জামায়াত অনলাইন লাইব্রেরি
  • নীড়
  • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
  • বিভাগ ভিত্তিক
    • আল কুরআন
    • আল হাদিস
    • ফিকাহ
    • ঈমান
    • ইসলাম
    • পারিবারিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ক
    • আন্দোলন ও সংগঠন
    • সীরাত ও ইতিহাস
    • সীরাতে সাহাবা
    • মহিলাদের বিশেষ বই
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • রুকন সিলেবাস
    • রুকন সিলেবাস (স্বল্প শিক্ষিত)
    • রুকন সিলেবাস (শিক্ষিত)
  • কর্মী সিলেবাস
  • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (শিক্ষিত)
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (স্বল্প শিক্ষিত)
  • উচ্চতর অধ্যয়ন
  • অডিও বই
  • অন্যান্য
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • আলোচনা নোট
    • বইনোট
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • বুলেটিন
    • স্মারক
    • ম্যাগাজিন
    • এপস
    • রিপোর্ট বই
    • ছাত্রী সিলেবাস
কোন ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
  • নীড়
  • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
  • বিভাগ ভিত্তিক
    • আল কুরআন
    • আল হাদিস
    • ফিকাহ
    • ঈমান
    • ইসলাম
    • পারিবারিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ক
    • আন্দোলন ও সংগঠন
    • সীরাত ও ইতিহাস
    • সীরাতে সাহাবা
    • মহিলাদের বিশেষ বই
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • রুকন সিলেবাস
    • রুকন সিলেবাস (স্বল্প শিক্ষিত)
    • রুকন সিলেবাস (শিক্ষিত)
  • কর্মী সিলেবাস
  • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (শিক্ষিত)
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (স্বল্প শিক্ষিত)
  • উচ্চতর অধ্যয়ন
  • অডিও বই
  • অন্যান্য
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • আলোচনা নোট
    • বইনোট
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • বুলেটিন
    • স্মারক
    • ম্যাগাজিন
    • এপস
    • রিপোর্ট বই
    • ছাত্রী সিলেবাস
জামায়াত অনলাইন লাইব্রেরি

ইসলামী রাষ্ট্র ব্যবস্থা

অন্তর্গতঃ উচ্চতর অধ্যয়ন, রাজনীতি
Share on FacebookShare on Twitter

সূচীপত্র

  1. ইসলামী শরীয়তে রাষ্ট্রের মর্যাদা
    1. রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য ইসলামের নির্দেশ
    2. শরীয়তের নির্দেশ পালন ও রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
    3. আল্লাহর ইবাদাতের জন্যে ইসলামী রাষ্ট্র জরুরী
    4. প্রথম ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা
    5. রাষ্ট্রের নানা বিভাগ
    6. রসূলে ব্যক্তিত্বে নবুওয়াত ও প্রশাসকতার সমন্বয়
    7. দারুল ইসলাম
    8. ইসলামী রাষ্ট্রের প্রকৃতি ও লক্ষ্য
  2. রাষ্ট্র সংস্থা ও সংগঠন
    1. রাজনৈতিক অধিকার
    2. নির্বাচনের অধিকার
    3. জাতিই সার্বভৌমত্বের উৎস
    4. প্রত্যক্ষ নির্বাচন ও পরোক্ষ নির্বাচন
    5. আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ
    6. বর্তমান সময়ে আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ নির্বাচনের উপায়
    7. অলী আহাদ নিয়োগ
    8. পরামর্শ গ্রহণের রসূল স.-এর সুন্নাত
    9. পরামর্শ গ্রহণ না করা অপরাধ
    10. কোন কোন বিষয়ে পরামর্শ
    11. পরামর্শ গ্রহণ পদ্ধতি
    12. আধুনিক সময়ে পরামর্শ গ্রহণ পদ্ধতি
    13. পরামর্শ পরিষদ ও রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে বিরোধ ও মতবৈষম্য হলে
    14. প্রথম পন্থাঃ শালিস নিয়োগ
    15. দ্বিতীয় পন্থাঃ সংখ্যাগুরুর মত মেনে নেয়া
    16. তৃতীয় পন্থাঃ রাষ্ট্রপ্রধানের নিজের মত গ্রহণ
    17. আমরা কোন পন্থা গ্রহণ করতে পারি
    18. রাষ্ট্রপ্রধানের সমালোচনার অধিকার ও দায়িত্ব
    19. রাষ্ট্রপ্রধানের পদচ্যুতি
    20. পদচ্যুত করার নিয়ম
    21. পঞ্চমঃ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার অধিকার
    22. বর্তমানকালে প্রার্থী হওয়ার ব্যাপার
    23. সরকারী চাকরীতে ব্যক্তিগত প্রার্থী হওয়ার রীতি
    24. আধুনিক যুগে যোগ্য লোক নিয়োগের উপায়
  3. ব্যক্তি স্বাধীনতা ও মৌলিক অধিকার
    1. মৌলিক অধিকার বলতে কি বুঝায়?
    2. আলোচনার পদ্ধতি
    3. সাম্য ও সমতা
    4. ব্যক্তি স্বাধীনতা
    5. ব্যক্তির ইজ্জত-আব্রু রক্ষা করা সরকারি দায়িত্ব
    6. অমুসলিম ব্যক্তিস্বাধীনতা
    7. আকীদা ও ইবাদতের স্বাধীনতা
    8. বাসস্থানের স্বাধীনতা
    9. কর্মের স্বাধীনতা
    10. ব্যক্তিগত মালিকানা রাখার অধিকার
    11. মত প্রকাশের স্বাধীনতা
    12. ব্যক্তির মত প্রকাশের স্বাধীনতার সীমা
    13. শিক্ষাখাতের অধিকার
    14. ভরণ-পোষণের রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তা লাভের অধিকার
    15. ব্যক্তির অধিকার আদায়ে শরীয়তের বিধান
    16. সরকার প্রদত্ত সুযোগ-সুবিধা
    17. সাহায্য লাভের অধিকার
    18. যাকাত
    19. বায়তুলমাল থেকে সাহায্য দান
    20. রাষ্ট্র এ সাহায্যদানে অক্ষম হলে
    21. নাগরিকদের ওপর রাষ্ট্রের অধিকার
    22. প্রথমতঃ আনুগত্য পাওয়ার অধিকার
    23. দ্বিতীয়ঃ রাষ্ট্রের প্রতিরক্ষার কাজে ঝাঁপিয়ে পড়া

