পরিভাষা
‘আদালাহ’(ধাতুগতরূপ ‘আদল’) নৈতিক সঠিকতা, ন্যায়ানুগভাবে কাজ করা, প্রত্যেককে তার ন্যায্যা হিস্যা প্রদান করা। ‘আদালাহ’ পরিভাষাটি ‘সুবিচার’ শব্দটি হতে অনেক বেশী ব্যাপক এবং জীবনের সর্বক্ষেত্রে ব্যাপ্ত। একজন মানুষের নিজের প্রতি বা অন্যাণ্য সকলের প্রতি যা কিছু করা কর্তব্য তা ‘আদালাহ’ এর পরিধির মধ্যে পড়ে।
‘আদিল্লাহ’ (একবচন দালিল) প্রমাণ, ঐশীগ্রন্থ বা প্রতিষ্ঠিত আইন হতে অহরিত সাকষ্যপ্রমাণ বা বিধি।
‘আদল’ : চরিত্রের সঠিকতা, সুবিচার, আল্লাহর আনুগত্য অনুসারে কাজ করা।
‘আহদ’: প্রামাণিক পদমর্যাদা, চুক্তি, অঙ্গীকার।
‘আহকাম’ (একবচন হুকুম): আইন, বিধিবিধান; ঐশী নির্দেশনা সম্পর্কিত; সীমিত অর্থে কতিপয় আইনগত রায়।
‘আহকাম কুল্লিয়াহ ওয়া ফারিয়াহ’: সাধারণ বা সম্পূরক ধরনের শরীয়াহর অনুশাসন, কোনটি একাধিক বিষয় আওতাভুক্ত করে, আবার কোনটির সীমিত অর্থ রয়েছে।
‘আহল আল-হাল ওয়াল আকদ’ যা বন্ধন কঠোর ও শিথিল করে, প্রতিপত্তিশালী ব্যক্তিবর্গ, মুসলিম সমাজের প্রতিনিধিত্বশীল ও ব্যক্তিবর্গ যারা শাসনকর্তাকে নিযুক্ত করে অথবা পদচ্যুত করে (খিলাফত)।
‘আহল আল কিতাব’: কিতাবী লোকগণ; বিশেষভাবে ইহুদী ও খ্রিষ্টানদের বোঝায়, তবে জরোস্ত্রিয়ানদের বোঝাতেও ব্যবহৃত হয়।
‘আহল আল শুরা’ আলাপ আলোচনা বা পরামর্শে অংশগ্রহণ করা, পরামর্শ সভার সদস্যবৃন্দ (পার্লামেন্ট বা আইনসভা)।
‘আহল হাদি আল সাহিফাহ’: চুক্তিবদ্ধ লোকসমষ্টি।
‘আলী’: সমুন্নত, উচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন।
‘আলীম’ (বহুবচন উলমা) : পণ্ডিত,জ্ঞানী, যিনি ধর্ম বিজ্ঞানে সবিশেষ জ্ঞান রাখেন।
‘আমানাহ’: আমানত, আমানতদারী, আস্থা, নির্ভরযোগ্যতা। ইহা শুধুমাত্র লোকসমষ্টির মধ্যে আচরণের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয় না বরং আল্লাহর সাথে অঙ্গীকারও বোঝাতে যে তিনি মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি হিসাবে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। আল্লাহর পক্ষ হতে মানুষের প্রতি ‘খিলাফতের’ দায়িত্ব একটি ‘আমানত’।
‘আমীর’: আদেশদাতা, নেতা।
‘আমীর আল মুমিনীন’: ঈমানদারদের নেতা, দ্বিতীয় খলীফা ওমর এই উপাধি প্রবর্তন করেন এবং পরবর্তীতে খলিফা পদবীর জন্য এই পরিভাষা ব্যবহৃত হয়েছে।
‘আমর বি আল-মারুফ ওয়া নেহী আন-আল মুনকার’ সত্যের উদ্বোধন ও মিথ্যার প্রতিরোধ করা।
‘আনসার’ : সাহায্যকারী, অনুসারী, পৃষ্ঠপোষকতা প্রদানকারী; উম্মতের প্রতিষ্ঠার জন্য মক্কার মোহাজের মুসলমানদের সাথে রাসূলুল্লাহ (সা) এর অনুসারী যে সব মদীনাবাসীরা যোগ দেন।
‘আসাবিয়াহ’: দলগত আনুগত্য, সম্পদ্রায়ের স্বার্থ, সামাজিক দলের সংহতি প্রকাশ।
‘আওয়ান’: সাহায্যকারী, সহায়তাপ্রদানকারী, সহযোগী।
‘আওলিয়া’: সাহায্যকারী, পৃষ্ঠপোষক, সহায়তাকারী।
‘আয়াত’: সৃষ্ট মহাবিশ্বে আল্লাহর চিহ্নসমূহ; কুরআনের পংতি।
‘আয়াত আল আহকাম’: কুরআনের প্রত্যাদিষ্ট আয়াত যাতে আইনগত মূল্যবোধ বিধৃত আছে; অথবা কুরআনের আয়াত হতে অনুসৃত বিধান।
‘আইন আল ইয়াকীন’ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য অনুভূতি’ পর্যবেক্ষণের সাহায্যে নিশ্চয়থার সাথে প্রাপ্ত জ্ঞান।
