২৬. তৃতীয় মুস্তাফা
১. সুলতান ও খালীফা পদে তৃতীয় মুস্তাফা
১৭৫৭ খৃষতাব্দে তৃতীয় উসমানের ভাই তৃতীয় মুস্তাফা কনস্ট্যান্টিনোপলের মসনদে বসেন।
২. তৃতীয় মুস্তাফা যেমন ছিলেন
তৃতীয় মুস্তাফা তাঁর শাসনকালের প্রথম দিকে বেশ যোগ্যতার পরিচয় দেন। তাঁর উযীরে আযম রাগিব পাশা খুবই যোগ্য ও দূরদর্শী ব্যক্তি ছিলেন। তাঁর প্রচেষ্টায় রাষ্ট্রে শান্তি শৃংখলা প্রতিষ্ঠিত হয়।
৩. রনাংগনে তৃতীয় মুস্তাফা
১৭৬৩ খৃষ্টাব্দে উযীরে আযম রাগিব পাশা ইন্তিকাল করেন। এতে সুলতান বেশ দুর্বল হয়ে পড়েন।
রাশিয়ার জারিনা দ্বিতীয় ক্যাথারিন উসমানী খিলাফাতের পূর্ব ইউরোপীয় অঞ্চলগুলো দখলের সিদ্ধান্ত নেন। এই লক্ষ্যে তিনি প্রুশিয়ার রাজার সাথে মৈত্রী গড়ে তোলেন। অষ্ট্রিয়ার রাণী মেরিয়া থেরেসাও তাঁদের সাথে মিলিত হন।
১৭৬৮ খৃষ্টাব্দে উসমানী খিলাফাতে সাথে রাশিয়ার যুদ্ধ বাধে। এই যুদ্ধে ফ্রান্স উসমানী খিলাফাতকে এবং ইংল্যান্ড রাশিয়াকে সমর্থন করে।
বিভিন্ন রণাংগনে যুদ্ধ হতে থাকে। উভয় পক্ষ কখনো জয় কখনো পরাজয়ের সম্মুখীন হয়।
৪. তৃতীয় মুস্তাফার ইন্তিকাল
১৭৭৩ খৃষ্টাব্দে তৃতীয় মুস্তাফা ইন্তিকাল করেন।
২৭. প্রথম আবদুল হামিদ
১. সুলতান ও খালীফা পদে প্রথম আবদুল হামিদ
১৭৭৩ খৃষ্টাব্দে তৃতীয় মুস্তাফার পুত্র প্রথম আবদুল হামিদ কনস্ট্যান্টিনোপলের মসনদে বসেন।
২. প্রথম আবদুল হামিদ যেমন ছিলেন
প্রথম আবদুল হামিদ ছিলেন শান্তিপ্রিয় মানুষ। তিনি যুদ্ধ বিগ্রহ পছন্দ করতেন না। কিন্তু রাশিয়া তাঁকে সুখে থাকতে দেয়নি।
৩. রণাংগনে প্রথম আবদুল হামিদ
পূর্ব থেকেই উসমানী খিলাফাতের সাথে রাশিয়ার সাথে যুদ্ধ চলছিলো। ১৭৭৪ খৃষ্টাব্দে প্রথম আবদুল হামিদ রাশিয়ার সাথে কুটচুককাইনারজি সন্ধি করেন। রাশিয়া কৃষ্ণসাগর এবং ভূ-মধ্য সাগরে অবাধ বাণীজ্যের অধিকার লাভ করে। চুক্তির শর্ত অনুযায়ী রাশিয়া উসমানী খিলাফাতের অন্তর্গত খৃষ্টানদের অভিভাবকত্ব করার অধিকার লাভ করে। ফলে রাশিয়া উসমানী খিলাফাতের আভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার সুযোগ পায়। কুটচুককাইনারজি সন্ধি উসমানী খিলাফাতের পতনের প্রথম ধাপ হিসেবে কাজ করে।
১৭৮৮ খৃষ্টাব্দে অষ্ট্রিয়ার সাথে উসমানী খিলাফাতের যুদ্ধ বাধে। এই যুদ্ধে উসমানী সৈন্যগণ বিজয়ী হয়।
৪. প্রথম আবদুল হামিদের ইন্তিকাল
১৭৮৯ খৃষ্টাব্দে প্রথম আবদুল হামিদ ইন্তিকাল করেন।
২৮. তৃতীয় সলিম