বর্তমান সময়ে আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ নির্বাচনের উপায়

বর্তমান সময়ে পরোক্ষ নির্বাচন-নীতিতে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন পদ্ধতি গ্রহণ করা হলে প্রথমে এক সাধারণ নির্বাচনের মাধ্যমে আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ নির্বাচিত করা যেতে পারে। তারা জাতির ভোট ও আস্থা পেয়ে রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের জন্যে জাতির পক্ষ থেকে দায়িত্বশীল হবে। এ উদ্দেশে জনগণ যাদেরকে নির্বাচিত করবে তারা নির্বাচনী কলেজের সদস্য হতে পারে। অথবা প্রাদেশিক ও কেন্দ্রীয় পরিষদের সদস্যও হতে পারে। নির্বাচনী কলেজ হলে তাদের একমাত্র কাজ হবে নির্বাচনকালে ভোটদান করা এবং ভোট দানের কাজ সম্পন্ন হয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তাদের সদস্য পদ বাতিল হয়ে যেতে ও এ কলেজ ভেঙ্গে যেতে হবে। তাদের দ্বারা অপর কোনো কাজই নেয়া যেতে পারে না।

অলী আহাদ নিয়োগ

ফিকাহবিদগণ বলেছেনঃ রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচনের কাজ সম্পন্ন হতে হবে পূর্ববর্তী খলীফার মনোনয়নে পরবর্তী খলীফা নিয়োগ নীতির ভিত্তিতে। মাওয়ারদী বলেছেনঃ রাষ্ট্রপ্রধান দুভাবে নির্বাচিত হতে পারেঃ এক, আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ-এর নির্বাচনের মাধ্যমে। দুই, পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপ্রধানের মনোনয়নের ভিত্তিতে। আল মাওয়ারদী, ৪ পৃষ্ঠা।

এভাবে অলী আহাদ নিয়োগের রীতি কেমন করে গণতণ্ত্রসম্মত বা গণনির্বাচনের পর্যায়ে গণ্য হতে পারে?-এ একটা প্রশ্ন। এর জবাব এই যে, অলী আহাদ নিয়োগের অধিকারটি মূলত নামের প্রস্তাবনা পর্যায়ের মাত্র। খলীফা নিজের হিসাবে তিনি কাকে পসন্দ করবেন তার নাম প্রস্তাব করবেন মাত্র। কিন্তু তার এ প্রস্তাবই চূড়ান্ত নিয়োগ নয়। খলীফা মৃত্যুর পূর্বে কারোর নাম বলে গেলেই জনগণ তার পরে তাকেই খলীফা মেনে নিতে বাধ্য নয়। এ কারণেই যেখানে যেখানে এরূপ অলী আহাদ নিয়োগ হয়েছে, সেখানেই পরবর্তী সময়ে আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ -এর লোকদের বাইয়াত করতে হয়নি। যদি প্রস্তাবনা-ই খলীফা নিয়োগের জন্যে যথেষ্ট হতো, তাহলে এ বাইয়াতের কোনো প্রয়োজন হতো না। এমনকি এরূপ নাম প্রস্তাবনার পরেও জনগণ তাকে খলীফারূপে মেনে নিতে অস্বীকার করারও অধিকার রাখে।

নবী করীম স.-এর মৃত্যু শয্যায় শায়িত থাকাকালীন একটি কথা থেকেও একথাই অকাট্যভাবে প্রমাণিত হয়। তিনি তাঁর পরবর্তী ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান কে হবেন, সে চিন্তায় অস্থির পয়ে পড়েছিলেন। তখন হযরত আয়েশা রা.-কে ডেকে একদিন বললেনঃ

