প্রথমঅধ্যায়
ইসলামী আন্দোলনঃ ভূমিকা
ইসলামী আন্দোলনের সংজ্ঞা
ইসলামী আন্দোলন বলতে বোঝায় জনগণের দ্বারা সংগঠিত সামষ্টিক প্রচেষ্টা যা সমাজের নেতৃত্বে তথা জীবনের সর্বক্ষেত্রে ইসলামকে চালিকা শক্তি হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠা করতে চায়।
সব কিছুর আগে ইসলামী আন্দোলন হচ্ছে এক কর্মতৎপরতা, নিরন্তর কঠোর কর্মপ্রচেষ্টা। এ কাজ কেবল কথার ফুলঝুরি আর বক্তৃতা-বিবৃতি বা বইপত্র লেখাই নয়। এসবের দরকার অবশ্যই আছে, তবে তা আন্দোলনের অংশ মাত্র-নিজেই আন্দোলন নয়। সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা বলেছেনঃ এবং বলুন (হে মুহাম্মদ) তোমরা আমল করে যাও, আর আল্লাহ, তাঁর রাসূল এবং ঈমানদাররা তোমাদের আমলকে দেখে নেবেন। (সূরা তাওবাঃ ১০৫)
আন্দোলন হচ্ছে জনগণের কর্মপ্রচেষ্টা
ব্যাপক জনগণের বিশেষত মানুষের স্ব-উদ্যোগ ও গভীর বিশ্বাসভিত্তিক সম্পাদিত কর্মপ্রচেষ্টাই হচ্ছে ইসলামী আন্দোলন। ঈমানই হচ্ছে এ কর্মপ্রেচেষ্টার ভিত্তি এবং কোনো মানুষের কাছ থেকে নয়, কেবল আল্লাহর কাছ থেকে পুরস্কার পাওয়ার আশায় আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যই এ কাজ সম্পাদন করা হয়। ইসলামী পুনর্জাগরণ সম্বন্ধে যখন কোনো মুসলমান সচেতন হয়, তখন সে নিজের মধ্যে আত্মপ্রেরণা, চাঞ্চল্য ও উত্তেজনা অনুভব করে। একজন মুসলমান একদিকে যখন তার ঈমান এবং অন্যদিকে তার পারিপার্শ্বিক বাস্তবতার মধ্যে অসঙ্গতি দেখতে পায় তখনি তার মনের গভীরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। আর এ ধরণের এক মানসিক অস্থিরতা থেকেই তার মধ্যে সূত্রপাত হয় স্ব-উদ্যোগের।
এ উপলব্ধির প্রেক্ষিতে দ্বীনের প্রতি তার ভালোবাসা, আল্লাহ, তার রাসূল ও কোরআনের প্রতি ঈমান, মুসলিম উম্মাহর প্রতি তার দরদ এবং কর্তব্য পালনে তার নিজের এবং স্বজাতির ঔদাসীন্যে ব্যথিত হয়ে সে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এভাবে সে গভীর আগ্রহে কর্তব্য পালন, দুর্বলতার মূলোচ্ছেদ, আল্লাহ প্রদত্ত শরীয়াহ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে উপেক্ষিত ফরজ পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রচেষ্টায় অবদান, কোরআনের ছায়াতলে মুসলিম উম্মাহর একত্রীকরণ, আল্লাহর বন্ধুদের প্রতি সমর্থন, আল্লাহর শত্রুদের বিরুদ্ধে লড়াই, সকল আগ্রাসন অথবা অমুসলিম নিয়ন্ত্রণ থেকে মুসলিম ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার, শরীয়াহর দাবি অনুযায়ী নতুন করে খেলাফত ব্যবস্থা পুনঃপ্রতিষ্ঠা, ইসলামের দাওয়াত প্রচারের আবশ্যিক কর্তব্য পালনে নব অঙ্গীকার, সৎ কাজের আদেশ এবং অসৎ কাজের নিষেধ এবং কথায়, কাজে অথবা কমপক্ষে মনে মনে আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ চালিয়ে যাওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ হয়, জীবনের সর্বস্তরে আল্লাহর কালাম যাতে সবার উপর সমুন্নত হয় সে লক্ষ্যে সে এসব সংগ্রামে ব্রতী হয়।
সরকারী কাজের অপর্যাপ্ততা
