কিন্তু যেই ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ভয় পোষণ করেনা দুনিয়ার সবকিছু তাকে ভয় দেখায়। ” সংগঠনের নেতা নির্ভীক হলে তার প্রভাব পড়ে সংগঠনের কর্মী বাহিনীর ওপর। এই ধরনের নেতার কর্মীবাহিনী বিপদ-মুসিবাত দেখে মনভাংগা হয় না। হিম্মতহারা হয় না।
সময়ানুবর্তিতা
নেতাকে প্রতিদিন অনেক কাজ করতে হয়। অনেক লোকের সাথে সাক্ষাৎ করতে হয়। অনেক স্থানে যেতে হয় দিনের শুরুতেই করণীয় কাজের তালিকা তৈরী করে নেতা যদি সঠিক সময়ে সঠিক কাজ করে চলেন, তিনি এ্কদিনেই বহু কাজ করতে পারেন। এক জায়গায় সময় প্রতিপালনের ব্যর্থ হলে তাঁর সারা দিনের কাজগুলো একের পর এক ডিস্টার্বড হতে থাকবে। দিনান্তে হয়তো দেখা যাবে বেশ কয়েকটি কাজ কিছুতেই শেষ করা গেলোনা। সময় সর্ম্পকে সদা সচেতন থাকলে এবং প্রতিটি কাজের জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজটি সম্পন্ন করলেই দেখা যাবে সারাদিনের করণীয় সবগৃলো কাজই সম্পন্ন করা গেছে।
সংগঠনের প্রজ্ঞা
সংগঠনের নেতাকে অবশ্যই সবচেয়ে বেশী সাংগঠনিক প্রজ্ঞার অধিকারী হতে হবে। সংগঠন গড়ে তোলার যোগ্যতা, কর্মী পরিচালনার যোগ্যতা, সংগঠনের সংহতি সংরক্ষণের যোগ্যতা, ময়দানে বিশ্লেষণ করার যোগ্যতা, সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার যোগ্যতা, জনশক্তির কর্মমুখর রাখার যোগ্যতা, কর্মীদের মানোন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মপন্থ উদ্ভাবনের যোগ্যতা এবং সংগঠনের কর্মীদের গ্যাপ অব ইনফরমেশন থেকে বাঁচিয়ে রাখার যোগ্যতা নেতার অবশ্যই থাকতে হবে।
প্রেরণা সৃষ্টির যোগ্যতা
নেতা হবেন কর্মীদের জন্য প্রেরণার উৎস ও সান্ত¦নার স্থল। নেতার কথাবার্তা কর্মীদের মাঝে হতাশা বা নিরাশার বিষবাষ্প ছড়াবে না। তাঁর কথা শুনে কর্মীরা প্রণবন্ত হয়ে ওঠবে।
নেতা হবেন কর্মীদের জন্য বটগাছ যার ছায়াতে এসে কর্মীগণ অন্তরকে শীতল করতে পারবে। প্রতিকূলতার আঘাত খেয়ে খেয়ে কর্মীরা যখন অস্থির হয়ে ওঠে তখন মনের বেদনা প্রকাশ করার জন্য তারা নেতার ছুটে আসে। নেতার হাসিমাখা মুখের মিষ্ট সান্তনা-বাণী তাদের মনের জ্বালা দূর করে দেয়। নেতার হৃদয়ে কর্মীদের জন্য মুহাব্বতের ঝর্ণাধারা প্রবাহিত হয়ে থঅকে তাতে সিক্ত হয়ে তারা প্রশান্ত হয়। যেই নেতা কর্মীদের ওপর বটগাছের মত শীতল ছায়া বিস্তার করতে পারেন না তিনি নৎসী পার্টির নেতা হতে পারেন, কিন্তু ইসলামী সংগঠনের নেতা হওয়া তাঁর সাজে না।
সুভাষণ
নেতা সুবক্তা হওয়া প্রয়োজন। কম কথায় বেশী ভাব প্রকাশ উত্তম ভাষণের অন্যতম বৈশিষ্ট। বক্তৃতা পয়েন্ট ভিত্তিক হলে শ্রোতার পক্ষে বুঝা সহজ হয়। বক্তৃতার ভাষা সহজ হওয়া দরকার। বক্তৃতার প্রারম্ভ, মধ্যভাগ ও সমাপ্তি থাকা চাই। বক্তৃতার ভাবগুলো ধারাবাহিকভাবে সাজানো রূপে আসা দরকার যাতে বক্তৃতার বিষয় বুঝা শ্রোতারদের কষ্ট না হয়। আল্লাহর রাসূল (সা) বলেন, “বুয়িসতু বিজাওয়ামিইল কালাম” অর্থাৎ আমি ব্যাপক অর্থবোধক সংক্ষিপ্ত ভাষণের যোগ্যতাসহ আবির্ভূত হয়েছি। আল্লাহর রাসূল (সা) ছিলেন শ্রেষ্ঠ বক্তা। তার বক্তব্য ছিল প্রাঞ্জল ও চিত্তাকর্ষক। ইসলামী সংগঠনের নেতার তাঁরই অনুকরণে চেষ্টা করা উচিত।
নথিপত্র সংরক্ষণে পারদর্শিতা
নেতাকে হতে হবে নথিপত্রে সংরক্ষণে পারদর্শী। নথিপত্রের সঠিক নামকরণ, যথাযথভাবে নাম্বারিং করণ এবং ভেতরের সঠিবভাবে কাগজপত্র সন্নিবেশ করণের যোগ্যতা তাঁর অন্য সকলের চেয়ে বেশী দরকার। নিজে পারদর্শী না হলে অন্যদের দ্বারা এগুলো ভালভাবে করিয়ে নেয়া সম্ভব হয় না। নথিপত্র সঠিকভাবে সংরক্ষণ না হলে অনেক সময়ই প্রয়োজনীয় কাগজপত্রের হদিস পাওয়া যায় না, অথবা সেগুলো খুঁজে বের করতে বেশ খানিকটা সময় অপচয় হয়।
হিসাব সংরক্ষণে পারদর্শিতা
নেতা হবেন দক্ষ হিসাব রক্ষক। সংগঠনের যাবতীয় আয় ব্যয়ের রেকর্ড ও হিসাব সঠিকভাবে রক্ষণের দায়িত্ব তাঁর ওপর ন্যস্ত। এই ক্ষেত্রে ব্যর্থতা নেতার অতি বড়ো এক অযোগ্যতা।