পরিশিষ্টঃ ইবনে তাইমিয়ার ফতোয়া
১. অন্যায় অবিচার ও দুষ্টের দমনে সরকারী পদ গ্রহণ
শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়াকে রা. এক ব্যক্তি সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, যে ব্যক্তি সরকারী পদ গ্রহণ করে কয়েকটি জায়গীরের দায়িত্ব লাভ করেছিল, যার প্রজাবৃন্দ সরকারের নিয়মানুযায়ী আরোপিত কর পরিশোধ করতে বাধ্য ছিল। ঐ ব্যক্তি তার সকল প্রচেষ্টা নিয়োজিত করে জনগণের কাঁধ থেকে অন্যায় অবিচারের সব বোঝা তুলে নিতে নিয়োজিত হলো এটি বিবেচনা করে যে সে যদি পদত্যাগ করে, তবুও অবিচার তো থেকে যাবে, যদি এর চেয়ে খারাপ নাও হয়। যদি লোকটি অর্ধেক খাজনা মওকুফ করে প্রজাদের বোঝা লাঘব করতে পারে এবং বাকি অর্ধেক আদায় করে জনগণের কল্যাণেই ব্যয় করতে পারে তাহলে যতোটা সম্ভব অবিচার লাঘব করার এ নিয়তের কারণে তার কি সরকারী পদে বহান থাকা উচিত, নাকি অবিচার দূর হবে না বরং তার পদত্যাগের কারণে বাড়তে পারে এটি জেনেও অন্যের হাতে জায়গীর তুলে দিয়ে তার পদত্যাগ করা উচিত? সে যদি সরকারী পদ আঁকড়ে থাকে তবে কি তার গুনাহ হবে? যদি তা না হয়, তবে তাকে তার পদে বহাল থাকতে বলা সঠিক হবে কি? তার জন্যে কোনটি উত্তম হবে- অবিচার দূর করার প্রচেষ্টায় পদে বহাল থাকা নাকি পদত্যাগ করে অবিচার অব্যাহত রাখা এবং বাড়তে দেয়া? প্রজারা তাদের ওপর থেকে জুলুম অবসানের মাধ্যমে উপকৃত হওয়ার দরুন ঐ ব্যক্তির ক্ষমতায় থাকা যদি পছন্দ করে তবে তার কি থাকা উচিত হবে?
ইমাম ইবনে তাইমিয়া উত্তরে বলেন, সকল প্রশংসা আল্লাহতায়ালার। হ্যাঁ, তার ক্ষমতায় থাকা উচিত যদি তিনি সৎ মানুষ হন এবং যতোটা সম্ভব অবিচারের বোঝা দূর করার চেষ্টা চালিয়ে যান। যদি অন্য কোনো ব্যক্তির চেয়ে তার থাকা উত্তম হয় এবং যদি অন্যের কাছে জায়গীর তুলে দেয়ার চেয়ে তার নিয়ন্ত্রণে থাকাই অধিক কল্যাণকর বলে বিবেচিত হয়। তিনি সরকারী পদে থাকতে পারেন এবং এরূপ করলে তার গুনাহ হবে না। যদি এর চেয়ে ভালো কোনো কর্তব্য তার না থাকে তবে এ পদ ছেড়ে দেয়ার পরিবর্তে বহাল থাকাই অধিক উত্তম।
অন্য কেউ যদি না থাকে তবে এ ধরণের লোকের জন্যে এ পদে থাকাই কর্তব্য। কারণ সম্ভাব্য সকল পন্থায় সুবিচার প্রতিষ্ঠা এবং এ অবিচারের মূলোৎপাটন একটি সামষ্টিক কর্তব্য। নিজেকে সক্ষম মনে করলে এবং অন্য কেউ না থাকলে যে কোনো ব্যক্তিরই এ কর্তব্য পালন করা উচিত। কিন্তু যে ব্যক্তি দায়িত্ব নেবে তাকে এমন কোনো অবিচার দূর করার জন্যে চাপ দেয়া উচিত নয় যেটা তার আয়ত্তের মধ্যে থাকে না।
