একাদশ অধ্যায়
ডাইরেক্ট অ্যাকশন
উক্ত অধিবেশনে এ মর্মে আর একটি প্রস্তাব গৃহীত হয় যে, পাকিস্তান হাসিল করার উদ্দেশ্যে এবং বৃটিশের গোলামী এবং বর্ণহিন্দুর ভবিষ্যৎ প্রাধান্য থেকে মুক্তি লাভের জন্যে মুসলিম জাতির পক্ষে ডাইরেক্ট অ্যাকশন অবলম্বন করার সময় এসেছে। মুসলমানদের সংগঠিত করে প্রয়োজনীয় সময়ে সংগ্রাম করার লক্ষে কর্মসূচী প্রণয়নের অনুরোধ জানানো হয়। উপরন্তু বৃটিশের মনোভাব ও আচরণের প্রতিবাদে বিদেশী সরকার প্রদত্ত সকল খেতাব পরিত্যাগ করার জন্যে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রতি আবেদন জানানো হয়।
জিন্নাহ ৩১শে জুলাই আহুত এক সাংবাদিক সম্মেলনে দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে বলেন, ডাইরেক্ট অ্যাকশন কারো বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা নয়। তিনি বলেন, একমাত্র মুসলিম লীগই সংবিধানের আওতায় থেকে সাংবিধানিক পন্থায় কাজ করেছে। কেবিনেট মিশন পরিকল্পনা নিয়ে আলোচনাকালে মুসলিম লীগ বৃটিশ সরকারকে কংগ্রেসের ভয়ে ভীত সন্ত্রস্ত দেখতে পায়। তাদের ভয় ছিল এই যে, কংগ্রেসকে সন্তুষ্ট করতে না পারলে তারা এমন এক সংগ্রামে অবতীর্ণ হবে যা ১৯৪২ সনের সংগ্রাম অপেক্ষা সহস্র গুণে মারাত্মক হবে। বৃটিশের মেশিন গান আছে এবং ইচ্ছামতো ব্যবহার করতে পারে। কংগ্রেস আর এক ধরনের অন্ত্রে সজ্জিত এবং তাকে তুচ্ছ মনে করা যায় না। অতএব আমরা এখন আত্মরক্ষা ও সংরক্ষণের জন্যে সাংবিধানিক পন্থা পরিহার করতে বাধ্য হচ্ছি। সময়মত সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার জন্যে প্রস্তুতি গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। (Cabinet Mission and After, Muhammad Ashraf, pp.311-19; Emergence of Pakistan-Choudhury Mohammad Ali-pp.69-70)
ডাইরেক্ট অ্যাকশনের জন্যে ১৬ই আগষ্ট নির্ধারিত হয়। তার দুদিন পূর্বে জিন্নাহ তাঁর প্রদত্ত বিবৃতিতে বলেন, দিনটি ছিল ভারতের মুসলিম জনসাধারণের কাছে ২৯শে জুলাই মুসলিম লীগ কাউন্সিল কর্তৃক গৃহীত প্রস্তাবের ব্যাখ্যা করা, কোন প্রকার প্রত্যক্ষ সংঘর্ষে যাওয়ার জন্যে নয়। অতএব আমি মুসলমানদের প্রতি এ আবেদন জানাই তাঁরা যেন আমদের নির্দেশ পুরোপুরি মেনে চলেন, নিজেদের অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ ও সুশৃংখলভাবে পরিচালিত করেন এবং শত্রুর হাতের খেলনায় পরিণত না হন।
আবুল কালাম আজাদের বক্তব্য