১. সুলতান ও খালীফা পদে তৃতীয় সলিম
১৭৮৯ খৃষ্টাব্দে প্রথম আবদুল হামিদ ভাতিজা তৃতীয় সলিম কনস্ট্যান্টিনোপলের মসনদে বসেন।
২. তৃতীয় সলিম যেমন ছিলেন
তৃতীয় সলিম চিলেন একজন প্রতিভাবান ব্যক্তি। তবে তিনি ইউরোপীয় ভাবাদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। তিনি বিভিন্নমুখী সংস্কারের উদ্যোগ গ্রহন করেন। তিনি উযীরে আযমের ক্ষমতা হ্রাস করে উযীর পরিষদের ক্ষমতা বৃদ্ধি করেন।
তৃতীয় সলিম ফ্রান্সের সৈন্যবাহিনীর অনুকরনে উসমানী সৈন্যদেরকে গড়ে তোলার চেষ্টা করেন। এই উদ্দেশ্যে তিনি ফ্রান্সের বহু সামরিক অফিসারকে কাজে লাগান। তিনি ফ্রান্স থেকে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করেন। সৈন্যদের জন্য সামরিক পোষাক পরিধান এবং নিয়মিত কুচকাওয়াজ বাধ্যতামূলক করেন। রাশিয়াতে ট্রেনিং প্রাপ্ত উমার পাশাকেও তিনি সেনাবাহিনীর সংস্কারের কাজে লাগান। তিনি সামন্ত প্রথার বিলোপ সাধন করেন। তিনি ইউরোপের অনুকরণে বিভিন্ন বিষয় পড়াবার ব্যবস্থা করেন। ইউরোপীয় রাজনীতি, কুটনীতি, সমর নীতি ইত্যাদি বিষয়ে জ্ঞান হাছিলের জন্য তিনি বহু তরুণকে লন্ডন, প্যারিস, ভিয়েনা এবং বার্লিন পাঠান। তবে ইউরোপীয় ধাঁচে সংস্কার সাধন করতে গিয়ে তিনি ইসলামী শক্তি থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন।
৩. রণাংগনে তৃতীয় সলিম
১৭৮৯ খৃষ্টাব্দে অষ্ট্রিয়া উসমানী খিলাফাতের পূর্ব ইউরোপীয় প্রদেশগুলো আক্রমণ করে। উসমানী সৈন্যগণ যুদ্ধে লিপ্ত হয়।
১৭৯১ খৃষ্টাব্দে সিস্টোভা সন্ধি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী ক্রোশিয়াসহ কিছু এলাকা অষ্ট্রিয়াকে ছেড়ে দিয়ে খিলাফাত বাকি এলাকাগুলোর ওপর দখল বহাল রাখতে সক্ষম হয়।
রাশিয়ার জারিনা দ্বিতীয় ক্যাথারিন উসমানী খিলাফাতের রাজধানী কনস্ট্যান্টিনোপল দখলের স্বপ্ন দেখছিলেন। তিনি খিলাফাতের অন্তর্গত গ্রীক প্রজাদেরকে বিদ্রোহের উসকানী দিতে থাকেন।
রাশিয়ার সেনাবাহিনী উসমানী খিলাফাতের অন্তর্গত অঞ্চল বুলগেরিয়া এবং বেসারভিয়ার দিকে সামরিক অভিযান চালায়। উসমানী সৈন্যগণও এগিয়ে আসে। বিভিন্ন রণাংগনে যুদ্ধ চলতে থাকে। কিন্তু উসমানী সৈন্যগণ পরাজিত হতে থাকে।
এই সময় ফ্রান্সে বিপ্লব সংঘটিত হয়। আর ইংল্যান্ডের মধ্যস্ততায় উসমানী খিলাফাত এবং রাশিয়ার মধ্যে জাসি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
