ষষ্ঠ অধ্যায়ঃ পরামর্শ
আমরা সংগঠন প্রসঙ্গে আলোচনা করে এসেছি যে, আন্দোলন ও সংগঠনের প্রাণশক্তি হিসেবে কাজ করে দুটি জিনিস তার একটা হলো- পারস্পারিক পরামর্শের ভিত্তিতে কার্যক্রম পরিচালনা করা, অপরটি হলো- সংশোধনের উদ্দেশ্যে গঠনমূলক সমালোচনা। শূরায়ী নেজাম ইসলামী সংঘঠনের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।
পরমার্শ দেয় বা পরামর্শের ভিত্তিতে যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা এতো জরুরী এবং গুরুত্বপূর্ণ হওয়ার কারণ প্রথমতঃ এটা আল্লাহর নির্দেশ। নবী (ছাঃ) ওহীর মাধ্যমে পরিচালিত হয়েছেন, তবুও তাকে তাঁর সাথী-সহকর্মদের পরামর্থে শরীক করার প্রত্যক্ষ নির্দেশ দিয়েছেন। আল্লাহর নির্দেশ:
وَشَاوِرْهُمْ فِي الْأَمْر.ِ
বিভিন্ন কার্যক্রমে তাদের পরামর্শ নাও, তাদের সাথে মতমত বিনিময় কর। (আলে ইমরান: ১৫৯)
দ্বিতীয়ত মুহাম্মাদ (সাঃ) নিজে আল্লাহর নির্দেশের আলোকে সাহাবায়ে কেরামের সাথে বিভিন্ন ব্যাপারে পরামর্শের ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
তৃতীয়তঃ গোটা সাহাবায়ে কেরামের (রাঃ) জামায়াত এর উপর আমল করেছেন। স্বায়ং আল্লাহ্ তার স্বাক্ষ্য পেশ করেছেন- আল কোরআন ঘোষণা করেছে:
وَأَمْرُهُمْ شُورَى بَيْنَهُمْ.
নিজেদের যাবতীয় সামগ্রিক ব্যাপার নিজেদের পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন করে। (আশ শূরা: ৩৮)
উক্ত কথায় এটা বলা হয়নি যে, তাদের কাজ পরামর্শের ভিত্তিতে চলতে হবে, বরং এটা এসেছে একটা বাস্তব সত্যের বিবৃতিস্বরূপ। সাহাবায়ে কেরামের জামায়াত তখন এই গুণের অধি:কারী হয়েছিল। পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতেই তারা তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।
সাহাবায়ে কেরামের জামায়াতের মধ্য থেকে শীর্ষস্থানীয় হলেন খোলাফায়ে রাশেদীন। তারা ইসলামী খেলাফতের দায়িত্ব আঞ্জাম দিতে গিয়ে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে সুন্নাতে রাসূলের অনুসরণ করেছেন্ তারা সুন্নাতে রাসূলের অনুসরণ করেছেন সব বিষয়ে। মুসলমানদের সাথে পরামর্শের ব্যাপারটিও তার অন্যতম প্রধান বিষয়। খোলাফায়ে রাশেদীনের বৈশিষ্ট্য আলোচনা করতে গিয়ে তাই যে কোন ঐতিহাসিককেই স্বীকার করতে হয় যে, শূরায়ী নেজাম ছিল এর অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য।
পরামর্শের গুরুত্ব সম্পর্কে কয়েকটি হাদীছ
إذا كان أمراؤكم خياركم وأغنياؤكم سمحاءكم وأموركم شورى بينكم فظهر الأرض خير لكم من بطنها وإذا كان أمراؤكم شراركم وأغنياؤكم بخلاءكم وأموركم إلى نسائكم فبطن الأرض خير لكم من ظهرها
রাসূল (রাঃ) বরেছেন, যখন তোমদের নেতারা হবেন ভাল মানুষ, ধনীরা হবেন দানশীল এবং তোমাদের কার্যক্রম চলবে পরামর্শের ভিত্তিতে তখন মাটির নিচের ভাগ উপরের ভাগ থেকে উত্তম হবে। আর যখন তোমাদের নেতারা হবে খারাপ লোক, ধনীরা হবে কৃপণ এবং নেতৃত্ব ও কর্তৃত্ব যাবে নারীদের হতে তখন পৃথিবীর উপরের অংশের চেয়ে নীচের অংশ হবে উত্তম (তিরমিযী)।
من بايع أميرا عن غير مشورة المسلمين فلا بيعة له ولا بيعة للذي بايعه