আমি জনসাধারণের মধ্যে এ অনুভূতি লক্ষ্য করলাম যে ১৬ই আগষ্ট মুসলিম লীগ কংগ্রেসীদের উপর আক্রমণ চালাবে এবং তাদের ধনসম্পদ লুণ্ঠন করবে। ১৬ই আগষ্ট ভারতের ইতিহাসে একটি কালো দিবস। এ দিনে শত শত মানুষের জীবন হানি হয় এবং কোটি কোটি টাকার ধনসম্পদ লুণ্ঠিত হয়। মুসলিম লীগের মিছিলগুলি লুণ্ঠন ও অগ্নি সংযোগ শুরু করে। (Abul Kalam Azad India Wins Freedom, p. 168-169)
মাওলানা আজাদের প্রতি আমার আন্তরিক ও গভীর শ্রদ্ধা থাকা সত্ত্বেও বলবো তিনি হিন্দু কংগ্রেসের মনের কথাই বলেছেন। সেদিন তিনি দিল্লী ছিলেন। অতএব ঘটনা স্বচক্ষে না দেখে অপরের কথা শুনেই উপরোক্ত মন্তব্য করেছেন।
তিনি তাঁর উক্ত গ্রন্থে বলেন, মুসলিম লীগের ডাইরেক্ট অ্যাকশন দিবসটি ভিন্ন ধরনের বলে মনে হচ্ছিল। কোলকাতায় এ সাধারণ মনোভাব লক্ষ্য করলাম যে, ১৬ই আগষ্টে মুসলিম লীগ কংগ্রেসপন্থীদের উপর আক্রমণ চালাবে এবং তাঁদের ধনসম্পদ লুণ্ঠন করবে। বাংলার সরকার কর্তৃক ১৬ই আগষ্ট সরকারী ছুটি ঘোষণার ফলে অদিক মাত্রায় আতংক ছড়িয়ে পড়ে। বাংলার আইন পরিষদের কংগ্রেস দল এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানায়। প্রতিবাদে কোন ফল না হওয়ায় তাঁরা সংসদ ভবন থেকে ওয়াক আউট করেন। কোলকাতার জনমনে ভয়ানক উদ্বেগ বিরাজ করছিল এবং সে উদ্বেগ এ কারণে বেড়ে চলেছিল যে মুসলিম লীগ সরকার প্রতিষ্ঠিত ছিল এবং হুসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। (India Wins Freedom by Abul Kalam Azad pp.168-169)
মাওলানা আবুল কালাম আজাদের উপরোক্ত বক্তব্যে কোলকাতার লোমহর্ষক সাম্প্রদায়িক হানাহানির প্রকৃত কারণ চিহ্নিত হয়েছে। কারণগুলো হচ্ছে-
১। বাংলায় মুসলিম লীগ মন্ত্রীসভা প্রতিষ্ঠিত যা হ্নিদুদের জন্য ছিল অসহনীয়।
২। প্রধানমন্ত্রী ছিলেন হুসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী যাঁকে হিন্দুগণ মনে করতো হিন্দুবিদ্বেষী।
৩। ১৬ই আগষ্টের ক’দিন পূর্ব থেকেই এ মিথ্যা গুজন ছড়ালো যে মুসলিম লীগ তথা কোলকাতার মুসলমানগণ হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালাবে এবং তাদের ধনসম্পদ লুণ্ঠন করবে। এ গুজব ছড়ানোর এ উদ্দেশ্য ছিল না যেন হিন্দুগণ কোলকাতার শতকরা প্রায় পঁচিশ মুসলমান নির্মূল করার জন্য তৈরী হয়।
আমি (অত্র গ্রন্থকার) সে সময়ে গুরুত্বপূর্ণ সরকারী চাকুরীতে নিয়োজিত থাকলেও পাকিস্তান আন্দোলন মনে প্রানে সমর্থন করতাম। মুসলিম লীগ মহলের হিন্দুদের উপর আক্রমণ চালানো হবে এরূপ কোন পরিকল্পনার হিন্দু বিসর্গও কানে আসেনি। আমি তখন ফ্যামিলিসহ কোলকাতায় থাকতাম, বাসায় আমার সাথে আমার স্ত্রী ও চার বছরের কন্যা মাত্র। গোলযোগের কোন আশংকা থাকলে তাদেরকে একাকী ফেলে ১৬ই আগষ্টে মুসলিম লীগের জনসভায় নিশ্চিন্ত মনে কিছুতেই যেতে পারতাম না।
