নবম অধ্যায়ঃ মসজিদ
মসজিদ এমন এক স্থান যেখানে মুসলমানরা প্রতিদিন পাঁচবার নামাজ আদায় করে; যেখানে তারা এই বিশ্বের জ্বালা যন্ত্রণা, তার চিরন্তন ও দৈনন্দিন চাহিদা, জটিলতা এবং আত্মশ্লাঘা থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করে।
মসজিদের ডিজাইন
১. প্রত্যেক আবাসিক এলাকায় মসজিদ নির্মাণ করতে হবে।
২. মসজিদের ডিজাইন হবে অনাড়ম্বর এবং আসবাবপত্র ও সাজসরঞ্জাম হবে তদনুরূপ।
৩. মসজিদে জাজজমকপূর্ণ কারুকার্য থাকা উচিত নয়; ছবি বা মূর্তি বা অন্য কিছুর প্রতীক থাকবে না।
৪. বিলাসবহুল মসজিদ নির্মাণ করে বিপুল অর্থের অপব্যয় করা চলবে না।
৫. মুসলিম সমাজের সদস্যদের উচিত নয় বিশেষ কোন মসজিদের বরকত বা সৌন্দর্য নিয়ে তর্কবিতর্ক করা অথবা জাকজমকপূর্ণ মসজিদ নির্মাণে প্রতিদ্বন্দ্বিবতা করা।
৬. মসজিদের কোন অংশের বা সাজসজ্জায় স্বর্ণ-রৌপ্যের অংশবিশেষ লাগানো নিষিদ্ধ।
৭. মসজিদের দেয়াল ও কার্পেট বহু বর্ণ রঞ্জিত হওয়া উচিত নয়, কারণ এর ফলে নামাজের মনোযোগ বিঘ্নিত হয়।
৮. মসজিদের দেয়ালের ভেতরে বা বাইরে কুরআনের আয়াত বা খোদার গুণাগুণের বর্ণনা সমেত লেখা পরিহার করতে হবে। একইভাবে মহানবীর (সা.) এবং খোলাফায়ে রাশেদীনের অন্তর্ভুক্ত চার খলিফার নামও লেখা উচিত নয়।
৯. মসজিদের মাঝখানে মিম্বর স্থান করা উচিত নয়। তিন ধাপের বেশি এর উঁচ্চতা হবেনা। [আমাদের দেশে হানাফি মাজহাব অনুসারে মসজিদের মাঝখানেই মিম্বর স্থাপন করা হয়। বলতে গেলে, সমগ্র উপমহাদেশেই এই রীতি প্রচলিত- অনুবাদক]
১০. প্রত্যেক মসজিদে ২টি প্রবেশ পথ থাকবে- ১টি পুরুষদের, অন্যটি থাকবে মহিলাদের জন্যে।
১১. পায়খানা, পেশাবখানা- মসজিদ এবং অজুখানা থেকে যতদূরে রাখা যায়, তত ভাল।
১২. মসজিদের অভ্যন্তরে পতাকা ওড়ানো উচিত নয়।
পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা
মসজিদ হবে পৃথিবীর পরিচ্ছন্নতম স্থানের অন্যতম। সেজন্যেঃ
১. মসজিদে প্রবেশের আগে মুসলমানদের নিশ্চিত হতে হবে যে, তাদের দেহ ও পোশাক পরিচ্ছন্ন এবং তাদে দুর্গন্ধ নেই।
২. জুতোর ময়লা পরিষ্কার রাখতে হবে এবং মসজিদে প্রবেশের আগে জুতা খুলে নিতে হবে।
৩. মসজিদে পানাহার নিষিদ্ধ না হলেও; সেটা খাওয়া দাওয়ার স্থান নয়।
৪. মসজিদে কেউ ময়লা নিয়ে আসলে অথবা কেউ ময়লা সৃষ্টির কারণ হলে তার উচিত তা পরিষ্কার করা। খাদেমদের কর্তব্য নয় শুধু মসজিদ পরিচ্ছন্ন রাখা, মসজিদে প্রবেশকারী প্রত্যেক মুসলমানের উচিত মসজিদে কোন প্রকার ময়লা থাকলে তা পরিচ্ছন্ন রাখা।
৫. সুগন্ধির পরিবেশ সৃষ্টির উদ্দেশ্যে মসজিদে গোলাপজল স্প্রে করা যায়।