‘বায়াত’ চুক্তি, সমঝোতার ব্যবস্তা, শ্রদ্ধাজ্ঞাপন, কোন শাসক বিশেষ করে খলিফার কাছে আনুগত্যের শপথ করা।
‘বায়াত আল আম’: সর্বসাধারণ কর্তৃক আনুগত্যের শপথ।
‘বায়াত আল খাস’: জনসাধারণের প্রতিনিধিগণ কর্তৃক আনুগত্যের শপথ।
‘বিদাত’ বিশ্বাস বা কার্যক্ষেত্রে নতুন কিছুর উদ্ভাবন, রাসূলুল্লাহ (সা) বা খোলাফায়ে রাশেদার সময় যার কোন প্রচলন ছিলান, এমতাবস্থায় কুরআন, সুন্নার বিরোধী।
‘দারুল হরব’: ‘যুদ্ধের আবাসস্থল’, এমন ভূ-খণ্ড যা ইসলামের শত্রুদের অধীনে রয়েছে।
‘দারুল ইসলাম’ ‘শান্তির আবাসস্থল’ এমন ভূ-খণ্ড যেখানে শরীয়াহর অনুশাসন জারী রয়েছে।
‘জরুরীয়াত’ এমন সব দ্রব্যসামগ্রী যা ছাড়া জীবনধারণ করা সম্ভব নয়, রাজনৈতিক ব্যবস্থায় নাগরিকদের সাধারণ সুযোগ সুবিধা প্রদানের নিশ্চয়তা বুঝায়।
‘দাওয়াহ’: আহবান, আবেদন, আমন্ত্রণ; অমুসলিমদেরকে মুসলমান হবার জন্য বা যে সব মুসলমান সত্যপথ হতে সরে গিয়েছে তাদেরকে ফিরিয়ে আনার জন্য দাওয়াতী বা মিশনারী কার্য।
‘দাওলাহ’: রাষ্ট্র, সরকার বা রাজনীতির ক্ষেত্র
‘দায়া’: অপচয়, কারো সময়, শক্তি ও অর্থ ব্যয় করা যার কোন নৈতিক বিনিময় পাওয়া যাবে না।
‘জিকির’: আল্লাহর স্মরণ; বিভিন্ন সুফী তরীকার আধ্যাত্মিক শৃঙ্খলার মূল বিষয়।
‘দ্বীন’: বৃহত্তর অর্থে ধর্ম, যা মানবজীবনের সকল অঙ্গন পরিবেষ্টন করে আছে।
‘আদ-দ্বীন লিল্লাহ ওয় আল ওয়াতান লি জামী’ ধর্ম আল্লাহর জন্য এবং মাতৃভূমি সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য।
‘দিওয়ান’ প্রশাসনিক কার্যালয়, ব্যুরো; সরকারী রাজস্বের হিসাব বহি অর্থেও ব্যবহৃত হয়।
‘দিওয়ান আল মুজলীম’ ‘দিওয়ান আল নজর ফি আল-মুজালীম’ এর সংক্ষিপ্ত রূপ
‘দিওয়ান আল নজর আল মুজালিম’ যে সংস্থা ঐতিহাসিকভাবে শাসন বিভাগের প্রশাসনিক কার্যকলাপের উপর তত্ত্বাবধানমূলক নজরদারী করে এসেছে।
‘দিয়াহ’: সময় সময় পরিবর্তন করা, সার্কিট তৈরী করা, বিকল্প ব্যবস্থা করা।
‘ফালাসিফাহ’ দার্শনিকবৃন্দ; মুসলিম পণ্ডিতবর্গ যারা গ্রীক ঐতিহ্য অনুযায়ী দর্শন চর্চা করতেন।
‘ফা-কা; কাফারু বি আল্লাহ’: যারা প্রকৃত প্রস্তাবে আল্লাহকে অস্বীকার করেছে।
‘ফকীহ’ (বহুবচন: ফুকাহা): ইসলামী আইনশাস্ত্রে বিশেষজ্ঞ ব্যক্তি।
‘ফারাইদ’ (একবচন: ফরজ) আল্লাহ মুসলমানদের উপর যেসব কার্যাবলী বাধ্যতামূলকভাবে অবশ্য করণীয় করেছেন।
‘ফরজ’ (বহুবচন ফারাইদ) পাঁচওয়াক্ত নামাজের মত বাধ্যতামূলকভাবে অবশ্য করণীয় কার্যাদি; যা পালন না করলে শাস্তি পেতে হবে, পালন করার ক্ষেত্রে পুরস্কৃত হবে।
‘ফরজে আইন’: ব্যক্তির উপর অবশ্য পালনীয় কর্তব্য।
‘ফরজে কিফায়াহ’ সমাজের উপর অবশ্য পালনীয় কর্তব্য। সমাজের উল্লেখযোগ্য সংখ্যক ব্যক্তি তা পালন করলে, সমাজের অন্যান্য ব্যক্তি কর্তব্যকাজটি হতে অব্যাহতি প্রাপ্ত হয়।
‘ফাতওয়া’ (বহুবচন: ফাতাওয়া) কোন আইনগত বিষয়ের উপর কোন আইনবিশারদ কর্তৃক প্রদত্ত মতামত। যে ব্যক্তি ফতোয়া প্রদান করেন তিনি ‘মুফতী’ নামে অভিহিত।
‘ফিকাহ’: শাব্দিক অর্থে উপলব্ধি করা, বুঝা জ্ঞান এবং বিশেষ অর্থে ইসলামী আইনশাস্ত্র বিজ্ঞানকে বুঝায়।
‘ফুকাহা’ (একবচন ফকিহ) আইনশাস্ত্রবিদগণ বা ফকিহগণ যারা আইনের মর্মার্থ উপলব্ধিতে বিশষজ্ঞ।
