গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিরা হলেন
১. হাসান ইসমাইল আল হোযাইবী : তাঁর বয়স প্রায় চুয়াত্তর বছর। ইখওয়ানের সাথে নিয়মতান্ত্রিক সম্পর্ক স্থাপনের পূর্বে তিনি কায়রো সুপ্রিম কোর্টের লিগ্যাল এডভাইজার ছিলেন। ১৯৪৮ সালে মরহুম হাসানুল বান্নার শাহাদাতের পর ইখওয়ানের মুরশিদে আম (কেন্দ্রীয় সভাপতি) নির্বাচিত হন। তিনি যেহেতু একজন আইনবিদ ছিলেন, এ কারণে তিনি তাঁর দায়িত্ব কালীন সময়ে সংগঠনকে আইন কানুন মেনে চলার ব্যাপারে ব্যাপক প্রচেষ্টা চালান। কিন্তু ইখওয়ানের কোন কোন মহলে তাঁর আইনগত কঠোরতা এবং ছোট খাট বিষয়ে অনমনীয়তার কারণে তিনি সমালোচনার সম্মুখীন হন। ১৯৫৪ সালে যখন দ্বিতীয়বারের মতো ইখওয়ানের ওপর বিপর্যয় নামে তখন তাঁকেও গ্রেফতার করা হয় এবং মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করা হয়। কিন্তু পরে তা বয়সগত কারণে পরিবর্তণ করা হয়। জেলখানায় তাঁর ওপর সীমাহীন নির্যাতন চালানো হয়। সে কারণে তাঁর শারীরিক অবস্থা এত নাজুক হয়ে পড়ে যে, সরকার তাঁকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়। তারপর থেকে তিনি তাঁর গৃহেই নজরবন্দী হিসেবে দিন কাটাচ্ছিলে। পরে তাঁকে আবারো হত্যা পরিকল্পনা র অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় এবং তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২. মামুন আল হোযাইবী : তিনি হাসনিুল হোযাইবীর ছেলে এবং কায়রো সুপ্রিম কোর্টের তিনিও একজন লিগ্যাল এডভাইজার ছিলেন। তাঁকে তিন বছরের জেল দেয়া হয়।
৩. ইসমাইল আল হোযাইবী : তিনি হাসনিুল হোযাইবীর আরেক ছেলে। পেশায় আইনজীবী ছিলেন। তার এক বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ঘোষণা করা হয়।
৪.সাইয়েদ কুতুব : তাঁর বয়স ছিল প্রায় ষাট বছর। ইখওয়ানে যোগদানের পূর্বে তিনি মিসরের শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্কুল পরিদর্শকের পদে অধিষ্ঠিত ছিলেন। ১৯৫৩ সালে তিনি ইখওয়ানের সদস্য হন। ১৯৫৪ সালে তিনিও গ্রেফতার হন এবং মাহকামাতুশ শাবের (গণ আদালত) পক্ষ থেকে তাঁর মৃত্যুদন্ড ঘোষণা করা হয় যা বয়সগত শর্তে পরিবর্তিত হয়ে যায়। ১৯৬৪ সালের আগস্ট মাসে মরহুম আবদুস সালাম আরিফের সুপারিশের ভিত্তিতে মিসর সরকার তাঁকে মুক্তি দেয়। কিন্তু এক বছর পরই আগষ্ঠ ৬৫ সালে তাঁকে আবারো গ্রেফতার করে ফাঁসী দেয়া হয়।
৫. মুহাম্মদ কুতুব : তিনি ছিলেন সাইয়েদ কুতুবের বড় ভাই। তিনি বেশ কটি গ্রন্থের লেখক। ইখওয়ানের সাথে তাঁর সাংগঠনিক সম্পর্ক ছিল না। তাঁর বিখ্যাত গ্রন্থগুলো হলো :
১. বস্তুবাদ ও ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ,
২. ভ্রান্তির বেড়াজালে ইসলাম,
৩. বিংশ শতাব্দীর জাহেলিয়াত,