ইতিমধ্যে নেপোলিয়ান বোনাপার্ট ফ্রান্সের শাসক হন। তিনি উসমানী খিলাফাতের প্রদেশ মিসর, ফিলিস্তিন এবং সিরিয়া দখলের জন্য ওঠে পড়ে লাগেন। যুদ্ধ বেধে যায়।
ফ্রান্সের প্রতিপত্তি বেড়ে যাচ্ছে দেখে ইংল্যান্ড এবার উসমানী খিলাফাতের সমর্থনে এগিয়ে আসে। ফ্রান্স পিছু হটতে বাধ্য হয়।
১৮০২ খৃষ্টাব্দে ফ্রান্স উসমানী খিলাফাতের সাথে আমিন্স চুক্তি স্বাক্ষর করে। এরপর ফ্রান্সের সাথে উসমানী খিলাফাতের সম্পর্ক উন্নতি হয়। কিন্তু ইংল্যান্ডের সাথে সম্পর্ক তিক্ত হয়ে ওঠে।
১৮০৪ খৃষ্টাব্দে রাশিয়ার উসকানিতে সার্বিয়ার খৃষতানগণ কারা জর্জ নামক এক ব্যক্তির নেতৃত্বে উসমানী খিলাফাতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করে।
১৮০৬ খৃষতাব্দে উসমানী সোইন্যগণ যখন রাশিয়ার সোইন্যদের সাথে যুদ্ধ রত তখন সার্বিয়া স্বাধীনতার ঘোষনা দেয়।
৩. তৃতীয় সলিমের হত্যা
তৃতীয় সলিমের শাসনকালে আভ্যন্তরীণ গোলযোগ সৃষ্টি হয়। দিকে দিকে বিদ্রোহ দেখা দেয়। অবস্থা বেগতিক দেখে ১৮০৭ খৃষ্টাব্দে তিনি পদত্যাগ করে আত্নগোপন করেন। ১৮০৮ খৃষতাব্দে তিনি আততায়ীর হাতে নিহত হন।
২৯. চতুর্থ মুস্তাফা
১. সুলতান ও খালীফা পদে চতুর্থ মুস্তাফা
১৮০৭ খৃষ্টাব্দে তৃতীয় সলিমের ভাতিজা চতুর্থ মুস্তাফা কনস্ট্যান্টিনোপলের মসনদে বসেন। কিন্তু এক বছর পরেই তাঁকে ক্ষমতা ত্যাগ করতে হয়।
৩০. দ্বিতীয় মাহমুদ
১. সুলতান ও খালীফা পদে দ্বিতীয় মাহমুদ
১৮০৮ খৃষ্টাব্দে দ্বিতীয় মাহমুদ কনস্ট্যান্টিনোপলের মসনদে বসেন।
২. দ্বিতীয় মাহমুদ যেমন ছিলেন
দ্বিতীয় মাহমুদ শাসনকার্যে যোগ্যতার স্বাক্ষর রাখতে পারেননি। তবে তিনি তৃতীয় সলিমের সংস্কার ধারা নিয়ে সামনে অগ্রসর হন।
এই সময় ইউরোপীয় জীবন দর্শনে অনুপ্রাণিত মুস্তাফা সামী, সাদিক রিফাত প্রমুখ ব্যক্তি তাঁদের লেখার মাধ্যমে নতুন চিন্তার বীজ ছড়াতে থাকেন।
পূর্বে উযীরে আযম এবং শাইখুল ইসলামের ক্ষমতা ছিলো ব্যাপক।
দ্বিতীয় মাহমুদ উযীরে আযমের ক্ষমতা হ্রাস করে বিভিন্ন দফতরে ভারপ্রাপ্ত উযীর নিয়োগ করেন। প্রতিটি মন্ত্রনালয়ের জন্য গঠিত হয় একটি উপদেষ্টা পরিষদ। পূর্বে শাইখুল ইসলাম ছিলেন ধর্মীয় বিষয় এবং বেসামরিক প্রশাসনের একজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্ব। দ্বিতীয় মাহমুদ তাঁর ক্ষমতাকে শুধুমাত্র ধর্মীয় ব্যাপারে সীমাবদ্ধ করে দেন।
