অষ্টাদশ অধ্যায়ঃ কবরস্থাপনের স্থাপত্য
কবরের স্থান
১. শহর ও গ্রাম থেকে দূরে অবস্থিত কবরসমূহে জেয়ারত করা দুরুহ হয়ে পড়ে।
২. কবরস্থানসমূহ শহর থেকে যুক্তিসংগতভাবেই নিকটবর্তী হতে হবে। শহর সম্প্রসারণের সাথে সাথে এগুলো শহরের অংশে পরিণত হতে পারে এবং মৃতদেহগুলো মাটির সাথে মিশে গিয়ে থাকলে প্রয়োজনবোধে নির্মাণ কাজ, বৃক্ষরোপণ বা অন্যান্য প্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে এই নীতি স্মরণ রাখতে হবে যে, মৃত দেহের কোন ক্ষতি বা অসুবিধা না করেই এই ব্যবস্থা করতে হবে।
৩. জীবিত ও মৃতদের জন্য ইসলাম পরিচ্ছন্নতার উপর গুরুত্ব দিয়েছে। এজন্য কবরস্থান পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।
কবরের আভ্যন্তরীণ ডিজাইন
১. মৃত্যুর আগেই কবর খনন করা কারো জন্য কাঙ্ক্ষিত নয়।
২. কবর অবশ্যই গভীর করে খুঁড়েতে হবে এবং তা প্রশস্ত হওয়া আবশ্যক।
৩. দু’ধরনের কবর খোঁড়ার অনুমতি রয়েছে, তবে প্রথম পদ্ধতির অগ্রাধিকার দেয়া উচিত। প্রথমটি হচ্ছে: কবরের পাশে কিবলামুখী করে ছোট গর্ত করা। দ্বিতীয়টি: কবরের মাঝখানে ঢালু করে খনন করা।
কবরের বাইরের ডিজাইন
১. ইসলামে কবর ও কবরস্থান নির্মাণে এমন এক অনন্য স্টাইলে রয়েছে, যা বিনয়, মিতব্যয়িতা ও বাহুল্যবর্জনের বৈশিষ্ট্যমণ্ডিত। এতে সৌধ তৈরি করে মৃতকে গৌরবান্বিত করার অবকাশ নেই।
২. কবরের উচ্চতা হবে ভূমিস্তর থেকে এক হাতের মত উঁচু। এর ফলে কবর চিহ্নিত রাখা ও সংরক্ষণ করার মত পার্থক্য হয়।
৩. লাশ দাফনের পর উত্তোলিত মাটির চেয়ে কবরকে বেশি উঁচু করা যাবেনা।
৪. কবরের উপর কোন ধরনের নির্মাণ কাজ চলবে না। তবে কাদামাটির সাহায্যে বরগাহকে অনুমোদিত সীমার মধ্যে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য উঁচু করা যেতে পারে, যাতে করে বায়ু বা বৃষ্টির ফলে তার ক্ষতি না হয়; নিঃসন্দেহে এ কাজটি অনুমোদনযোগ্য; কারণ এতে একটি লক্ষ্য রূপায়ণের জন্য চেষ্টা করা হয়েছে। অনুমোদিত সীমা ছাড়িয়ে যাওয়া অথবা কারুকার্য খচিত করার বা অন্য কোন প্রকার গর্ব প্রকাশের লক্ষ্য কাম্য নয়।
৫. কবরের উপর বৈশিষ্ট্যময় নামফলক বসানো নিষিদ্ধ।
৬. জিপসাম, পেইন্ট দ্বারা কবর প্লাস্টার করা অথবা এধরনের ডেকোরেশন বড়ই বেমানান; কেননা মৃতদেগ মাটিতে মিশে যাবে।
৭. মৃতের নাম ছাড়া কবরের উপর আর কোনকিছুই লেখা যাবেনা এবং এটাও হবে চিহ্নিতকরণের জন্য, কারুকার্যময়তার জন্যে নয়।