এ গ্রন্থগুলোর ব্যাপক জনপ্রিয়তাই তাঁর গ্রেফতারীর কারণে পরিণত হয়। তিনি একটি নিজস্ব প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানও প্রতিষ্ঠিত করেন। যা তাঁর গ্রন্থাবলী, সাইয়েদ কুতুব এবং অন্যান্য ইসলামী লেখকের বই প্রকাশ করতো। তাঁকে গ্রেফতারের সময় তাঁর প্রকাশনাটিও সরকার বাজেয়াপ্ত করে। জেলখানায় মুহাম্মদ কুতুবকে অমানবিক নির্যাতন করা হয় এবং এরকম নির্যাতন তাঁর বোন আমেনা কুতুবের ওপরও চালানো হয়।
৬. অধ্যাপক সালেহ আবু রাকীক : তিনি আরব লীগের কেন্দ্রীয় লিগ্যাল এডভাইজার ছিলেন।
৭. মুহাম্মদ ফরীদ আবদুল খালেক : তিনি মিসরের বিখ্যাত শিক্ষাবিদদের একজন ছিলেন।
৮. অধ্যাপক মুনীর ওল্লা : ফারুকের শাসনামলে তিনি কাউন্সিল অফ স্টেটের লিগ্যাল এডভাইজার ছিলেন।
গ্রেফতারকৃত মহিলাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য মহিলাগণ হলেন
১. সাইয়েদা যয়নব আল গাযালী। তাঁর বয়স ছিল ষাট বছরের উপরে। তিনি মহিলা সংগঠনের নেত্রী ছিলেন। ট্রাইব্যুনালের সামনে জবানবন্দী দিতে গিয়ে তিনি বলেন, আমার ওপর মিথ্যা অভিযোগ আরোপের কি প্রয়োজন ছিল? আর যদি আমার জীবনের প্রয়োজন ছিল, তবে তা তো হাযিরই রয়েছে। তাঁকে দশ বছর সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
২. হাসানুল হোযাইবী ইখওয়ান প্রধানের স্ত্রী।
৩. হাসানুল হোযাইবীর মেয়ে সাইয়েদা খালেদা।
৪. ইসমাইল হোযাইবীর স্ত্রী (হাসানুল হোযাইবীর বৌমা )
৫.সাইয়েদা হামিদা কুতুব। সাইয়েদ কুতুবের বোন। তাঁকে তিন বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়।
৬. অধ্যাপক আবদুল হালিম ওশাহীর স্ত্রী।
গ্রেফতারকৃতদের সাথে জেলখানায় যে আচরণ করা হয় এবং তাদের পরিবার পরিজনের ওপর যা ঘটে, তা উল্লেখ করাও জরুরী। উপরে আমি বর্ণনা করেছি যে, গ্রেফতারকৃতদের পরিবারের অধিকাংশকে বহুদূরের নির্জন প্রান্তরে পাঠিয়ে দেয়া হয়, যাতে তারা কোন প্রকার সহযোগিতা ও চেষ্টা তদবির করতে না পারে এবং জনগণের সমবেদনা জ্ঞাপন থেকেও বঞ্চিত থাকে। গ্রেফতারকৃত ব্যক্তিদের পরিবারের লোকদেরকে তাদের আত্মীয় বন্ধীদের সাথে সাক্ষাত অথবা চিঠিপত্র আদান প্রদানেরও অনুমতি দেয়া হয়নি। অধিকাংশ লোকদেরকে এমন অবস্থায় গ্রেফতার তথা ( অন্য কথায়) অপহরণ করা হয় যে, তাদের পরিবার তাদের সম্পর্কে কিছুই জানেনা। হাজার হাজার পরিবার এমন ছিল যাদের কোন ব্যবস্থাপক অথবা আশ্রয়দাতা ছিল না।
এছাড়াও এক সরকারী আইনের ভিত্তিতে গ্রেফতারকৃতদের মধ্যে যারা সরকারী চাকরী করতো তাদের বেতন ভাতা এবং অন্যান্য আইনসংগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হয়। যেমন গ্রেফতার কৃত লোকদের মধ্যে কেউ যদি তার কর্মচারী হয়, তবে তাকও চাকরী থেকে বাদ দেয়া হবে এবং তার বেতন বন্ধ করে দেয়া হবে এবং তার নিকটাত্মীয়দের মধ্য থেকে কাউকে আর্থিক সাহায্য করা হবে না। সাধারণ লোকদেরও নির্দেশ বলে গ্রেফতারকৃত লোকদের আত্মীয়স্বজনের মধ্যে কাউকে নগদ অথবা অন্য কোন প্রকার সাহায্য করতে নিষেধ করা হয়। এবং এ অপরাধ সংঘটিত করীকে যথাযথ শাস্তি প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। গ্রেফতারকৃতদের স্থাবর অস্থাবর সকল সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। প্যারিসের