আইনের খসড়া তৈরীর জন্য তিনি একটি পরিষদ গঠন করেন। পরবর্তীকালে এটি কিছুটা প্রতিনিধিত্বশীল রূপ নেয় এবং এর নাম হয় শূরা-ফী-দাওলাত।
দ্বিতীয় মাহমুদের পৃষ্ঠপোষকতার ‘তাকভীম-ই-ভিখারী’ নামে তুর্কী ভাষায় প্রথম সংবাদপত্র বের হয়।
দ্বিতীয় মাহমুদ পাগড়ির স্থলে ফেজটুপির প্রচলন করেন। সৈন্যদের জন্য তিনি পাজামার স্থলে পাতলুন এবং জবরজং জুতার পরিবর্তে বুট ব্যবহার বাধ্যতামূলক করেন।
৩. রণাংগনে দ্বিতীয় মাহমুদ
রাশিয়ার সাহায্যপুষ্ট হয়ে সার্বিয়া উসমানী খিলাফাতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালিয়ে যেতে থাকে। ১৮১৭ খৃষতাব্দে দ্বিতীয় মাহমুদ সার্বিয়ার স্বাধীনতা মেনে নিতে বাধ্য হন। মিলোস অবরেনোভিচ স্বাধীন সার্বিয়ার প্রথম রাজা হন।
১৮১৪ খৃষ্টাব্দে ওডেসোতে চারজন গ্রীক বণিক “হিটারিয়া ফিলকী” নামে এক গুপ্ত সমিতি গঠন করে। ১৮২০ খৃষ্টাব্দে এর সদস্য সংখ্যা হয় দুই লাখ। ইউরোপে উসমানী খিলাফাতের অবসান ঘটিয়ে প্রাচীন গ্রীক সাম্রাজ্যের মতো একটি নতুন গ্রীক সাম্রাজ্য গঠন ছিলো এই সমিতির লক্ষ্য। ইতিহাসবিদ লেনপুল বলেন, “স্বাধীনতার উচ্চাদর্শ এই সমস্ত বিদ্রোহকে যতখানি না উদ্দীপিত করেছিলো তার চাইতে বেশি করেছিলো রাশিয়ার উস্কানি”
দ্বিতীয় মাহমুদ মিসরের মুহাম্মাদ আলীর সৈন্যদের সাহায্যে গ্রীক বিদ্রোহীদেরকে প্রায় কোনঠাসা করে ফেলেছিলেন। এই সময় প্রাচীন সভ্যতার লীলাভূমি গ্রীসের প্রতি ইউরোপীয়দের মনে সহানূভূতি জেগে ওঠে।
১৮২৭ খৃষ্টাব্দে রাশিয়া, ফ্রান্স এবং ইংল্যান্ডের মিলিত বাহিনী নাভারিনোর নৌযুদ্ধে উসমানী নৌবাহিনীকে পরাজিত করে।
১৮২৮ খৃষ্টাব্দে গ্রীসের বিরুদ্ধে নতুন সামরিক অভিযান চালিয়ে উসমানী বাহিনী আবারো পরাজিত হয়।
উসমানী খিলাফাতের ওপর চাপিয়ে দেয়া হয় আড্রিয়ানোপল চুক্তি। এই চুক্তি অনুযায়ী মোলডাভিয়া এবং ওয়ালাচিয়া রাশিয়ার কর্তৃত্বাধীন হয়। এশিয়ার কিছু অংশ ও রাশিয়ার হাতে চলে যায়। রাশিয়া খিলাফাতের সর্বত্র অবাধ বাণীজ্যের অধিকার আদায় করে নেয়।
১৮২৯ খৃষ্টাব্দে উসমানী খিলাফাত স্বাধীনতা মেনে নিতে বাধ্য হয়।
ইতিমধ্যে মিসরের শাসক মুহাম্মাদ আলীর সাথে দ্বিতীয় মাহমুদের সম্পর্ক খারাপ হয়।
১৮৩১ খৃষ্টাব্দে মুহাম্মাদ আলীর পুত্র ইবরাহীম সিরিয়া দখলের জন্য সসৈন্যে অগ্রসর হন। এই নাজুক অবস্থায় দ্বিতীয় মাহমুদ সাহায্য চাইলেন ইংল্যান্ড এবং রাশিয়ার কাছে। রাশিয়া এই সুযোগ হাতছাড়া করেনি। বণ্যার পানির মতো রাশিয়ার সৈন্যরা উসমানী খিলাফাতের অভ্যন্তরে ঢুকে পড়ে।
