38- بَيَانُ وُجُوْبِ أَمْرِهِ وَأَوْلاَدِهِ الْمُمَيِّزِيْنَ وَسَائِرِ مَنْ فِيْ رَعِيَّتِهِ بِطَاعَةِ اللهِ تَعَالٰى
وَنَهْيِهِمْ عَنْ المُخَالَفَةِ، وَتَأْدِيْبِهِمْ، وَمَنْعِهِمْ عَنْ اِرْتِكَابِ مَنْهِيٍّ عَنْهُ
পরিচ্ছেদ – ৩৮ : পরিবার-পরিজন, স্বীয় জ্ঞানসম্পন্ন সন্তান-সন্ততি ও আপন সমস্ত অধীনস্থদেরকে আল্লাহর আনুগত্যের আদেশ দেওয়া, তাঁর অবাধ্যতা থেকে তাদেরকে নিষেধ করা, তাদেরকে আদব শেখানো এবং শর‘য়ী নিষিদ্ধ জিনিস থেকে তাদেরকে বিরত রাখা ওয়াজিব
আল্লাহ তা‘আলা বলেন,
﴿ وَأۡمُرۡ أَهۡلَكَ بِٱلصَّلَوٰةِ وَٱصۡطَبِرۡ عَلَيۡهَاۖ ﴾ [طه: ١٣٢]
অর্থাৎ “তুমি তোমার পরিবারবর্গকে নামাযের আদেশ দাও এবং ওতে অবিচলিত থাক।” (সূরা ত্বাহা ১৩২আয়াত)
তিনি আরো বলেন,
﴿ يَٰٓأَيُّهَا ٱلَّذِينَ ءَامَنُواْ قُوٓاْ أَنفُسَكُمۡ وَأَهۡلِيكُمۡ نَارٗا وَقُودُهَا ٱلنَّاسُ وَٱلۡحِجَارَةُ عَلَيۡهَا مَلَٰٓئِكَةٌ غِلَاظٞ شِدَادٞ لَّا يَعۡصُونَ ٱللَّهَ مَآ أَمَرَهُمۡ وَيَفۡعَلُونَ مَا يُؤۡمَرُونَ ٦ ﴾ [التحريم: ٦]
অর্থাৎ “হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদেরকে এবং তোমাদের পরিবার-পরিজনকে রক্ষা কর অগ্নি হতে, যার ইন্ধন হবে মানুষ ও পাথর, যাতে নিয়োজিত আছে নির্মম-হৃদয়, কঠোর-সবভাব ফিশিতাগণ, যারা আল্লাহ যা তাদেরকে আদেশ করেন তা অমান্য করে না এবং তারা যা করতে আদিষ্ট হয় তাই করে।” (সূরা তাহরীম ৬ আয়াত)
1/303. عَن أَبي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ: أَخَذَ الحَسَنُ بنُ عَلِيٍّ رَضِيَ الله عَنهُمَا تَمْرَةً مِنْ تَمْرِ الصَّدَقَةِ فَجَعَلَهَا في فِيهِ، فَقَالَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «كَخْ كَخْ إرْمِ بِهَا، أمَا عَلِمْتَ أنَّا لاَ نَأكُلُ الصَّدَقَةَ !؟». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
وفي رِوَايَةٍ: «أنَّا لا تَحِلُّ لَنَا الصَّدَقَةُ».
১/৩০৩। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, হাসান ইবন আলী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু সাদকার একটি খুরমা নিয়ে তাঁর মুখে রাখলেন। তা দেখে রাসূলুল্লাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বললেন, ‘‘ছিঃ ছিঃ! ফেলে দাও। তুমি কি জান না যে, আমরা সাদকাহ খাই না?’’ (বুখারী ও মুসলিম) [1]
অন্য বর্ণনায় আছে, ‘‘….আমাদের জন্য সাদকাহ হালাল নয়।’’
2/304. وَعَن أَبي حَفصٍ عُمَرَ بنِ أَبي سَلَمَةَ عَبدِ اللهِ بنِ عَبدِ الأسَدِ رَبِيبِ رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ : كُنْتُ غُلاَماً فِي حِجرِ رَسُولِ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) وَكَانَتْ يَدي تَطِيشُ في الصَّحْفَةِ، فَقَالَ لي رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «يَا غُلامُ، سَمِّ الله تَعَالَى، وَكُلْ بيَمِينكَ، وَكُلْ مِمَّا يَلِيكَ».فَمَا زَالَتْ تِلْكَ طِعْمَتي بَعْدُ. مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
২/৩০৪। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর সৎ ছেলে আবূ হাফ্স উমার ইবনে আবী সালামা আব্দুল্লাহ ইবনে আব্দুল আসাদ কর্তৃক বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘একদা আমি ছোট হিসাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর কোলে ছিলাম। খাবার (সময়) বাসনে আমার হাত ঘুরছিল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বললেন, ‘‘ওহে কিশোর! ‘বিসমিল্লাহ’ বলে ডান হাতে আহার কর এবং তোমার কাছ থেকে খাও।’’ তারপর থেকে আমি সব সময় এ পদ্ধতিতেই আহার করে আসছি।’ (বুখারী ও মুসলিম) [2]