সংবাদপত্র রাভম্যন্ডি এর ২৩ ডিসেম্বরের ৬৫ সংখ্যায় এ খবর প্রকাশিত হয় যে, মিসর সরকার কর্তৃক জারীকৃত আইনের দৃষ্টিতে সরকারকে এ অধিকার দেয়া হয় যে, সরকার রাজনৈতিক নজরবন্দীদের বিষয় সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করতে পারবে। যে পরিবারগুলো ভাড়ায় অথবা সরকারী বাড়ীতে বাস করতো, পুলিশের ইঙ্গিতে তাদেরকে সেসব বাড়ী থেকে বের করে দেয়া হয় এবং তাদেরকে অসহায় অবস্থায় খোলা আকাশের নীচে ফেলে রাখা হয়।
যেহেতু এ গ্রেপ্তারীর পেছনে কমিউনিস্ট পরামর্শদাতাদের উদ্দেশ্য কাজ করছিল সুতরাং গ্রেফতারী শুধু মাত্র ইখওয়ান পর্যন্ত সীমাবদ্ধ ছিলনা। বরং প্রকৃত পক্ষে এ সকল নির্যাতন ও দমন কার্যক্রমের উদ্দেশ্য ছিল দুটি। এক : রক্ষণশীল লেখক এবং দায়ীদের অস্তিত্ব, দুই : রক্ষণশীল চিন্তাধারা ও দৃষ্টিভঙ্গি। আর এটা সুস্পষ্ট যে, যতক্ষণ পর্যন্ত এ দুটি জিনিস থেকে দেশ পবিত্র না হবে কমিউনিজম এদেশে আশীর্বাদ পাবেনা।
রক্ষণশীল লেখক এবং দায়ীদের নির্মূল করার জন্য সর্বপ্রথম আক্রমণ চালানো হয় ইখওয়ানের ওপর। এরপর মিসরের অপর ধর্মীয় সংগঠনের দিকে দৃষ্টি ফেরানো হয়। আর তাদের মধ্যে প্রত্যেকটিকেই কোন না কোন দিক থেকে হত্যা পরিকল্পনার সাথে জড়িত রয়েছে বলে প্রমাণ করা হয়। মুহাম্মদ (সা:) যুব সংগঠন, জমিয়তে শারীআ, তাবলিগী জামায়াত এবং আনসারুসসুন্নাহ আল মুহাম্মদিয়ার ইখওয়ানের সাথে প্রবল মতবিরোধ পোষণ করতো এবং রাজনীতিকে বংশানুক্রমিকভাবে নিষিদ্ধ মনে করতো। তথাপি এসব সংগঠনের ওপর নির্যাতন চালানো হয়, তাদের সমর্থকদের গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের ওপর এ অভিযোগ আরোপ করা হয়ে যে, ইখওয়ানের লোকেরা এ যুবকদের ধর্মীয় আবেগ অনুভূতি দ্বারা লাভবান হয় এবং তাদেরকে তাদের প্রভাব বলয়ে নিয়ে আসে। আসিউতের অধিবাসীদের অধিকাংশই ছিল খ্রিষ্টান ধর্মাবলম্বী। সেখানকার সংখ্যালঘু মুসলমানদের জন্য জমিয়তে শারীআ একটি মসজিদ নির্মাণ করেছিল এবং এর সাথে যুবকদের চিত্তবিনোদনের জন্য একটি ক্লাব প্রতিষ্ঠা করা হয়। কারণ সে এমন একটি ক্লাবে যাতায়াত করে যার ব্যবস্থাপনা একটি ধর্মীয় সংগঠনের হাতে।
রক্ষণশীল চিন্তাধারা থেকে মুক্তি লাভের জন্য মকতবগুলো সীল করে দেয়া হয় এবং সেসকল বইপুস্তক বাজেয়াপ্ত করা হয় সেগুলো তে এর জীবাণু পাওয়া গেছে। আমাদের কাছে সেসব বইয়ের দীর্ঘ তালিকা মজুদ আচে যা মিসরে বিগত কয়েকমাসে অবৈধ ঘোষণা করা হয়। এগুলোর মধ্যে ইখওয়ান লেখকদের ছাড়াও অন্যান্য লেখকদের বইও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে যা এরকম সরকার কর্তৃক মনোনীত ছিল। সে সব প্রেস সীল করে দেয়া হয় যারা সাধারণত ইসলামী সাহিত্য ছাপাতো। আলমাদানী কায়রোর বিখ্যাত প্রেসের মালিক মুহাম্মদ আলমাদানীর সাথে আমার কাতারে সাক্ষাত ঘটে। তিনি স্বয়ং আমাকে তার প্রেস ধ্বংসের ঘটনা শোনাতে গিয়ে বলেন যে, এ ধ্বংসযজ্ঞ শুধুমাত্র এ অপরাধেই ঘটানো হয়েছে যে, এ প্রেস কমিউনিস্ট সাহিত্য ছাপানোর পরিবর্তে ইসলামী সাহিত্য ছাপাতো। এ কারণে আমি নির্দ্বিধায় একথা বলবো যে, এ সংঘাত প্রকৃতপক্ষে ইসলাম ও কমিউনিজম এবং আস্তিক ও নাস্তিকের সংঘাত। একে শুধুমাত্র কতিপয় ব্যক্তির পাগলামি দ্বারা বিচার করা এবং তাদের মৃত্যুদন্ডের ওপরই এর সমাপ্তি কল্পনা করা অবস্থার সঠিক পর্যবেক্ষণ নয়।
