প্রস্তাবিত ইসলামী শিক্ষাপদ্ধতি বাস্তবায়নের পন্থা
আলোচনার দ্বিতীয় পর্যায়ে আমি নয়া শিক্ষাব্যবস্থার যে নীল নকশা পেশ করছি তা আপাতঃ দৃষ্টিতে কার্যোপযোগী বলে মনে নাও হতে পারে। কিন্তু অনেক চিন্তা গবেষণার পর আমি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, গভীর মনোনিবেশ, যথোপযুক্ত পরিশ্রম ও পর্যাপ্ত অর্থব্যয়ে এ কর্মসূচীকে ক্রমান্বয়ে কার্যকরী করা সম্ভব।
কোন একটা নতুন লক্ষ্যে উপনীতি হওয়ার জন্য প্রথম পদচারণা করা মাত্রই লক্ষ্যে উপনীত হওয়া যাবে এরূপ মনে করা কখনো উচিত নয়। আর কাজ শুরু করার জন্য তার পূ্র্ণতা সাধনের জন্য উপায় উপকরণ আগে থেকেই হাতে নিয়ে নামতে হবে এটাও জরুরী নয়। এ মুহুর্তে শুধুমাত্র ভবনের ভিত্তি স্থাপনই জরুরী এবং তার উপায় উপকরণ এখন হাতের নাগালের ভিতরই আছে। এই নীল নকশা অনুসারে নয়া শিক্ষা ব্যবস্থার ভিত্তি স্থাপন করার মত কারিগর বর্তমান বংশধরদের মধ্যেই আছে। অতঃপর এই বংশধরদের কাছে শিক্ষা ও ট্রেনিং পেয়ে যে বংশধর তৈরি করা হবে তারা এই ভবনের দেয়াল গেঁথে তুলবে। আবার তৃতীয় বংশধররা এমন হবে যাদের হাতে ইনশাল্লাহ এর নির্মাণ কাজ পূর্ণতা লাভ করবে।
উৎকর্ষ ও পূ্র্ণতার যে স্তর কমপক্ষে তিনটা বংশধরদের অব্যাহত চেষ্টা ও পরিশ্রম দ্বারা উত্তরণ সম্ভব, তা আজই উত্তরণ সম্ভব নয়। কিন্তু তৃতীয় বংশধরদের হাতে এই কাজের পূর্ণতা লাভ নিশ্চিত করতে হলে আজই এ কাজ শুরু করা প্রয়োজন। নচেত পূর্ণতার স্তর অনেক দূরে বলে আজ এ কাজ শুরু করার যাবতীয় উপায় উপকরণ হাতে থাকা সত্ত্বেও যদি শুরু করা না হয়, তাহলে একাজ কোন কালেও সম্পন্ন হবে না।
যেহেতু এই সংস্কারমূলক পদক্ষেপের পরামর্শ আমিই দিচ্ছি, তাই এর বাস্তবায়নের উপায় ও পন্থা নির্দেশ করার দায়িত্বও আমার উপরই বর্তায়। এ জন্য আলোচনার এই অংশে আমি এই শিক্ষা পদ্ধতির বাস্তবায়ন কিভাবে শুরু করা যেতে পারে সে সম্পর্কে বক্তব্য রাখতে চাই।
১-মাধ্যমিক স্কুলে ইসলামী আকীদা, আখলাক ও শরীয়তের বিধি নিষেধ সম্বলিত একটা পূর্ণাঙ্গ পাঠক্রম সম্প্রতি হায়দরাবাদের নিজাম সরকার কর্তৃক রচিত হয়েছে। তা প্রয়োজনীয় রদবদল ও সংশোধন দ্বারা কার্যোপযোগী করা যেতে পারে।
প্রাচীন পদ্ধতিতে পড়ানোর কারণে আরবী ভাষা শিক্ষা যে রকম জটিল হয়ে দাঁড়িয়েছে সে অবস্থা এখন আর নেই। মিশর, সিরিয়া এবং খোদ উপমহাদেশেও এখন আরবী শিক্ষার সহজতর পদ্ধতি উদ্ভাবিত হয়েছে। আরবী শিক্ষার আধুনিক পদ্ধতি সম্পর্কে যথেষ্ট জ্ঞানগত ও বাস্তব দক্ষতা রাখেন এমন লোকদের নিয়ে একটা কোর্স তৈরি করা উচিত যাতে কুরআনকেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আরবী শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে গ্রহণ করা হবে। এতে কুরআন শিক্ষার জন্য আলাদা সময় ব্যয় করতে হবে না। প্রথম থেকেই কুরআনের সাথে ছাত্রদের কিছুটা ঘনিষ্টতা গড়ে উঠবে।
ইসলামের ইতিহাস সম্পর্কে এদেশীয় ভাষায় প্রচুর বই লিখা হয়েছে। সেগুলো যোগাড় করে পড়ে দেখা দরকার। যেসব বই উপযোগী বলে মনে হবে, তা প্রাথমিক শ্রেণীগুলোতে পাঠ্য হিসেবে চালু করা যেতে পারে।