***
রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি মুসলমানদের পরামর্শ ছাড়াই আমীর হিসেবে বাইয়াত গ্রহণ করবে, তাদের বাইয়াতও বৈধ হবে না (মুসনাদে আহমাদ)।
مَا خَابَ مَنِ اسْتَخَارَ ، وَلاَ نَدِمَ مَنِ اسْتَشَارَ
***
যে ব্যক্তি পরামর্শ নিয়ে কাজ করে তাকে কখনও লজ্জিত হতে হয় না। আর যে বা যারা ভেবে চিন্তে ইস্তেখারা করে কাজ করে তাকে ঠকতে হয় না। (মু’জামুস সগীর)
الْمُسْتَشَارُ مُؤْتَمَنٌ
যে পরামর্শ করে কাজ করে সে নিরাপদ থাকে।(আবু দাউদ)
***
যে পরামর্শের ভিত্তিতে কাজ করে সে নিরাপদ থাকে। ব্যবহারিক দৃষ্টিতে পরামর্শ ভিত্তিক কাজে দুটো বড় উপকারিতা আমরা দেখতে পাই:
এক: সাথী-সহকর্মী মূলত যারা সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে মাঠে ময়দানে দায়িত্ব পালন করে থাকে, সিন্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে তাদের পরামর্শ দেয়ার সুযোগ দিলে বা তাদের সাথে পরামর্শ করলে আনুগত্য স্বতঃস্ফূর্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়। সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে কোন প্রকার অসুবিধা দেখা দিলে বিরূপ সমালোচনা ও অবাঞ্ছিত মন্তব্যের ক্ষতিকর পরিবশ সৃষ্টি হওয়ার কোনই সুযোগ থাকেন না।
দুই: পরামর্শে অংশগ্রহণের ফলে কাজের গুরুত্বের উপলব্ধি স্বাভাবিকভাবেই বৃদ্ধি পায়। এই কারণে সাথী-সহকর্মীদের মধ্যে সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে বিপুল উৎসাহ উদ্দীপনা বৃদ্ধি পায়, ফলে কাজে আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে বরকত যোগ হয়।
বদরের যুদ্ধের ব্যাপারে রাসূল (সাঃ) আনসারদের সাথে যখন পরামর্শ করলেন তাদের উৎসাহের সীমা থাকল না। তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ঘোষনা করল, ইয়া রাসূলুল্লাহ! আপনি যদি বলেন সমুদ্রে ঝাঁপ দিতে, আমরা বিনা দ্বিধায় তাতেও প্রস্তুত আছি। আমরা কওমে মূসার মত উক্তি করব না।
পরামর্শ কারা দেবে
পরামর্শের ক্ষেত্রকে আমরা তিনটি পর্যায়ে ভাগ করতে পারি। ১. সর্ব সাধারণের পরামর্শ ২. দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের পরামর্শ ৩. আহলে রায় বা বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ।
যে বিষয় যাদের সাথে সংশ্লিষ্ট অথবা যেখানে যাদের স্বার্থ ও অধিকার জড়িত, সেখানে তাদের সাথে আলোচনা বা পরামর্শ করতে হবে। যেমন রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে এনে যদি আমা এই ব্যাপারটা বুঝতে চেষ্টা করি তাহলে এভাবে বুঝা যেতে পারে।
রাষ্ট্রপ্রধান এবং রাষ্ট্রের পার্লামেন্ট গঠন ইত্যাদির সাথে সর্বসাধারণের স্বার্থ জড়িত, সুতরাং এখানে সর্বসাধারণের মতামত নেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। মতামত নেয়াটাই এখানে বড় কথা; পক্রিয়া সময়-সুযোগ ও অবস্থা বুঝে নির্ধারণ করা হবে। বাকি ব্যাপার সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে জনগণের আস্থাভাজন বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা পরামর্শ করলেই চলবে। কোন বিশেষ বিশেষ প্র্রকল্প ইত্যাদি প্রণয়নে ও বাস্তবায়নে বিশেষ বিশেষ বিভাগরে বিশেষজ্ঞগণের পরামর্শই বাস্তবভিত্তিক।