জায়গীরের প্রজাদের ওপর শাসকরা যে কর ধার্য করেন তা প্রত্যাহারের জন্যে ঐ ব্যক্তির কাছে আবদার জানানো উচিত নয় যা তার ক্ষমতার মধ্যে নাও থাকতে পারে। এছাড়া শাসক ও তাদের প্রতিনিধিরা যে তহবিল দাবি করেন, খাজনা সংগৃহীত না হলে তা কিন্তু পরিশোধ করা যাবে না। আর ঐ ব্যক্তি যদি এ দাবি না মেটান তাহলে তারা অন্য কাউকে জায়গীরের দায়িত্ব দিয়ে দেবে। তখন সে ব্যক্তি অত্যাচার অবিচার চালিয়ে যাবে অথবা এর মাত্রা বৃদ্ধি করবে। সুতরাং শাসকদের সকল খাজনা আদায়ের সুযোগ দেয়ার পরিবর্তে কিছু কিছু খাজনা দিয়ে দেয়া অনেক ভালো। কারণ ঐ ব্যক্তি যদি যথাসম্ভব ন্যায়পরায়ণ হওয়ার চেষ্টা করেন তাহলে তিনি অন্যদের তুলনায় উত্তম এমনকি তিনি দুষ্ট ব্যক্তিদের অন্যায় থেকে বাঁচার জন্যে তাদের কিছু দাবি পূরণও করেন। ঐ ব্যক্তি যদি নিজে জুলম না করে মুসলমানদের কাছ থেকে কর আদায় করেন তবে পুরস্কৃত হবেন এবং উপরোক্ত পরিস্থিতিতে তিনি যদি কর আদায়ও করেন তবে তাকে শাস্তি দেয়া হবে না। তিনি যদি সুবিচার নিশ্চিত করার স্বার্থে যথাসাধ্য চেষ্টা করেন তবে তাকে দুনিয়ায় কিংবা আখেরাতে সাজা দেয়া হবে না।
ঐ ব্যক্তি এতিমদের অভিভাবক, ওয়াকফের ট্রাস্টি, বাণিজ্যের অংশীদার অথবা সেই ব্যক্তির মতো যিনি অন্যদের পক্ষ থেকে অথবা অন্যদের বদলে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি সেই ব্যক্তির মতো যিনি গ্রাহকদের পক্ষ থেকে তাদের মূলধনের একটি অংশ একজন জালেম শাসককে দিয়ে দেন যদি সেটিই গ্রাহকদের স্বার্থরক্ষার একমাত্র উপায় হয়। সে ক্ষেত্রে ঐ লোকটি সঠিক কাজটিই করবেন, ভুল নয়। তিনি শাসকদেরকে যা দিচ্ছেন তাতো রিয়েল এস্টেট ও সেলস ট্যাক্সের মতোই যা খাজনা সংগ্রাহকদেরকে দিতে হয়। কেননা যে কোনো লোক এসব দেশে নিজের জন্যে অথবা অন্যদের পক্ষ থেকে এ লেনদেন করেন, তাকে এসব কর আদায় করে কর্তৃপক্ষকে দিতে হয়। তিনি যদি কর আদায় না করেন তাহলে এ কর ছাড়া তার অধীনস্থদের স্বার্থও রক্ষা করতে পারবেন না। ফলে তার অধীনস্থদের এমনকি খোদ নিজের স্বার্থও ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
অনেকে মনে করেন প্রজাদের ওপর সামান্য একটু অবিচার মনে না নেয়ার জন্যে এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে দেয়া উচিত নয়। জনগণ যদি এ মত মেনে নেয় তাহলে অবিচার ও দুর্নীতি নিশ্চিত বেড়ে যাবে। কারণ তাদের অবস্থা হবে সেই মুসাফিরদের মতো যারা দস্যুদের দ্বারা আক্রান্ত হয়। মুসাফিররা যদি দস্যুদের কিছু অর্থ দিয়ে শান্ত না করে তাহলে দস্যুরা তাদেরকে হত্যা করে সব অর্থকড়ি লুট করে নেবে। কেউ যদি মুসাফিরদেরকে বলে, দস্যুদেরকে তোমাদের অর্থ দেয়া অন্যায়, এর অর্থ হচ্ছে সে তাদেরকে এ সামান্য অর্থ ডাকাতদের হাতে তুলে না দেয়ারই পরামর্শ দিচ্ছে। কিন্তু তারা যদি এ পরামর্শ মোতাবেক কাজ করে তাহলে তারা কেবল এ সামান্য পরিমাণ নয় বরং সমস্ত অর্থ কড়ি হারাবে। ধর্ম তো দূরের কথা, কোনো বিবেক বোধসম্পন্ন মানুষই এ ধরণের পরামর্শ দিতে পারে না। সর্বশক্তিমান আল্লাহতায়ালা তাঁর রাসূল সা. কে পাঠিয়েছেন যথাসম্ভব মানুষের কল্যাণ বিধান, দুষ্টের দমন ও তা উৎপাটনের জন্যে।