************আরবী**************

আমি আবু বকর ও তাঁর পুত্রকে ডাকবো ও তাঁর পক্ষে পরবর্তী খলীফা হওয়ার ওয়াদা গ্রহণ করবো। যেন পরে আপত্তিকারীরা আপত্তি না করে কিংবা আশা পোষণকারীরা আশা পোষণ না করে। পরে আমি চিন্তা করলাম যে, আল্লাহ এসব রুখবেন এবং মুসলমানরা তার প্রতিরোধ করবে অথবা অন্য কথায় আল্লাহ প্রতিরোধ করবেন ও মুসলমানরা রুখে দাঁড়াবেন।-বুখারী

এ হাদীসের শব্দ ***আরবী*** আল-মুমিনুন অকাট্যভাবে প্রমাণ করে যে, খলীফা নির্বাচনের কাজ মুমিন-মুসলমানের স্বাধীন ইচ্ছা ও মতের ভিত্তিতে সম্পন্ন হতে হবে এবং ইসলামে খলীফা নির্বাচনের উত্তম ও উন্নত আদর্শ হচ্ছে এ নির্ভেজাল গণতান্ত্রিক পদ্ধতি।

হযরত আলী রা. -কে যখন লোকেরা খিলাফতের বাইয়াত গ্রহণ করতে বললেন, তখন তিনি বললেনঃ

***আরবী***

আমার বাইয়াত গোপনে অনুষ্ঠিত হবেনা এবং তা মুসলিম জনগণের স্বাধীন ইচ্ছা ও মর্জি ছাড়া কিছুতেই হতে পারে না।

এ কারণে কোনো কোনো ফিকাহবিদ স্পষ্ট ভাষায় বলেছেনঃ

***আরবী***

রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন সম্পূর্ণ হয় জনগণের বাইয়াতের ভিত্তিতে। জন-সমর্থনের মাধ্যমে। পূর্ববর্তী খলীফার মনোনয়নের ভিত্তিতে নয়।

-মিনহাজুস সুন্নাহঃ ইবনে তাইমিয়া, ১ম খণ্ড, ১৪২ পৃ.।

এ হলো জনগণের অধিকারের ব্যাপার। জনগণের আর একটি অধিকার হলো পরামর্শে শরীক হওয়ার। আসলে এ হলো জনগণের খলীফা নির্বাচনের পরবর্তী দায়িত্বের কাজ। জনগণ রাষ্ট্রপ্রধান নির্বাচন করবে, রাষ্ট্রপ্রধান হবে জনগণের যাবতীয় জাতীয় ও সামগ্রিক দায়িত্বসম্পন্ন কাজের ভারপ্রাপ্ত। সেই সাথে তার ওপর জাতির অধিকার হলো এই যে, সেসব গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারে জাতির পরামর্শ গ্রহণ করবে-পরামর্শ চাইবে এবং জাতি যে পরামর্শ দিবে সে তদনুযায়ী কাজ করবে।

যদি প্রশ্ন করা যায় যে, রাষ্ট্রপ্রধান তো স্বতঃ-ই জনগণের আস্থাভাজন ব্যক্তি। তাহলে আবার জনগণের পরামর্শ গ্রহণে তাকে বাধ্য করার অর্থ কি? তাহলে এর দুভাবে জবাব দেয়া যেতে পারেঃ

একঃ রাষ্ট্রপ্রধান জনগণের আস্থাভাজন ব্যক্তি এতে সন্দেহ নেই। কিন্তু তা সত্ত্বেও যে কোনো জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তার সিদ্ধান্ত ভুল হতে পারে, জনগণের পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে। তাই সব গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় ব্যাপারে তাদের কাছে পরামর্শ চাওয়া ও তদনুযায়ী কাজ করা কর্তব্য। তাহলে এ পর্যায়ের অনেক ভুল ও মারাত্মক পদক্ষেপের হাত থেকে জাতি রক্ষা পেতে পারে।

দুইঃ জাতি রাষ্ট্রপ্রধানকে জাতীয় কাজের জন্য দায়িত্বসম্পন্ন বানায় বটে, কিন্তু তা শর্তহীন নয়। তার মধ্যে একটি জরুরী শর্ত হলো এই যে, সে জাতির কাছে পরামর্শ চাইবে। কেননা, পরামর্শ চাওয়ার নির্দেশ শরীয়তে স্পষ্ট ভাষায় দেয়া হয়েছে। এ অধিকার জনগণের মৌলিক অধিকারের অন্তর্ভুক্ত। তাদের সে অধিকার হতে কিছুতেই বঞ্চিত করা যেতে পারে না। কেননা রাষ্ট্রপ্রধানের ক্ষমতা তা শরীয়তের বিধানের শর্তে সীমাবদ্ধ। সে শর্ত পূরণ না হলে রাষ্ট্রপ্রধান তার ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে না। নির্বাচনের সময় একথা স্পষ্ট ভাষায় বলা হোক আর না-ই হোক একথা একান্তই অনিবার্য। আর জাতির পরামর্শ পাওয়ারও অধিকার রয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানের। এ অধিকার থেকে তাকে বঞ্চিত হতে দেয়া যেতে পারে না।