এবার সরকারী প্রেস নোটে ইখওয়ানের প্রতি যেসব অভিযোগ আরোপ করা হয় তা উল্লেখ করা হলো :
সর্বপ্রথম অভিযোগ হলে, ইখওয়ান একটি গোপন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছিল – যার নেতা ছিলেন সাইয়েদ কুতুব। সংগঠনটি অভিযুক্তদের জন্য আর্থিক সাহায্য এবংয় অন্যান্য উপকরণ সংগ্রহ করতো। এরা প্রেসিডেন্ট নাসেরের হত্যা পরিকল্পনা, বিশেষ ট্রেনগুলো ধ্বংসের প্রশিক্ষণ দিত এবং এ প্রশিক্ষণ কাজে কতিপয় মহিলারও সহযোগিতা নিয়েছিল।
মূলত: এ কান নতুন অভিযোগ ছিলনা। মিসর সরকার এবং ইখওয়ানুল মুসলেমূনের জন্যও বিশেষ কোন অভিযোগ ছিলনা। প্রত্যেক ক্ষমতাসীন ব্যক্তিই তার বিরোধী পক্ষের ওপর প্রত্যক যুগে এ ভাবেই অভিযোগ আরোপ করে থাকে বিশেষভাবে কমিউনিস্ট দেশগুলো এবং তাদের প্রভাবাধীন রাষ্ট্রসমূহ তো এধরনের অভিযোগ রচনায় অত্যন্ত সিদ্ধ হস্ত প্রমাণিত হয়েছে। সরকারী প্রেসনোটে বলা হয়েছে শুধুমাত্র এ কারণেই কি এ অভিযোগ সমর্থন করা যেতে পারে? সাধারণ বুদ্ধির একজন লোকও এ প্রশ্ন করবে যে, ১৯৫৪ সালে ইখওয়ানের হাজার হাজার কর্মীকে জেলে বন্দী করা হয়েছে। তাদের পরিবারবর্গ সীমাহীন দুর্দশা এবং নিঃস্ব অবস্থায় জীবন কাটিয়েছে। স্বয়ং সাইয়েদ কুতুবকে দশ বছর পর মুক্তি দেয়া হয় এবং এক বছর যেতে না যেতেই তাঁকে দ্বিতীয়বার গ্রেফতার করা হয়। মুক্তির পরও তাঁকে কড়া নযরে রাখা হয়। অথচ এটা কি করে বিবেক সায় দেবে যে, তিনি এত কম সময়ের মধ্যে এত বড় ষড়যন্ত্র কিভাবে তৈরি করলেন। এবং এ জন্যে এত বিপুল পরিমাণ অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করলেন যা সরকারের গদি উলট পালট করে দেবে। যে সরকারের পুলিশ রোম থেকে সন্দেহ বাজন ব্যক্তদের বাক্সে প্যাকিং করে কায়রো আনার ব্যবস্থা করতে পার, এ পুলিশের উপস্থিতিতে কেউ কি কখনো এধরনের ষড়যন্ত্রের কথা কল্পনাও করতে পারে? এটাও লক্ষণীয় যে, অভিযোগ নামায় উল্লেখ করা হয়, অভিযুক্তরা ১৯৫৯ সাল পর্যন্ত একটানা সরকার উৎখাতের পরিকল্পনা তৈরি করতে থাকে। তবে কি সায়েইদ কুতুব জেলখানায় বসে এ পরিকল্পনার তত্বাবধান করতেন এবং নিজ সহোদরা ভগ্নি ও ষাট বছর বয়স্কা আপর এক মহিলা যয়নব আল গাযালীর সাথে এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের নির্দেশিকা বণ্টন করার সহযোগিতা গ্রহণ করতেন। তাহলে এ অভিযোগের প্রমাণ কি? রেডিও ও পত্রপত্রিকার প্রচারণা আসলে কোন প্রমাণ নয় এবং যে ধরনের আদালতে যেভাবে এ অভিযোগ পেশ করা হয় তার গোপন রহস্য বিশ্বের একটি নিরপেক্ষ সংস্থা এমনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালই প্রকাশ করে দেয়।