অনুরূপভাবে সংগঠনের আওতায় আমরা ব্যাপারটা সহজেই বুঝে নিতে পারি। যেখানে ক্যাডারভূক্ত সব লোকেররা জড়িত সেখানে ক্যাডারভুক্ত সব ব্যক্তির অংশগ্রহণের সুযোগ দেয়া হবে। ক্যাডারের বাইরের লোকেরাও অনেক সময় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। সে সব ব্যাপার তাদের সাংগঠনিক অবস্থান সম্পর্কে কোন অস্পষ্টতা না রেখেও পরামর্শ দোয়-নেয়ার প্রক্রিয়া উদ্ভাবন করা যেতে পারে।
বিভন্ন গুরুত্বপূর্ণ ও জটিল ইস্যুতে সংগঠনের বিশেষজ্ঞদের রায়ের প্রতি আস্থা রাখা যেতে পারে।
আন্দোলন এবং সংগঠনে পরামর্শের ব্যাপারটি বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীলদের মধ্যেই বেশী জরুরী। দায়িত্বশীলদের মাঝে মন-খোলা পরামর্শের পরিবেশ না থাকলে একটা সংগঠনের আভ্যন্তরীণ সংহতিই থাকতে পারে না। কারণ মানুষ মাত্রই চিন্তাশীল। নিঃসন্দেহে দায়িত্বশীলগণ আরও বেশী চিন্তা করে থাকেন। চিন্তা তাদের মগজে এনে দেয় মাঠে ময়দানের অভিজ্ঞতা এবং চাহিদা। এভাবে দায়িত্বশীলগণের চিন্তার বিনিময় না হলে, ভাবের আদান-প্রদান না হলে চিন্তার ঐক্য গড়ে উঠতে পারে না। অথচ চিন্তার ঐক্য ছাড়া সংগঠনে কোন সর্থকতাই থাকতে পারে না। হাদীসে দায়ত্বশীলদের পরামর্শের গুরুত্ব প্রসঙ্গে বলা হয়েছে
إِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِالأَمِيرِ خَيْرًا جَعَلَ لَهُ وَزِيرَ صِدْقٍ إِنْ نَسِىَ ذَكَّرَهُ وَإِنْ ذَكَرَ أَعَانَهُ وَإِذَا أَرَادَ اللَّهُ بِهِ غَيْرَ ذَلِكَ جَعَلَ لَهُ وَزِيرَ سُوءٍ إِنْ نَسِىَ لَمْ يُذَكِّرْهُ وَإِنْ ذَكَرَ لَمْ يُعِنْهُ
***
আল্লাহ যখন কোন আমীরের ভাল চান তাহলে তাঁর সত্যবাদী উজির নির্বাচিত করেন, আমীর কিছু ভুলে গেলে তিনি তাকে তা স্মরণ করিয়ে দেন, আমীর কোন কাজ করতে চাইলে সে কাজে কাজে তাকে সহযোগীতা করেন। আল্লাহ যদি আমীরের অমঙ্গল ১‘চান তাহলে তার জন্যে মিথ্যাবাদী উজির নিয়োগ করেন, তিনি কোন কাজ ভালভাবে তাকে স্মরণ করিয়ে দেন না, আমীর কোন কাজ করতে ইচ্ছে করলে তিনি তার সহযোগী হয় না। (আবু দাউদ)
পরামর্শ কিভাবে দেবে
পরামর্শ দেয়া অন্যান্য সংস্থা সংগঠনের একটা গঠনতান্ত্রিক অধিকার আছে। কিন্তু ইসলামী সমাজে ও সংগঠনে এটা নিছক অধিকার মাত্র নয়। এটা একটা পবিত্র আমানত। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠার আন্দোলনকে সামনে এগিয়ে নেয়ার জন্যে কোরআন সুন্নাহর আলোকে খোদার দেয় বিবেক-বুদ্ধিকে কাজে লাগিয়ে বাস্তব কর্মকৌশল উদ্ভাবন ও পরিকল্পনা প্রণয়নে সহযোগিতা দান করা প্রত্যেকের দ্বীনি দায়িত্ব। কোন সময়ে কোন দিক থেকে ক্ষতির আশঙ্কা মনে হলে, সেই ক্ষতি থেকে সংগঠনকে রক্ষা করার জন্যে এই সম্পর্কে দায়িত্বশীলদের দৃষ্টি আকর্ষন করা একটা পবিত্র আমানত।কিন্তু ক্ষতির আশঙ্কা মনে জাগল অথচ দায়িত্বশীলকে জানালাম না, কল্যান চিন্তা মগজে এলো কিন্তু দায়িত্বশীলকে জানানো হলো না তাহলে আল্লাহ্র দরবারে খেয়ানতকারী হিসেবে জবাবদিহি করতে হবে।
পরামর্শের এই দ্বীনি-ঈমানী মর্যাদাকে সামনে রেখে আমার দয়িত্ব শুধু স্বতঃস্ফূর্তভাবে কোন পরামর্শ মনে এলেই বলে দেয়- তাই নয়। আন্দোলনে ও সংগঠনের উন্নতি অগ্রগতি সম্পর্কে সবাইকে চিন্তুা ভাবনা করতে হবে। চিন্তাশক্তি ও বিবেক বুদ্ধির বিকাশ ঘটাবার চেষ্টাও করতে হবে যাতে করে সংগঠনকে ক্ষতিকর দিক তেকে হেফাজনত করার ও কল্যণ এবং অগ্রগতির দিকে পরিচালনা করার ক্ষেত্রে বাস্তব সহযোগিতা দান করা সম্ভব হয়।