উসমানী খিলাফাতের ওপর রাশিয়ার প্রভাব বেড়ে যাওয়ায় ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স শংকিত হয়ে পড়ে। ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স মিসরের শাসক মুহাম্মাদ আলীর ওপর চাপ সৃষ্টি করে কুতিরবার চুক্তি স্বাক্ষর করতে বাধ্য করে। এই চুক্তি অনুযায়ী দ্বিতীয় মাহমুদ মুহাম্মাদ আলীকে সিরিয়া, ত্রিপোলী (লিবিয়া) এবং আদানা ছেড়ে দেন। খিলাফাতের সর্বত্র তখন রাশীয়ার সৈন্য।
১৮৩৩ খৃষ্টাব্দে রাশিয়া উসমানী খিলাফাতের ওপর আনকিয়ার স্কেলেসি চুক্তি চাপিয়ে দেয়। এই চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া দার্দানেলিস প্রণালীতে অবাধে যুদ্ধ জাহাজ চালনার অধিকার লাভ করে। রাশিয়া ছাড়া অন্যান্যদের যুদ্ধজাহাজ চলাচলের পথ বন্ধ হয়ে যায়। ক্যাপিচুলেশান বা বিশেষ অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ভোগ করা স্বত্বেও ইউরোপীয় বাণিকগণ সন্তুষ্ট ছিলোনা।
১৮৩৮ খৃষতাব্দে দ্বিতীয় মাহমুদ অংল্যান্ডের সাথে বাল্টা-লিমান কনভেনশান আনেম এক চুক্তি স্বাক্ষর করেন। এই চুক্তি ফলে খিলাফাতে অবাধ বাণীজ্য নীতি গৃহীত হয়।
৪. দ্বিতীয় মাহমুদের ইন্তিকাল
১৮৩৯ খৃষ্টাব্দে দ্বিতীয় মাহমুদ ইন্তিকাল করেন।
প্রাচ্য সমস্যা
খৃষ্টীয় ১৬ ও ১৭ শতাব্দীতে উসমানী খিলাফাত ইউরোপ, এশিয়া এবং আফ্রিকার বহু দূর পর্যন্ত বিস্তৃত একটি বিশাল শক্তিশালী রাষ্ট্র ছিলো। পূর্ব ইউরোপের ড্যানিউব নদী থেকে শুরু করে ঈজিয়ান সাগর পর্যন্ত গ্রীক, সার্ব, বুলগার, আলবেনিয়ান প্রভৃতি জাতির বসতিস্থল বলকান অঞ্চলও উসমানী খিলাফাতের অন্তর্ভুক্ত ছিলো।
১৮ শতকে এসে উসমানী খিলাফাত দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময় উসমানী খিলাফাতের শাসনাধীন বিভিন্ন জাতি স্বাধীনতা সংগ্রাম শুরু করে। উসমানী খিলাফাতের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রাশিয়া কৃষ্ণ সাগর, বসফোরাস এবং দার্দানোলিস প্রণালীর ওপর আধিপত্য বিস্তারে চেষ্টিত হয়। ইংল্যান্ড এবং ফ্রান্স রাশিয়ার প্রভাব বৃদ্ধিতে শংকিত হয়ে ওঠে এবং রাশিয়াকে রুখবার জন্য চেষ্টিত হয়।
এই বহুমুখী সমস্যাটি আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে ‘প্রাচ্য সমস্যা’ বলে আখ্যায়িত হয়। উনবিংশ শতাব্দীতে এসে ‘প্রাচ্য সমস্যা’ প্রকট আকার ধারন করে।