ইসলামিয়াত ও আরবী এ দুটো বিষয়ের জন্য দৈনিক মাত্র এক ঘন্টা সময় যথেষ্ট হবে। এরপর আসে ইসলামের ইতিহাসের কথা। এর জন্য কোন আলাদা সময়ের দরকার হয় না। সাধারণ ইতিহাসের পাঠ্যসূচীতে একে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে। এভাবে মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষায় বড় রকমের কোন পরিবর্তনের দরকার হবে না। পরিবর্তন যেটুকু দরকার হবে তা শিক্ষাসূচী, শিক্ষা দানের পদ্ধতি এবং শিক্ষকের গুণগত মানের ক্ষেত্রে। দ্বীনিয়াতের শিক্ষা এবং শিক্ষক সম্পর্কে এ যাবত যে ধারণা পোষণ করে আসা হচ্ছে সে ধারণা ত্যাগ করতে হবে। এ যুগের ছাত্র-ছাত্রীর বুদ্ধিবৃত্তি ও মনস্তত্ত্ব বুঝতে পারেন এমন শিক্ষক নিয়োগ করা চাই। তাদেরকে এই পরিবর্তিত ও উন্নত মানের শিক্ষাসূচী দিতে হবে এবং সেই সাথে শিক্ষাংগনের পরিবেশটাকে এতটা ইসলামী ভাবাপন্ন করে গড়তে হবে যে, সেখানে যেন ইসলামী ভাবধারার বীজ বপন করা হলে তার অঙ্কুরোদগম সম্ভব হয়।
২- উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের জন্য আমি যে সাধারণ পাঠ্যসূচীর প্রস্তাব দিচ্ছি তা তিনটি অংশে বিভক্ত। আরবী, কুরআন ও ইসলামী শিক্ষা। এর মধ্যে আরবীকে মাধ্যমিক স্তরে বাধ্যতামূলক ভাষার মর্যাদা দিতে হবে। এ ছাড়া অন্য কোন ভাষা শিখতে চাইলে ছাত্ররা গৃহশিক্ষক রাখবে। কিন্তু কলেজে যে ভাষা শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে থাকবে, সেটা ছাড়া আর কোন ভাষা যদি বাধ্যতামূলক করা হয় তবে তা একমাত্র আরবীই হওয়া উচিত। যদি পাঠক্রম ভালো হয় এবং শিক্ষক খুব অভিজ্ঞ হন তাহলে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের দুই বছরেই ছাত্ররা এতটা যোগ্যতা অর্জন করতে সক্ষম হবে যে, বি.এ. ক্লাসে পৌছে কুরআনের শিক্ষা স্বয়ং কুরআনের ভাষাতেই অর্জন করতে পারবে।
কুরআন শিক্ষার জন্য তাফসীরের কিতাব দরকার হয় না। একজন উঁচু মানের অধ্যাপকই যথেষ্ট। অধ্যাপক এমন হওয়া চাই যিনি কুরআনকে গভীর মনোনিবেশ সহকারে পড়েছেন এবং নতুন পদ্ধতিতে কুরআন পড়ানো এবং বুঝানোর যোগ্যতা রাখেন। তিনি অধ্যাপনার মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রদের মধ্যে কুরআন বুঝাবার প্রয়োজনীয় যোগ্যতা গড়ে তুলবেন। তারপর বি.এ. ক্লাসে তাদেরকে সমগ্র কুরআন শরীফ এমনভাবে পড়িয়ে দিবেন যে, তারা আরবী ভাষায়ও উন্নতি লাভ করবে আর ইসলামের তাৎপর্য্ও ভাল করে বুঝে নিবে।
‘ইসলামী শিক্ষার’ জন্য একখানা নতুন পাঠ্য বই লেখানো দরকার। এ বই এর বিষয়বস্তুর বিন্যাস কেমন হবে সে কথা আমি ইতোপূর্বে উচচ মাধ্যমিক স্তরের ইসলামী শিক্ষার পর্যায়ে বিশ্লেষণ করেছি। আমি নিজে ‘ইসলামী তাহযীব আওর উসকে উসুল ও মাবাদী’ নামে একখানা বই এ উদ্দেশ্যেই লিখেছি। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উপযোগী মনে করলে এই বই তাদেরকে দিয়ে দেব।