বস্তুত একমাত্র আল্লাহর সন্তুষ্টি বিধানের লক্ষ্যে পরিচালিত কর্মতৎপরতার মাধ্যমেই ইসলামী আন্দোলন প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ওয়াক্ফ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে সরকারী বা আধাসরকারী কাজ তথা ইসলামী কাজকর্ম পরিচালনার জন্যে বোর্ড গঠন, উচ্চ পরিষদ, সমিতি অথবা ইউনিয়ন প্রতিষ্ঠা করা অথবা যে কোনো সরকারী সংস্থা গঠন করে ইসলামের স্বার্থে জোরদারভাবে কাজ করা নির্ভর করছে এসব কাজে সরকারী সংস্থায় নিয়োজিত ব্যক্তিদের আগ্রহ ও উৎসাহের ওপর। তারা এবং তাদেরকে যারা এসব পদে নিয়োগ করেন উভয়ের পার্থিব জীবনের প্রতি আকর্ষণের চেয়ে দ্বীনের প্রতি নিষ্ঠা কতটুকু তার উপরেও ইসলামী কাজের ফলাফল নির্ভর করে।
যাহোক, এসব সরকারী ও আধাসরকারী প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম সব সময় নানা দিক দিয়ে অপর্যাপ্ত ও ত্রুটিপূর্ণ। যেমনঃ
১. রাষ্ট্রীয় নীতির গণ্ডির মধ্যেই নিজস্ব এসব কার্যক্রম পরিচালিত হয়। কেননা সরকারই এসব চালু করে এবং অর্থ যোগান দেয়। সংশ্লিষ্ট নীতির প্রতি অনুগত থাকার ফলে এ সংস্থা তাদের ইচ্ছে ও পরিকল্পনা মাফিক কাজ করতে পারে না। সেজন্য ঐ বিশেষ রাষ্ট্রের স্বার্থ যতটা তারা তুলে ধরে, ইসলাম এবং বৃহত্তর মুসলিম উম্মাহর স্বার্থের ততটুকু তারা প্রতিনিধিত্ব করে না।
২. অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব প্রতিষ্ঠান পরীক্ষিত লোক দিয়ে চালানো হয় না, যারা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের জন্য আন্দোলন সংগ্রামের মধ্য দিয়ে দক্ষতা অর্জন করেছে এবং প্রত্যক্ষ ময়দানে পরীক্ষিত হয়েছে। বরং সে সব লোক দিয়ে চালানো হয় যারা রাষ্ট্রীয় অর্থায়নের সমর্থক। আর এ ধরণের লোকেরা তাদের লালসা চরিতার্থ করতে অথবা ভীতির দরুন রাষ্ট্রযন্ত্রকে তোষামোদে লিপ্ত হয়। এ ধরণের লোক রাষ্ট্রের নির্দেশ অমান্যও করতে পারে না, আবার কোনো ব্যাপারে ‘কেন’ অথবা ‘না’ বলারও ক্ষমতা রাখে না, এদের অধিকাংশই এমন চরিত্রের হয়ে থাকে। অন্যদিকে, সংখ্যাগরিষ্ঠের ক্ষেত্রে সরকারী কর্মীদের মধ্যে কেউ কেউ এমনও রয়েছেন যারা বেসরকারী ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের চেয়েও ভালোভাবে কাজ করে থাকেন। কারণ আল্লাহর প্রতি আনুগত্য, দ্বীনের প্রতি তাদের অনুরাগ এবং সঠিক পন্থায় দ্বীনকে প্রতিষ্ঠিত করার প্রাণপণ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবেই তারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে ইসলামের সেবায় নিজেদের নিবেদিত করেন।
৩. অনেক ক্ষেত্রে ইসলামের স্বার্থরক্ষায় সত্যিকার আন্তরিকতারও অভাব থাকে। এমন কি এসব কাজ পুরোপুরি রাজনৈতিক মতলব অর্জনের জন্যেও চালানো হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব কাজ কোরআনে উল্লেখিত ‘ফিতনার মাসজিদ’-এর অনুরূপ যার বাহ্যিক উদ্দেশ্য হচ্ছে ইবাদত-বন্দেগী ও তাকওয়ার চর্চা। কিন্তু এর গোপন অভিসন্ধি হচ্ছে ঈমানদারদের মধ্যে বিভেদ এবং ইসলামী আন্দোলনের কর্মীদের তৎপরতায় বিঘ্ন সৃষ্টি করা।
