চতুর্থ পরিচ্ছেদঃ ইলমে লাধুনী–আল্লাহ প্রদত্ত্ব জ্ঞান নবীদের কাহিনীর তাৎপর্য
ইলমে তাফসীরের সাথে সংশ্লিষ্ট আল্লাহ প্রদত্ত বিদ্যার অন্যতম হচ্ছে, নবীদের কিস্সার তা’বীল সম্পর্কিত জ্ঞঅন। আমি এ বিষয়ে স্বতন্ত্র একখানা পুস্তক লিখে নাম দিয়েছি ‘তাবীলুল আহাদীস’।
***স্মরণ রাখা দরকার যে, নবীদের যুগে যা কিছু ঘটেছে, তার অবশ্যই এমন একটা মূল সূত্র রয়েছে, যার সম্পর্ক রয়েছে সেই পয়গম্বর ও তাঁর উম্মতের যোগ্যতার সাথে। সংগে সংগে তা সে যুগে আল্লাহর পছন্দনীয় কর্মপন্থা সম্পর্কেও ইংগিত দান করে। সে কাহিনীর ভিত্তি তিনটি। পয়গম্বরের যোগ্যতা, উম্মতের উপযোগিতা ও যুগের চাতিদা। সুতরাং কিস্সার তা’বীল অর্থ হচ্ছে এই যে, এ তিন বস্তুর আলোকে সে কিস্সার উদ্দেশ্য নির্ধারিত করা। এ কাজ সহজ নয়। আল্লাহর দান না হলে তা সাধন সম্ভবপর নয়। যেন নীচের আয়াতে বলা হয়েছে: (আরবী***************)
আর আমি আপনাকে তা’বীলে আহাদীস শিখিয়েছি।
*** পঞ্চ ইলম, যা কুরআনের মূল আলোচ্য বিষয়, যার ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ অত্র পুস্তিকার শুরুতে করেছি উহা ইলমে তাফসীর সংশ্লিষ্ট আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান। তাই সেখানেই তা দেখতে চাই।
*** ফার্সী ভাষায় আরবী ভাষার অনুরূপ আমার তরজমা কুরআন ও ইলমে লাধুনী (আল্লাহ প্রদত্ত জ্ঞান) কুরআনের ফার্সী অর্থ করতে গিয়ে, শব্দ ও বাক্যের পরিমাণ-পরিমাপ, বাক্যের ব্যাপ্তি ও বিশেষ রূপের দিক দিয়ে যা কুরআনের মত। যার নাম দিয়েছে “ফতহুর রহমান ফিতরজুমতিল কুরআন” অবশ্য এ আলোচ্য বিষয়টির কয়েকটি ব্যাপার নিয়ে এ জন্যে বিস্তরিত আলোচনা থেকে বিরত থাকলাম, যে পাঠকদের পক্ষে তা অনুধাবন সম্ভবপর হবে না।
কুরআনের বিশেষ ব্যাপার:
ইলমে তাফসীর সম্পর্কি চতুর্থ সংশ্লিষ্ট বিদ্যাটি হল কুরআনের বিশেষ ব্যাপরগুলোর জ্ঞান। যদিও এর আগে একদল এ নিয়ে কলম ধরেছেন, কিন্তু এ বিষয়ে যা কিছু লিখেছেন, লাখো গুণে ভাল ছিল তা না লেখা। কারণ কুরআনের বিশেষ ব্যাপপারে মূলে তাঁরা আঘাত হেনেছেন। কিছু লোক সেটাকে দোয়ায় পর্যবসিত করেছেন। আর কিছু লোক তাকে প্রায় যাদু ও তাবীয করে ছেড়েছেন।
কিন্তু আল্লাহ তা’আলা এ ব্যাপারে আমাকে আগেকার অনুসৃত পথ থেকে সরিয়ে নয়া এক পথের সন্ধান দিয়েছেন। তিনি পবিত্র নামাবলী, মহান আয়াত গুলো ও বরকতময় দোয়াগুলো এক সঙ্গে আমার আয়ত্বাধীন করে দিয়েছেন। আর এ দান আল্লাহ শুধু আমাকেই করেছেন। তাই এ ব্যাপারে আমি যা জানতে পেরেছি, তা সম্পূর্ণ পৃথক অনন্য ও উত্তম।
খাঁটি কথা তো এই, কুরআনের প্রতিটি আয়াত, আল্লাহর পবিত্র নামাবলীর ভেতরে প্রতিটি নাম এবং পাক কালামে প্রাপ্ত প্রতিটি দোয়া –এ সবের কয়েকটি শর্ত রয়েছে। অথচ সেগুলোর জন্যে কোন আইন কানূন প্রনয়ন করা চলে না। যদি কিছু করার থঅকে তা হচ্ছে এই, ‘অপেক্ষা কর ও দেখ যে, গায়েব থেকে কিছু প্রকাশ পায় কিনা? ইস্তেখারায যেরূপ অপেক্ষা করে দেখতে হয় আল্লাহর তরফ থেকে কোন আয়াত বা নামের দিকের ইংগিত আসে, এও তেমনি। অবশ্য আয়াত ও উত্তম নামাবলী সম্পর্কে যদি নির্ধারিত রীতিনীতি অনুসারে কিছু বলতে হয়, তাহলে কোন বিশেজ্ঞকে অনুসরণ করেই বলা উচিত।
এ বইয়ে এ বিষয় নিয়ে এর চাইতে বেশী কিছু বলা ঠিক মনে করি না। আমার যতটুকু বলার ছিল বলছি।