গড়ের মাঠে অনুষ্ঠিত জনসবায় আমর মত আরো অনেকেই যোগদান করেন। আমরা জনসভায় উপস্থিত হয়ে দেখলাম রাজা গজনফর আলী খান ইংরেজিতে বক্তৃতা করছেন।
মুসলিম লীগ কর্মীদের হাতে কোন অস্ত্র ত দূরের কথা, কোন লাঠি-সোটাও দেখতে পাইনি। তবে পাকিস্তান লাভের আশায় সকলকে হর্ষোৎফুল্ল ও উজ্জীবিত দেখতে পেয়েছিলাম।
রাজা সাহেবের পর সোহরাওয়ার্দী সাহেব মঞ্চে ওঠার পর মুসলিম লীগ মিছিলের এবং জনসভায় আগমনকারীদের উপর হিন্দুদের সশস্ত্র আক্রমণের সংবাদ আসতে থাকলো। অতঃপর আক্রান্ত মুসলমানদের অনেকেই রক্তমাখা জামাকাপড় নিয়ে সভায় হাজির হয়ে হিন্দুদের সশস্ত্র হামলার বিবরণ দিতে লাগলো। শ্রোতাদের হর্ষ বিষাদে পরিণত হলো। ভয়ানক উত্তেজনা, ভীতি ও আশংকা বাড়তে থাকলো। কোলকাতায় শতকরা বিশ থেকে পঁচিশ ভাগ মুসলমান। প্রায় সকলেই দরিদ্র। তাদের শতকরা প্রায় পাঁচ ভাগ বহিরাগত, বিভিন্ন স্থানে চাকরি করে।
জনসভায় যোগদানকারীগণ বিভাবে নিরাপদে বাড়ি ফিরে যাবে, তাদের অরক্ষিত পরিবারের অবস্থাই বা কি –এমন এক আশংকা সকলের চোখে মুখে দৃশ্যমান হয়ে উঠলো। প্রধানমন্ত্রী বুঝতে পারলেন। তাঁর বক্তৃতার কোন কথাই আমার মনে নেই। তবে জনতাকে সান্ত্বনা দেবার জন্যে ‘হাম সব দেখ লেংগে’ বলে সকলকে শৃংখলার সাথে ঘরে ফিরে যেতে বল্লেন। আমরা কোন রকমে ‘আল্লাহ আল্লাহ’ করে বাসায় ফিরলাম। কোলকাতার মুসলিম পল্লী পার্কসার্কাসে থাকতাম বলে বেঁচে গিয়েছি, নতুবা হিন্দুদের আক্রমণের শিকার অবশ্যই হতে হতো।
এ লোমহর্ষক ঘটনা সম্পর্কে তৎকালীন কোলকাতার দৈনিক স্টেটসম্যান (Stateman) পত্রিকার সম্পাদক –Lan Stepens বলেন –‘সম্ভবত প্রথম দিনের মারামারিতে এবং নিশ্চিতরূপে দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিনে মুসলমানদের জানমালের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়।
(lan Stephens, Pakistan, Londin, Ernest Bena, 1963, p.106; Choudhury Mohammad Ali The Emergence of Pakistan, p.76)
এসব ঘটনার দ্বারা এ কথা নিঃসন্দেহে প্রমাণিত হয় যে, ১৬ই আগষ্ট হ্নিদুদের উপর আক্রমণ করার কোন পরিকল্পনা মুসলিম লীগের ছিলনা। বরঞ্চ লীগের ডাইরেক্ট অ্যাকশনকে নিজেদের হীন স্বার্থে ব্যবহার করার জন্য কংগ্রেস মুসলিম নিধনের নিখুঁত পরিকল্পনা তৈরী করে। তবে এর সুফল হয়েছে মুসলমানদের জন্যে। পাকিস্তান সৃষ্টি ত্বরান্বিত হয়েছে –যার সম্ভাবনা কিছুটা ক্ষীণ হয়েছিল কেবিনেট মিশনের প্রস্তাবের পর। জিন্নাহ খোলাখুলি ও অপকটে কোলকাতার নৃশংস ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন এবং নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করেন।