রাষ্ট্রপ্রধানকে যে জাতির কাছে পরামর্শ চাইতে হবে এ বিষয়ে কুরআনের নির্দেশ স্পষ্ট ও অকাট্য। রসূলে করীম স.-কে রাষ্ট্রপ্রধান হিসাবেই এ নির্দেশ দেয়া হয়েছিল এবং সে হিসাবে সব ইসলামিক রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধানের জন্যেই এ নির্দেশ অবশ্য পালনীয়। সে নির্দেশ হলোঃ

***আরবী***

তুমি তাদের ক্ষমা করো, তাদের জন্যে আল্লাহর কাছে মাগফেরাত চাও। আর জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারসমূহে তাদের সাথে পরামর্শ করো। অনন্তর তুমি যখন কোনো সংকল্প-সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে, তখন আল্লাহর ওপর তাওয়াক্কুল করো।-সূরা আলে ইমরানঃ ১৫৯

এ আয়াতটি রাষ্ট্রপ্রধানকে পরামর্শ চাওয়া ও গ্রহণ করার জন্যে স্পষ্ট নির্দেশ দিচ্ছে এবং শরীয়তের দৃষ্টিতে তা ওয়াজিব। এজন্যে ইমাম ইবনে তাইমিয়া লিখেছেনঃ

***আরবী***

কোনো রাষ্ট্রপ্রধান-ই পরামর্শ চাওয়া ও গ্রহণ করার দায়িত্ব থেকে মুক্ত নয়। কেননা এ আয়াতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবীকে এজন্যে নির্দেশ দিয়েছেন। -আসসিয়াসাতুশ শারইয়্যা, ১৬৯ পৃষ্ঠা।

আর আল্লামা তাবারী এ আয়াতের তাফসীরে লিখেছেনঃ

***আরবী***

আল্লাহ তাঁর নবীকে আসহাবগণের সাথে পরামর্শ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ নির্দেশ সেই পরামর্শ গ্রহণের জন্যে, যে বিষয়ে আল্লাহ তাঁদের প্রশংসা করেছেন যেন তাঁর উম্মতেরা তাদের ওপর অনুরূপ অবস্থা দেখা দিলে তারা তাদের অনুসরণ করে ও পারস্পরিক পরামর্শ করে। -তাফসীরে তাবারী, ৪র্থ খণ্ড, ৯৪ পৃষ্ঠা ও তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, ২৫ পৃষ্ঠা।

আর ইমাম ফখরুদ্দীন রাজী লিখেছেনঃ

***আরবী***

হাসান বছরী ও সুফিয়ান ইবনে উয়াইনাহ বলেছেনঃ আল্লাহ নবী করীম স.-কে পরামর্শ গ্রহণের জন্যে নির্দেশ দিয়েছেন, যেন তারা পরামর্শ গ্রহণের ব্যাপারে তাঁর অনুসরণ করে। আর এ নীতি তাঁর উম্মতের মধ্যে সুন্নাহরূপে অনুসৃত হয়। – তাফসীরুল কবীর, ৯ম খণ্ড, ৬৬ পৃষ্ঠা।

পরামর্শ গ্রহণের রসূল স.-এর সুন্নাত

পরামর্শ গ্রহণ করা শাসকদের উপর জনগণের একটা অধিকার। নবী করীম স. এতো বড় সম্মান-মর্যাদা ও আসমানী ওহী পাওয়ার সুযোগ সত্ত্বেও তাঁর আসহাবদের সাথে খুব বেশী পরামর্শ করতেন। উহুদ যুদ্ধে মদীনার বাইরে গিয়ে শত্রুর মোকাবেলা করা হবে, না শহরে বসেই প্রতিরোধ করা হবে, এ নিয়ে সাহাবাগণের সাথে পরামর্শ করতেন। বদর যুদ্ধেও তা-ই করেছেন। এ যুদ্ধে হুবার ইবনে মুনযিল পানির স্থানে অবতরণ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। রসূলে করীম স. সে পরামর্শ গ্রহণ করেছিলেন। খন্দকের যুদ্ধে মদীনার কিছু ফসলের বিনিময়ে শত্রুদের সাথে সন্ধি না করার-যেন তারা ফিরে যায়-দুজন সাহাবী পরামর্শ দিয়েছিলেন। এ পরামর্শও গৃহীত হয়েছিলো।-তাফসীরে ইমাম রাজী, ৯ম খণ্ড, ৬৭ পৃষ্ঠা। এমনিভাবে নবী করীম স. যে সাহাবাদের সাথে খুব বেশী পরামর্শ করতেন তার ভুরি ভুরি নযীর উল্লেখ করা যায়।

পরামর্শ গ্রহণ না করা অপরাধ

পরামর্শ দেয়া জনগণের অধিকার। রাষ্ট্রপ্রধানের তাই চাওয়া কর্তব্য। ফিকাহবিদগণ স্পষ্ট করে লিখেছেন, রাষ্ট্রপ্রধান যদি এ কর্তব্য পালন না করে এবং জনগণকে এ অধিকার থেকে বঞ্চিত রাখে তবে এজন্যে তাকে পদচ্যুত করতে হবে। ইমাম কুরতুবী লিখেছেনঃ ইবনে আতীয়া বলেছেনঃ পরামর্শ গ্রহণ রীতি ইসলামী শরীয়তের মৌল ব্যাপার। এজন্যে শরীয়তের সুস্পষ্ট নির্দেশ এসেছে। যে রাষ্ট্রপ্রধান দীন ও শরীয়তের বিজ্ঞ-বিশেষজ্ঞদের কাছে পরামর্শ চাইবে না, তাকে বরখাস্ত করা ওয়াজিব। অন্য কথায় ইসলামী আদর্শে প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্রব্যবস্থায় কোনো স্বৈরাচারী শাসকের স্থান নেই।