৪. এসব কারণেই সরকারের ইসলাম বিষয়ক কর্মসূচি জনগণের পক্ষ থেকে অভিযোগের সম্মুখীন হয়। ফলে এসব কর্মসূচি জনগণের সহানুভূতি ও সমর্থন থেকে হয় বঞ্চিত। এমন কি যেসব সরকারী আলেম রাষ্ট্রীয় নীতির রূপায়ণে নিজেদের করেন তারা জনগণের সমর্থন বঞ্চিত হয়। তারা রাষ্ট্রের চাহিদামত কথা বলে এবং রাষ্ট্রীয় নির্দেশে নীরব থাকে। তাই তারা জনগণের আস্থা হারায়। জনগণ তাদেরকে ‘সরকারী আলেম’ অথবা ‘পুলিশের এজেন্ট’ হিসেবে আখ্যা দেয়।
এসব কারণে ইসলামী শাসনের অনুপস্থিতিতে সরকারী ও আধাসরকারী ইসলামী কর্মসূচির ফলে একটি সত্যিকার ইসলামী আন্দোলন রূপ নিতে পারে না। আবার এসব কর্মসূচি যথাযথভাবে কাজে লাগালে বুদ্ধিবৃত্তিক ও ব্যবহারিক ক্ষেত্রে কিছু না কিছু অবদান রাখতে পারে এবং ইসলামী আন্দোলন ও এর প্রতিষ্ঠানসমূহে আর্থিক ও নৈতিক সমর্থন দিতে পারে। বিশেষ করে যদি সরকারী ও আধাসরকারী ইসলামী কর্মসূচিগুলো ঈমানদার ও সাহসী লোকদের নেতৃত্বে পরিচালিত হয়।
আন্দোলন হচ্ছে সামষ্টিক প্রচেষ্টা
ইসলামী আন্দোলন কেবল আল্লাহর জন্য হলেও তা একটি সংগঠিত ও সমবেত প্রচেষ্টা। ইসলামের স্বার্থে ব্যক্তির স্বেচ্ছা উদ্যোগে পৃথকভাবে ও বিভিন্ন স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে কাজ করে যাওয়াই যথেষ্ট নয়। যদিও তাদের কর্ম ও প্রচেষ্টা কেয়ামতের হিসাব নিকাশে যোগ হবে। কারণ আল্লাহ পুরুষ বা নারী কারো কর্মফল বিনষ্ট করবেন না। প্রত্যেককে তার নিয়ত ও তার কাজের যথার্থতা বিচারের পর পুরস্কৃত করা হবে। আল-কোরআনে বর্ণিত হয়েছেঃ আর যে ব্যক্তি অণু পরিমাণ তুল্য সৎকর্ম করবে সে তা দেখতে পাবে। (সূরা যিলযালাঃ ৭)
মুসলিম উম্মাহর বর্তমান পরিস্থিতিতে ভেদাভেদের অবসান ঘটিয়ে কাঙ্ক্ষিত ফল লাভের জন্য ব্যক্তিগত প্রচেষ্টাই যথেষ্ট হবে না, এ জন্য অবশ্যই সমবেত প্রচেষ্টা চালাতে হবে। আর এটিই দ্বীনি বাধ্যবাধকতা এবং বাস্তব পরিস্থিতির দাবি।
ইসলাম সংগঠিত ও সম্মিলিত প্রচেষ্টার চেতনাকে উৎসাহিত করে এবং বিচ্ছিন্ন থাকার বিরোধী। সমবেত প্রচেষ্টার সঙ্গে আল্লাহর সাহায্য থাকে। আর যে বিচ্ছিন্ন থাকে সে জাহান্নামে নিক্ষিপ্ত হবে। দলছুট ও বিচ্ছিন্ন মেষই নেকড়ের খপ্পড়ে পড়ে। তাই জামায়াত বাদ দিয়ে যদি কেউ একাকী অথবা জামায়াতের শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে নামাজ আদায় করে তাহলে তার নামাজ পূর্ণাঙ্গ হয় না। একজন ঈমানদার আরেকজন ঈমানদারের কাছে পরস্পর সংযুক্ত ইটের শক্ত গাঁথুনির মতো। সৎ ও নেক কাজে সহযোগিতা করা অন্যতম দ্বীনি ফারজ কাজ এবং পরস্পরকে সত্য ও সহিষ্ণুতার নসিহত করা ইহলৌকিক ও পারলৌকিক ক্ষতি থেকে বেঁচে থাকার অন্যতম পূর্বশর্ত।
এ কঠিন বাস্তবতায় এটিই স্বাভাবিক যে কাঙ্ক্ষিত ফল পেতে হলে সম্মিলিতভাবে কাজ করতে হবে। দু’হাতেই তালি বাজে, একাকীত্বেই দুর্বলতা, অনেককে নিয়ে চলার মাঝেই শক্তি। বড় বড় সাফল্য আসে সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে। নিশ্চয়ই ঐক্যবদ্ধ থাকলেই চূড়ান্ত যুদ্ধে জয়লাভ করা যায়। আল-কোরআনে বর্ণিত হয়েছেঃ নিশ্চয়ই আল্লাহ তাদেরকে ভালোবাসেন যারা তাঁর রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে যুদ্ধ করে, যেন তারা এক নিরেট গাঁথুনির কাঠামো। (সূরা সা’ফঃ ৪)