‘হাদ’ (বহুবচন: হুদুদ) সীমারেখা, প্রান্তরেখা, নিষিদ্ধ যে সব কার্যকলাপের জন্য কুরআনে শাস্তি বিধান করা হয়েছে।
‘হাদীস’: নবী করিম মোহাম্মদ (সা) এর সুন্নাহ তথা তার উক্তি, বক্তব্য, কার্যাবলীও সাহাবীদের কারো কাজে মৌন সম্মতি।
‘হাফিজ’: অভিভাবক, সংরক্ষণকারী; যিনি কুরআন হফিজ বা মুখস্থ করেছেন।
‘হাজীয়াহ’ ঐসব দ্রব্য সামগ্রী যার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, তবে অত্যাবশ্যক নয়।
‘হজ’ : মক্কাশরীফে তীর্থযাত্রা।
‘হালাল’ : আইনসঙ্গত; খাদ্য ও কার্যকলাপের বিষয়ে যেগুলি অনুমোদিত।
‘হক’ : সত্য।
‘হক আল ইবাদ’ ব্যক্তির নিজের প্রতি অন্যান্য মানুষের প্রতি ও অন্যান্য জীবজন্তু ও প্রাণীর প্রতি আল্লাহর নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
‘হাক্কুল্লাহ’: আল্লাহর প্রতি নির্ধারিত দায়িত্ব ও কর্তব্য।
‘হক্কুল ইয়াকীন’ :স্বজ্ঞঅ বা ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার দ্বারা অর্জিত পূর্ণ নিশ্চয়তামূলক জ্ঞান। ইন্দ্রীয়জান বা বিচারবুদ্ধিজাত কোন ভ্রান্তি থাকতে পারে না এমন নির্ভুল সত্যজ্ঞান।
‘হারাম’ বেআইনী, নিষিদ্ধ, হালালের বিপরীত; পবিত্র অর্থেও শব্দটি ক্ষেত্রবিশেষে ব্যবহৃত হয়।
‘হিজাব’ বোরখা, চাদর; মুসলিম মহিলাদের হে আবৃত করার জন্য নির্ধারিত আচ্ছাদন।
‘হিজরা বা হিজরত’ : একস্থান হতে অন্য স্থানে গমন; বিশেষ করে মহানবী (সা) কর্তৃক ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে মক্কা হতে মদীনা গমন। এই ঘটনাকাল হতে ইসলামী বর্ষপঞ্জী গণনা করা হয়।
‘হিসবাহ’ সত্যকে উৎসাহিতকরণ ও মিথ্যাকে প্রতিরোধ করার জন্য প্রত্যেক মুসলমানের উপর অর্পিত দায়িত্ব; বাজার ও অন্যান্য স্থানের নৈতিক পবিত্রতা রক্ষার দায়িত্ব প্রাপ্ত সরকারী কার্যালয়।
‘হিযবুল্লাহ’: আল্লাহর দল; যারা আল্লাহর আদেশ নিষেধ অনুসরণ ও কার্যকর করে।
‘হুদুদ’ (বহু বচন : হাদ্) : কুরআন ও সুন্নায় সে সব অপরাধের শাস্তি বর্ণিত রয়েছে।
‘হুদুল-আল-শরীয়াহ’: ইসলামী শরীয়াহ অনুযায়ী প্রদত্ত শাস্তি।
‘হুকুম’ (বহুবচন: আহকাম) আইন, রায়, কর্তৃত্ব; কাজীর রায়, বিচারের রায়, ন্যায়বিচার প্রয়োগ করা।
‘আল-হুরমাহ’: পবিত্রতা, পংকিলতা, পযকিলতামুক্ত, মহা পবিত্র ও অলংঘনীয়তা।
‘আল-হুররিয়াহ’: মুক্তি, স্বাধীনতা।
‘ইবাদাহ’ (বহুবচন: ইবাদত) উপাসনা, আরাধনা, ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা পালন; আল্লাহ কর্তৃক সকল দায়িত্ব পালন করা; চিন্তা ও কর্মে জীবনের প্রতি পদক্ষেপ আল্লাহর আদেশ মেনে চলা।
‘ইজমা’ ঐক্যমত্য; ইসলমী আইনের চারটি উৎসের একটি; কোন বিষয়ের উপর উলেমাবৃন্দ বা জনসাধারণের সর্ববাদিসম্মত একমত পোষণ করা।
‘ইজতিহাদ’: আইনগত বৈধতার প্রশ্নে স্বাধীন চিন্তার প্রয়োগ; শরীয়াহর বিধি বিধানের প্রশ্নে ব্যাখ্যা প্রদান; কুরআন ও সুন্নাহর আলোকে কোন বিষয়ে গবেষণা পরিচালনা। যে যোগ্য ব্যক্তি ‘ইজতিহাদ’ পরিচালনা করেন তাকে ‘মুজতাহিদ’ বলা হয়।
‘ইখলাস’ : আন্তরিকতা ও বিশ্বস্ততা।
‘ইকরাম আল মুসলীম’: মুসলমানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন
‘ইলাহ’ : দেবতা, ঈশ্বর (?)
