চতুর্দশ অধ্যায়ঃ নামকরণ ও অন্যদের সম্ভাষণ
নামকরণ যেকোন সমাজের নিঃসন্দেহে একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ। ইসলামি সমাজে নামকরণের বেশ কিছু নিয়মকানুন রয়েছে।
নামকরণ
১. সদ্য ভূমিষ্ঠ শিশুর নামকরণে পিতামাতার বিলম্ব করা উচিত নয়। শিশুর জন্মের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অগ্রাধিকার দিয়ে ৭ দিনের মধ্যে নামকরণ করতে হবে।
২. নামকরণের ব্যাপারে পিতামাতা একমত হলে, সেটা খুবই ভল। যদি তা না হয় তাহলে পিতার অগ্রাধিকার হচ্ছে নামকরণ করার।
৩. পতামাতার উচিত সন্তানদের উত্তম সৌন্দর্যময় ও অর্থবহ নামকরণ করা।
(ক) কতিপয় উত্তম নাম হচ্ছে: আবদুল্লাহ, আব্দুর রহমান এবং আবদুর রহিম।
(খ) নামের দুটো অংশ রয়েছে। প্রথমাংশে আব্দ (দাস) সংযুক্ত হয় আল্লাহর কোন ‘ছিফাত’ এর সাথে এবং এ ধরনের নাম চমৎকার।
(গ) ফিরিশতাদের নাম, যেমন জিরাইল প্রভৃতি পরিহার করা প্রয়োজন।
(ঙ) যে সব নাম ব্যক্তির চমৎকার নৈতিক চরিত্র, সততা, আনুগত্য বা পরিবত্রতা বুঝায়- তা পরিহার করতে হবে। স্রষ্টার প্রতি আনুগত্যবোধকতা এক্ষেত্রে বাঞ্ছনীয়।
(চ) আল্লাহ ছাড়া কোন ব্যক্তির দাস এমন অর্থ হলে; যেমন আব্দুল হুসাইন (হুসাইনের দাস), আব্দুন্নবী (নবীর দাস)- প্রভৃতি নামকরণ ইসলামে নিষিদ্ধ।
(ছ) হর্ষ, বিষাদ, যুদ্ধ এবং অনুরূপ অবস্থা- যেমন ‘হুজন’, ‘হার্ব প্রভৃতি নির্দেশ করে এমন নাম পরিহার করতে হবে।
(জ) পূর্ণাঙ্গ নামের প্রধান উপকরণ হচ্ছে প্রথম নাম, পিতার নাম এবং উপনাম। প্রত্যেক শিশুকে তার পিতার সাথে সম্পর্কযুক্ত করতে হবে এবং তার প্রকৃত পিতার বংশ নামে ডাকতে হবে। বিবাহিত মহিলাদের ক্ষেত্রেও এটা প্রয়োজ্য এবং তাদের পারিবারিক নাম অক্ষুন্ন রাখা এবং তার স্বামীর নামের পক্ষে তা ত্যাগ করা উচিত নয়। এটা তার অক্ষুন্ন রাখা এবং তার স্বামীর নামের পক্ষে তা ত্যাগ করা উচিত নয়। এটা তার জন্য অবমাননাকর এবং এটা পরিহার করতে হবে।
(ঝ) শুধু মানুষের জন্য নামকরণ গুরুত্বপূর্ণ নয়, সড়ক, সোয়ার ও শহরের নামকরণের ক্ষেত্রেও এটা গুরুত্বপূর্ণ।
(ঞ) মানুষ অথবা স্থানের নাম পরিবর্তনের প্রয়োজন হলে তা করা প্রয়োজন। নিষিদ্ধ নাম পরিবর্তন করা জরুরি।
অন্যান্যদের সম্বোধন করা
১. বাজার, সড়ক বা অন্যান্য স্থানে দূর থেকে কাউকে ডাকা ভদ্র আচরণ নয়। এক্ষেত্রে সম্বোধনের আগে ব্যক্তির নিকটবর্তী হওয়াই শ্রেয়।
২. জনগণকে তাদের নাম বা পদবী দ্বারা সম্বোধন করা যেতে পারে।
৩. শিক্ষক বা পিতামাতাকে তাদের প্রথম নামে ডাকা উচিত নয়, কারণ সেটা অভদ্রতার শামি।
৪. ব্যক্তি সন্তুষ্ট থাকলে তার সংক্ষিপ্ত নাম ধরে ডাকা একটি উত্তম কাজ।
৫. সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে পূর্ণ অনুমোদন সাপেক্ষে তার উপনাম বা পদবীর সাহায্যে ডাকা যেতে পারে।
৬. কোন ব্যক্তির সাথে পরিচয় না থাকলে তার সাথে সম্বোধনের ক্ষেত্রে বন্ধু বা ভাই-প্রভৃতি সাধারণ শব্দ ব্যবহার করলে সে আহত বা ব্যথি হবেনা।
৭. কোন অমুসলিম বা দুর্নীতিবাজ ব্যক্তিকে পিতৃপুরুষ সূত্রে বা প্রচলিত আপত্তিকর নামে (যেমন হে মালডিন, হে ঘুষখোর) সম্বোধন করা গর্হিত কাজ।