সম্মিলিত প্রচেষ্টায় সুসংগঠিত হওয়া উচিত। দায়িত্বশীল নেতৃত্ব, সুদৃঢ় ভিত ও স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে এ প্রচেষ্টা চালাতে হবে। স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গিই বাধ্যতামূলক পরামর্শ (শূরা) এবং আনুগত্যের মূলনীতির আলোকে নেতৃত্ব ও তৃণমূল পর্যায়ের মধ্যে সম্পর্ক নির্ধারণ করে দেয়।
রীতিনীতি অনুসরণ করে না এমন কোনো সম্মিলিত প্রচেষ্টাকে ইসলাম স্বীকার করে না। এমন কি এক সাথে জামায়াতবদ্ধ হয়ে যে নামায আদায় করা হয় তার ভিত্তি হচ্ছে সুসংগঠন ও শৃঙ্খলা। আল্লাহ সেই কাতারের দিকে দৃষ্টি দেবেন না যা সুশৃঙ্খল নয়। শুধু তাই নয়, কাতারগুলোও হতে হবে নিবিড়। কাতারের মুসল্লীদের মধ্যে কোনো ফাঁক থাকা চলবে না। কেননা এ ফাঁকে শয়তান অবস্থান নেয়। তাই দাঁড়াতে হবে কাঁধে কাঁধ ও পায়ের সাথে পা মিলিয়ে। নামাযের রুকু-সিজদাহ ও বাহ্যিক রূপই চিন্তার ক্ষেত্রে ঐকমত্যের নিদর্শন। ‘ভোদাভেদে লিপ্ত হয়ো না যাতে তোমাদের অন্তরগুলোও ভেদাভেদে আক্রান্ত না হয়’।
এ কারণে নামাজ শুরুর আগে ইমামকে লক্ষ্য রাখতে হবে তার পেছনে কাতারগুলো সোজা হয়েছে কিনা এবং তিনি মুসল্লীদেরকে ‘তাদের ভাইয়ের প্রতি সহযোগী’ হওয়ার তাগিদ দেবেন। কারণ সামগ্রিকভাবে শৃঙ্খলার স্বার্থে জামায়াতে নামাজ আদায়ের সময় সহমর্মিতা ও সহযোগিতার মনোভাব আবশ্যক।
এরপর আসে ইমামের প্রতি আনুগত্যের প্রশ্ন। ইমাম নিযুক্ত করা হয় তাকে অনুসরণের জন্যই। তিনি যখন ‘আল্লাহু আকবর’ উচ্চারণ করেন তখন তাই বলতে হয়, তিনি রুকু করলে রুকুতে যেতে হয়, সিজদায় গেলে সিজদা করতে হয়। আবার তিনি যখন তেলাওয়াত করেন তখন তা শ্রবণ করতে হয়।
কেউই শৃঙ্খলা ভঙ্গ করতে পারে না কিংবা ইমামের আগে রুকু বা সিজদা করতে পারে না, যাতে কেউ এ সুসংগঠিত, সুসমন্বিত কাঠামোতে কোনো বিশৃঙ্খলা ও অনিয়ম সৃষ্টি করে বিভ্রান্তি ছড়ানোর সুযোগ পায়। যে এরূপ করবে তার ভয় করা উচিত।
কিন্তু ইমাম যদি ভুল করেন তবে সে ভুল শোধরানো তার পেছনে কাতারবদ্ধ মুসল্লীদের জন্য কেবল সঙ্গত নয়, দায়িত্বও বটে। ইমামের সে ভুল, অনুচিত কাজ, বিস্মৃতি, কোরআন তেলাওয়াত অথবা নামাজের অন্য যে কোনো মৌলিক বিষয়ে হোক না কেন, মুসল্লীরা ইমামের ভুল ধরিয়ে দিতে পারবে। এমন কি পেছনের কাতারের মহিলা মুসল্লীরাও ইমামের ভুলের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য হাতে তালি দিতে পারবে।
জামায়াতবদ্ধ সালাত ইসলামের সামগ্রিক জামায়াতী ব্যবস্থা এবং সেনাপতি ও সৈন্যদের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক কি রকম হওয়া উচিত তারই এক ক্ষুদ্র রূপ। অর্থাৎ নেতৃত্ব না কখনো অভ্রান্ত হতে পারে, আর নিরঙ্কুশ ও অন্ধ আনুগত্যেরও না কোনো অবকাশ আছে।
লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামের পুনরুজ্জীবন