আন্দোলন ও সংগঠনের সার্বিক কল্যানকে সামনে রেখে চিন্তা করতে হবে, পরামর্শ দিতে হবে ঠিকই কিন্তু ঐ ব্যাপারে সংগঠন নিধারিত নিয়ম পদ্ধতির বহির্ভূত কোন উপায় অবলম্বন করা যাবে না। নিজের মনের চিন্তা ও পরামর্শ প্রথমতঃ নিজের নিকটস্থ দায়িত্বশীলের কাছেই ব্যক্ত করতে হবে। এরপর সংগঠনের দায়িত্বশীলদের বডির কাছেও বিভিন্ন সময়ে পরামর্শ লিখিতভাবে পেশ করা যেতে পারে, পরামর্শ যিনি বা যারা দেবেন, তারা তাদের দিক থেকে চিন্তা-ভাবনা করেই দেবেন। তাদের পরামর্শ যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে করেই দেবেন। কিন্তু সেই সাথে তাদেরকে মনে রাখতে হবে, তার মত অন্যান্যদেরকে আল্লাহ তায়ালা চিন্তা করার মত বিবেক-বুদ্ধি দিয়েছেন। সুতরাং তারটাই গ্রহণ করতে হবে এই মন-মানসিকতা নিয়ে পরামর্শ দেয় ঠিক হবে না। বরং পরামর্শদাতার মন এতটা উন্মুক্ত থাকতে হবে যে, তার পরামর্শের সম্পূর্ণ বিপরীত সিদ্ধান্তও যদি হয় তাহলে সে দ্বিধাহীনচিত্তে তা মেনে নেবে। তার মনের সপক্ষে এবং বিপক্ষে সে কোন মন্তব্যও করবে না।
মনে রাখতে হবে, মানুষের পক্ষে মতামত কোরবানী দেয়াটাই বড় কোরবানী। মানুষ অনেক ত্যাগ-কোরবানীর নজীর সৃষ্টি করার পরও মত কোরবানীর পরীক্ষায় ব্যর্থ হয়ে যায়। অথচ জামায়াতী জিন্দেগীর জন্যে এই কোরবানীই সবচেয়ে জরুরী। জামায়াতী ফায়সালার কাছে যে ব্যক্তিগত রায় বা মত কোরবানী করতে ব্যর্থ হয় সে প্রকৃতপক্ষে জামায়াতী জীবনযাপনেই ব্যর্থ হয়। পরিণামে এক সময় ছিটকে পড়ার আশঙ্কা থাকে। আন্দোলন ও সংগঠনের অনেক দূর অগ্রসর হওয়ার পরও যারা ছিটকে পড়ে তাদের মূলত এই ব্যর্ততার কারণেই ছিটকে পড়ে। তাই চিন্তা ভাবনা ও পরামর্শ উদ্ভাবনের মুহূর্তে সবাইকে জামায়াতী জিন্দেগীর এই চাহিদা এবং বাস্তবতাকে অবশ্যই সামনে রাখতে হবে। হাজার মতের, একশ’ মতের ভিত্তিতে কোনদিন আন্দোলন সংঠন চলতে পারে না, সংগঠনকে একটা মতের উপর এসেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। কাজেই শত শত হাজার হাজার কর্মী যার যার মতের উপর জিদ করলে বাস্তবে কি দশাটা দাঁড়ায় তা ব্যাখ্যার প্রয়োজন করে না।
চিন্তার ঐক্যই আদর্শবাদী আন্দোলনের ভিত্তি এবং শক্তি। সুতরাং যথাযথ ফোরামের বাইরে সংগঠনের ব্যক্তি তার পরামর্শকে মূল্যবান এবং অপরিহার্য মনে করে যত্রতত্র প্রচার করতে পারে না। তার স্বপক্ষে জনমত সৃষ্টির কোন প্রয়াসও চালাতে পারে না। কোন সংগঠনে এমন অনুমতি থাকলে সে সংগঠন চিন্তার ক্ষেত্রে বিভ্রান্তির শিকার হতে বাধ্য। অহীর জ্ঞান ছাড়া আর কোন জ্ঞানকেই যেহেতু আমরা নির্ভুল মনে করি না, সেই হিসেবে যদিও এটা বলা মুশকির যে, সামষ্টিক সিদ্ধান্ত কখনও ভুল হয় না, সব সময়ই নির্ভূল হতে বাধ্য। কিন্তু এতটুকু বলতে দ্বিধা নেই- এতইে ভুলের আশঙ্কা থাকে সবচেয়ে কম। কাজেই ব্যক্তির মতামত নিয়ে বাড়াবাড়ি না করে সামষ্টিক রায়ের কাছে নিজের রায় প্রত্যাহার করে নেয়াতেই সর্বাধিক কল্যাণ রয়েছে- সংগঠনের জনশক্তির মধ্যে এই মর্মে Motivation থাকতে হবে।