মুসলিম লীগের ডাইরেক্ট অ্যাকশনের পর
কোলকাতার সাম্প্রদায়িক সংঘর্ষ এক বিতর্কিত আলোচনার বিষয় হয়ে পড়ে। উপমহাদেশে মাঝে মধ্যে এখানে সেকানে হিন্দু মুসলমানে দাংগাহাংগামা হয়েই থাকে। কিন্তু ১৯৪৬ সালের ১৬ই আগষ্টে অনুষ্ঠি নিষ্ঠুরতা ও নৃশংসতা ছিল তুলনাবিহীন। কোলকাতার মুসলমানদের নির্মূল করার এক সুচিন্তিত পরিকল্পনার অধীনে এ হত্যাকান্ড অনুষ্ঠিত হয়েছিল।
ভাইসরয় ২৪শে আগষ্ট মধ্যবর্তী সরকারের সদস্যদের নাম ঘোষণা করেন।
তাদেরকে দুসরা সেপ্টেম্বর দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে।
উল্লেখ্য যে, ভাইসরয় ৬ই আগষ্ট নেহরুকে মধ্যবর্তী সরকার গঠনের আহবান জানান। ৭ই আগষ্ট কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটি সরকার গঠনে সম্মতি দান করে। ১৭ই আগষ্ট নেহরু ভাসরইকে বলেন যে তিনি মুসলিম আসনগুলো লীগ বহির্ভূত লোকদের দ্বারা পূরণ করে একটি শক্তিশালী সরকার গঠন করতে চান। ভাইসরয় এতে ভিন্নমত পোষণ করে বলেন যে আপাততঃ কিছু সময়ের জন্যে মুসলিম আসনগুলো উন্মুক্ত রাখা হোক। নেহরু এ প্রস্তাবে রাজী না হয়ে তার নিজের প্রস্তাবে অবিচল থাকেন।
এ কথাটি পরে প্রকাশ হয়ে পড়ে যে কংগ্রেসী মধ্যবর্তী সরকারের শপথ গ্রহণের প্রাক্কালে বাইসরয় ব্রিটিশ সরকারকে বলেন যে, মুসলিম লীগ সরকারে যোগদান করতে রাজী না হওয়া পর্যন্ত শপথ অনুষ্ঠান মুলতবী রাখা হোক। প্রধানমন্ত্রী এটলী ভাইসয়ের যুক্তি প্রত্যাখ্যান করে বলেন যে, এখন যে কোন বিলম্বকরণ প্রক্রিয়া কংগ্রেস নেতাদের মেজাজ তিক্ততর করবে এবং কংগ্রেস ও ব্রিটিশ সরকারের মধ্যে ভাঙন সৃষ্টি করবে। অতঃপর দিল্লী থেকে জারিকৃত এক সরকারী ইশতাহারে বলা হয় যে, নতুন কাউন্সিল দুসরা সেপ্টেম্বর কার্যভার গ্রহন করবে।
নতুন কাউন্সিলে (The New Executive Council) যোগদানকারী সদস্যগণ ছিলেনঃ নেহরু, প্যাটেল, রাজা গোপালচারিয়া, রাজেন্দ্র প্রসাদ, আসফ আলী, শরৎচন্দ্র বোস, জন ম্যাথাই, বলদেব সিং, স্যার শাফায়াত আহমদ খান, জগজীবন রাম, আলী জহির এবং সি এইচ ভবা। দুজন মুসলমান পরে নেয়া হেব। (The Indian Register, 1946, vol.2, p.228, Ishtiaq Hossain Qureshi The Struggle for Pakistan, pp.274-275)।