জালেম শাসকের অধীনে সরকারী পদ গ্রহণকারী সৎ ব্যক্তি যদি যথাসম্ভব কম খাজনা আদায় করে বড় ধরণের ক্ষতি থেকে মানুষকে বাঁচিয়ে নিতে পারে, আর এ লোক যদি সরকারী পদ ছেড়ে দেয় তাহলে অন্য কিছু তো করতে পারবেই না বরং তার জায়গায় অন্য লোক এসে জনগণের কাছ থেকে সব খাজনাই আদায় করে নেবে। আর কোনো ক্ষতি থেকে বাঁচাতে পারবে না। সুতরাং নেক নিয়তে সরকারী পদ গ্রহণকারী ব্যক্তি তার কাজের জন্যে পুরস্কৃত হবে এবং দুনিয়া ও আখেরাতে এজন্যে তাকে শাস্তি ভোগ করতে হবে না।
এ ধরণের লোক এতিমের অভিভাবক ও ওয়াকফের ট্রাস্টির মতো যারা সরকারের অন্যায়ভাবে আরোপিত কর পরিশোধ করেও তাদের কর্তব্য পালন করে। যদি তা না করে দায়িত্ব ছেড়ে দেয় তাহলে এমন একজন সে স্থানে আসলে যে অবিচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে। সুতরাং সৎ ব্যক্তিদের সরকারী পদে বহাল থাকা অনুমোদনযোগ্য এবং জালেম শাসককে এ ধরণের কর প্রদান করলে তাদের কোনো গুনাহ হবে না। বরং তাদের পদে থাকাই এমন একটি কর্তব্য যা পালন করা উচিত।
এ নীতি কোনো জায়গীরে খাজনা আদায়ের জন্যে নিযুক্ত সৈনিকের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য। সে জনগণের কাছ থেকে কম খাজনা আদায় করলেও সবটাই সরকারকে দেয় না। কেননা এ অর্থ থেকেই তাকে অস্ত্রশস্ত্র, অশ্ব ও অন্যান্য জিনিসপত্র ক্রয় করতে বলা হয়েছে। একজন সুসজ্জিত সৈনিক যুদ্ধেও মুসলমানদের সেবার ভালো সুযোগ পায়। কেউ যদি তাকে বলে যে তার খাজনা আদায়ের কোনো অধিকার নেই এবং তার এ জায়গীর ত্যাগ করা উচিত, সে ধর্ম সম্পর্কে অজ্ঞতাবশত বলে থাকে। কেননা তার জায়গীরদারী ত্যাগের ফলে এমন এক ব্যক্তি তার স্থলাভিষিক্ত হতে পারে যে অত্যাচারের মাত্রা বাড়িয়ে দেবে এবং মুসলমানদের কল্যাণে কিছু্ই করবে না। এমনকি তুর্কীও আরব সৈন্যদের উপস্থিতিও উত্তম। কারণ তারা অন্য সৈন্যদের চেয়ে ভালো। জনগণের প্রতি সুবিচারে আগ্রহী এবং যথাসম্ভব অবিচার অনাচার নিরসনে তৎপর। এ সৈনিক মুসলমানদের জন্যে ভালো। সুতরাং সে স্থলে অন্যকে জায়গীর ছেড়ে দেয়া কম উপকারী এবং অধিক অবিচারপূর্ণ হতে পারে।
এ ধরণের যে কোনো ন্যায়পরায়ণ ও জনকল্যাণকামী কর্মকর্তা ও কর্মচারীই তাদের উত্তম কর্মের জন্যে পুরস্কৃত হবে এবং তাদের ক্ষমতার বাইরে কোনো ভালো কাজ করতে না পারার জন্যে তাদেরকে সাজা দেয়া হবে না। সুতরাং তারা যা সংগ্রহ করে ও ব্যয় করে সেজন্যে তাদের কাছ থেকে কৈফিয়ত তলব করা হবে না যদি তারা অন্য কিছু নাও করতে পারে। কেননা তারা যদি খাজনা আদায় না করে এবং জনকল্যাণে তা ব্যয় না করে তাহলে বৃহত্তর ক্ষতির কারণ হতে পারে। [শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়ার ‘ফতোয়া’, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ৩৫৬–৩৬০।]
২. একই পরিস্থিতিতে ভালো মন্দের সংঘাত
