13/239. وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه، قَالَ : قَالَ رَسُولُ الله (صلى الله عليه و سلم): «المُسْلِمُ أخُو المُسْلِمُ، لاَ يَخُونُهُ، وَلاَ يَكْذِبُهُ، وَلاَ يَخْذُلُهُ، كُلُّ المُسْلِمِ عَلَى المُسْلِم حَرَامٌ عِرْضُهُ وَمَالهُ وَدَمُهُ، التَّقْوى هاهُنَا، بحَسْب امْرىءٍ مِنَ الشَّرِّ أنْ يَحْقِرَ أخَاهُ المُسْلِم». رواه الترمذي، وَقالَ: «حديث حسن».
১৩/২৩৯। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার বিশ্বাসঘাতকতা করবে না, তাকে মিথ্যা বলবে না (বা মিথ্যাবাদী ভাববে না), তার সাহায্য না করে তাকে অসহায় ছেড়ে দেবে না। এক মুসলিমের মর্যাদা, মাল ও খুন অপর মুসলিমের জন্য হারাম। তাকওয়া তথা আল্লাহ-সচেতনতা এখানে (অন্তরে) রয়েছে। কোনো মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ মনে করাটাই একটি মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য যথেষ্ট।’’ (তিরমিযী, হাসান সূত্রে) [1]
14/240. وَعَنهُ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ الله (صلى الله عليه و سلم): «لاَ تَحَاسَدُوا، وَلاَ تَنَاجَشُوا، وَلاَ تَبَاغَضُوا، وَلاَ تَدَابَرُوا، وَلاَ يَبعْ بَعْضُكُمْ عَلَى بَيْع بَعْض، وَكُونُوا عِبَادَ الله إخْوَاناً، المُسْلِمُ أخُو المُسْلم : لاَ يَظْلِمُهُ، وَلا يَحْقِرُهُ، وَلاَ يَخْذُلُهُ، التَّقْوَى هاهُنَا – وَيُشِيرُ إِلَى صَدرِهِ ثَلاَثَ مَرَّاتً – بحَسْب امْرئٍٍ مِنَ الشَّرِّ أنْ يَحقِرَ أخَاهُ المُسْلِمَ، كُلُّ المُسْلم عَلَى المُسْلم حَرَامٌ، دَمُهُ وَمَالُهُ وَعِرْضُهُ». رواه مسلم
১৪/২৪০। উক্ত বর্ণনাকারী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, ‘‘তোমরা একে অপরের প্রতি হিংসা করো না, কেনা-বেচাতে জিনিসের মূল্য বাড়িয়ে একে অপরকে ধোঁকা দিয়ো না, একে অপরের প্রতি শত্রুতা রেখো না, এক অপর থেকে (ঘৃণাভরে) মুখ ফিরায়ো না এবং একে অপরের (জিনিস) কেনা-বেচার প্রস্তাবের উপর কেনা-বেচা করো না। আর হে আল্লাহর বান্দারা! তোমরা ভাই-ভাই হয়ে যাও। মুসলিম মুসলিমের ভাই। সে তার প্রতি যুলুম করবে না, তাকে তুচ্ছ ভাববে না এবং তাকে অসহায় অবস্থায় ছেড়ে দেবে না। তাকওয়া তথা আল্লাহ-সচেতনতা এখানে (অন্তরে) রয়েছে। (তিনি নিজ বুকের দিকে ইঙ্গিত করে এ কথা তিনবার বললেন।) কোন মুসলিম ভাইকে তুচ্ছ ভাবা একটি মানুষের মন্দ হওয়ার জন্য যথেষ্ট। প্রত্যেক মুসলিমের রক্ত, মাল এবং তার মর্যাদা অপর মুসলিমের উপর হারাম।’’ (মুসলিম) [2]
