কুরআনে বর্ণিত আম্বিয়ায়ে কেরামের জীবনকথা
নবীদের সংগ্রামী জীবন
আবদুস শহীদ নাসিম
রাসুলদের পাঠানো হয়েছে কেন?
‘‘আমরা আমাদের রাসুলদের স্পষ্ট নির্দশন ও সঠিক পথের নির্দেশিকাসহ পাঠিয়েছি। আর তাহাদের সাথে অবতীর্ণ করেছি আল কিতাব ও পক্ষপাতহীন সুষম জীবন ব্যবস্থা, যাতে করে মানুষ সুবিচার (justice) এর উপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারে। তাছাড়া আমরা লোহা অবতীর্ণ করেছি, যার মধ্যে রয়েছে বিরাট শক্তি আর মানুষের জন্য না না কল্যাণ ও উপকারীতা। এটা করা হয়েছে এ জন্যে যে, আল্লাহ বাস্তবে যেনে নিতে চান, না দেখেও তারা তাঁকে আর তাঁর রাসুলদেরকে সাহায্য করে? নিশ্চয়ই আল্লাহ অত্যন্ত শক্তিধর ও মহা পরাক্রমশালী। ’’ সুরা ৫৭ আল হাদীদ আয়াত ; ২৫
বিসমিল্লাহির রাহমানীর রাহীম
এই বই সম্পর্কে কিছু কথা
নবী রাসুলগন সেরা মানুষ। তাঁরা আল্লাহর মনোনীত ও নিযুক্ত। তাঁদের কাছে মহান আল্লাহ অহী পাঠিয়েছেন, কিতাব পাঠিয়েছেন। তাঁরা ছিলেন নিষ্পাপ ও আদর্শ মানুষ। তাঁরা মানুষকে আল্লাহর দেয়া বিধান অনুযায়ী জীবন যাপন করতে বলেছেন।
মহান আল্লাহ আল-কুরানে হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) সহ পঁচিশ জন নবী-রাসুলের নাম উল্লেখ করেছেন। তাঁদের অনেকের কথা বার বার উল্লেখ করেছেন। তাঁদের আদর্শ ও সেরা জীবনের কথা উল্লেখ করেছেন। তাঁদের আদর্শ অনুসরনের আহবান জানিয়েছেন। তাই নবীদের পথই মানুষের মুক্তির একমাত্র পথ।
আল-কুরানের আলোকে নবীগনের জীবন কথা ও জীবনাদর্শ লেখার বাসনা আমার অনেক দিনের। অবশেষে লেখার কাজে হাত দিলাম। কিশোর ও তরুণদের কথা সামনে রেখেই লেখার কাজ শুরু করেছি এর দশকে ‘কিশোর কণ্ঠ’ পত্রিকায় জীবনীগুলো ধারাবাহিকভাবে প্রকাশ হয়েছে। অতঃপর হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর পূর্বেকার চব্বিশজন নবীর জীবনী দুই খণ্ডে প্রকাশ হয়। কিন্তু দুই খণ্ডে প্রকাশ করলে গ্রন্থটি পাঠকদের জন্য সহজলভ্য হয় না। এখন তাই পাঠকগণের সুবিধার্থে তিন খণ্ডের পূর্ণাঙ্গ জীবনী একত্র করে এক ভলিউমে প্রকাশ করা হল। হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনী সংক্ষিপ্ত আকারে প্রকাশ করা হল। তবে তাঁর জীবনীর উপরে আলাদা একটি বইও লেখা হয়েছে। এ বইয়ের ধারাবাহিকতায় লেখা হয়েছে হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবনীর উপর সে বইটি। সেই বইটির শিরোনাম; বিশ্ব নবীর শ্রেষ্ঠ জীবন।
হ্যাঁ, যে কথাটি বলছিলাম, নবীগনের জীবনী লেখা সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা পবিত্র কুরানের আলোকে। কুরআনের আলোকেই লিখেছি। তবে কয়েকজন নবীর জীবন কথা কুরানে একেবারে সংক্ষেপে আলোচনা হয়েছে। তাঁদের ক্ষেত্রে হাদীস, তাফসীর ও ইতিহাস গ্রন্থের সাহায্য নিয়েছি।
আমরা এ গ্রন্থে নবীগনের ক্রমতালিকা সাজিয়েছি কুরান, হাদীস ও ঐতিহাসিক তথ্য প্রমান অনুযায়ী তাঁদের আগমন ও জীবন কালের ক্রমধারার ভিত্তিতে।
নবীগনের জীবনী লেখার ক্ষেত্রে রং চং লাগিয়ে গল্প কাহিনী লেখার চেস্টা করা হয় নি। কুরআনের আলোকে নিরেট জীবন কথাই লেখা হয়েছে। তাই এ বইতে কাহিনীগত রস পরিবেশনের পরিবর্তে জীবনাদর্শ পরিবেশনের প্রতি অধিক লক্ষ্য রাখা হয়েছে।
বস্তুনিষ্ঠ জীবন কথা জানতে জারা আগ্রহী, বিশেষ করে কিশোর ও তরুন সমাজের কাছে আশা করি এ বই অনেক ভালো লাগবে। কারন এতে তাঁরা কেবল ইতিহাসই জানবে না, সেই সাথে নিজেদের জীবনাদর্শ ও শ্রেষ্ঠ জীবন গড়ার এবং জীবন চলার পথও খুজে পাবে।
এ বই পড়ে নবী গনের আদর্শে যদি উদ্বুদ্ধ হয় আমার দেশের কিশোর- তরুন আর যুবকেরা, তবেই পূর্ণ হবে আমার দীলের তামান্না, মনের স্বপ্ন স্বাধ। প্রভু, তুমি এই গ্রন্থটিকে কবুল করো। আমীন।
আব্দুস শহীদ নাসীম।