জানাযার নামায
জানাযার নামায হচ্ছে মাইয়েতের জন্যে রহমানুর রহীমের কাছে দোয়া করা। যখন কোন দোয়া মুসলমানগণ সমবেত ভাবে করে তখন তা আল্লাহ তায়ালার দরবারে কবুল হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। এ জন্যে জানাযর নামাযে যতোবেশী লোক হয় ততো ভালো। কিন্তু লোক বেী জমা করার জন্যে জানাযা বিলম্ব করা ঠিক নয়।
জানাযার নামাযের হুকুম
জানাযার নামায ফরযে কেফায়া। কেতাব ও সুন্নাত থেকে তার ফরও হওয়া প্রামাণিত। অতএব অস্বীকার কারী কাফের।
জানাযা নামাযে দু’টি ফরয:
১. চারবার আল্লাহু আকবার বলা। প্রত্যেক তাকবীর এক রাকয়াতের স্থলাভিষিক্ত। এ নামাযে রুকু সিজদা নেই।
২. কেয়াম করা। বিনা ওযরে বসে জানাযার নামায জায়েয হবে না। কোন কিছুর উপরে আরোহণ করেও জায়েয হবে না।
জানাযার নামাযের সুন্নাত
এ নামাযে তিনটি সুন্নাত
১. আল্লাহর হাম্দ ও সানা পড়া।
২. নবীর (স) উপর দরূদ পড়া।
৩. মাইয়েতের জন্যে দোয়া করা।
নামায পড়ার নিয়ম
নামাযের জন্যে তিন কাতার সুন্নাত। লোক বেশী হলে তিন কাতারের বেশী করা যাবে কিন্তু কাতার বেজোড় হওয়া উচিত। মাইয়েতকে কেবলার দিকে সামনে রেখে তার সিনা বরাবর ইমাম দাঁড়াবেন এবং সকলে এই নিয়ত করবে:
(আরবী****************)
মাইয়্যেত স্ত্রীলোক হ’লে (****) এর স্থলে (****) এইরূপ নিয়ত করে একবার আল্লাহু আকবর (****) বলে উভয় হাত কান পর্যন্ত উঠিয়ে তাকবীরে তাহরীমার মত হাত বাঁধবে এবং পড়বে- (আরবী***********)
-হে আল্লাহ সকল প্রশংসাসহ তুমি সকল প্রকার ত্রুটি বিচ্যুতি থেকে পাক ও পবিত্র। তোমার নাম মঙ্গল ও বরকতপূর্ণ, তোমার মহত্ব অতি বিরাট, তোমার প্রশংসা অতি মহত্বপূল্ণ এবং তুমি ছাড়া আর কোন ইলাহ নেই।
সানা পড়ার পর আবার তাকবীর বলবে কিন্তু হাত উঠাবে না। তারপর নিম্নের দরুদ পড়বে
(আরবী*****************)
তারপর তাকবীর বলে মাইয়েতের জন্যে দোয়া পড়বে। মাইয়েত যদি বালেগ হয়, (পুরুষ হউক বা স্ত্রী) তবে এই দোয়া পড়বে:
(আরবী*******************)
-হে আল্লাহ, আমাদের জীবিত, আমাদের মৃত, আমাদের মধ্যে উপস্থিত ও অনুপস্থিত, আমাদের ছোট ও বড়ো, আমাদের পুরুষ এবং নারবী সকলের গুনাহ মাফ করে দাও। হে আল্লাহ, তুমি যাদেরকে জীবিত রেখেছ তাদেরকে ইসলামের উপর জীবিত রাখ, তুমি যাদের মৃত্যু দাও তাদের ঈমানের সাথে মৃত্যু দাও।
তারপর চতুর্থ তাকবীর বলে দু’দিকে সালাম ফিরাবে। তাকবীর ইমাম উচ্চস্বরে বলবেন।
নাবালেগ মাইয়েতের জন্যে দোয়া
(আরবী*)