16/241. وَعَن أَنَسٍ رضي الله عنه، عَنِ النَّبيّ (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «لاَ يُؤمِنُ أحَدُكُمْ حَتَّى يُحِبَّ لأخِيهِ مَا يُحِبُّ لنَفْسِهِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৬/২৪১। আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমাদের মধ্যে কেউ (পূর্ণ) মু’মিন হতে পারবে না, যতক্ষণ না সে তার ভাইয়ের জন্য তাই পছন্দ করবে, যা সে নিজের জন্য পছন্দ করে।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [3]
17/242. وَعَنهُ، قَالَ : قَالَ رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم): «انْصُرْ أخَاكَ ظَالماً أَوْ مَظْلُوماً».فَقَالَ رجل : يَا رَسُولَ اللهِ، أنْصُرُهُ إِذَا كَانَ مَظْلُوماً، أرَأيْتَ إنْ كَانَ ظَالِماً كَيْفَ أنْصُرُهُ ؟ قَالَ: «تحْجُزُهُ ـ أَوْ تمْنَعُهُ ـ مِنَ الظُلْمِ فَإِنَّ ذلِكَ نَصرُهُ». رواه البخاري
১৭/২৪২। উক্ত সাহাবী রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকেই বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘তোমার ভাইকে সাহায্য কর, সে অত্যাচারী হোক অথবা অত্যাচারিত।’’ তিনি (আনাস রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু) বললেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল! অত্যাচারিতকে সাহায্য করার বিষয়টি তো বুঝলাম; কিন্তু অত্যাচারীকে কিভাবে সাহায্য করব?’ তিনি বললেন, ‘‘তুমি তাকে অত্যাচার করা হতে বাধা দেবে, তাহলেই তাকে সাহায্য করা হবে।’’(বুখারী) [4]
18/243. وَعَنْ أَبِي هُرَيرَةَ رضي الله عنه : أنَّ رَسُولَ الله (صلى الله عليه و سلم)، قَالَ: «حَقُّ المُسْلِم عَلَى المُسْلِم خَمْسٌ : رَدُّ السَّلامِ، وَعِيَادَةُ المَريض، وَاتِّبَاعُ الجَنَائِزِ، وَإجَابَةُ الدَّعْوَة، وتَشْميتُ العَاطِسِ». مُتَّفَقٌ عَلَيهِ .
وفي رواية لمسلم: «حَقُّ المُسْلِم عَلَى المُسْلِم ستٌّ : إِذَا لَقيتَهُ فَسَلِّمْ عَلَيهِ، وَإِذَا دَعَاكَ فَأجبْهُ، وإِذَا اسْتَنْصَحَكَ فَانْصَحْ لَهُ، وإِذَا عَطَسَ فَحَمِدَ الله فَشَمِّتْهُ، وَإِذَا مَرِضَ فَعُدْهُ، وَإِذَا مَاتَ فَاتَّبِعْهُ»
১৮/২৪৩। আবূ হুরাইরাহ রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, ‘‘মুসলিমের উপর মুসলিমের পাঁচটি অধিকার রয়েছেঃ (১) সালামের জবাব দেওয়া, (২) রোগীকে দেখতে যাওয়া, (৩) জানাযায় অংশ গ্রহণ করা, (৪) দাওয়াত গ্রহণ করা এবং (৫) কেউ হাঁচি দিলে তার জবাব দেওয়া।’’ (বুখারী ও মুসলিম)