ইসলামী আন্দোলনের লক্ষ্য কী? সব বাধাবিঘ্ন দূর করে জীবনের সামগ্রিক ক্ষেত্রে ইসলামের পুনরুজ্জীবন ও পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষ্যেই ইসলামী আন্দোলন সূচিত হয়েছে। ইসলামের পুনরুজ্জীবন কথাটি নতুন নয়। এটি স্বয়ং রাসূলুল্লাহর সা. কথা যা আবু হুরাইরা রা. এক প্রামাণিক হাদিসে বর্ণনা করেছেন। হাদিসটি হচ্ছেঃ আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক শতবর্ষের শুরুতে এমন কাউকে পাঠাবেন যিনি এ দ্বীনের পুনরুজ্জীবন ঘটাবেন (আবু দাউদ ও আল হাকিম)।
এ হাদিসের অধিকাংশ ভাষ্যকার বলতে চেয়েছেন, এখানে ‘যিনি’ বলতে এক বিশেষ ব্যক্তিকে বোঝানো হয়েছে যার দ্বারা দ্বীনের পুনরুজ্জীবন ঘটবে। তারা এ প্রসঙ্গে হিজরী শতকের শেষ দিকে ইন্তেকাল করেছেন এমন কয়েকজন প্রখ্যাত ফকিহ ও ইমামের নামও উল্লেখ করেছেন যারা দ্বীনের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছিলেন। যেমন হজরত ওমর ইবনে আবদুল আজীজ (র.) (মৃত্যু ১০১ হিজরী), আল শাফেয়ী (র.) (মৃত্যু ২০৪ হিজরী) প্রমুখ। কিন্তু হিজরী তৃতীয় শতকের মুজাদ্দেদ কে হতে পারেন সে ব্যাপারে তাদের মধ্যে মতভেদ রয়েছে।
হাদিসের কোনো কোনো ভাষ্যকার এ হাদিসের ‘যিনি’ শব্দটিকে এক বচনের মতই বহুবচন অর্থেও ধরে নেয়া যেতে পারে বলে মত প্রকাশ করেছেন। অর্থাৎ ‘পুনরুজ্জীবনকারী’ বলতে কোনো এক ব্যক্তি নয়, একটি গ্রুপকেও ধরে নেয়া যেতে পারে। ইবনে আল আসির তার ‘আল জামিলিল উসূল’ গ্রন্থে এটি খুবই সম্ভব বলে উল্লেখ করেছেন। আল হাফিজ আল জাহাবী এবং অন্যান্যরাও এ মত সমর্থন করেন।
এর সাথে আরো বলা দরকার ইসলামের পুনরুজ্জীবনকারী গ্রুপে বিশেষ কোনো ব্যক্তি বা ব্যক্তিবর্গের জড়িত হওয়া আবশ্যক নয়। চিন্তা ও কর্মপন্থার একটি ধারার প্রতিনিধিত্বকারী যে কেউ এ গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন যারা দ্বীনের পুনরুজ্জীবনে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী।
একটি শতাব্দী শেষ এবং একটি শতাব্দীর সূচনাকালে উল্লেখিত হাদিসের অনুধাবন ও প্রয়োগের এটিই সবচেয়ে সম্ভাব্য ব্যাখ্যা হতে পারে। আল্লাহর কাছে প্রার্থনা, নতুন শতাব্দীর দিনগুলো যেন বিগত দিনগুলোর চেয়ে উত্তম হয় এবং আল্লাহ যেন আমাদের আগামী দিনগুলো আরো উজ্জ্বল করেন।
পুনরুজ্জীবনের কৌশল
তিন পদ্ধতিতে ইসলামী আন্দোলন পুনরুজ্জীবন আনতে সক্ষম।
প্রথম উপায় হচ্ছে, ইসলামী আন্দোলনের একটি অগ্রণী দল গঠন করতে হবে। সংহতি ও সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে গড়ে ওঠা এ অগ্রণী দল দক্ষতার সঙ্গে সমকালীন সমাজকে ইসলামের দিকে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে। আর এটি করতে গিয়ে তারা না বিচ্ছিন্ন হবে, না ঔদাসীন্যকে প্রশ্রয় দেবে। কেবল ইসলাম নির্ধারিত নির্দেশনাবলীর দ্বারাই তারা মুসলিম সমাজের জরাগ্রস্ততার প্রতিবিধানে সক্ষম হবে। এ অগ্রবর্তী দল এমন ব্যক্তিদের নিয়েই গঠন করতে হবে যারা দৃঢ় বিশ্বাস, গভীর জ্ঞান ও সমঝদার এবং ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের ভিত্তিতে হৃদয়ের বন্ধনে আবদ্ধ।