তবে ইখওয়ান বিগত ক বছরে গুরুত্বপূর্ণ যে কাজটি করে তা হলো, ১৯৫৪ সালে যে হাজার হাজার লোককে বন্দী করা হয়েছিল তাদের লাওয়ারিশ এবং অসহায় পরিবারবর্গকে আর্থিক সাহায্য প্রদান। মিসর সরকার তার গোয়েন্দা পুলিশ, প্রচার মাধ্যম, আরব সোশ্যালিস্ট পার্টি এবং এধরনের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের জন্য নির্দ্বিধায় অর্থ সম্পদ বর্ষণ করেছে কিন্তু বন্দী পরিবারের লোকদের জীবন যাপনের জন্য কখনো এক পয়সা বরাদ্দের প্রয়োজনও মনে করেনি। অথচ তাদের দায়িত্ব ছিল, রাজনৈতিক কারণে যাদেরকে দীর্ঘ সময়ের জন্য কারারুদ্ধ করা হয়েছে, তাদের মাসুম বাচ্চা স্ত্রী এবং বৃদ্ধা মাতাকে ন্যুনতম জীবন ধারণের জন্য আর্থিক সাহায্য প্রদান করা। মার্কসবাদে কি অন্তত এসব লোকের পরিবারকে অনাহার থেকে রক্ষা করার কোন মৌলনীতি নেই? মার্কসবাদে কি একমাত্র ক্ষমতাসীন দলেরই অর্থ সম্পদ দ্বারা থলে বরে নেবার অনুমতি রয়েছে, অন্য কেউ এর হকদার নয়? দেশের জন্য শহীদ লোমাম্বার অমিসরীয় শিশুরাই কি শুধু মিসর সরকারের অনুদানে শিক্ষাদীক্ষার সকল সুযোগ সুবিধা লাভ করবে। কিন্তু আবদুল কাদের আওদাহর অসহায় দরিদ্র শিশুদের এতে কোন অধিকার থাকবে না? অথচ হাজার হাজার বন্দীর বাড়ীতে বসবাসকারী ঘনিষ্ঠজনদের দীর্ঘ তালিকা রয়েছে। তাদের মা ,স্ত্রী, কন্যা ও দুধের বাচ্চারা দুবেলা খেতে পায় কিনা তা কি কেউ ভেবে দেখেছে?
কিন্তু মিসর সহানুভূতিশীল দরদী লোক থেকে একেবারেই খালি ছিলনা। স্কুল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের একটি দল শুভাকাঙ্ক্ষীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে তাদের কাছ থেকে চাঁদা সংগ্রহ করে প্রয়োজন মত প্রত্যেক বন্দীর সহায় সম্বলহীন পরিবারবর্গের কাছে পৌঁছে দিত। মিসর সরকার এ দলটিকে ও গোপন সংগঠন হিসেবে গণ্য করে। এরা মিসরের গোয়েন্দা পুলিশের দৃষ্টির বাইরে ছিলনা। এরা ইখওয়ানেরও লোক ছিলনা, শুধুমাত্র মানবিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে জনকল্যাণ মনে করে অনেক তরুণ এ কাজ করতো। এছাড়া অনেক সৎ মানুষ ইখওয়ানের সাথে যাদের দূরতম সম্পর্কও ছিলনা তারা কেবলমাত্র খোদাভীতি এবং মানবীয় সহানুভূতির ভিত্তিতে এ কল্যাণমূলক কাজে তাদেরকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করতো। কোন ভদ্রলোকের কল্পনাতেও একথা ছিলনা যে, এটাও কোন রাজনৈতিক তৎপরতা হিসেবে গণ্য হতে পারে। এ কারণ না তারা এটা গোপন করার প্রয়োজন অনুভব করেছে, আর না এজন্যে কোন গোপন সংগঠন প্রতিষ্ঠা করেছে। যারা মিসর সরকারের মেজাজ বুঝতো, তারা এই সৎ প্রকৃতির তরুণদের একাজ থেকে বিরত থাকার উপদেশও দিয়েছে। কারণ তারা জানতো যে, এ জনকল্যাণ একদিন তাদের জন্য ধ্বংসাত্মক প্রমাণিত হবে। কিন্তু তাদের অন্তরে এ উপদেশের কোন প্রভাব পড়েনি। বরং তারা অবিরাম নিজের কাজে মগ্ন ছিল। অবশেষে তাদের নির্ভীক প্রকৃতি তাদের জন্য বিপদ প্রমাণিত হলো। একদিকে তারা তাদের কাজে নিয়োজিত ছিল। এবং অপরদিকে মিসরের গোয়েন্দা পুলিশ রইবে, নিঃশব্দে তাদের তালিকা তৈরি করতে লাগলো। একসময় তাদেরকেই ইখওয়ানের গোপন সংগঠনের কর্মী সাব্যস্ত করা হলো এবং এ সৎ ব্যক্তিদের বহু সংখ্যককে ষড়যন্ত্র অভিযোগে গ্রেফতার করা হলো যারা ভুখা পরিবারগুলোর সাহায্যার্থে তাদেরকে আর্থিক সাহায্য প্রদান করতো।