কোন কোন বিষয়ে পরামর্শ

জাতির জনগণের সাথে বিভিন্ন রাষ্ট্রীয় বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। আর যেসব বিষয়ে ইসলামের অকাট্য ঘোষণা বা নির্দেশ নেই সেসব ইজতেহাদী বিষয়েও পরামর্শ অনুষ্ঠিত হতে হবে। এক কথায় রাষ্ট্রপ্রধান দীন ও দুনিয়ার নানা বিষয়ে জাতির সাথে পরামর্শ করবে-পরামর্শ চাইবে ও গ্রহণ করবে। আল্লামা জাসসাস তাই লিখেছেনঃ

***আরবী***

দুনিয়ার বৈষয়িক যাবতীয় বিষয়ে এবং দীনের যেসব বিষয়ে কোনো ওহী নাযিল হয়নি সে সম্পর্কে পরামর্শ চাইতে হবে।-আহকামুল কুরআন, ২য় খণ্ড, ৪০ পৃ.।

আর দুনিয়ার বা বৈষয়িক যাবতীয় গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে। সাধারণ রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে, যুদ্ধ প্রস্তুতি ও যুদ্ধ ঘোষণা, বৈদেশিক নীতি, চুক্তি-সন্ধি, রাষ্ট্র শাসন পদ্ধতি ইত্যাদি সব-ই এ পর্যায়ে গণ্য। অবশ্য নিত্য-নৈমিত্তিক ছোট ছোট ব্যাপারে জনগণের কাছ থেকে পরামর্শ গ্রহণের কোনো প্রয়োজন নেই। তা সম্ভবও নয়। তা করে রাষ্ট্র চালানো যায় না। তা যুক্তিসঙ্গত নয়, তাতে ফায়দাও কিছু নেই।

পরামর্শ গ্রহণ পদ্ধতি

কিন্তু প্রশ্ন হলো, পরামর্শ গ্রহণের কাজ কিভাবে সম্পন্ন হবে?… আর জাতির সব লোকের সাথেই পরামর্শ করা কি রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্ব, না তাদের মাঝ থেকে বিশেষ এক শ্রেণীর সাথে পরামর্শ করা হবে কিংবা কতিপয় ব্যক্তির সাথে। এসব প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, নবী করীম স. সমগ্র জনগণের সাথে পরামর্শ করতেন এমন সব ব্যাপারে যা সরাসরিভাবে সমগ্র জনতার সাথে সংশ্লিষ্ট, যা সকলের সামগ্রিক ব্যাপার। যেমন উহুদ যুদ্ধে মুশরিকদের সাথে সম্মুখ সমরে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্যে মদীনা থেকে বাইরে যাওয়ার ব্যাপার নিয়ে তিনি মদীনায় অবস্থিত সমস্ত মুসলিম জনগণের সাথে পরামর্শ করেছেন। তিনি সকলকে লক্ষ করে বললেনঃ তোমরা সবাই আমাকে পরামর্শ দাও।

হাওয়াজিনের যুদ্ধে লব্ধ গণিমতের মাল কি করা হবে, তা নিয়েও তিনি মুসলমানদের সাথে পরামর্শ করেছেন। এ যুদ্ধে যত লোক শরীক হয়েছিলো, গনিমতের ব্যাপারে তাদের সকলেরই মত তিনি জানতে চেয়েছিলেন। এ বিষয়ে ইতিহাসে বলা হয়েছে, গনিমতের মালের ব্যাপারে নবী করীম স. যা কিছু করণীয় করেছিলেন, তা সবারই সামনে পেশ করেছিলেন। তখন উপস্থিত সবাই এক বাক্যে বলে উঠেছিলঃ হে রসূল স.! আপনি যা ফায়সালা করেছেন তাতেই আমরা রাজি আছি এবং তা-ই মেনে নিলাম।

তখন নবী করীম স. নেতৃস্থানীয় সাহাবাদের পাঠালেন অনুপস্থিত অন্যান্য মুসলমানদের মত জানার জন্যে। হযরত যায়েদ ইবনে সাবেত আনসারদের কাছে উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করলেন, তারাও সবাই মেনে নিলো। একজন লোকও তাতে কোনো দ্বিমত প্রকাশ করলো না এবং এসব কথা নবী করীম স.-কে জানিয়ে দেয়া হলো। এভাবে পরামর্শ গ্রহণের এ বিরাট ব্যাপারটি সম্পন্ন হলো। (জনগণ নির্বাচিত কিংবা জনগণের আস্থাভাজন নেতৃবৃন্দের সাথে জাতীয় জটিল বিষয়াদির পরামর্শ গ্রহণের নীতিও রসূলে করীম স. কর্তৃক অনুসৃত হয়েছে। ইসলামের ইতিহাসে তার অসংখ্য দৃষ্টান্ত চির সমুজ্জ্বল। এ পর্যায়ে একটি দৃষ্টান্ত উল্লেখ করা যাচ্ছে।