দ্বিতীয় উপায় হচ্ছে, মুসলমানদের মধ্যে জনমত সৃষ্টি করতে হবে। যেখানে বৃহত্তর জনগোষ্ঠীর মতের প্রতিফলন ঘটবে, যে জনমত ইসলামী আন্দোলনের সার্বিক উদ্দেশ্য জেনে শুনে আন্দোলনকারীদের ঈমান ও দক্ষতার প্রতি আস্থাশীল হয়ে তাদেরকে ভালোবাসকে ও সমর্থন দিয়ে যাবে। একই সাথে এ জনগোষ্ঠী ইসলাম, ইসলামী আন্দোলন ও তার নেতৃত্বের বিরুদ্ধে অপপ্রচারের কুপ্রভাব থেকেও নিজেদেরকে মুক্ত রাখবে।
তৃতীয় উপায় হচ্ছে, বিশ্বব্যাপী এমন একটি আবহ সৃষ্টি করা, যাতে বিশ্বের মানুষ ইসলামের মর্মবাণী ও সভ্যতা-সংস্কৃতির প্রকৃত রূপ অনুধাবন করে মুসলিম উম্মাহর অস্তিত্ব স্বীকার করে নেবে। সেই সাথে তারা মধ্যযুগের উদ্গত ধর্মান্ধতা এবং ইসলাম বিরোধী মহলের মিথ্যাচার ও বানোয়াট বিকৃত অপপ্রচারের অপপ্রভাব থেকেও মুক্ত থাকবে। এ জনমত অন্যান্য বিশ্বশক্তির পাশাপাশি মুসলিম শক্তির অভ্যুদয়ের প্রতি সহনশীল হবে। কারণ তারা উপলব্ধি করতে পারবে, মুসলমানরা যেহেতু নিজ নিজ দেশে সংখ্যাগরিষ্ঠ তাই তাদের ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী স্বীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েমের অধিকার তাদের রয়েছে। এটি বহুত প্রশংসিত ও প্রচারিত গণতান্ত্রিক রীতিরই দাবি এবং রীতি মোতাবেক বিশ্বের অন্যতম মহৎ আদর্শ হিসেবে ইসলামের বিশ্বজনীন, মানবতাবাদী আদর্শ প্রচারের অধিকারও তাদের রয়েছে। এ আদর্শের একটি অতীত আছে, বর্তমান আছে ও ভবিষ্যত আছে এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হচ্ছে বর্তমান বিশ্বে আদর্শের একশ কোটিরও বেশি অনুসারী রয়েছে।
ইসলামী আন্দোলনের অগ্রাধিকার
আগামীতে যে সব ক্ষেত্রে ইসলামী আন্দোলনের কাজ করা আবশ্যক তা ব্যাপক ও বিস্তৃত। আন্দোলনের সক্রিয় নেতা ও তাত্ত্বিকদের এসব ক্ষেত্র নিয়ে সতর্কতার সাথে পর্যালোচনা করা উচিত। এ ধরণের পর্যালোচনা অবশ্যই প্রমাণিত, সঠিক তথ্য এবং পরিসংখ্যান ভিত্তিক হতে হবে।
শিক্ষাক্ষেত্র
বিজয় প্রত্যাশী প্রজন্ম, মানবিক গুণে গুণান্বিত সদস্য এবং ইসলামী অগ্রণী দল গড়ে তোলার জন্য এক্ষেত্রের কাজ গুরুত্বপূর্ণ। এ গ্রুপের সদস্যরা জ্ঞান, কাজ, দাওয়াত ও সংগ্রামসহ ইসলামকে সম্যক রূপে অনুধাবন এবং বিশ্বাস করবে। এ প্রজন্মের প্রথম কাজ হবে স্বজাতির কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। অতপর সেই বাণী সারা বিশ্বে ছড়িয়ে দেয়া। এ কাজ তাদের পক্ষে তখনই করা সম্ভব হবে যখন তারা ইসলামের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ এবং এ সম্পর্কে অন্তরে সুস্পষ্ট ধারণা লালন, আদর্শকে হৃদয়ের গভীরে প্রোথিত এবং জীবনের সকল ক্ষেত্রের আচরণবিধি হিসেবে ইসলামের নৈতিকতাই তাদের পরিচালিকা শক্তি হিসেবে কাজ করে। তারা আল্লাহর বন্দেগী ও মানুষের সঙ্গে শরীয়াহ মোতাবেক আচরণ করবে এবং অনুধাবন করবে যে ইসলামের একটি পদ্ধতি ও সভ্যতা রয়েছে যা মুসলিম উম্মাহর বর্তমান অবস্থার উন্নতি ঘটাবে, আল্লাহর কালামের ভিত্তিতে মানব জাতিকে একত্রিত করবে এবং বিভ্রান্ত মানব সমাজকে সর্বোত্তম ও সঠিক দিক নির্দেশ দেবে।