‘ইল্লাহ’: বিশেষ কার্য বা রায়ের অন্তর্নিহিত কারণ।
‘ইলম’ : জ্ঞান, বিজ্ঞান, প্রজ্ঞা; কোন ক্ষেত্রে প্রকৃত বাস্তবতা বিষয়ক জ্ঞান।
‘ইলম-আল-কালাম’ : দ্বান্দ্বিক বা পদ্ধতিসুসমন্বিত ধর্মতত্ত্ব; ইসলামের একপ্রকার ‘ধর্ম বিজ্ঞান’।
‘ইলম-আল-ইয়াকীন’: যুক্তি, বুদ্ধি বা অবরোহগত জ্ঞান।
‘ইমাম’ : নেতা, প্রধান, নাজাম পরিচালনাকারী; খলিফার সমার্থক শব্দ।
‘ইমামহ’: ইমমাত, খিলাফতের প্রতিশব্দ বা সমার্থক শব্দ, ইসলমী রাজনৈতিক ব্যবস্থা।
‘ঈমান’ বিশ্বাস, আত্মসমর্পণ, নৈতিক মূল্যবোধের উৎস ইসলামে যা সর্বোচ্চ বলে স্বীকৃত।
‘ইন্না ইয়াহুদ বনি আউফউম্মাহ মা’আ আল-মুমিনিন’ বিশ্বাসীদের সাথে বনি আউফ গোত্রের ইহুদীরা একই উম্মতভুক্ত।
‘ইসতিহসান’ সম্মতি, অনুমোদন, আইনগত পছন্দ, কোন কিছুকে ভালো মনে করা, প্রাত্যহিক জীবনের প্রয়োজনীয়তার সাথে সঙ্গতি রেখে আইনগত কোন সমস্যার ক্ষেত্রে বিবেক বুদ্ধি মতে সমাধান প্রদান করা, আইনগত সমাধানে পৌঁছার পদ্ধতি।
‘ইসতিসহাব’ কোন আইনগত নীতি বর্তমানে বিদ্যমান নই বা পরিবর্তিত হয়েছে এ মর্মে প্রকাশিত হবার পূর্ব পর্যন্ত ঐ আইনগত নীতির কার্যকারিতা বহাল থাকা।
‘ইসতিসলাহ’ জনস্বার্থ সম্পর্কিত; জনগণের কল্যাণ কামনা, আইনের উৎস হিসাবে বিবেচিত।
‘ইজাহ’ : আনুগত্য।
‘জাহিল’ : অজ্ঞ, ঐশী প্রত্যাদেশে বর্ণিত সুসভ্য জীবনে বুঝতে বা উপলব্ধি করতে যে অক্ষম।
‘জাহিলিয়াহ’ : অজ্ঞানতার যুগ, প্রাক-ইসলামিক আরব ইতিসাহের যুগ, বর্তমান মুসলিম সমাজের দুর্নীতিপরায়ণ বুঝাতেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
‘জামাহ’ দল, সম্প্রদায়, উম্মাহর সমার্থক শব্দ, কিন্তু আরো সংকীর্ণ অর্থেও শব্দটি ব্যবহৃত হয়।
‘জিহাদ’: প্রচেষ্টা, ব্যক্তিগত ও সামষ্টিকভাবে ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক পরিশুদ্ধতা অর্জনের চেষ্টা, ইসলামকে রক্ষা করার জন্য যুদ্ধ, যিনি সক্রিয়ভাবে জিহাদে লিপ্ত থাকেন তাকে ‘মুজাহিদ’ বলা হয়।
‘জিহাদ ফি সাবিল আল্লাহ’ : আল্লাহর পথে নিজ দায়িথ্বপালনের জন্য সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা; নিজের ভিতর ভুলক্রটি সংশোধনের জন্য অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক কার্য, আল্লাহর পথে যুদ্ধ করা।
‘কাবাহ’ : শাব্দিক অর্থে ‘ঘনক্ষেত্র’, মক্কায় অবস্থিত ইসলামের প্রধান পবিত্র স্থান।
‘কাফাহ’ : যোগ্যতা, দক্ষতা, উপযুক্ততা।
‘কাফির’ : অবিশ্বাসী, নাস্তিক, অকৃতজ্ঞ, যে ব্যক্তি ইসলামের বাণী বিশ্বাস বা গ্রহন করে না।
‘কালাম’ : বিশেষভাবে ধর্মীয় বিষয়ের উপর বক্তৃতা ভাষণ।
‘খলিফাহ’ : যিনি পরে আসেন, উত্তরসুরী, বিশেষকরে নবী করিম (সা) এর প্রতিনিধি।
‘খিলাফত’: উত্তরাধিকার, দুনিয়ার বুকে আল্লাহ পাকের প্রতিনিধিত্ব করার পদ, ইমামত শব্দের সমার্থক।
‘খিলাফত আল নবুওয়াহ’ নবী করিম (সা) এর প্রতিনিধিত্ব, যা দ্বারা মদীনার যুগের খিলাফতকে বুঝায়।