জটিল জাতীয় ব্যাপারসমুহে সমস্ত মুসলমানই ছিলো পরামর্শদাতা। সমস্ত মুসলিম জনগণের কাছেই তিনি পরামর্শ চেয়েছেন। কেননা এ ব্যাপারগুলোই ছিলো সমস্ত জনগণের সাথে সম্পর্কিত।) (ঐ ২৯ পৃ.)।

এসব ঘটনা থেকে স্পষ্ট প্রমাণিত হয় যে, নবী করীম স.-এর সময়ে যুদ্ধ ও গনিমতের মাল বণ্টন ইত্যাদি হাওয়াজিন গোত্রের কাছ থেকে পাওয়া ধন-সম্পদ ও যুদ্ধ বন্দীদের ব্যাপারে কি নীতি অবলম্বিত হবে, নবী করীম স. সে বিষয়টি সম্পর্কে স্বীয় প্রস্তাব এক বিরাট জনসমাবেশে জনতার সামনে পেশ করলেন এবং তাদের মতামত জানতে চাইলেন। জবাবে জনতা সোচ্চার হয়ে উঠলো কিন্তু অসংখ্য লোকের একটি সমাবেশে প্রত্যেকটি মাগরিবের মত সুস্পষ্টরূপে শুনতে পাওয়া ও অধিক সংখ্যক লোক কি মত পোষণ করে তা হিসাব ও যাচাই করা এবং তদ্দৃষ্টে কোনো চূড়ান্ত ফায়সালা গ্রহণ করা সম্পূর্ণ অসম্ভব ব্যাপার ছিলো। তাই নবী করীম স. সমবেত জনমণ্ডলীকে সম্বোধন করে বললেনঃ

***আরবী***

তোমাদের কে স্বপক্ষে মত দিয়েছে, আর কে বিপক্ষে তা আমি জানতে পারলাম না। কাজেই তোমরা সবাই ফিরে যাও। পরে তোমাদের নির্বাচিত বা মনোনীত ব্যক্তিরা এসে যেন তোমাদের মত আমাকে জানিয়ে দেয়। এর পর লোকেরা ফিরে গেল এবং তাদের নেতৃস্থানীয় লোকেরা তাদের মতামত জেনে নিলো। তারা এসে রসূলে করীম স.-কে জানিয়ে গেল যে, লোকেরা আপনার প্রস্তাবকে ভালো মনে করেছে ও সমর্থন করেছে।

রসূল স.-এর জীবনের এমন অনেক ঘটনারও উল্লেখ পাওয়া যায়, যা থেকে প্রমাণিত হয় যে, তিনি সবারই সাথে নয় বিশেষ সাহাবীর সাথে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ করেছেন। বদর যুদ্ধে যেসব কাফের বন্দী হয়েছিল তাদের সম্পর্কে কি নীতি গ্রহণ করা হবে সে বিষয়ে সব সাহাবীদের সাথে পরামর্শ না করে তিনি বিশেষ ও বিশিষ্ট সাহাবীদের সাথে পরামর্শ করেছেন। মদীনার এক-তৃতীয়াংশ ফসলের ভিত্তিতে গাতফান গোত্রের সাথে সন্ধি করার ব্যাপারে নবী করীম স. কেবলমাত্র গোত্র-সরদার হযরত সায়াদ ইবনে মুয়ায ও সায়াদ ইবনে ওবাদার সাথেই পরামর্শ করেছিলেন। তখন তাঁরা দুজন বলেছিলেনঃ

এ ব্যাপারটি সম্পর্কে আপনি যদি আসমান থেকে নির্দেশ পেয়ে থাকেন তাহলে আপনি তাই করুন। এ বিষয়ে যদি কোনো নির্দেশ আপনাকে না দেয়া হয়ে থাকে, আর এতে আপনি স্বাধীন হয়ে থাকেন, তাহলেও তা শিরোধার্য। কিন্তু এ যদি শুধু আমাদের মতের ব্যাপার হয়ে থাকে, তাহলে আমাদের কাছে তাদের জন্যে তরবারি ছাড়া আর কিছু নেই। তখন নবী করীম স. তাঁদের দেয়া পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং গাতফান কবীলার সাথে সন্ধি করার ইচ্ছা ত্যাগ করেন।-আমতাউল আসমা, ২৬৩ পৃ.।