ভালো ও মন্দের সংঘাত সম্পর্কিত একটি অধ্যায়ে শায়খুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়া বলেন- যেহেতু এটি প্রমাণিত যে ভালো বিষয় কল্যাণ বয়ে আনে, সেহেতু ভালো কাজ না করা অন্যায় বলে বিবেচিত আর অন্যায় হচ্ছে ক্ষতিকর। একটি অবাঞ্ছিত বিষয়ের মধ্যেও কিছু কল্যাণ থাকতে পারে। আবার দু’টি ভালো কাজ একত্রে সম্পন্ন করা না গেলে অধিকতর ভালো কাজটি আগে করা উচিত। দু’টি মন্দ বিষয় এড়ানো সম্ভব না হলে, কম মন্দটি গ্রহণ করা যেতে পারে। আবার একটি ভালো ও একটি মন্দ, যা হয় একত্রে গ্রহণ করা দরকার নয়তো পরিত্যাগ করা দরকার- এমন পরিস্থিতিতে বৃহত্তর কল্যাণের কথা বিবেচনা করে গ্রহণ অথবা বর্জন করতে হবে। অর্থাৎ ভালো বিষয়টিতে বেশি উপকার থাকলে সেটি গ্রহণ করতে হবে অথবা মন্দ বিষয়টি গ্রহণ করতে হবে যদি বড় ধরণের ক্ষতি এড়ানো যেতে পারে।
প্রথম ধরণের সংঘাতটি হচ্ছে কর্তব্য (ওয়াজিব) ও পছন্দনীয় (মুস্তাহাব) কাজের মধ্যে বিরোধের মতো। যেমন সাদকার চেয়ে ঋণ পরিশোধকে অগ্রাধিকার দেয়া। কিংবা সকল মুসলমানের জন্যে বাধ্যতামূলক ফরজ কাজ এবং সকল মুসলমানের পক্ষে যে কোনো মুসলমানের করণীয় ফরজ কাজ এবং সকল মুসলমানের পক্ষে যে কোনো মুসলমানের করণীয় ফরজ দায়িত্ব পালনের মধ্যে কোনটি অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য।
দ্বিতীয় শ্রেণীর বিরোধটি হচ্ছে জিহাদের অর্থ ব্যয়ের পরিবর্তে কারো স্ত্রী ও পরিবারের জন্যে অর্থ ব্যয়কে অগ্রাধিকার দেয়ার মতো সংঘাতপূর্ণ বিষয়। এখানে জিহাদ ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতার বিষয় নয়। আবার জিহাদের চেয়ে পিতামাতাকে আর্থিক সাহায্য প্রদান অগ্রাধিকার পাওয়া উচিত। এ প্রসঙ্গে সহীহ হাদিসে বলা হয়েছেঃ রাসূলুল্লাহ সা. কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল, কোন কাজটি অধিক উত্তম। তিনি বলেন, যথসময়ে নামাজ পড়া, অতঃপর পিতামাতার প্রতি সদ্ব্যবহার করা, তারপর আল্লাহর পথে জিহাদ।
আবার জিহাদ হজ্বের ওপর অগ্রাধিকার পাবে যখন তা ব্যক্তিগত বাধ্যবাধকতার পর্যায়ে পড়ে যদিও হজ্ব একটি ফরজ কাজ। এমনিভাবে দু’টি জায়েজ কাজের মধ্যেও কোরআন সুন্নাহর আলোকে একইভাবে অগ্রাধিকার নির্ণয় করতে হবে।
আল্লাহর জিকিরের চেয়ে কোরআন পাঠ অগ্রাধিকার পাওয়ার যোগ্য যদি দু’টির ক্ষেত্রে সমানভাবে হৃৎপিণ্ড ও জিহ্বার ব্যবহার হয়। আবার এ দু’টির ওপরে নামাজ অগ্রাধিকার পাবে যদি নামাজে হৃদয়ের সংমিশ্রণ থাকে। অন্যথায় কোরআন তেলাওয়াতের পরিবর্তে জিকিরকে প্রাধান্য দিতে হবে যদি সে তেলাওয়াতে মনের সংশ্রব না থাকে। অবশ্য এটি ফিকাহর বিস্তৃত আলোচনা সাপেক্ষ বিষয়।
তৃতীয় ধরণের সংঘাত হচ্ছে কোনো মহিলার মাহরাম ছাড়া একটি সফর এবং দারুল হরবে অবস্থানের মতো বিরোধ। যেমন হযরত উম্মে কুলসুম দারুল হরবে অবস্থান করেছিলেন। এ প্রসঙ্গে অবতীর্ণ হয়ঃ হে মুমিনগণ! যখন তোমাদের নিকট মুসলমান নারীগণ হিজরত করে আসে, তখন তোমরা তাদেরকে পরীক্ষা করে নাও (সূরা মুমতাহিনাঃ ১০)।
জিহাদের ফিকাহতে অসামরিক নারী-শিশুকে হত্যা করা হারাম হলেও তারা কোনো ধরণের যুদ্ধে জড়িত হলে প্রয়োজনবোধে তাদেরকে হত্য করা যেতে পারে। যেমন ক্ষেপণাস্ত্র জাতীয় অস্ত্র ব্যবহার করে অথবা নৈশ অভিযানে। সুন্নাহতে এ প্রসঙ্গে তায়েফের অবরোধে আঘাত হানা এবং ক্ষেপণাস্ত্র জাতীয় অস্ত্র দিয়ে পাথর নিক্ষেপের কথা বলা হয়েছে। এছাড়া মুসলিম দেশে বসবাসকারী কাফেরদের বিরুদ্ধে নৈশ অভিযানের কথাও বর্ণিত হয়েছে। এ রায়ের লক্ষ্য হচ্ছে ফিতনা এড়ানোর জন্যে এর সাথে জড়িতদের হত্যা করা, অন্যথায় যাদেরকে হত্যা করা যায় না।