‘খাওয়ারীজ’ : যারা বাহির হয়ে গেছে, ভিন্নমত পোষণকারী; সিফফিনের যুদ্ধের সময় যারা চতুর্থ খলিফা আলীর দলত্যাগ করে এবং আলাদা দল গঠন করে।
‘খোলাফায়ে রাশেদীন’ : সঠিক পথে পরিচালিত উত্তরসূরীগণ, এ পরিভাষাটি প্রথম চার খলিফা আবুবকর, ওমর, ওসমান ও আলী সম্পর্কে ব্যবহৃত হয়, যারা নবী করিম (সা) এর সাহাবী ছিলেন এবং মুসলিম উম্মাহ কর্তৃক নির্বাচিত হয়েছিলেন। তাদের শাসনকাল সর্বোচ্চ আদর্শ ও অনুসরণীয় বলে বিবেচিত।
‘কিতাব’ : লিখা, পুস্তক, গ্রন্থ।
‘কুফর’ : অবিশ্বাস, ধর্মদ্রোহীতা, অকৃতজ্ঞতা, নাস্তিকতা।
‘মাজহাব’ কার্যপ্রণালী, ইসলামী আইনশাস্ত্রের পদ্ধতি, চারিটি সুন্নী তরিকা সম্পর্কে পরিভাষাটি ব্যবহৃত হয়; হানবলী ,মালেকা, হানাফী সাফীঈ।
‘মাহদী’ : পথ প্রদর্শক, নেতা; সত্য, ন্যায় ও সুবিচার প্রতিষ্ঠার জন্য যার আগমন সম্পর্কে ভবিষ্যৎবাণী করা হয়েছে।
‘মাহদীয়াত’ : মাহদী সম্পর্কিত, মাহদীবাদ।
‘মজলিস’ : পরামর্শ সভা যেখানে জনস্বার্থমূলক বিষয়াদি আলোচনা করা হয়।
‘মজলিস আল বায়াত’ : জাতীয় সংসদ
‘মজলিসে শূরা’ পরামর্শ সভা।
‘মাকরুহ’ অপ্রীতিকর, যেসব কাজ করতে মুসলিমদের নিরুৎসাহিত করা হয়েছে; যেসব কাজ না করলে পূণ্য অর্জিত হবে, কিন্তু করলে শাস্তি প্রদান করা হবেনা।
‘মানদুব’ :সুপারিশকৃত; যে সব কাজ করার জন্য মুসলমানদের জন্য উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে এবং যে সব কাজ করলে পূণ্য অর্জিত হবে, তবে না করলে শাস্তি প্রদান করা হবে না।
‘মারিফাত’ : আধ্যাত্মিক জ্ঞান বা উপলব্ধি
‘মারুফাত’ : ভালো, উপকারী, উপযুক্ত; ঐশীপ্রত্যাদেশ বা যুক্তিবুদ্ধি যে সব পূণ্য কাজ করতে মুসলমানদের উৎসাহিত করেছে।
‘মাওয়ালী’ : পৃষ্ঠপোষক, বন্ধু।
‘মুজালিম’ : মন্দকাজ, ভুলকাজ, বৈষম্য, অবিচারমূলক কাজ।
‘মিজান’ : দাড়িপাল্লা, ওজন, সমতা, সুষমতা।
‘মুয়ামালাত’ : মদীনায় রাসূলুল্লাহ (সা) কর্তৃক মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব স্থাপন।
‘মুয়ামালাত’ : অন্যের প্রতি আচরণ; ইসলামী আইন অনুযায়ী অর্থনৈতিক লেন-দেন।
‘মুবাহ’ : অনুমোদিত; যে কাজের জন্য মুসলমানগণ পুণ্য বা শাস্তি কিছু প্রাপ্ত হবে না।
‘মুবিন’ : সুস্পষ্ট, সমুজ্জল, স্থানকালের পরিসীমায় সমগ্র মানবতার জন্য বুদ্ধিগ্রাহ্য।
‘মুফতী’ : আইনশাস্ত্র বিশারদ; কুরআন, সুন্নাহ ও ফিকাহশাস্ত্রে পারদর্শী পণ্ডিত।
‘মুহাররামাত’ নিষিদ্ধ শাস্তিযোগ্য; ক্ষেত্র বিশেষে ‘পবিত্র’ অর্থে নিষিদ্ধ মর্মেও পরিভাষাটি ব্যবহৃত হয়।
‘মুহাসাবাহ’ : জবাবদিহিতা; বিবেকের পরীক্ষা।
‘মুহতাসীব’ ‘হিসবাহ’ এর দায়িত্বে নিযুক্ত কর্মকর্তা।
‘মুজাদ্দিদ’ : ইসলামের সংস্কারক; কুরআন ও সুন্নাহর অনুশাসনের বিচ্যুতি সংশোধন করে যিনি ইসলামকে পুর্জীবন দান করেন।
‘মুজাহিদ’ : যিদি সক্রিয়ভাবে জিহাদে রত থাকেন।
‘মুজতাহিদ’ : যিনি সক্রিয়ভাবে জিহাদে রত থাকেন।