3/305. وَعَنِ ابنِ عُمَرَ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ : سَمِعتُ رَسُولَ اللهِ (صلى الله عليه و سلم)، يَقُولُ: «كُلُّكُمْ رَاعٍ، وَكُلُّكُمْ مسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتهِ : الإمَامُ رَاعٍ وَمَسْؤولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، والرَّجُلُ رَاعٍ في أهْلِهِ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، وَالمَرْأةُ رَاعِيَةٌ في بَيْتِ زَوْجِهَا وَمَسْؤُولَةٌ عَنْ رَعِيَّتِهَا، وَالخَادِمُ رَاعٍ في مَالِ سَيِّدِهِ وَمَسؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ، فَكُلُّكُمْ رَاعٍ وَمَسْؤُولٌ عَنْ رَعِيَّتِهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
৩/৩০৫। ইবনে উমার রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে বলতে শুনেছি, ‘‘প্রতিটি মানুষই দায়িত্বশীল, সুতরাং প্রত্যেকে অবশ্যই তার অধীনস্থদের দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। দেশের শাসক জনগণের দায়িত্বশীল, সে তার দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জবাবদিহী করবে। পুরুষ তার পরিবারের দায়িত্বশীল, অতএব সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিত হবে। স্ত্রী তার স্বামীগৃহের দায়িত্বশীলা, কাজেই সে তার দায়িত্বশীলতা বিষয়ে জিজ্ঞাসিতা হবে। গোলাম তার মনিবের সম্পদের দায়িত্বশীল, সে এ ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে। তোমরা প্রত্যেকেই দায়িত্বশীল। অতএব প্রত্যেকেই নিজ নিজ অধীনস্থের দায়িত্বশীলতা ব্যাপারে জিজ্ঞাসিত হবে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [3]
4/306. وَعَن عَمرِو بنِ شُعَيبٍ، عَن أبِيهِ، عَن جَدِّهِ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «مُرُوا أوْلاَدَكُمْ بِالصَّلاةِ وَهُمْ أبْنَاءُ سَبْعِ سِنينَ، وَاضْرِبُوهُمْ عَلَيْهَا، وَهُمْ أبْنَاءُ عَشْرٍ، وَفَرِّقُوا بَيْنَهُمْ في المضَاجِعِ».حديث حسن رواه أَبُو داود بإسناد حسن
৪/৩০৬। ‘আমর ইবনে শুআইব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু তাঁর পিতা থেকে এবং তিনি আম্রের দাদা (আব্দুল্লাহ ইবনে আম্র) থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা নিজেদের সন্তান-সন্ততিদেরকে নামাযের আদেশ দাও; যখন তারা সাত বছরের হবে। আর তারা যখন দশ বছরের সন্তান হবে, তখন তাদেরকে নামাযের জন্য প্রহার কর এবং তাদের বিছানা পৃথক করে দাও।’’ (আবূ দাউদ, হাসান সূত্রে)[4]
5/307. وَعَن أَبي ثُرَيَّةَ سَبْرَةَ بنِ مَعبَدٍ الجُهَنِيِّ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «عَلِّمُوا الصَّبِيَّ الصَّلاةَ لِسَبْعِ سِنِينَ، وَاضْرِبُوهُ عَلَيْهَا ابْنَ عَشْرِ سِنِينَ».حديث حسن رواه أَبُو داود والترمذي، وَقالَ: «حديث حسن».ولفظ أَبي داود: «مُرُوا الصَّبِيَّ بِالصَّلاةِ إِذَا بَلَغَ سَبْعَ سِنِينَ».
৫/৩০৭। আবূ সুরাইয়াহ সাবরাহ ইবনে মা‘বাদ জুহানী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা শিশুকে সাত বছর বয়সে নামায শিক্ষা দাও এবং দশ বছর বয়সে তার জন্য তাকে মার।’’ (আবূ দাউদ, তিরমিযী) [5]
আবূ দাঊদের শব্দেঃ ‘‘শিশু সাত বছর বয়সে পৌঁছলে তাকে তোমরা নামাযের আদেশ দাও।’’
[1] সহীহুল বুখারী ১৪৯১, ১৪৮৫, ৩০৭২, মুসলিম ১০৬৯, আহমাদ ৭৭০০, ৯০১৪. ৯০৫৩, ৯৪৩৫, ২৭২৫৭, ৯৮১৭, দারেমী ১৬৪২
[2] সহীহুল বুখারী ৫৩৭৬, ৫৩৭৭, ৫৩৭৮, মুসলিম ২০২২, আবূ দাউদ ৩৭৭৭, ইবনু মাজাহ ৩২৬৭, আহমাদ ১৫৮৯৫, ১৫৯০২, মুওয়াত্তা মালিক ১৭৩৮, দারেমী ২০১৯, ২০৪৫
[3] সহীহুল বুখারী ৮৯৩, ২৪০৯, ২৫৫৪, ২৫৫৮, ২৭৫১, ৫১৮৮, ৫২০০, ৭১৩৮, মুসলিম ১৮২৯, তিরমিযী ১৭০৫, আবূ দাউদ ২৯২৮, আহমাদ ৪৪৮১, ৫১৪৫, ৫৮৩৫, ৫৮৬৭, ৫৯৯০
[4] আবূ দাউদ ৪৯৫, আহমাদ ১৬৬৫০, ৬৭১৭
[5] তিরমিযী ৪০৭, আবূ দাউদ ৪৯৪ দারেমী ১৪৩১