ফকিহদের বর্ণিত তাতাররুসের [তাতাররুস সেই পরিস্থিতি যখন শত্রুরা তাদের নিজেদের নারী ও শিশুকে অথবা মুসলিম যুদ্ধবন্দীদেরকে মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে। এর উদ্দেশ্য হচ্ছে মুসলিম বাহিনীকে আক্রমণ থেকে বিরত থাকতে বাধ্য করা।] ইস্যুটিও অনুরূপ। কাফেররা বিদ্রোহের যে বীজ বপন করে তার বিরুদ্ধে লড়াই হচ্ছে জিহাদ। অপেক্ষাকৃত কম অশুভ দিক স্বীকার করেও এ যুদ্ধ করতে হয়। সুতরাং ফকিহরা একমত যে ঢাল হিসেবে ব্যবহৃত অংশগ্রহণকারীদের হত্যা করার মাধ্যমেই যদি মুসলমানদের ক্ষতি এড়ানো যায় সে ক্ষেত্রে তাদের হত্যা করা যেতে পারে। অবশ্য এ ব্যাপারে দ্বিমতও রয়েছে।
আরেক ধরণের বিরোধ হচ্ছে যখন কোনো মুসলমানকে চরম ক্ষুধার্ত অবস্থায় মৃত পাণীর গোশত ভক্ষণ করতে হয়। এক্ষেত্রে এ খারাপ কাজটির মাধ্যমেই কেবল জীবন রক্ষার মতো একটি ভালো কাজ হতে পারে। ঠিক এরকমই আরেকটি বিষয় হচ্ছে, কোনো দূষণীয় ওষুধ সেবন করা যায় কিনা যখন রোগ নিরাময়ের চেয়ে এর ক্ষতিটাই বেশি এবং একারণে যে এর পরিবর্তে অন্য ওষুধ থাকলেও তাতে রোগ নিরাময় অনিশ্চিত। বিষয়টি ওষুধ হিসেবে মদপান করার ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য।
একটি অনিষ্টকে দু’টি ক্ষেত্রে বরদাশত করা যায়, যদি এর ফলে গুরুতর অনিষ্টকে এড়ানো যায় যা অন্য কোনোভাবে পরিহার করা সম্ভব নয় এবং যদি এর ফলে এমন কোনো কল্যাণ হয় যা বাদ দেয়া যায় না কিংবা অন্য কোনোভাবে অর্জন করা যায় না। একটি স্বার্থ বা কল্যাণকে দু’টি ক্ষেত্রে পরিত্যাগ করা যেতে পারে যদি এর ফলে বৃহত্তর স্বার্থের ক্ষতি হতে পারে অথবা যদি এতে ব্যাপকতর ক্ষতির আশঙ্কা থঅকে। এ বিষয়টি ধর্মীয় ভারসাম্যের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।
দুনিয়াবী জিন্দেগীতে কোনো ক্ষতির কারণে কোনো কর্তব্য থেকে অব্যাহতি অথবা পার্থিব জীবনে কোনো কল্যাণের আশায় কোনো নাজায়েজ বিষয়কে মেনে নেয়া- যেমন সফরের কারণে রোজা থেকে অব্যাহতি এবং অসুস্থতার দরুন হজ্বকালে কিছু নিষিদ্ধ কাজের অনুমতি, অসুস্থতার কারণে নামাজের কিছু মৌলিক শর্ত পালনে অব্যাহতি-এসব ব্যাপার ধর্মীয় শিথিলতা এবং কঠোরতা হ্রাসের আওতায় পড়ে। এ বিষয়ে বিভিন্ন মাজহাবের মধ্যে মতপার্থক্য থাকতে পারে। কিন্তু পূর্বোক্ত ক্ষেত্রে মতভেদের কারণ থাকতে পারে না। অন্তত সাধারণ বিচারে খুঁটিনাটি ব্যাপারে। সেটিও যুক্তির আলোকে নির্ধারণ করতে হবে। প্রসঙ্গত একটি প্রবাদের কথা উল্লেখ করা যায়- সেই ব্যক্তি বিজ্ঞ নয়, যে বলতে পারে অকল্যাণ থেকে কল্যাণের বিষয় কোনটি বরং সেই ব্যক্তি বিজ্ঞ যে দু’টি ভালো জিনিসের মধ্যে কোনটি বেশি ভালো এবং দু’টি মন্দের মধ্যে কোনটি কম মন্দ একথা বলতে পারে।