‘মুজতাহিদ’ যিনি আইনগত প্রশ্নে প্রাজ্ঞ মতামত দিতে সক্ষম তথা ‘ইজতিহাদ’ পরিচালনা করেন।
‘মুলুক’ : রাজত্ব, রাজকীয় মর্যাদা, শাসন, সরকার, অস্থায়ী কর্তৃত্ব।
‘মুনকারাত’ ঐশী প্রত্যাদেশ বা যুক্তিবুদ্ধি দ্বারা যে সব পাপকর্ম নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।
‘মুসাওয়াহ’ : সমতা
‘মুসেয়তীর’ : বলপূর্বক কার্য সম্পাদনকারী; কারো ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার উপর অন্যের মত চাপিয়ে দেয়া।
‘মুশরিকুন’: বহুত্ববাদী; যারা আল্লাহর সহিত কাউকে শরিক করে। কুরআন অনুযায়ী ইহা ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
‘মুসতাখলাফ’ : জিম্মাদার, অভিভাবক।
‘মুতাজিলাহ’ ধর্মতত্ত্ব চর্চার একটি প্রণালী; ‘আলাদাভাবে দণ্ডায়মান হওয়া’ শব্দ হতে পরিভাষাটি এসেছে।
‘মুত্তাকী’ (ধাতুগত রূপ: তাকওয়া) যে ব্যক্তি আল্লাহ, প্রকৃতি ও মানব সমাজের প্রতি ইসলামী দায়িত্বশীলতা সম্পর্কে সচেতন।
‘মুওয়াহহীদ’ : তাওহীদে বিশ্বাসী; চিন্তায় ও কার্যে সর্বদা ঐশী একত্বে বিশ্বাসী।
‘নাহদাহ’ : পুনর্জাগরণ; শিশুর মাঝে সুপ্ত শক্তির জাগরণ, পরিভাষাটি ইসলামী আন্দোলন সম্পর্কে ব্যবহৃত হয়।
‘নাসব’ : বংশানুক্রমিকতা, আত্মীয়তা।
‘নিয়ত’ ইচ্ছা, প্রতিজ্ঞা, অভিপ্রায়, নামাজের মত ধর্মীয় আনুষ্ঠানিক কাজের পূর্বে অভিব্যক্তি ইচ্ছা বা এরাদা।
‘কাজা’ : কাজীর কার্য ও কার্যাবলী, বিচার বিভাগ, কাজী কর্তৃক প্রদত্ত রায়।
‘কাজফ’ অবমাননাকর অভিযোগ
‘কাজী’ কাজী; নিয়োজিত কিন্তু স্বাধীন ধর্মীয় কর্তৃত্ব যিনি শরীয়াহ অনুযায়ী বিচার করেন।
‘কাহর ওয়া ঘালাবাহ’ :শক্তি ও সীমাবদ্ধতা
‘কানুন’ : খলিফার রাজনৈতিক বা প্রশাসনিক আদেশ।
‘কাসামাহ’ : ভাগ, অংশ,হিস্যা।
‘কাওয়াইদ’ : সাধারণ নীতিমালা।
‘কওম’ গোত্র, লোকসমষ্টি, জাতি।
‘কিবলাহ’ : মক্কার দিক, যে দিকে মুখ করে মুসলমানগণ নামাজ আদয় করেন।
‘কিসাস’ : প্রতিশোধ গ্রহণ করা,তার বিরুদ্ধে যে অন্যায় করা হয়েছে তজ্জন্য।
‘কিন্তু’ : সুবিচার, ন্যায়বিচার।
‘কিয়াস’ : অবরোহী পদ্ধতিতে যুক্তি প্রয়োগ। ইহা শরীয়ার চতুর্থ উৎস। ইহা ইজতিহাদ পরিচালনার বিশেষ পদ্ধতি।
‘রাসূল’ : বাণী বাহক; সমগ্র মানবতার জন্য ঐশী বাণী বাহক নবী।
‘রে’ : বিশেষত আইনগত প্রশ্নে ব্যক্তিগত মতামত।
‘রিবা’ : ঋনের উপর ধার্যকৃত সুদ, ইসলামে রিবা বা সুদ নিষিদ্ধ।
‘রিবাত’ মুসলিম দেশের সীমান্তে সেনাবাহিনী স্থাপনা বা দুর্গ; সুফী সম্প্রদায়ের নির্জনবাসের আশ্রয়স্থল অর্থে ব্যবহৃত হয়।
‘রিসালত’ : নবী মারফত বিশেষ সম্প্রদায়ের জন্য প্রেরিত ঐশী প্রত্যাদেশ; নবুয়তের পদ।
‘সালাফিয়াহ’ : যোগ্য উত্তরসূরী।
‘সালামাহ’ : নিষ্কলুষতা, ত্রুটিহীনতা, চারিত্রিক সংহতি।
‘সা’ব’ : আত্মীয়তার সম্পর্কে সম্পর্কীত লোকসমষ্টি।