মুসলিমের অন্য এক বর্ণনায় আছে, ‘‘মুসলিমের উপর মুসলিমের অধিকার ছয়টিঃ তুমি তার সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তাকে সালাম দাও, সে তোমাকে দাওয়াত দিলে তার দাওয়াত গ্রহণ কর, সে তোমার কাছে উপদেশ চাইলে তুমি তাকে উপদেশ দাও, সে হাঁচি দিয়ে ‘আলহামদু লিল্লাহ’ বললে তার জবাব দাও, সে অসুস্থ হলে তাকে দেখতে যাও এবং সে মারা গেলে তার জানাযায় অংশ গ্রহণ কর।’’ (বুখারী ও মুসলিম) [5]
19/244. وَعَنْ أَبِي عُمَارَةَ البَرَاءِ بنِ عَازِبٍ رَضِيَ اللهُ عَنهُمَا، قَالَ : أَمَرَنَا رَسُولُ اللهِ (صلى الله عليه و سلم) بِسَبعٍ، وَنَهَانَا عَن سَبعٍ : أمَرَنَا بعيَادَة المَرِيض، وَاتِّبَاعِ الجَنَازَةِ، وتَشْمِيتِ العَاطسِ، وَإبْرَارِ المُقْسِم، ونَصْرِ المَظْلُوم، وَإجَابَةِ الدَّاعِي، وَإِفْشَاءِ السَّلامِ، ونَهَانَا عَنْ خَواتِيمٍ أَوْ تَخَتُّمٍ بالذَّهَبِ، وَعَنْ شُرْبٍ بالفِضَّةِ، وَعَن الميَاثِرِ الحُمْرِ، وَعَن القَسِّيِّ، وَعَنْ لُبْسِ الحَريرِ والإسْتبْرَقِ وَالدِّيبَاجِ . مُتَّفَقٌ عَلَيهِ
১৯/২৪৪। আবূ ‘উমারাহ বারা’ ইবনে আযেব রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে সাতটি কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছেন এবং সাতটি কাজ করতে নিষেধ করেছেন। তিনি রোগীকে দেখতে যেতে, জানাযায় অংশগ্রহণ করতে, কেউ হাঁচি দিলে তার জবাব দিতে, শপথকারীর শপথ রক্ষা করতে, নিপীড়িতদের সাহায্য করতে, সালামের প্রসার ঘটাতে এবং কেউ দাওয়াত দিলে তা গ্রহণ করতে নির্দেশ দিয়েছেন। আর তিনি আমাদেরকে সোনার আংটি পরতে, রূপার পাত্র ব্যবহার করতে, রেশমের জিনপোশ, কাস্সী, ইস্তাবরাক ও দীবাজ (সর্বপ্রকার রেশমী পোশাক) ব্যবহার করতে নিষেধ করেছেন। (বুখারী ও মুসলিম) [6]
[1] মুসলিম ২৫৬৪, তিরমিযী ১৯২৭
[2] সহীহুল বুখারী ৫১৪৪, ৬০৬৬, মুসলিম ২৫৬৪, ২৫৬৩, তিরমিযী ১১৩৪, ১৯৮৮, নাসায়ী ৩২৩৯, ৪৪৯৬, ৪৫০৬, ৪৫০৭, আবূ দাউদ ৩৪৩৮, ৩৪৪৩, ৪৯১৭, ইবনু মাজাহ ১৮৬৭, ২১৭২, ২১৭৪ আহমাদ ৭৬৭০, ৭৮১৫, ৮০৩৯, ২৭৩৩৪, ৮২৯৯, ২৭৪৮৮,মুওয়াত্তা মালেক ১৩৯১, ১৬৮৪
[3] সহীহুল বুখারী ১৩, মুসলিম ৪৫, তিরমিযী ২৫১৫, নাসায়ী ৫০১৬, ৫০১৭, ইবনু মাজাহ ৬৬, আহমাদ ১১৫৯১, ১২৩৫৪, ১২৩৭২, ১২৩৯০, ১২৭৩৪, ১২৯৯৪, দারেমী ২৭৪০
[4] সহীহুল বুখারী ৬৯৫২, ২৪৪৩, ২৪৪৪, তিরমিযী ২২৫৫, আহমাদ ১১৫৩৮, ১২৬৬৬
[5] সহীহুল বুখারী ১২৪০, মুসলিম ২১৬২, তিরমিযী ২৭৩৭, নাসায়ী ১৯৩৮, আবূ দাউদ ৫০৩০, ইবনু মাজাহ ১৪৩৫, আহমাদ ২৭৫১১, ১০৫৮৩
[6] সহীহুল বুখারী ১২৩৯, ২৪৪৫, ৫১৫৭, ৫৬৩৫, ৫৬৫০,৫৮৩৮, ৫৮৪৯, ৫৮৬৩, ৬২২২, ৬২৩৫, ৬৬৫৪, মুসলিম ২০৬৬, তিরমিযী ১৭৬০, ২৮০৯, নাসায়ী ১৯৩৯, ৩৭৭৮, ৫৩০৯, ইবনু মাজাহ ২১১৫, আহমাদ ১৮০৩৪, ১৮০৬১, ১৮১৭০