যেমন জনগণের কাছে এটি একটি নিশ্চিত সত্য যে খরার মধ্যে বৃষ্টি রহমতস্বরূপ, যদিও এতে স্বৈরশাসকই বেশি ফসল পায়। কিন্তু বৃষ্টি না হলে তো সব মানুষেরই ক্ষতি। জনগণ কোনো শাসক আদৗ না থাকার চেয়ে একজন জালেম শাসক থাকা পছন্দ করে। একজন মনীষী বলেছেন- একটি রাত শাসনবিহীন থাকার চেয়ে ষাট বছর জালেম শাসকের অধীনে থাকা ভালো।
তদুপরি একজন শাসককে তার দ্বারা সংঘটিত অত্যাচার উৎপীড়ন এবং মানুষের যে অধিকার সে খর্ব করে তার জন্য তাকে দায়ী করা যায়। কিন্তু কোনো শাসক বা কোনো কর্মকর্তা যদি তার কর্তব্য পালনে অপারগ হয়, অথচ সকল অবৈধ কাজ থেকে দূরে থাকে, কোনো ভুল কাজ করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করে- যখন অন্যরা এসব কাজ ইচ্ছেকৃতভাবেই করে, তখন তাকে সরকারী দায়িত্ব দেয়া উচিত। কেননা সরকারী পদের মধ্যে যদি এ কর্তব্য থাকে যা তাকে সম্পন্ন করতে হবে যেমন শত্রুর বিরুদ্ধে জিহাদ, ফায় (যুদ্ধ ছাড়া অর্জিত মালামাল) বণ্টন, হুদুদ (ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট) প্রয়োগ ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ। এ পদ তো পূরণ করতে হবে। অন্যাথায় এ পদ তো তাকেই দেয়া হবে যে এর যোগ্য নয় এবং ঐ কর্মকর্তা তা ঠেকাতে পারবে না। সে ক্ষেত্রে কর্তব্য পালনের জন্যে তার পদক্ষেপ অনিবার্য বলে গণ্য হবে। সুতরাং এর ক্ষতি গ্রহণযোগ্য হবে যদি তা ঐ কর্তব্যের উপকারের চেয়ে কম হয়। তদুপরি সরকারি পদ যদি কোনো অসৎ ব্যক্তি দখল করে থাকে সে ক্ষেত্রে অন্য কেউ এ পদটি গ্রহণ করে অন্যায় অবিচার কমানোর জন্যে এবং বেশিরভাগই বোঝা লাঘব করে সামান্য বোঝা স্বীকার করে, তাহলে নিয়তের কারণে ঐ লোকটির কাজ উত্তম বলে বিবেচিত হবে এবং তার কাজ সমাধা করতে গিয়ে বড় ধরণের অনিষ্ট থেকে বাঁচার জন্যে কিছু খারাপ কাজ করে ফেললেও সেটা ভালো কাজ বলে গণ্য হবে।
এটি এমন একটি ক্ষেত্র যেখানে নিয়ত হচ্ছে নিয়ামক উপাদান। যদি কোনো স্বৈরশাসক কোনো ব্যক্তিকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা দিতে বলে তখন একজন মধ্যস্থতাকারী অবিচার থেকে বাঁচানোর লক্ষ্যে লোকটির কাছ থেকে অংশ বিশেষ আদায় করে নিষ্ঠুর শাসককে দিয়ে তার রোষ থেকে লোকটিকে বাঁচায়, তাহলে এ মধ্যস্থতাকারী একটি ভালো কাজ করলো। কিন্তু যদি সে স্বৈরাচারীকে মদদ দেয়ার জন্যে কিছু করে তাহলে সে একটি অপকর্ম করবে।
কিন্তু অধিকাংশ ক্ষেত্রে নিয়ত ও আমলের মধ্যে গলদ হতে দেখা যায়। যদি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো অন্যায় করার উদ্দেশ্যে কাজ করা হয় অথবা দায়িত্ব পরিত্যাগ করা হয় তবে নিয়তে গলদ রয়েছে বলে ধরে নিতে হবে।
এছাড়া সরকারী পদ গ্রহণযোগ্য, পছন্দনীয় অথবা অপরিহার্য হলেও যাকে এ পদে নিযুক্ত করা হবে তার জন্যে এর চেয়েও অপরিহার্য বা বাঞ্ছনীয় অন্যান্য বিবেচ্য বিষয়ও থাকতে পারে। সেটি হচ্ছে তাকে কখনো বাধ্য হয়ে এবং কখনও পছন্দ অনুযায়ী দু’টি ভালো জিনিসের মধ্যে অধিক ভালোটিকে অগ্রাধিকার দিতে হবে।