রাজনৈতিক ক্ষেত্র
রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের লক্ষ্য হবে সকল দুর্বলচিত্তের ও বিশ্বাসঘাতকদের হাত থেকে ক্ষমতা ছিনিয়ে নিয়ে সাহসী ও সৎ লোকদের হাতে অর্পণ করা- যারা না নিজেরা উচ্চপদ দখল করে ক্ষমতার দাপট দেখাতে চায়, না দেশকে দুর্নীতিগ্রস্থ করতে চায়। বরং আল্লাহ তাদেরকে ক্ষমতায় বসালে তারা নামাজ কায়েম ও যাকাত আদায়ের ব্যবস্থা করে এবং সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজে নিষেধাজ্ঞা জারি করে।
সামাজিক ক্ষেত্র
সামাজিক কর্মসূচির লক্ষ্যই হবে দারিদ্র্য, অশিক্ষা, রোগব্যাধি ও পাপাচার দূর করা এবং যে সব সন্দেহভাজন প্রতিষ্ঠান মুসলিম উম্মাহর পরিচিতি ও ধর্মের সঙ্গে সম্পর্ক শিথিল করার হাতিয়ার হিসেবে সামাজিক ও মানবিক কাজে লিপ্ত তাদের মোকাবিলা করা।
অর্থনৈতিক ক্ষেত্র
অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের কর্মসূচি সমাজকে আর্থিক দুর্গতি ও সুদভিত্তিক ঋণের বোঝা থেকে মুক্ত করবে এবং ইসলামী অর্থব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার পটভূমি তৈরী করে সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখবে।
জিহাদের ক্ষেত্র
জিহাদের লক্ষ্য হবে মুসলিম ভূখণ্ড পুনরুদ্ধার করা, ইসলামী দাওয়াত ও মুসলিম উম্মাহর বিরোধী শক্তির সাথে লড়াই করা, মুসলমানদের ইচ্ছার স্বাধীনতা এবং মুসলমানদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার সংরক্ষণ করা।
মিডিয়া ও প্রচারের ক্ষেত্র
এ কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে ইসলামের আদর্শ এমনভাবে প্রচার এবং ইসলামের শিক্ষা এমনভাবে ব্যাখ্যা করা যেন এ আদর্শে মধ্যপন্থার বৈশিষ্ট্য ও ব্যাপকতা স্পষ্ট হয়ে ওঠে। ফলে সব ধরণের অস্পষ্টতা এবং সত্যের স্বচ্ছতাকে বিনষ্ট করতে পারে এমন সব মিথ্যাচার নির্মূল হয়ে যাবে। এ জন্য প্রকাশনা থেকে শুরু করে অডিও-ভিজুয়ালসহ সকল ধরণের মিডিয়া ব্যবহার করতে হবে।
বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্র
এ কাজের উদ্দেশ্য হবে ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে মুসলিম ও অমুসলিম মানসে ইসলাম সম্পর্কে প্রচলিত ভ্রান্ত ধারণার সংশোধন করে সঠিক ধারণা সৃষ্টি করা এবং সে সব ভ্রান্ত ধারণা ও ত্রুটিপূর্ণ ফতোয়া (আইনগত মতামত) সংশোধন করা। কোনো কোনো ইসলামী গ্রুপের মধ্যে ভ্রান্ত মতবাদ ব্যাপকভাবে চালু রয়েছে। সেহেতু ইসলামী আন্দোলনকে সঠিকভাবে উপলব্ধি করার জন্য এসবের অবসান ঘটানো দরকার। এ উপলব্ধি কোরআন-সুন্নাহ ও শরীয়াহর মূলনীতি থেকে উৎসারিত বৈধ ভিত্তির উপর গড়ে উঠবে এবং এ চেতনা ও উপলব্ধি বিশেষভাবে শিক্ষিত মুসলমানদের মধ্যে সৃষ্টি করতে হবে। কারণ ইসলামকে সঠিক ও যথার্থভাবে জানার আসলেই কোনো সুযোগ এ শ্রেণীর নেই।
দায়িত্ব বণ্টন