‘শাহাদাত’ : বিশ্বাসীদের অঙ্গীকার; আল্লাহর একত্ব ও মোহাম্মদ (সা) এর রিসালতের সাক্ষ্য প্রদান করা; গভীর বিশ্বাসের সাথে কলেমা শাহাদাত উচ্চারণ একজনকে মুসলমানে পরিণত করে; অর্পিত দায়িত্ব পালনের প্রমাণ।
‘শারা’ : ইসলামী আইনের ঐশী উৎসের ভিত্তিতে আইন প্রয়োগ করা।
‘শারী’ : আইনসম্মত, বৈধ।
‘শরীয়াহ’ : শাব্দিক অর্থে পানির উৎসের দিকে গমনের পথ। কুরআন, সু্ন্নাহ, ইজমা, কিয়াস বা ইজতিহাদের ভিত্তিতে প্রণীত ইসলামী আইন বা আচরণ বিধি। ইহা ইসলামী ব্যবস্থার সমগ্রতা।
‘শিয়া’ : দল, উপদল, সম্প্রদায়; যারা আলী ও তাঁর অধস্তন পুরুষদের সঠিক খলিফা বলে মনে করেন।
‘শির্ক’ : বহুত্ববাদ, মূর্তিপূজা; যারা আল্লাহর সহিত কোন কিছুকে শরীক করে।
‘শুরা’ পরামর্শ, আলাপ আলোচনা; একটি রাজনৈতিক নীতিমালা যেথায় জনগণ নিজেদের প্রতিনিধিদের সাথে আলাপ আলোচনা, পরামর্শক্রমে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের দৃষ্টিতে শুরা পার্লামেন্ট (মজলিসে শুরা) এর সমার্থক।
‘মুউবিয়াহ’ : আরবদের অধিক সুবিধা প্রদানের সমর্থক একটি আন্দোলন।
‘সিহাহ’ ইমাম আল বুখারী, ইমাম মুসলিম, আবু দাউদ, ইবনে মাজাহ এবং আল তিরমিজী কর্তৃক সংকলিত নবী করিম (সা) হাদীসসমূহের ছয়টি প্রামাণিক গ্রন্থ।
‘সিরাত’ : জীবন চরিত।
‘সিরাতুল মুস্তাকিম’ : সঠিক পথ, প্রত্যাদিষ্ট পন্থা।
‘সিয়াসাহ’ কর্তৃত্ব; শাসক বা তার প্রতিনিধি কর্তৃক প্রশাসনিক বিচার কার্য; সরকারী প্রশাসন, নীতি, রাজনীতি।
‘সিয়াসাহ আদিলাহ’ : ন্যায়পরায়ণ সরকার।
‘সিয়াসাহ আকলিয়াহ’ : যুক্তিভিত্তিক সরকার।
‘সিয়ামাহ শরীয়াহ’ : শরীয়ত ভিত্তিক ব্যবস্থা।
‘সুফী’ : মুসলিম আধ্যাত্মবাদী বা মরমীবাদী; যিনি ইসলামী আধ্যাত্মবাদ চর্চা করেন।
‘সুলতান’ : ক্ষমতা, দুনিয়াবী শাসনকর্তা, একজন স্বাধীন শাসক।
‘সুন্নাহ’ : নবী করিম (সা) এর উক্তি, কার্য, জীবনাচরণ বা সাহাবীদের কারো কার্যে মৌন সম্মতিকে সমন্বিতভাবে সুন্নাহ বলা হয়। নবী করিম (সা) এর সুন্নাহ শরীয়তের অন্যতম উৎস।
‘সূরা’ : কুরআনের অধ্যায়।
‘তাবলীগ’ : প্রচার, ঘোষণা; দাওয়াহ এর প্রতিশব্দ।
‘তাগুত’ মন্দশক্তি, সীমা লংঘনকারী অপশক্তি, আল্লাহর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, মিথ্যা দেবদেবী, খারাপ কাজের মন্ত্রণাদানকারী।
‘তাহসিনিয়াত’ সৌকর্যবৃদ্ধিকরণ, সুন্দর করা, কোন কিছুকে নিখুঁত করে চরম উৎকর্ষে পৌঁছান।
‘তাজদীদ’ : পুর্জ্জীবন, পুনরুত্থান, প্রামাণিক ও আদি উৎস অনুসারে ইসলামী শিক্ষার পুনর্জ্জীবন। যিনি ‘তাজদীদ’ চর্চা করেত তাকে ‘মুজাদ্দিদ’ বলা হয়।
‘তাকলীদ’ : অন্ধ অনুকরণ, স্বাধীনভাবে পরীক্ষা নিরীক্ষা না করে কোন ধর্মতত্ত্ববিদ বা আইনশাস্ত্রবিদ যে পদ্ধতি প্রদান করেছেন তা অনুসরণ করে চলা।
‘তাকলীদ আল –ইমামাহ’ শরীয়াহর কোন বিধানের বিষয়ে ইসলামী আইনজ্ঞগণের প্রদত্ত রায় অনুসরণ করা।