মেজাজ প্রকৃতির পরিপন্থী কাজ সমাধা করার পর ভাইসরয় সাম্প্রদায়িক দাংগায় বিধ্বস্ত কোলকাতা পরিদর্শন করেন। কোলকাতা ভ্রমণের পর তিনি নিশ্চিত হন যে, কংগ্রেস এবং লীগের মধ্যে কোন সমঝোতা না হলে সমগ্র ভারত ভয়ংকর গৃহযুদ্ধের শিকার হয়ে পড়বে। কোলকাতা থেকে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি কংগ্রেস নেতাদেরকে বুঝাবার চেষ্টা করেন এবং এ উদ্দেশ্যে ২৭শে আগষ্ট গান্ধীর সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি বাংলার এবং কেন্দ্রে কোয়ালিশন সরকার গঠনের প্রস্তাব দেন এবং একটা ফর্মূলা পেশ করেন। ২৮শে আগষ্ট নেহরু ভাইসরয়কে জানিয়ে দেন যে ওয়ার্কিং কমিটি ফর্মূলাটি প্রত্যাখ্যান করেছে।
ভাইসরয় লর্ড ওয়াভেল একটি মীমাংসায় পৌঁছার আপ্রাণ চেষ্টা করে ব্যর্থ হন। তার এ প্রচেষ্টা কংগ্রেস ভিন্নভাবে গ্রহন করে। উপমহাদেশের উপর কংগ্রেসের একচেটিয়া প্রভূত্ব কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার পথে ওয়াভেলকে তার প্রতিবন্ধক মনে করেন এবং তার শাস্তি বিধানের জন্য উঠে পড়ে লাগেন। ওয়াভেলের সাথে আলাপ আলোচনার পর ফিরে এসে গান্ধী এবং নেহরু উভয়ে পত্র লিখতে বসে যান। গান্ধী প্রথমে এটলীর নিকেট এ মর্মে তারবার্তা প্রেরণ করেন যে, ভাইসরয়ের মনের অবস্থা এমন যে শিগগির প্রতিকার হওয়া দরকার। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ এই যে কোলকাতার ঘটনায় তিনি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেছেন। গান্ধী তাঁর স্থলে একজন যোগ্যতর ব্যক্তির দাবী জানান। গান্ধী ওয়াভেলকেও পত্রের দ্বারা শাসিয়ে দেন যে তিনি ভীতি প্রদর্শণ করে কংগ্রেসকে তার স্বমতে আনতে চান। তিনি আরও বলেন যে ভাইসরয় যদি সাম্পদায়িক সম্পর্কের অবনতিতে ভীত হয়ে পড়েন এবং তা দমন করার জন্যে শক্তি প্রয়োজ করতে চান, তাহলে বৃটিশের শিগগির ভারত ত্যাগ করা উচিত এবং ভারতে শান্তি প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব কংগ্রেসের উপর অর্পণ করা উচিত।
অপরদিকে নেহরু বৃটেনে তার কতিপয় প্রভাবশালী বন্ধুকে পত্র দ্বারা জানিয়ে দেন যে, ভাইসরয় অত্যন্ত দুর্বল লোক এবং মানসিক নমনীয়তা হারিয়ে ফেলেছেন। জিন্নাহকে খুশী করার জন্যে তিনি ভারতে বিপদের মুখে ঠেলে দিচ্ছেন। তিনি বলেন যে, ভাইসরয় স্যার ফ্রান্সিস মুডি এবং জর্জ এবেল এর পরামর্শ অনুযায়ী চলছেন এবং নেহরুর মতে এ দুজন হচ্ছেন প্রকট মুসলিম মনা (Rabidly pro-Muslim)। নেহরু তাদেরকে ইংলিশ মোল্লা বলেও অভিহিত করেন। মোট কথা নেহরুর পত্রাদির মর্ম হচ্ছে –‘ওয়াভেলকে যেতেই হবে’।
-(Leonard Mosley op. cit-pp.44 Gandhi’s letter to Wavel reproduct in full in Pyarelal’s Miahatma Gandhi The last Phase (Ahmedabad-1956); I.H.Qureshi The Struggle for Pakistan, p.276)।