এ বিষয়গুলো শিক্ষা দিতে কলেজের বর্তমান রুটিনে পরিবর্তনের কোন প্রয়োজন নেই। মাধ্যমিক স্তরের ভাষার জন্য বর্তমানে যেটুকু সময় বরাদ্দ আছে, আরবীর জন্য সেটুকুই যথেষ্ট হবে। কুরআন ও ইসলামী শিক্ষার জন্য বর্তমানে ধর্মীয় শিক্ষার সময়টাই পালাক্রমে ভাগ করে দিলে চলবে।
৩-উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ের বিশেষ ও ঐচ্ছিক শিক্ষা সূচীর ক্ষেত্রে এবং উচ্চতর শিক্ষার ক্ষেত্রে আমি যে সুপারিশ করেছি তার বাস্তবায়নই সবচেয়ে জটিলতার সম্মুখীন হতে পারে। এ সমস্যা সমাধানের তিনটি পন্থা আছে যা ক্রমান্বয়ে গ্রহণ করা যেতে পারে।
ক) আধুনিক জ্ঞান বিজ্ঞানে পারদর্শী হওয়ার পাশাপাশি কুরআন ও সুন্নাহতেও ভালো দখল রাখেন এমন অধ্যাপক খুঁজতে হবে। (এ ধরনের অধ্যাপক একেবারে দুর্লভ নয়।) পাশ্চাত্য জ্ঞান বিজ্ঞানের তত্ত্ব ও তথ্যাবলীকে ইসলামী মতাদর্শের আলোকে পুনর্বিন্যস্ত করতে পারেন এমন যোগ্যতা তাদের মধ্যে থাকা চাই।
খ) ইসলামী আইন দর্শন, আইন শাস্ত্রের মূলনীতি ও আইনতত্ত্ব, রাজনীতি, সমাজবিজ্ঞান, অর্থনীতি, ইতিহাস, দর্শন ইত্যাদি বিষয়ে আরবী, উর্দূ, ইংরজী, জার্মান ও ফারসী ভাষায় যে সব বই পুস্তক রয়েছে, তা পর্যালোচনা করে দেখা উচিত। যে সব বই হুবহু গ্রহণ করার মত তা পাঠ্য হিসেবে নির্বাচিত করা উচিত। আর যেসব বই কিঞ্চিৎ রদবদল অথবা সংরক্ষণ করে কাজে লাগানো সম্ভব সেগুলো সেভাবে কাজে লাগাতে হবে। এ উদ্দেশ্যে বিশেষজ্ঞদের একটা গ্রুপকে নিয়োজিত করতে হবে।
গ) উপরে উল্লেখিত বিষয়গুলো নিয়ে নতুন বই পুস্তক রচনা করার জন্য কিছু সংখ্যক ব্যুৎপত্তি সম্পন্ন লেখককে নিয়োজিত করতে হবে। বিশেষত ফিকাহ শাস্ত্র, ফিকাহ শাস্ত্রের মূলনীতি, ইসলামী অর্থনীতি, ইসলামের সমাজ বিজ্ঞান ও কুরআনে আলোচিত বিজ্ঞান দর্শন সম্পর্কে নতুন বই পুস্তক লেখা অত্যন্ত জরুরী। পুরনো গ্রন্থাবলীগুলো এখন পাঠ্যপুস্তক হিসেবে অকেজো হয়ে পড়েছে। অবশ্য গবেষকগণ ঐসব গ্রন্থে কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য পেতে পারেন। কিন্তু ঐগুলো হুবহু পাঠ্য করে এ যুগের ছাত্রদের পড়ানো একেবারেই নিরর্থক। এ কথা সত্য যে, এই মুহুর্তে উল্লেখিত তিনটি পন্থার সব ক’টা প্রয়োগ করেও আমাদের উদ্দেশ্য যথাযথভাবে সিদ্ধ হবে না। আর এই সংস্কার ও পুনর্গঠনের কাজে বেশ কিছু ভুল ত্রুটি থেকে যাবে এটাও নিশ্চিত। তবে এতে ঘাবড়ানোর কিছু নেই। এটা হবে সঠিক পথের প্রথম পদক্ষেপ। এতে যে সব ত্রুটি বিচ্যূতি থেকে যাবে তা পরবর্তী বংশধরগণ শুধরে নিবে। হয়তো বা এই পূর্ণতা লাভের প্রক্রিয়ায় ৫০ বছরও লেগে যেতে পারে।
৪- ইসলামী গবেষণা বিভাগ প্রতিষ্ঠার সময় এখনো আসেনি। এর সুযোগ আসবে আরো পরে। সুতরাং এ মুহুর্তে সে সম্পর্কে কোন প্রস্তাব পেশ করা নিরর্থক।
৫- আমার সুপারিশগুলো মোটামুটিভাবে মুসলমানদের সকল ফেরকা বা মাযহাবের লোকদের জন্যই গ্রহণযোগ্য। তা সত্ত্বেও শীয়া উলামাদের মতামত নেয়া উচিত। তারা যদি শীয়া ছাত্রদের জন্য আলাদা কোন শিক্ষা পরিকল্পনা তৈরী করতে চান করতে পারেন। তবে যতদূর সম্ভব, শিক্ষা ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র মতভেদগুলো এড়িয়ে যাওয়াই সঙ্গত। মত ও পথ নির্বিশেষ সকল মুসলমানের নতুন বংশধরদের ইসলামের সর্বসম্মত মূলনীতিগুলোর প্রশিক্ষণ দেয়া উচিত।