দ্বিতীয় অভিযোগ হলো, ইখওয়ানের কাছে অস্ত্র ভাণ্ডার পাওয়া গেছে। আর এ অস্ত্র দ্বারা তারা মিসর সরকারকে উৎখাত, বিশিষ্ট ব্যক্তিদের হত্যা এবং বড় বড় ভবনগুলো গুড়িয়ে দেয়ার পরিকল্পনা করতো। কিন্তু সংবাদপত্রে অস্ত্রসস্ত্রের যে ছবি ছাপা হয়, তা ছাপা হয় তা ছিল মামুলী রোরা ও কাঁটা মাত্র। যদি সত্যি সত্যি পুলিশ অস্ত্র পেতো তবে এ জন্যে তারা অবশ্যই প্রদর্শনীর আয়োজন করতো এবং টেলিভিশনে সম্প্রচার করে গোটা বিশ্বকে এটা বিশ্বাস করাতো যে, সশস্ত্র বিপ্লবের জন্য এরা প্রয়োজনীয় উপকরণ সংগ্রহ করেছিল। এটা কি আজব কথা নয় যে, উদ্ধারকৃত অস্ত্র গোপন করে বিশ্বকে দেখানোর জন্য সংবাদপত্রে শুধুমাত্র ছোরা ও কাঁটা ছাপা হবে? মিসর সরকার কি অবুঝ শিশু যে, যে ম্যাগাজিন তারা উদ্ধার করলো, তা অন্তরালে রেখে প্রদর্শনীর জন্য এ হাস্যকর জিনিসগুলো বিশ্বের সামনে হাযির করবে?,মিসর সফরকারী একজন প্রখ্যাত সাংবাদিকের ভাষ্য হল সরকার সাংবাদিকের একটি দলকে অস্ত্র ভাণ্ডার পরিদর্শনের জন্য কারাসাসা গ্রামে আগমনের আমন্ত্রণ জানায়। একদিকে সাংবাদিক দলকে কারাদাসা পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয় এবং অপরদিকে অস্ত্রভর্তি সেনাবাহিনীর একটি গাড়ী কারদাসায় রওনা করিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু ঘটনাক্রমে এ গাড়িটি রাস্তায় কোন কারণে নষ্ট হয়ে গেলে নির্ধারিত সময়ে তা পৌছাতে পারেনি। যার ফলে পুলিশের পক্ষে অস্ত্রের গুদাম তৈরি করার সুযোগ হয়নি। সাংবাদিকরা যখন অস্ত্রভাণ্ডার দেখার দাবী জানালেন তখন পুলিশকে বাধ্য হয়ে সেনাবাহিনীর গাড়ীটাই প্রদর্শন করাতে হয় এবং তার জানায় যে, অস্ত্রভাণ্ডারের অর্থই হলো এ গাড়ী। সেনাবাহিনীর এ গাড়ী ছাড়াও অন্যান্য অস্ত্রের ছবি সংবাদপত্রে দেখা গেলেও অস্ত্রে নমুনা না কোথাও পেশ করা হয়েছে, আর না জনগণকে এগুলো দেখানো হয়েছে। এদুটি মৌলিক অভিযোগের পর দিনে দিনে অভিযোগের পরিমাণ বৃদ্ধি পেতে থাকে, আর তা হলো :
১. সাইয়েদ কুতুব, মুহাম্মদ কুতুব, আমিনা কুতুব এবং হামিদা কুতুব এর ভাই বোনেরা সন্ত্রাসবাদী গোপন সংগঠনের নেতা। তাদের নেতৃত্বে এমন পরিকল্পনা তৈরি হয়েছিল, যা ফাঁস হয়ে না পড়লে মিসরে একটা বিপর্যয় ঘটে যেতো। একই পরিবারের সহোদর ভাই বোনেরা এত বড় পরিকল্পনা তৈরি করছিল, এটা কোন নির্বোধ এবং বেকুবের পরিবার হলে হতে পারে কিন্তু কুরআনের তাফসীর ইসলামের সামাজিক সুবিচার বস্তুবাদ ও ইসলামের দৃষ্টিতে মানুষ এর নেতা, গ্রন্থের লেখকদের পরিবার হতে পারেনা। আর না তাদের পরিবার হতে পারে, যাদের প্রতিটি সদস্য দশ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ভোগ করেছেন এবং যাদের একজন মহিলা দীর্ঘ দশ বছর ধরে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ভোগকারী স্বামীর প্রতীক্ষায় প্রহর গুনছিল।