হযরত ইউসুফ আ. এর মিসরের বাদশাহর কাছ থেকে দেশটির শস্যভাণ্ডারের দায়িত্ব চেয়ে নেয়ার বিষয়টি এ শ্রেণীকরণের মধ্যে পড়ে। অথচ বাদশাহ ও তার কওম কাফের ছিল। আল-কোরআনে বর্ণিত হয়েছেঃ আর নিশ্চয়ই তোমাদের নিকট এর আগে ইউসুফ সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলীসহ আগমণ করেছিলেন, কিন্তু তোমরা সে সব বিষেয়ে সর্বদাই সন্দেহ পোষণ করতে যা তিনি তোমাদের কাছে নিয়ে এসেছিলেন (সূরা আল মু’মিনঃ ৩৪)। হযরত ইউসুফ আ. এর বন্দীকালীন ভূমিকা সম্পর্কে আল-কোরআনে বর্ণিত হয়েছেঃ হে কারাগারের সঙ্গীদ্বয়। অনেক ও বিভিন্ন উপাস্য কি উত্তম, না এক আল্লাহ, যিনি পরাক্রমশালী? তোমরা তো আল্লাহকে ছেড়ে কেবল কতিপয় অবাস্তব নামের উপাসনা করছ যাদেরকে তোমরা এবং তোমাদের পিতৃপুরুষরা সাব্যস্ত করে নিয়েছ (সূরা ইউসুফঃ ৩৯–৪০)।
যেহেতু তারা কাফের ছিল, তাদের অর্থ আদায়ের এবং তা রাজ দরবার, সৈন্য ও প্রজাদের পেছনে ব্যয়ের ক্ষেত্রে একটি পদ্ধতি ও ঐতিহ্য প্রচলিত ছিল। নবী রাসূলদের কায়দা কানুন ও ইনসাফের সঙ্গে এ পদ্ধতি ও ঐতিহ্যের কোনো সঙ্গতি ছিল না। সুতরাং ইউসুফ আ. আল্লাহর বিধান মোতাবেক যা কিছু করতে চেয়েছিলেন তা করতে পারেননি। কিন্তু তিনি যা করতে পেরেছেন সেটি হচ্ছে ইনসাফ ও আমলে সালেহ’র প্রতিষ্ঠা এবং তার ক্ষমতার মাধমে তার পরিবারের ঈমানদারদের জন্যে সুফল অর্জন যেটি তিনি অন্য কোনোভাবে পারতেন না। এসবই আল্লাহতায়ালার এ উক্তির আওতায় পড়েঃ অতএব তোমরা আল্লাহ আনুগত্য করো এবং তাকে যথাসম্ভব ভয় করো (সূরা তাগাবুনঃ ১৬)।
যদি দু’টি কর্তব্য একই সাথে এসে পড়ে কিন্তু করা যেতে পারে মাত্র একটি এবং অধিক গুরুত্বপূর্ণ কর্তব্যটি বেছে নিতে হয় সে ক্ষেত্রে অন্যটি আর কর্তব্য থাকে না। যে ব্যক্তি এ কাজটি পরিত্যাগ করে অধিক গুরুত্বপূর্ণ কাজটি সামাধা করে তাকে দায়িত্ব পালনে গাফেল বলা যাবে না।
একই ভাবে যদি দু’টি নিষিদ্ধ কাজ সামনে আসে তবে বড় নিষিদ্ধ কাজটি এড়ানো জন্যে ক্ষুদ্রতর নিষিদ্ধ কাজটি করতে হয়। সেক্ষেত্রে এ কাজটি আসলে আর নিষিদ্ধ বলে গণ্য হবে না।
তবে উভয় ক্ষেত্রে কাজটি যদি না করা হয় তাহলে প্রথম ক্ষেত্রের কাজটি কর্তব্যে অবহেলা বলে গণ্য হবে এবং দ্বিতীয় ক্ষেত্রে একটি নিষিদ্ধ কাজ করা হলো বলে ধরে নেয়া হবে। এ প্রসঙ্গে বলা হয়, কর্তব্য পরিহারের একটি অজুহাত থাকে আর মন্দ কাজটি করা হয় একটি বৃহত্তর কল্যাণের স্বার্থে অথবা প্রয়োজনবশত কিংবা আরেকটি গুরুতর ক্ষতি থেকে বাঁচার জন্যে।
স্বার্থের সংঘাতের ক্ষেত্রটি অত্যন্ত বিস্তৃত, বিশেষ করে যেখানে সুন্নাহ ও খেলাফতের সময় এর দৃষ্টান্ত বিরল। ফলে সংঘাতপূর্ণ বিষয় বড় হয়ে দেখা দেয়। ঐতিহ্যগত দৃষ্টান্ত যত বিরল, সংঘাত ততই ব্যাপক হয়ে উম্মাহর মধ্যে মতবিরোধের কারণ সৃষ্টি করে। যখন ভালো আর মন্দ একটি ধাঁধার মধ্যে পড়ে যায় তখন এমন দুর্বোধ্যতা সৃষ্টি হয় যে কোনো কোনো লোক ভালো মনে করে অত্যন্ত মন্দ একটি জিনিসকে বেছে নেয়। আবার অনেকে একটি জিনিসকে ক্ষতিকর মনে করে আরেকটি এমন জিনিস বেছে নেয় যাতে কাঙ্ক্ষিত কল্যাণের আশা নেই। অবশ্য এমন অনেক লোকও আছেন যারা দু’টি নিয়েই গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করেন।