৬-স্যার মুহাম্মদ ইয়াকুবের এই মত আমি সর্বান্তকরণে সমর্থন করি যে, বড় বড় মুসলিম পন্ডিতদেরকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের উপর ভাষণ দেওয়ার জন্য মাঝে মাঝে দাওয়াত দেয়া উচিত। সত্যি বলতে কি, আমার একান্ত বাসনা, আলীগড় শুধু ভারতবর্ষের নয় বরং সারা ভারতের মুসলিম জাহানের কেন্দ্রীয় বিদ্যাপীঠ এবং বুদ্ধিচর্চা কেন্দ্রে পরিণত হোক। ভারতবর্ষের বড় বড় জ্ঞানী গুণীগণ ছাড়াও মিশর, সিরিয়া, ইরান, তুরস্ক ও ইউরোপের মুসলিম মনীষিদেরকে মাঝে মাঝে দাওয়াত দিয়ে আনা উচিত যেন তারা তাদের মূল্যবান মতামত, চিন্তা-গবেষণা ও অভিজ্ঞতার ফল পেশ করে আমাদের ছাত্রদের চিন্তাধারাকে আলোকিত ও উজ্জীবিত করে তোলেন এবং তাদের মধ্যে নতুন প্রেরণা ও উদ্যমের সঞ্জার করেন। এ ধরনের ভাষণসমূহ পর্যাপ্ত সম্মানী দিয়ে লেখানো বাঞ্চনীয় যাতে তারা প্রচুর সময়, শ্রম ও চিন্তা গবেষণা দ্বারা লিখতে পারেন এবং এসব ভাষণ শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জন্য নয়, বরং সাধারণ শিক্ষিত লোকদের জন্যও কল্যাণকর হতে পারে।
৭-ইসলামী শিক্ষার জন্য কোন একটি মাত্র ভাষাকে নির্দিষ্ট করে নেয়া ঠিক নয়। কেননা কোন একটি ভাষাতেই ইসলামী শিক্ষার প্রয়োজনীয় উপকরণ যথেষ্ট পরিমাণে নেই। তাই আপাতত যে ভাষাতেই কোন দরকারী জিনিস পাওয়া যাবে, তাকে সে ভাষাতেই পড়িয়ে দিতে হবে। ইসলামী জ্ঞান বিজ্ঞানের শিক্ষকদের সবারই আরবী ও ইংরেজী উভয় ভাষায় ভালো জ্ঞান থাকা চাই। এ যুগে কোন একটিমাত্র ভাষাভিজ্ঞ লোক ভালো ইসলামী শিক্ষক হতে পারেন না।
আমি দীর্ঘ কয়েক বছর ব্যাপী চিন্তা গবেষণার পর এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি যে, শিক্ষাব্যবস্থার সর্বাত্মক পরিবর্তন সূচিত করা করা ছাড়া জাতি হিসেবে মুসলমানদের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব এবং তাদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতিকে টিকিয়ে রাখার আর কোন উপায় নেই। সেই সর্বাত্বক পরিবর্তন আমার এই প্রস্তাবগুলি অনুসারেই হওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি। আমি জানি আমার এই চিন্তাধারাকে অনেকেই পাগলের প্রলাপ বলে উড়িয়ে দিতে চাইবেন। এরূপ মনে করলে আমি বিস্মিত হবো না। কেননা যাদের দৃষ্টি পশ্চাদমুখী তারা অধিকাংশ সময় সম্মুখে দৃষ্টি দানকারীদের পাগলই ভেবে থাকে। এ রকম ভাবাই তাদের পক্ষে স্বাভাবিক। কিন্ত যে অনিবার্য পরিণতি আমি দেখতে পাচ্ছি, তা তারাও নিজ চর্ম চোখে দেখতে পাবেন সেদিন বেশি দূরে নয়। হয়তো বা আমার জীবদ্দশাতেই। তখন তারাও এই সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করবেন। কিন্তু তখন বন্যার প্রবাহ মাথার উপর দিয়ে বইতে থাকবে। পরিস্থিতি শোধরানোর সুযোগ তখন হয়তো থাকবে না।