-হে আল্লাহ, এ বাচ্চাকে আমাদের নাজাত ও আরামের জন্যে আগে পাঠিয়ে দাও, তার জন্যে যে শোক দুঃখ তা আমাদের প্রতিদান ও সম্পদের কারণ বানিয়ে দাও, তাকে আমাদের শাফায়াতকারী বানাও যা কবুল করা হবে।
নাবালিকার দোয়া
(আরবী**************)
যাদের এসব দোয়া জানা নেই, তারা বলবে- (আরবী*************)
তা বলতে না পারলে শুধু, চার তাকবীর বললে নামায হয়ে যাবে।
অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় যে, মুসলমানদের মধ্যে অনেকে তাদের প্রিয়জনদের জানাযায় শরীক হয়ে সমবেতভাবে দোয়া করার সৌভাগ্য থেকে বঞ্চিত থাকে। তারা নানা-ওযর আপত্তি করে নিজে জানাযায় শরীক হয় না। অন্যকে নামায পড়তে দিয়ে চুপচাপ দাঁড়িয়ে যেন তামাশা দেখে।
১. জানাযার জন্যে জামায়াত শর্ত নয়। একজন জানাযার নামায পড়লে ফরয আদায় হবে। তবে ব্যবস্থাপনার সাথে জানাযায় শরীক হওয়া সকলের উচিত। নবী (স) বলেন যে, জানাযায় শরীক হওয়া মুসলমানদের মাইয়েতের হক-(মুসলিম)।
২. জানাযা ঐসব মসজিদে মাজরুহ যা পাঞ্জেগানা নামাযের জন্যে তৈরী করা হয়েছে। জুমা মসজিদেও মাকরুহ। তবে যে মসজিদ বিশেষ করে জানাযায় নামাযের জন্যে তৈরী করা হয়েছে, সেখানে মাকরুহ নয়।
৩. একই সময়ে কয়েকটি জানাযা জমা হলে প্রত্যেকের পৃথক পৃথকও পড়া যায় এবং এক সাথেও পড়া যায়, এক সাথে পড়তে হলে তার নিয়ম এই যে, প্রত্যেক জানাযার মাথা উত্তরে এবং পা দক্ষিণে রাখতে হবে। অর্থাৎ কারো মাথা বা পায়ের দিকে কোন জানাযা থাকবে না। তারপর ইমাম পুর্বধারে রাখা জানাযার সিনা বরাবর দাঁড়াবেন। তাহলে সকলের সিনা বরাবর দাঁড়ানো হবে।
৪. যেসব কারণে অন্যান্য নামায নষ্ট হয় সেসব কারণে জানাযার নামায নষ্ট হবে। তবে অট্টহাসিতে জানাযার নামায নষ্ট হয় না অথবা পুরুষের বরাবর অথবা সামনে কোন মেয়েলোক দাঁড়ালেও নামায নষ্ট হবে না।
৫. যদি কোন ব্যক্তি বিলম্বে জানাযায় হাযির হয় তখন ইমমা কিছু তাকবীর বলে ফেলেছেন তখন সে আসা মাত্রই ইমামের সাথে শামিল হবে না বরঞ্জ পরবর্তী তাকবীরের অপেক্ষা করবে যখন ইমাম তাকবীর বলবেন তখন সে তাকবীর বলে নামাযে শামিল হবে। এ তাকবীর তার তাকবীর তাহরীমা মনে করা হবে। ইমাম সালাম ফিরলে মসবুকের মতো সে ছুটে যাওয়া তাকবীরগুলো বলে নামায শেষ করবে।
৬. যদি কারো অযু বা গোসলের প্রয়োজন হয়ে থাকে এবং সে মনে করে যে অযু বা গোসল করতে গেলে জানাযা পাওয়া যাবে না, তাহলে তায়াম্মুম করে জানাযার নামাযে শরীক হওয়া জায়েয হবে। এ জন্যে জানাযার কাযা নেই।