একজন বিজ্ঞ ব্যক্তির উচিত হবে সতর্কতার সঙ্গে বিষয়গুলো বিবেচনা করা। কারণ আমি ইতোপূর্বেই বলেছি, তাকে হয়তো কোনো কিছু দৃঢ়তার সঙ্গে অনুমতিদান অথবা নিষিদ্ধ করার পরিবর্তে কোনো কোনো বিষয়ে সিদ্ধান্ত প্রদানের ক্ষেত্রে নমনীয় হতে হবে। যেমন তাকে হয়তো এমন একটি কাজের আদেশ দিতে হতে পারে যাতে গুরুতর ক্ষতির আশঙ্কা আছে, কিন্তু লঘু ক্ষতি এড়ানোর লক্ষ্যে এ কাজ করার আদেশ দেয়া চলবে না। উদাহরণস্বরূপ কোনো ব্যক্তি একজন দোষী লোককে একজন স্বৈরশাসকের হাতে তুলে দিতে পারে না যে তাকে তার অপরাধের তুলনায় কঠোরতর শাস্তি প্রদান করে অথবা এমন কিছু মন্দ কাজের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে যাতে ভালো দিকও জড়িত আছে যে ভালো মন্দকে ছাড়িয়ে যায। এক্ষেত্রে কারো এরূপ নিষেধাজ্ঞা জারি করা উচিত নয় যাতে আল্লহাতায়ালা ও তাঁর রাসূল সা. যে নির্দেশ দিয়েছেন তা বর্জন করতে হয়। এসব অনিষ্ট বর্জনের চেয়ে আল্লাহ ও তাঁর রাসূল নির্দেশিত কাজ অধিক ফলদায়ক। [শাইখুল ইসলাম ইবনে তাইমিয়ার ‘ফতোয়া’, ২০ তম খণ্ড, পৃষ্ঠা ৪৮–৬১।]
পরিভাষা
আহলে দিম্মীঃ আক্ষরিক অর্থে নিরাপত্তা চুক্তির অধীন জনগোষ্ঠী। মুসলিম সরকারের অধীন ইহুদী, খৃস্টান, সাবেয়ী প্রমুখ অমুসলিম নাগরিক যারা জিজিয়া কর প্রদানের মাধ্যমে একটি মুসলিম দেশে জানমালের নিরাপত্তা ভোগ করে।
আহলে কিতাবঃ আক্ষরিক অর্থে ধর্মগ্রন্থের অনুসারী জনগোষ্ঠী- ইহুদী ও খৃস্টান।
আওকাফঃ ধর্মীয় ট্রাস্ট অথবা জনসেবা প্রতিষ্ঠান।
দারুল হরবঃ যুদ্ধে লিপ্ত ভূখণ্ড। যে দেশে মুসলমান ও কাফেরদের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়নি।
দারুল ইসলামঃ ইসলামী রাষ্ট্র। যে ভূখণ্ডে ইসলাম ও ইসলামী আইন প্রতিষ্ঠিত।
ফরজঃ অবশ্য কর্তব্য। বাধ্যতামূলক ইবাদত বন্দেগী।
ফতোয়াঃ আইনগত ইসলামী মত।
ফিকাহঃ আক্ষরিক অর্থে জ্ঞানের রূপরেখা। পারিভাষিক অর্থে ইসলামী আইনের শর্তাবলী।
হালাল ও হারামঃ যথাক্রমে ইসলামে বৈধ ও অবৈধ বিষয়সমূহ।
হিজরতঃ মুসলমানদের মদিনায় দেশান্তর।
জাহেলিয়াতঃ ইসলাম-পূর্ব যুগ এবং ঐ যুগের পৌত্তলিক রীতিনীতি।
জাবানাঃ নাপাকি, যে কারণে গোসল ফরজ হয়।
জিহাদঃ আল্লাহর রাস্তায় সংগ্রাম।
মাসালে মুসসালাঃ জনস্বার্থ।
নাফিলাঃ নফল, ঐচ্ছিক ইবাদত।
রিবাতঃ কাফেরদের হাত থেকে মুসলমানদের রক্ষা করা।
সাদাকাঃ যাকাতের অতিরিক্ত দান খয়রাত।
তাহলিলঃ কালেমা ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ’। অর্থাৎ আল্লাহ ছাড়া কোনো মা’বুদ নেই উচ্চারণ।
তাকবীরঃ ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি উচ্চারণ। অর্থাৎ আল্লাহ শ্রেষ্ঠতম।
তাকফিরঃ কাউকে কাফের বলে সাব্যস্ত করা।
তাসবীহঃ সুবহানাল্লাহ ধ্বনি উচ্চারণ। অর্থাৎ সকল গৌরবের অধিকারী আল্লাহ।
উসূলে ফিকাহঃ আইনশাস্ত্রের নীতিমালা।
………. সমাপ্ত ……….