গোসলের বিবরণ
গোসলের পারিভাষিক অর্থ
অভিধানে গোসলের অর্থ হলো সমস্ত শরীর ধুয়ে ফেলা এবং ফেকাহর পরিভাষায় তার অর্থ হলো শরীয়তের বলে দেয়া বিশেষ পদ্ধতি অনুযায়ী নাপাকী দুর করার উদ্দেশ্যে অথবা সওয়াবের আশায় সমস্ত শরীর ধোয়া।
গোসল সম্পর্কে সাতটি হেদায়েত
১. গোসলখানয় অথবা খোলা জায়গায় গোসল করতে হলে তহবন্দ, নেকাব অথবা অন্য কাপড় পড়ে গোসল করতে হবে।
২. হামেশা পর্দা করা স্থানে গোসল করতে হয় যাতে করে পর পুরুষ বা পর স্ত্রীর নজরে না পড়ে।
এরূপ স্থানে না হলে লংগি প্রভৃতি বেঁধে গোসল করবে। যদি বাঁধাবারও কিছু না থাকে তাহলে আঙ্গুল দিয়ে চারদিকে আঁক টেনে বিসমিল্লাহ বলে বসে বসে গোসল করবে।
৩. মেয়েদের উচিত সর্বদা বসে গোসল করা। পুরুষ যদি উলংগ হয় তাহলে বসে বসেই গোসল করবে। তাবে লুংগি প্রভৃতি পরে দাঁড়িয়ে গোসল করতে দোষ নেই।
৪. গোসলের সময় কথাবার্তা না বলা উচিত। বিশেষ প্রয়োজন হলে অন্য কথা।
৫. উলংগ হয়ে গোসল করতে কেবলামুখী হওয়া চলবে না।
৬. সর্বদা পাক-সাফ জায়গায় গোসল করবে। গোসলের জায়গায় পেশাব প্রভৃতি করা থেকেও বিরত থাকবে হবে।
৭. যেসব জিনিস অযুতে মাকরূহ তা সবই গোসলে মাকরূহ। এসব থেকে বিরত থাকতে হবে। গোসলের সময় অযুর দোয়া পড়া মাকরূহ।
গোসলের মসনুন তরীকা
সুন্নাত মুতাবিক গোসলের পদ্ধতি এই যে, ডান হাতে পানি নিয়ে দু‘হাত কব্জি পর্যন্ত ধুবে। তারপর এস্তেঞ্জা করবে তা এস্তেঞ্জারস্থানে কোন নাজাসাত থাক বা না থাক। তারপর শরীরে কোথাও নাজাসাত লেগে থাকলে তা সাফ করতে হবে। তারপর সাবান দিয়ে দু‘হাত ভালো করে ধুয়ে অযু করবে। কুল্লি করার সময় কণ্ঠদেশে এবং নাকের ভেতর ভালো করে পানি পৌছাতে হবে। গোসলের স্থানে পানি জমা হয়ে থাকলে গোসলের পর পা ধুবে। গোসল যদি ফরজ হয় তাহলে অযুতে বিসমিল্লাহ ব্যতীত অন্য কোন দোয়া পড়বে না। অযুর পর মাথায় পানি ঢালবে, তারপর ডান কাঁধের উপর, তারপর বাম কাঁধের উপর। সমস্ত শরীর ভালোভাবে ঘষতে হবে। সাবান দিয়ে হোক বা খালি হাতে হোক, যেন কোন স্থান শুকনো না থাকে এবং শরীর ভালভাবে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হয়।
তারপর দু‘বার এভাবে সমস্ত শরীর ভালভাবে পানি ঢালতে হবে যেন কোন স্থান শুকনো থাকার আশংকা না থাকে। অযুর সময় পা ধোয়া হয়ে না থাকলে, এখন পা ধুতে হবে। তারপর সমস্ত শরীর কোন কাপড় বা গামছা তোয়ালে দিয়ে ভাল করে মুছে ফেলতে হবে।