৭. জানাযা নামায পড়াবার সবচেয়ে হকদার ব্যক্তি ইসলামী রাষ্ট্রের প্রধান অথবা তার নিযুক্ত শহরের শাসনকর্তা। তা না হলে শহরের কাযী অথবা তার সহকারী। এসব না থাকলে মহল্লার ইমাম। মহল্লার ইমাম তখন পড়াবেন যখন মাইয়েতের আপনজন কেউ ইমামের চেয়ে এলমে তাকওয়ার দিক থেকে উৎকৃষ্টতর না হয়। নতুবা আপনজনই জানাযা পড়াবার সবচেয়ে বেশী হকদার। তারপর অলী যাকে অনুমতি দেয় সে পড়াবে।
৮. জানাযার পর পরই মাইয়েত কবরে নিয়ে যাওয়া উচিত।
৯. মাইয়েত ছোট বাচ্চা হলে তাকে হাত উঠিয়ে কবরে নিয়ে যেতে হবে এক ব্যক্তি কিছু দূর নেবে অন্য ব্যক্তি কিছু দূর এভাবে পালাক্রমে কবরে নিয়ে যাবে।
১০. মাইয়েত বয়স্ক হলে তাকে খাটিয়াতে করে চারজন চার পায়া ধরে কাঁধে করে নিয়ে যাবে।
১১. কোন ওযর ব্যতীত মাইয়েতকে যানবাহনে করে নেয়া মাকরুহ।
১২. জানাযা একটু দ্রুত কদমে নিয়ে যাওয়া সুন্নাত, তবে এতোটা দ্রুত নয় যে, মাইয়েত ঝাঁকুনি পায়।
১৩. জানাযার পেছনে যাওয়া মুস্তাহাব। সকলের আগে মাকরুহ। কিছু আগে কিছু পেছনে যাওয়া যায়।
১৪. জানাযার সাথে যারা চলবে, জানাযা নামাবার আগে তাদের বসা ঠিক নয়। বিনা ওযর বসা মাকরুহ।
১৫. জানাযার সাথে পায়ে হেঁটে চলা মুস্তাহাব। যানবাহনে হলে তাকে পেছনে থাকতে হবে।
১৬. জানাযার সাথে চলতে গিয়ে উচ্চস্বরে দোয়া যিকির করা মাকরুহ।
১৭. জানাযার সাথে মেয়েদের যাওয়া মাকরুহ তাহরীমী।
জানাযা কাঁধে নেয়ার নিয়ম
জানাযা উঠিয়ে কাঁধে নেয়ার মুস্তাহাব পদ্ধতি এই যে, সামনে পায়া ডান কাঁধে নিয়ে দশ কদম চলবে। এমনি প্রত্যেক দশ কদম চলবে। এমনি প্রত্যেক দশ কদম পর পর পায়া বদল করবে। এভাবে ৪০ কদম যাবে। হাদীসে আছেযে, যে ব্যক্তি জানাযা কাঁধে করে ৪০ কদম যাবে, তার ৪০টি কবীরা গুনাহ মাফ হয়।
১. মাইয়েদ দাফন করা ফরযে কেফায়া। যেমন গোসল দেয়া। জানাযার নামায পড়া ফরযে কেফায়া।
২. কবরের দৈর্ঘ মাইয়েতের উচ্চতার সমান, গভীরতা তার অর্ধেক। প্রস্ত হাত দুই যাতে মাইয়েতকে রাখতে পারা যায়।
৩. কবরে নামাবার পূর্বে জানাযা কবরের কেবলার দিকে রাখতে হবে। যারা কবরে নামাবে তারা কেবলমুখী হয়ে নামাবে।
৪. কবরে নামাবার সময় (**************) বলা মুস্তাহাব।
৫. মাইয়েত কবরে রেখে ডান কাত করে কেবলামুখী করে দেয়া সুন্নাত।
৬. মাইয়েত মেয়েলোক হলে কবরে নামাবার সময় পর্দা করা মুস্তাহাব। মাইয়েতের শরীর খুলে যাওয়ার আশংকা হলে পর্দা করা ওয়াজেব।