সকল ক্ষেত্রে কাজ করার জরুরী এবং কোনোটাই অবহেলা করা বা ফেলে রাখা উচিত নয়। এ ব্যাপারে অবশ্য করণীয় হচ্ছে, একদিকে প্রত্যেক ক্ষেত্রের কি কি প্রয়োজন এবং অন্যদিকে আমাদের কাছে কি জনশক্তি ও সামর্থ্য আছে সেটি বিবেচনায় রেখে প্রত্যেক ক্ষেত্রের জন্য জনশক্তি ও সামর্থ্য বণ্টন করে দেয়া।
রাসূলুল্লাহ সা. এর জামানায় সকল মুসলমানকে জিহাদে যেতে পবিত্র কোরআনে নিষেধ করা হয়। পবিত্র সেই ক্ষেত্র কোনটি যেদিকে লক্ষ্য রেখে এ নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সেটি কোনো অংশে জিহাদের ময়দানের চেয়ে কম পবিত্র ও গুরুত্বপূর্ণ ছিল না। বরং এ ক্ষেত্রটি কখনো কখনো অধিক গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কারণ এ ক্ষেত্রটি মুসলমানদেরকে জিহাদের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে এর পথ প্রশস্ত করে দেয় এবং এটি অবহেলা করার বিরুদ্ধে সতর্ক করে দেয়। আর সে ক্ষেত্রটি হচ্ছে দ্বীনকে অনুধাবন করার লক্ষ্যে জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা।
সূরা তাওবায় যারা জিহাদ-বিমুখ হয় তাদেরকে ধিক্কার দিয়ে কঠিন শাস্তির কথা বলা হয়েছে। এ সূরার ১২২ নং আয়াতে মহান আল্লাহতায়ালা বলেনঃ ঈমানদারদের সকলকে একত্রে জিহাদে যাওয়া ঠিক নয়। সুতরাং তাদের প্রত্যেক দলের মধ্য হতে একটি করে অংশ যেন জিহাদে যায়। যাতে অবশিষ্ট লোক দ্বীনি জ্ঞান-গবেষণায় আত্মনিয়োগ করতে পারে এবং জিহাদে যোগদানকারীরা নিজ কওমে ফিরে এলে যাতে তারা অসৎ কাজ সম্পর্কে সতর্ক করতে পারে।
এটিই হচ্ছে সংশ্লিষ্ট কর্মীবাহিনীর দায়িত্ব বণ্টনের এবং বিশেষজ্ঞ হওয়ার জন্য দৃঢ় আহ্বান।
গুরুত্ব ও অগ্রাধিকারের ভিত্তি
ইতিপূর্বে বর্ণিত অগ্রাধিকার চিন্তার আলোকে আগামীতে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ কতিপয় বিষয়ের প্রতি ইসলামী আন্দোলনকে মনোযোগ দিতে হবে। বিষয়গুলো হচ্ছেঃ
১. বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষেত্রে বেশ কিছু ভাবধারার স্পষ্ট ব্যাখ্যা এবং এসব ব্যাখ্যা সকলের বোধগম্য ও গভীরভাবে তুলে ধরার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করতে হবে। এটিকে আমরা ‘নতুন ফিকাহ’ হিসেবে অভিহিত করতে পারি।
২. সমাজের কোন কোন শ্রেণীর মধ্যে আন্দোলনের বিস্তার ঘটানো যেতে পারে এবং ইসলামের প্রচার প্রসারের ক্ষেত্রে কোন শ্রেণীকে ইসলামী পুনর্জাগরণের মূলস্রোতে শামিল করা যায় সেদিকে দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত করা।
৩. শিক্ষা ক্ষেত্র বিশেষ করে যেখানে ঈমান ও আকীদার পরিশীলনের প্রশ্ন জড়িত সেখানে ভবিষ্যত নেতৃত্বের প্রস্তুতি ও গুণাবলী সৃষ্টিতে নির্দিষ্ট গুণগত মানের ওপর দৃষ্টি দেয়া।
৪. স্থানীয় ও বিশ্ব রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে চিন্তা ও চেতনার যে উন্নয়ন ঘটেছে তার প্রতি দৃষ্টি দেয়া যাতে করে মুসলিম বিশ্বের বিচ্ছিন্নতা ও অবরোধ ভেদ করে রাজনৈতিক ক্ষেত্রে আন্দোলনের বিশ্বজনীনতা এবং গতিশীলতা নিশ্চিত করা যায়।
পরবর্তীতে এ চারটি কর্মক্ষেত্রের প্রত্যেকটির ওপর আলাদা আলাদাভাবে আলোকপাত করা হবে।