বস্তুত এসব ঘটনা থেকেই রসূলে করীম স. -এর সুন্নত-আদর্শ কর্মনীতি জানা যায়। এর থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূলে করীম স.-এর পরামর্শদাতা কখনো হতো সর্বসাধারণ মুসলমান, কখনো ঘটনাস্থলে উপস্থিত মুসলমানরা, কখনো বিশিষ্ট মুসলমানরা মাত্র। এসবের ভিত্তিতে আমরা অনায়াসে বলতে পারি যে, রাষ্ট্রপ্রধান বিভিন্ন বিষয়ের সাথে সংশ্লিষ্ট, বিভিন্ন মানুষের সাথে পরামর্শ করবে। যদি বিষয়টি হয় সর্বসাধারণ মানুষের সাথে সংশ্লিষ্ট, তাহলে সে বিষয়ে সেই সর্বসাধারণ মানুষের সাথেই পরামর্শ করতে হবে। আধুনিক পরিভাষায় তাকে আমরা বলি গণভোট বা (Referendum)। আর তা যদি সম্ভবপর না-ই হয় তাহলে তাদের আস্থাভাজন আহলুল হল্লে ওয়াল আকদ -এর সাথে পরামর্শ করতে হবে। আর বিষয়টি যদি এমন হয় যা ভালো ও মন্দ দিক-ই শুধু জানতে হবে, তাহলে সে বিষয়ে বিশেষজ্ঞদের সাথে পরামর্শ করতে হবে। ইমাম কুরতুবী এ দিকে ইংগিত করেই বলেছেনঃ

রাষ্ট্রকর্তারা যেসব বিষয়ে জানে না, সেসব বিষয়ে-ই তাদের পরামর্শ করতে হবে। দীন সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে দীনের আলেমদের সাথে, যুদ্ধ সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে সামরিক বাহিনীর কর্মকর্তাদের সাথে। জনকল্যাণ বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে সাধারণ মানুষের সাথে। আর শহর-নগর নির্মাণ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ে পরামর্শ করতে হবে মন্ত্রী, সেক্রেটারী ও অন্যান্য কর্মচারীদের সাথে। -তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, ২৪৯-২৫০ পৃষ্ঠা।

আল্লামা কুরতুবী আরো লিখেছেন, শরীয়তী হুকুম-আহকামের ব্যাপারে যাদের সাথে পরামর্শ করতে হবে তাদের হতে হবে আলেম ও দীনদার। তার বৈষয়িক ব্যাপারসূহে যাদের পরামর্শ চাওয়া যেতে পারে তাদের হতে হবে বুদ্ধিমান ও বহুদর্শী দীর্ঘকালীন বাস্তব অভিজ্ঞতা সম্পন্ন লোক।

-তাফসীরে কুরতুবী, ৪র্থ খণ্ড, ২৪৯-২৫০ পৃষ্ঠা।

আধুনিক সময়ে পরামর্শ গ্রহণ পদ্ধতি

আমরা পূর্বেই একথা স্পষ্টভাবে বলেছি, শুরু বা পরামর্শ গ্রহণ পদ্ধতির বিষয়ে রসূলে করীম স.-এর সুন্নাত প্রমাণ করে যে, ইসলামী শরীয়তে শুরার কোনো বিশেষ ও নির্দিষ্ট ধরনের ব্যবস্থা বা কাঠামো পেশ করা হয়নি। এটাই হলো ইসলামী শরীয়তের সৌন্দর্য, বৈশিষ্ট্য এবং ভবিষ্যতের জন্যে সতর্কতার নীতি। কেননা, শুরা বা পরামর্শ গ্রহণের কাজটি নানাভাবে সম্পন্ন হতে পারে এবং বিভিন্ন সময়ে তার রূপ বদলে যেতে পারে। বিভিন্ন ভৌগলিক অবস্থার কারণে বিভিন্ন ধরনের কাঠামোও গড়ে তোলা যেতে পারে। এমনকি, দেশ ভেদে তার বাস্তব কাঠামোর তারতম্যও হতে পারে। অতএব পরামর্শ গ্রহণ পদ্ধতি দেশের অবস্থার সাথে সামঞ্জস্য রক্ষা করে নির্দিষ্ট করা জাতির দায়িত্ব। এ প্রেক্ষিতে বলা যায়, আমাদের এ কালের উপযোগী পন্থা এটাই হতে পারে যে, জাতির জনগণ মজলিসে শুরার বা পার্লামেন্টের সদস্যদের নির্বাচিত করবে এবং তারা নির্বাচিত করবে রাষ্ট্রপ্রধানকে। আর সদস্যরাই রাষ্ট্রশাসনের ব্যাপারে রাষ্ট্রপ্রধানকে পরামর্শ দেবে এবং রাষ্ট্রপ্রধানও এদের মত নিয়ে কাজ করতে বাধ্য থাকবে। অবশ্য জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপারসূহে সাধারণ গণভোট গ্রহণ করারও পূর্ণ অধিকার থাকবে রাষ্ট্রপ্রধানের। মজলিসে শুরার (পার্লামেন্টের) সদস্যদের নির্বাচন করার পন্থা, পদ্ধতি ও নীতি এরাই নির্ধারিত করবে।

পার্লামেন্ট বা আইন-পরিষদ সদস্যদের নির্বাচনের ব্যাপারটি সুষ্ঠু ও নির্ভুলভাবে সম্পন্ন করার এবং সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের বাছাই করার জন্যে কেবল একটা নির্বাচন পদ্ধতি ঠিক করাই যথেষ্ট নয়। বরং সে জন্যে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার আবশ্যকতা রয়েছে। আর এ পরিবেশ সৃষ্টির জন্যে ইসলামী আদর্শ ও মৌলনীতির শিক্ষার ব্যাপক প্রচার জাতীয় নৈতিকতার মান উন্নতকরণ এবং আল্লাহর ভয় ও পরকাল বিশ্বাসের প্রেরণায় ব্যক্তিদের উদ্বুদ্ধ করা একান্তই জরুরী। তাহলেই আশা করা যেতে পারে যে, তারা যোগ্যতম ব্যক্তিদেরই নির্বাচিত করবে, এমন ব্যক্তিদের হাতে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব তুলে দেবে যারা ইসলামী আদর্শকে যথাযথভাবে বাস্তবায়িত করবে।