২. হোসাইন তাওফিক নামক এক ব্যক্তির ষড়যন্ত্র ফাঁস করা। যদিও পুলিশের রিপোর্ট একে ইখওয়ানের ষড়যন্ত্র থেকে ভিন্ন গণ্য করতো কিন্তু মিসরীয় সংবাদ সংস্থা ও সংবাদপত্রগুলো একে ইখওয়ানেরই ষড়যন্ত্রের একটি অংশ সাব্যস্ত করে। পুলিশের রিপোর্টে হোসাইন তাওফীককে সৌদি সরকারের এজেন্ট সাব্যস্ত করা হয়। কিন্তু সৌদি আরবের সংগে এ ষড়যন্ত্রের সংযোগ রয়েছে বলে ধরা হলে ইয়েমেন সমস্যা সমাধানে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবার আশঙ্কা ছিল। অথচ মিসর সরকারের এ মুহূর্তে প্রবল ইচ্ছা ছিল যে, এ সমস্যার শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাধান হোক। এ কারণে এ ষড়যন্ত্রকে সৌদি আরবের সাথে না জড়িয়ে ইখওয়ানের ঘাড়েই চাপানো হয়। কারণ এরা এমনই বলির পাঁঠা ছিল যে, একদিন না একদিন জবাই হতোই।
৩. কিছুদিন পর এ অভিযোগ প্রমাণ করা হয় যে, ইখওয়ানের সন্ত্রাসবাদী সংগঠন শুধুমাত্র প্রেসিডেন্ট নাসেরকেই হত্যার পরিকল্পনা করেনি বরং গায়িকা সম্রাজ্ঞী উম্মে কুলসুম, প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ আবদুল ওহাব, বিখ্যাত চিত্র অভিনেতা আবদুল হালিম হাফিয এবং চলচ্ছিত্র জগতের উজ্জ্বল তারকা ফায়েযা শাদিয়াকে হত্যার পরিকল্পনা ও করেছিল। পুলিশের এ নামগুলো প্রচার করার উদ্দেশ্য এটাই ছিল যে, যদি জনগণ তাদের প্রিয় প্রেসিডেন্ট হত্যা পরিকল্পনার খবর শুনে উত্তেজিত না হয় তবে কমপক্ষে তাদের প্রিয় হিরোদের জন্য তাদের মাঝে ক্রোধ ও ঘৃণা সৃষ্টি হওয়া অবধারিত। আর এ ঘটনার আকর্ষণীয় দিক হলো, যখন উল্লিখিত প্রধান সঙ্গীত ও নৃত্য শিল্পীদের নাম সংবাদপত্রে প্রকাশ হবে তখন তাদেরই সগোত্রীয় অন্যান্য শিল্পীরা এ ব্যাপারে প্রতিবাদ জানাবে যে, তাদেরকে হিরোদের কাতারে কেন গণ্য করা হয় না। পুলিশ তাদের এ দাবীর প্রেক্ষিতে আরো এমন কিছু পত্র আমদানি করবে, যা দ্বারা এটা প্রমাণিত হবে যে, উল্লিখিত ব্যক্তিরা ছাড়াও আরো অধিক সংখ্যক লোকও ইখওয়ানের তালিকার অন্তর্ভুক্ত ছিল। এদের নামও সংবাদপত্রে প্রকাশ করা হবে।
বলা হয়ে থাকে যে, যাদেরকে মৃত্যুদন্ড অথবা অন্য কোন কঠিন শাস্তি দেয়া হয়, তারা তাদের অপরাধ স্বেচ্ছায় স্বীকার করেছে। কিন্তু এক নায়ক শাসন ব্যবস্থায় অপরাধ স্বেচ্ছায় স্বীকারের কাহিনী কোন দলীয় প্রমাণ ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণের মুখাপেক্ষী নয়। স্টালিনের যুগে অপরাধ স্বীকারকারীদের কাহিনী বিশ্ববাসী ওয়াকিবহাল। প্রতিটি মানুষের সহ্য ক্ষমতার একটা সীমা থাকে। এ সীমা ছাড়িয়ে অতিরিক্ত নিপীড়ন নির্যাতন চালিয়ে প্রতিটি না করা অপরাধ যে কারো কাছে স্বীকার করিয়ে নেয়া যেতে পারে। কিন্তু এর কি জবাব রয়েছে যে, যে আদালতের সামনে এ অপরাধীদের পেশ করা হয়, সেখানে যখন মোকদ্দমার শুনানী চলে তখন এ কার্যক্রমকে টেলিভিশনে