‘তাকওয়া’ ধর্মপরায়ণতা, খোদাভীতি; ইহা বিশ্বাস, ধর্মানুগতা, আনুগত্য ও আল্লাহর সাথে অঙ্গীকারের সমন্বয়; ইহা আল্লাহর নৈকট্য ও তাকে সন্তুষ্ট করার প্রচেষ্টাকেও বুঝঅয়।
‘তাশরী’ : আইন প্রণয়ন।
‘তাওহীদ’ আল্লাহর ঐশ্বরিক একত্বতা, যা কালেমা শাহাদাতের প্রথম অংশে ব্যক্ত হয়েছে। একমাত্র আল্লাহ ছাড়া এবাদতের যোগ্য আর কেউ নেই। ইহা ইসলামের সামগ্রিকতার নির্যাস।
‘তাউইল’ মূল গ্রন্থে যার অস্পষ্টতা বা ভিন্ন ভিন্ন অর্থ রয়েছে তার প্রতীকি ব্যখ্যা।
‘তা’যীর’ : নিরোধক; কাজী কর্তৃক প্রদত্ত বিচার বুদ্ধিসম্পন্ন শাস্তি।
‘তাযীরাত’ : নিরোধসমূহ; বিচারবুদ্ধি সম্পন্ন শাস্তিসমূহ।
‘উখুওয়াহ’(ধানুগত রূপ: আখ বা ভাই) : ভ্রাতৃত্ব, বন্ধুত্ব।
‘উলামা’ (একবচন: আলেম) : মুসলিম আইনশাস্ত্রবিদ, পণ্ডিত, ধর্মতত্ত্ববিদ; যে ব্যক্তিবর্গ শরীয়াহর জ্ঞানে পারদর্শী।
‘উলুল আমর’ : শাসক, আদেশ, প্রদানকারী, আইন শাস্ত্রবিদ; যারা জ্ঞান।
‘উমাম’ (উম্মাহ’র বহুবচন) : সম্প্রদায় সমষ্টি, লোক সমষ্টি।
‘উমারা’ (আমীর’র বহুবচন):শাসকবৃন্দ, আদেশদাতাগণ।
‘উম্মাহ’ সম্প্রদায়, দল, লোকসমষ্টি; ভাষা, বর্ণ, জাতিসত্তা, গোত্র নির্বিশেষে মুসলিম উম্মাহ একই ও অভিন্ন আদর্শ, ধর্ম, আইন, জীবনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য ও নৈতিকতার ভিত্তিতে সুসমন্বিত ও সংঘবদ্ধ সম্প্রদায় বা জাতি।
‘উম্মাহ মুসলিমাহ’ : জাতিসত্তা, বর্ণ ইত্যাদি নির্বিশেষে ঈমানদারদের দল বা গোষ্ঠী।
‘উম্মাহ ওয়াহিদাহ’ একক সম্প্রদায়। কুরআন ১০:১৯ আয়াতে সমগ্র মানবজাতিকে একটি মাত্র সম্প্রদায় হিসাবে উল্লেখ করেছে।
‘উরফ’ : সমাজের রীতিনীতি, নীতিনীতির ভিত্তিতে সাম্প্রতিক কালের আইন বা প্রথা।
‘উরুবাহ’ : আরব জাতীয়তাবাদ, আরবীয় চরিত্র।
‘উসুল আল ফিকাহ’ : আইনশাস্ত্র বিজ্ঞান।
‘উসওয়াহ হাসানাহ’ : অনুসরণযোগ্য আদর্শ চরিত্র।
‘ওয়াজীবাত’ (ওয়াজিব এর বহুবচন): বাধ্যতামূলকসমূঞ।
‘ওয়াকিল’ : কর্তৃত্বপ্রাপ্ত প্রতিনিধি; বিরোধ, বিবাহ, বিবাদ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে এক বা উভয় পক্ষ কর্তৃক দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি।
‘ওয়াকফ’ সমাজকল্যাণ বা ধর্মীয় উদ্দেশ্য গঠিত দাতব্য প্রতিষ্টান।
‘ওয়ারা’ খোদাভীতি, আল্লাহর শাস্তি সম্পর্কে সচেতনতা, ইসলামের প্রতি অঙ্গীকার
‘ওয়াসাত’ : মধ্যপন্থা।
‘উইলাইয়অহ’ : জনগণের কাজ, দক্ষতা, অধিক্ষেত্র, সরকারী কার্যালয়, কর্তৃত্ব।
‘জাকাত’ একজন মুসলমানের সম্পদ ও আয়ের একটি অংশ নির্দিষ্ট গরীব ও দরিদ্র জনগণের মধ্যে বিলিয়ে দেয়া। ইহা অন্যতম বাধ্যতামূলক এবাদত। জাকাত প্রদানের মাধ্যমে ধনসম্পদের পরিশুদ্ধতা সৃষ্টি হয়।
‘জিনা’ : ব্যভিচার।
‘জুলুম’ : নিপীড়ন, নির্যাতন, অবিচার, কারো ন্যায্যা পাওনা প্রদান না করা, ‘আদালাহ’ এর বিপরীত শব্দ। কুরআনে শির্ক, করাকে ‘জুলুম’ এবং অবিশ্বাসীদের জালিমরূপে অভিহিত করা হয়েছে (আল কাফিরুনা হুম আল জালিমুন)।