পরামর্শ পরিষদ ও রাষ্ট্রপ্রধানের মধ্যে বিরোধ ও মতবৈষম্য হলে

পরামর্শ পরিষদ বা পার্লামেন্ট এবং রাষ্ট্রপ্রধানের মাঝে মতবৈষম্য সৃষ্টি হতে এবং তদ্দরুন বিরোধ দেখা দিতে পারে। সেটা অস্বাভাবিক কিছু নয়। তাহলে এরূপ অবস্থায় তার মীমাংসার উপার ও পন্থা কি হতে পারে?..এর মীমাংসার পথ ও পন্থা কুরআন মজীদের নিম্নোক্ত আয়াতে ঘোষিত হয়েছেঃ

**********আরবী**********

হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা আল্লাহর আনুগত্য স্বীকার করো, অনুসরণ করে চলো রসূলের এবং তোমাদের মাঝে যারা দায়িত্বশীল কর্মকর্তা তাদেরও। অনন্তর তোমরা যদি কোনো বিষয়ে মতবিরোধে নিমজ্জিত হও, তাহলে সে বিষয়টিকে আল্লাহ ও রসূলের দিকে ফিরাও, যদি তোমরা আল্লাহ ও পরকালের প্রতি ঈমানদার হয়ে থাকো। বস্তুত এ নীতিই অতীব কল্যাণময় এবং পরিণামের দিক দিয়েও তা অতীব উত্তম।

এ আয়াত অনুযায়ী যাবতীয় বিরোধীয় বিষয়কে আল্লাহর কিতাব ও রসূল স.-এর সুন্নাতের দৃষ্টিতে পুনর্বিবেচনাক্রমে চূড়ান্ত ফায়সালা করতে হবে। সব তাফসীরকারই একথা বলেছেন। অতএব কুরআন কিংবা হাদীসে কোনো বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ বা ঘোষণা পাওয়া গেলে, তা মেনে নেয়া ও তদনুযায়ী কাজ করা ওয়াজিব। এর বিপরীত কারোর কথা মানা যেতে পারে না। আর যদি কোনো সুস্পষ্ট হুকুম না-ই পাওয়া যায়, তাহলে যে মত কুরআন ও সুন্নাতের অধিক নিকটবর্তী, তা-ই গ্রহণ ও তদনুযায়ী আমল করতে হবে।-তাফসীরে তাবারী, ৫ম খণ্ড, ৮৭ পৃষ্ঠা, তাফসীরে কুরতুবী, ৫ম খণ্ড, ২৬১ পৃষ্ঠা ও আহকামুল কুরআন লিল জাসসাস, ২য় খণ্ড, ২১২ পৃষ্ঠা।

কিন্তু কোন মতটি কুরআন ও সুন্নাতের নিকটবর্তী, তাও যদি জানা না যায় বা তাও যদি নির্ধারণ করা সম্ভব না হয়, তাহলে তখন কি করা যাবে? এ পর্যায়ে তিনটি পন্থার যে কোনো একটা গ্রহণ করা যেতে পারেঃ

Page 3 of 7
Prev1234...7Next

© Bangladesh Jamaat-e-Islami

  • আমাদের সম্পর্কে
  • প্রাইভেসি পলিসি
  • যোগাযোগ
কোন ফলাফল নেই
সকল ফলাফল দেখুন
  • নীড়
  • সংক্ষিপ্ত পরিচিতি
  • বিভাগ ভিত্তিক
    • আল কুরআন
    • আল হাদিস
    • ফিকাহ
    • ঈমান
    • ইসলাম
    • পারিবারিক জীবন ও সামাজিক সম্পর্ক
    • আন্দোলন ও সংগঠন
    • সীরাত ও ইতিহাস
    • সীরাতে সাহাবা
    • মহিলাদের বিশেষ বই
    • রাজনীতি
    • অর্থনীতি
    • বিবিধ
  • রুকন সিলেবাস
    • রুকন সিলেবাস (স্বল্প শিক্ষিত)
    • রুকন সিলেবাস (শিক্ষিত)
  • কর্মী সিলেবাস
  • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (শিক্ষিত)
    • বাৎসরিক পাঠ্যসূচি (স্বল্প শিক্ষিত)
  • উচ্চতর অধ্যয়ন
  • অডিও বই
  • অন্যান্য
    • দারসুল কুরআন
    • দারসুল হাদিস
    • আলোচনা নোট
    • বইনোট
    • প্রবন্ধ
    • কবিতা
    • বুলেটিন
    • স্মারক
    • ম্যাগাজিন
    • এপস
    • রিপোর্ট বই
    • ছাত্রী সিলেবাস

@BJI Dhaka City South