দেখানো হয়। আবার যখন কয়েদীরা নিজেদের যন্ত্রণার কাহিনী শোনাতে শুরু করে, তখন তার সাথে সাথে বন্ধ করে দেয়া হয় এবং কয়েদীকে রুদ্ধ কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয়। মিসর ও অমিসরীয় সাংবাদিকদেরকে শুনানী কার্যক্রমে শোনার অনুমতি দেয়া হয়না। এ্যমেনেষ্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধি কোর্টে প্রবেশ করতে চাইলে তাকেও নিষেধ করা হয় এবং এরপর কোর্টের কার্যক্রমের ততটুকু সংবাদপত্রে প্রকাশ হয় তা কেবল যতটুক সরকারী মাধ্যম থেকে প্রকাশিত। এটা যদি মেনেও নেয়া হয় যে, ইখওয়ানের কয়েদীরা অপরাধ স্বীকার কের নিয়েছে, তবে আমাদের কাছে এটা কোন আশ্চর্যের বিষয় নয়। তাদের সাথে জেলখানায় য়ে আচরণ করা হয়, তার প্রেক্ষাপটে কোন বন্দীর পক্ষে সে সব অভিযোগ সমর্থন করা যা সরকারী প্রেসনোটে তা আর দেশগুলোর সংবাদপত্রের চাপা হয়েছে। রেডক্রসের জেনেভা কার্যালয় এটা প্রকাশ করেছে। এ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের প্রতিনিধির রিপোর্টে এর প্রতি সমর্থন জ্ঞাপন করা হয়। এছাড়া সবচেয়ে বড় কথা হলো, আরব দেশগুলোর ছোট শিশুদের মুখেও এ সত্যের প্রতিধ্বনি হতো।
আমি এখানে শুধুমাত্র মিসরের সামরিক জিলখানার অবস্থা বর্ণনা করছি, যেখানে কেবল তাদেরকে রাখা হয় যাদের ইন্টেরোগেশন করা হতো। সেখানে ইখওয়ানের সাথে যে আচরণ করা হয় তার নিম্নলিখিত বর্ণনা দৈনিক আলমিসাকুল ইসলামী খার্তুম, সুদান সংখ্যা : ২,৩ ফেব্রুয়ারি,৬৬ এবং দৈনিক আল ইলম রাবাত, মরক্কো সংখ্যা : মার্চ ৬৬ এবং উকায জেদ্দা, সৌদী আরব ১লা মে, ৬৬ সংখ্যায় প্রকাশিত হয়। এ হলো সেসব কয়েদীর বর্ণনা যারা কোন না কোনভাবে নিজ সাথীর ওপর ঘটে যাওয়া অবস্থা বাইরে পৌছাতে সফল হয় অতঃপর এ বর্ণনা সুদান, মরক্কো এবং সৌদি আরবের সংবাদপত্র পর্যন্ত পৌঁছে :
প্রায় ত্রিশের কাছাকাছি একদল ইখওয়ানকে আনা হলো। তাদেরকে বিভক্ত করা হয় তিনটি ভাগে। প্রত্যেকের পা অপর একজনের বাহুর সাথে বেঁধে মাটিতে চিত করে মুইয়ে দেয়া হয়। এরপর দশটি ক্রেন আনা হলো। প্রথম ব্যক্তির দুটি বাহু এক নম্বর ক্রেনের সাথে বাঁধা হয়। তৃতীয় ব্যক্তির দুপায়ের গোছা বাঁধা হয় দু নম্বর ক্রেনের সাথে এভাবে এ দশটি ক্রেন ত্রিশ জনকেই শূন্যে ঝুলিয়ে দিল। ক্রেনগুলো ছিল পাঁচ সারিতে। এভাবে নানান কায়দায় তাদেরকে নির্যাতন করা হত। তাদের নির্যাতন স্টালিনের নির্যাতনকেও হার মানায়। ইখওয়ানের উপর নির্যাতনের কাহিনী এখানেই শেষ করা হল।
আজ দিকে দিকে ইসলামী পুনর্জাগরণ শুরু হয়েছে তার পেছনে ইখওয়ানুল মুসলেমুনের ভূমিকা অগ্রগণ্য। তাঁরা যদিও সে কাঙ্ক্ষিত সমাজ কায়েম করতে পারেননি তবুও তাদের চেষ্টা বিফলে যায়নি। শহীদের রক্ত কোনদিন বৃথা যায়নি যাবেওনা। তাঁদের বিলানো রক্তের উপর একদিন ইসলামী সমাজ কায়েম হবেই হবে ইনশাআল্লাহ।
শুধু মিসর নয়, ফিলিস্তিন, বসনিয়া, কাশ্মীর, ইরাক, আফগানিস্তানের তৌহিদী জনতার তপ্ত রক্ত সে কথাই সাক্ষী দিচ্ছে।
সমাপ্ত