৭. কবরে মাটি দেয়া মাথার দিক থেকে শুরু করা মুস্তাহাব। প্রত্যেক দু’হাতে মাটি নিয়ে কবরে ঢালবে। প্রথমবার বলবে (***) দ্বিতীয়বার (******) এবং তৃতীয়বার বলবে (**********)
৮. দাফন করার পর কিছুক্ষণ কবরের পাশে থেকে মাইয়েতের জন্যে দোয়া করা মুস্তাহাব।
৯. কবরে কোন তাজা গাছের ডাল পুঁতে দেয়া মুস্তাহাব। হাদীসে আছে, নবী (স) একবার একটা সবুজ ডাল দু’ভাগ করে দু’টি কবরে পুঁতে দিয়ে বললেন, যতোক্ষণ না এ ডাল শুকনো হবে, ততোক্ষণ কবরে মাইয়েতের আযাব কম হবে।
১১. এক কবরে একটি মাইয়েত দাফন করা উচিত। প্রয়োজন হলে একাধিক করা যায়।
১২. সৌন্দর্যের জন্যে কবরের উপরে দালান-কোটা, গম্বুজ, মিনারা প্রভৃতি তৈরী করা হারাম।
১৩. সমুদ্র ভ্রমণে কারো মৃত্যু হলে এবং স্থলাভূমি বহু দূরে হলে- যেখানে পৌঁছতে পৌঁছতে লাশ খারাপ হওয়ার আশংকা, এমন অবস্থায় মাইয়েত গোসল দিয়ে তার জানাযা করে সমুদ্রের উপর ছেড়ে দিতে হবে। তবে স্থলাভূমি নিকটে হলে স্থলে তার কবর দেয়া উচিত।
সান্ত্বনা দান (তা’যিয়াত)
মৃত ব্যক্তির পরিবার পরিজনকে ধৈর্য ধারণের উদ্দেশ্যে কিছু সান্ত্বনার বাণী শুনানো, তাদের প্রতি সমবেদনা জানানো, তাদের দুঃখ লাঘব করা এবং মাইয়েতের জন্যে মাগফেরাতের দোয়া করা প্রভৃতিকে ইসলামী পরিভাষায় তা’যিয়াত বলে। নবী (স) স্বয়ং তা করেছেন এবং করার জন্যে তাকীদ করেছেন। তিনি বলেন-
-যে ব্যক্তি বিপন্নের তা’যিয়াত করে, তার জন্যে ঐরূপ প্রতিদান রয়েছে, যেমন, স্বয়ং বিপন্নের জন্যে রয়েছে –(তিরমিযী)।
হযরত মাআযা (রা) বলেন, তাঁর ছেলের ইন্তেকাল হলে নবী (স) নিম্নোক্ত তা’যিয়াতনামা পাঠান:-
বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহীম
মুহাম্মদ রসূলুল্লাহর পক্ষ থেকে মাআয বিন জাবালের প্রতি-
তোমার উপরে সালাম হোক। আমি প্রথমে তোমার সামনে আল্লাহর হামদ ও সানা পড়ছি। যিনি ছাড়া কোন মাবুদ নেই। তারপর দোয়া করছি এ শোকে আল্লাহ তোমাকে বিরাট প্রতিদান দিন। তোমাকে ধৈর্য ধারণের শক্তি দিন। আমাদেরকে এবং তোমাকে তাঁর শোকর আদায় করার তাওফীক দিন। আসল কথা এই যে, আমার জান-মাল এবং পরিবারবর্গ আল্লাহর মুবারক দান, আর এগুলো আমাদের কাছে তার সোপর্দ করা আমানত। আল্লাহ যতোদিন চান এ দানগুলো থেকে আনন্দ উপভোগ করার সুযোগ দেন। যখন চান তখন এ দান ফেরত নেন। তার পরির্তে বিরাট প্রতিদান দেন। অর্থাৎ তুমি যদি আল্লাহর সন্তুষ্টি ও আখেরাতের প্রতিদানের জন্যে সবর কর, তাহলে তিনি তোমাকে তাঁর খাস রহমত ও হেদায়েত দ্বারা ধন্য করবেন।
অতএব সবর কর, এমন যেন না হয় যে, তোমার শোকে হা হুতাশ করা তোমার প্রতিদান ও সওয়াব বরবাদ করে দেয়, তারপর তুমি অনুতাপ করতে থাকবে। মনে রেখো যে, শোকে কান্নাকাটি করাতে মৃত ব্যক্তি ফিরে আসবে না, আর না তার দ্বারা শোক-দুঃখ কমে যায়। যে হুকুম নাযিল হয় তা হয়ে থাকে এবং হয়ে গেছে- (মুয়াজ্জেম কবীর)।
ইসালে সওয়াব
ইসালে সওয়াবের অর্থ হলো সওয়াব পৌঁছানো। পরিভাষা হিসেবে ইসালে সওয়াব হলো, মানুষ তার নেক আমল এবং এবাদতের সওয়াব তার কোন প্রিয়জনকে পৌঁছাবার নিয়ত করে।
সকল নফল এবাদত, তা মালের হোক, যেমন সদকা, খয়রাত, কুরবানী অথবা দৈহিক হোক, যেমন নামায, রোযা প্রবৃতি- তার সওয়াব মৃত ব্যক্তিকে পৌঁছানো মুস্তাহাব। তাঁর যে বিরাট দান, স্নেহ ভালবাসা তার প্রতিদান দেয়া আমাদের পক্ষে কিছুতেই সম্ভব নয়। তবে মুমেন বান্দাহ তার এবাদতের সওয়াব তার পাক রূহে পৌঁছে দেয়াকেই তার সৌভাগ্য মনে করে। যার এ সৌভাগ্য জীবনে একবারও হয়নি তার চেয়ে হতভাগ্য আর কেউ নেই।
ইসালে সওয়াবের নিয়ম
ইসালে সওয়াবে নিয়ম পদ্ধতি এই যে, মানুষ যে এবাদতের সওয়াব কোন ব্যক্তিকে পৌঁছাতে চায় সে তার এবাদত শেষ করে এভাবে দোয়া করবে-
‘আল্লাহ’, আমার এ এবাদতের সওয়াব তুমি আমার অমুক মৃত ব্যক্তিকে পৌঁছিয়ে দাও।
আল্লাহর অসীম মেহেরবানীতে আশা করা যায় যে, তিনি তার সওয়াব মৃত ব্যক্তিকে পৌঁছে দেবেন।
ইসালে সওয়াবের মাসয়ালা
১. ইসালে সওয়াবের জন্যে এটা শর্ত নয় যে, এবাদতের সময়েই অন্যকে সওয়াব পৌঁছাবার নয়ত করতে হবে। বরঞ্চ পরে যখনই চাইবে নিজের এবাদতের সওয়াব অন্যতে পৌঁছাতে পারবে।
২. যে ব্যক্তি তার এবাদতের সওয়াব কোন মৃত ব্যক্তিকে পৌঁছায়, আল্লাহ তার সওয়াব সেই মৃত ব্যক্তিকে পৌঁছিয়ে দেন এবং এবাদতকারীকেও বঞ্চিত করেন না। তাকেও সে এবাদতের পুরা সওয়াব দিয়ে দেন। সে জন্যে আল্লাহ তাআলা এ অসীম অনুগ্রহের দাবী এই যে, মুমেন বান্দাহ যখন কোন নফল এবাদত করবে, তখন তার সওয়াব সালেহীনদের রূহের উপর পৌঁছাবে।
৩. কেউ তার আমলের সওয়াব কয়েক ব্যক্তির কাছে পৌঁছাতে চাইলে তা কয়েক অংশে ভাগ হয় না। আল্লাহ তাআলা তাঁর অসীম অনুগ্রহে প্রত্যেককে পুরা পুরা সওয়াব দান করেন।
৪. ইসালে সওয়াবের এসব সরল মাসয়ালা ছাড়া নিজের পক্ষ থেকে কোন শর্ত আরোপ করা, কোন দিন তারিখ নির্দিষ্ট করা, তারপর শরয়ী হুকুমের তো তা মেনে চলা, তার ভিত্তিতে মুসলমানদের মধ্যে ফেরকা বন্দী করা অত্যন্ত দুষনীয়। হক পথ অনুসরণ করার প্রেরণা যাঁরা রাখেন, সেসব মুমেনদের জন্যে এসব করা মোটেই শোভনীয় নয়।