খ. নেতৃত্বের পরিশুদ্ধি
ইসলামী রাষ্ট্রে একনায়কত্ব ও ফ্যাসিবাদের পথ চিরতরে বন্ধ করার উদ্দেশ্যে মুসলমানদেরকে সরকার গঠনের সর্ব প্রথম ধাপেই যথাসাধ্য সতর্কতা অবলম্বনের নির্দেশ দান করা হয়েছে এবং আমীর (প্রশাসক) নির্বাচনের ক্ষেত্রে দু‘টি মৌলিক নীতি নির্ধারণ করে ভ্রষ্ট ও অযোগ্য ব্যক্তিকে নেতৃত্বের আসন পর্যন্ত পৌঁছার পথ রুদ্ধ করে দিয়েছে। এর প্রথম মূলনীতি এই যে, যে ব্যক্তি পদপ্রার্থী ও ক্ষমতা লাভের আকাঙ্খী হবে তার মধ্যে উচ্চতর গুণাবলী ও যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও সে উক্ত পদের জন্য অনুপযুক্ত। কেননা ক࣍ষমতালিপ্সা তার অসৎ সংকল্পের সব চাইতে বড় প্রমাণ। আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন:
(আরবী***)
অর্থ: “সেই আখেরাতের আবাস আমরা ঐসব লোকদের যারা এই পৃথিবীতে উদ্ধত হতে ও বিপর্যয় সৃষ্টি করতে ইচ্ছুক নয়” ( সূরা কাসাস : ৮৩)।
নবী করীম সা: ইরশাদ করেন: “আল্লাহর শপথ! আমরা সরকারের এই পদ এমন কোন ব্যক্তিকে দেই না যে তার প্রত্যাশী বা এই পদের জন্য লালায়িত”। (বুখারী, মুসলিম)
“আমাদের নিকট তোমাদের সেই ব্যক্তি সর্বাপেক্ষা বড় অবিশ্বস্ত যে স্বয়ং (শাসকের পদ) প্রার্থনা করে” ( আবু দাউদ)
একবার মহানবী সা: নেতৃত্বের পদ প্রসঙ্গে জিজ্ঞাসিত হয়ে হযরত আবু বাকর সিদ্দীক রা: কে বলেন: “হে আবু বাকর! ব্যক্তি নেতৃত্বের অভিলাসী নয় সেই এর উপযুক্ত। এটা সেই ব্যক্তির জন্য উপযোগী নয় যে এর জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ে। নেতৃত্ব তো তার জন্য এর থেকে দূরে থাকার চেষ্ঠা করে, তার জন্য নয় যে, তা ঝাপটে ধরে। নেতৃত্বের পদ তার জন্য যাকে বলা হয়- এটা তোমার প্রাপ্য। তার জন্য নয় যে বলে, এটা তো আমার প্রাপ্য”। ( সাইয়েদ আবুল আলা মওদুদী,ইসলামী রিয়াসত,লাহোর ১৯৬৭ খৃ. পৃ.৩৭৭)।
দ্বিতীয় মূলনীতি এই যে, নিজেদের মধ্য থেকে সর্বোত্তম ব্যক্তিকে নেতা নির্বাচন করা। এই “সর্বোত্তম”-এর মানদন্ডও সুষ্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে- যাতে এর মধ্যে ব্যক্তিগত পছন্দ-অপছন্দ, আত্মীয়তা, আঞ্চলিক, গোষ্ঠীগত, ভাষাগত ও বংশগত পক্ষপাতিত্ব অথবা যাকে নির্বাচন করতে যাওয়া হচ্ছে তার ব্যক্তিত্বের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য যথা তার সুন্দর অবয়ব, সুদর্শন চেহারা, পোশাক-পরিচ্ছদের ধরন, সুবিন্যস্ত কেশ, জ্বালাময়ী বক্তৃতা, জাদুকরী লেখনী অথবা অনুরূপ অন্যান্য গুণাবলীর পরিবর্তে তার ভূমিকা ও কার্যকলাপের পরীক্ষা -নিরীক্ষা ও যাচাই করতে হবে। নির্বাচনের এই মাপকাঠি সামনে রেখেই মহানবী সা: ইরশাদ করেন:
“তোমরা শোন এবং আনুগত্য কর- যদিও কোন নিগ্রো ক্রীতদাসকে তোমাদের আমীর নির্বাচন করা হয়-যতক্ষণ পর্যন্ত সে তোমাদের মাঝে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী শাসনকার্য পরিচালনা করে” (বুখারী, হযরত আনাস রা: কর্তৃক বর্ণিত)।
পরবর্তী স্থলাভিষিক্ত নির্বাচনের সময় এই মাপকাঠিই হযরত উমার ফারুক রা: -র সামনে ছিল। তিনি খিলাফতের পদ সম্পর্কিত বিষয়টি মজলিসে শূরায় পেশ করতে গিয়ে বলেন:
“আবু হুযায়ফা রা:-র ক্রীতদাস সালেম জীবিত থাকলে খলীফা বানানোর জন্য আমি তার নামই প্রস্তাব করতাম। সালেম রা: সম্পর্কে যদি আল্লাহ পরওয়ারদিগার আমাকে জিজ্ঞেস করতেন তবে আমি বলে দিতাম, আমি আপনার রসুলের নিকট শুনেছিলাম, সালেম রা: আল্লাহকে অতিশয় ভালোবাসেন” (উমার ইবনুল খাত্তাব, পৃ. ৫৬০)।
খলীফা নির্বাচন পূর্বে হযরত মুগীরা ইবনে শো’বা রা: হযরত আবদুল্লাহ ইবনে উমার রা: -র নাম প্রস্তাব করলে তিনি ক্রোধান্বিত হয়ে বললেন:
“আল্লাহ তোমাকে সুপথে পরিচালিত করুন। আল্লাহর শপথ! আমি কখনো এরূপ খেয়াল করিনি। তোমাদের ব্যাপারে আমার কোন আকর্ষণ নাই। সরকার প্রধানের পদটি আমি কোনরূপ প্রশংসাযোগ্য জিনিস হিসাবে পাইনি যে, আমার পরিবারের জন্য তার আকাংখা করব। শাসন কর্তৃত্ব যদি কোন উত্তম বস্তু হয়ে থাকে তাহলে আমরা তা পেয়ে গেছি। আর যদি তা নিকৃষ্ট হয়ে থাকে তাহলে উমার- পরিবারের জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তাদের মধ্য থেকে এক ব্যক্তিকে (উমারকে) উম্মতে মুহাম্মাদী সম্পর্কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। আমি নিজেকে খুবই কষ্ট দিয়েছি এবং আমার পরিবার-পরিজনকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত রেখেছি। এজন্যও যে যদি আমি কোনরূপ শাস্তি বা পুরষ্কার লাভ ছাড়াই নিষ্কৃতি পেয়ে যাই তবে আমি বড়ই ভাগ্যবান” (ঐ, পৃ. ৫৬১)।
মহানবী সা: এর হাদীস ও হযরত উমার ফারুক রা:-র বক্তব্য থেকে প্রতীয়মান হয় যে, উম্মতের জন্য তিনিই সর্বোত্তম শাসক যিনি আল্লাহর কিতাব অর্থাৎ কুরআনের বিধান বাস্তবায়নের বুদ্ধিবৃত্তিক, মানসিক এবং সাংগঠনিক ও প্রশাসনিক যোগ্যতার অধিকারী এবং যার ভূমিকা ও কার্যকলাপ আল্লাহ-প্রেমের প্রতিচ্ছবি, যার চরিত্রে আল্লাহ ও তাঁর রসুলেল কাংখিত গুণাবলী পরিপূর্ণভাবে বিদ্যমান।
১. তাকওয়া
এই পর্যায়ে আল্লাহ তাআলার বাণী:
(আরবী***)
অর্থ: “তোমাদের মধ্যে সেই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট সর্বাধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে সর্বাপেক্ষা বড় মুত্তাকী” (সূরা হুজুরাত:১৩)
(আরবী***)
অর্থ: “আমরা কি মুত্তাকীদেরকে পাপিষ্ঠদের মত করব? ( সূরা সাদ :২৮)
২. যোগ্যতা
যে পদের জন্য কোন ব্যক্তিকে নির্বাচন করা হচ্ছে সেই পদের দায়িত্ব পালনের যোগ্যতা তার থাকতে হবে।
(আরবী***)
অর্থ: “আল্লাহ তোমাদের নির্দেশ দিচ্ছেন-আমানত (দায়িত্বপূর্ণ পদ) তার যোগ্য ব্যক্তিদের নিকট অর্পণ করতে“ (সূরা নিসা: ৫৮)।
এই প্রসঙ্গে সেই সব হাদীস ইতিপূর্বে উল্লেখিত হয়েছে যেখানে মহানবী সা: বলেছেন যে, অযোগ্য পাত্রে আমানত সোপর্দ কর না। আরও এই যে, উত্তম ও যোগ্যতর মুসলিম ব্যক্তির বর্তমানে অযোগ্য ব্যক্তিকে গভর্ণর কিংবা প্রশাসক নিযুক্ত করা আল্লাহ ও তাঁর রসুল সা:-এর সাথে প্রতারণার শামিল।
৩. আদল
এই যোগ্যতার মধ্যে সর্বাপেক্ষা কাংখিত গুণটি হচ্ছে আদল বা ন্যায়পরায়নতা। সূরা নিসার পূর্বোক্ত আয়াতের প্রথমাংশে এই ন্যায়পরায়নতার কথাই বলা হয়েছে।
(আরবী***)
অর্থ: “তোমরা যখন মানুষের মাঝে বিচারকার্য পরিচালনা করবে তখন ন্যায়পরায়নতার সাথে করবে” (সূরা নিসা :৫৮)।
يَا دَاوُودُ إِنَّا جَعَلْنَاكَ خَلِيفَةً فِي الْأَرْضِ فَاحْكُم بَيْنَ النَّاسِ بِالْحَقِّ وَلَا تَتَّبِعِ الْهَوَىٰ فَيُضِلَّكَ عَن سَبِيلِ اللَّهِ
অর্থ: “ হে দাউদ! আমরা তোমাকে পৃথিবীতে খলীফা বানিয়েছি। অতএব তুমি লোকদের মধ্যে ন্যায়পরায়নতার সাথে রাজত্ব কর এবং প্রবৃত্তির অনুসরণ কর না। কেননা তা (প্রবৃত্তির অনুসরণ) তোমাকে আল্লাহর পথ থেকে বিচ্যুত করবে” (সূরা সাদ: ২৬)
মহানবী সা: ইরশাদ করেন: “কিয়ামতের দিন লোকদের মধ্যে ন্যায়পরায়ন শাসকই আমার নিকট সর্বাপেক্ষা প্রিয় এবং আমার সবচাইতে নিকটে উপবেশনকারী হবে। পক্ষান্তরে কিয়ামতের দিন সব চাইতে ঘৃণিত এবং সর্বাপেক্ষা কঠিন শাস্তিতে পতিত হবে অত্যাচারী শাসক(কিতাবুল খিরাজ, পৃ. ১১৯)।
মহান খলীফা হযরত উমার ফারুক রা: তাঁর প্রশাসকবৃন্দকে কর্মস্থলে পাঠানোর সময় এই উপদেশ দিতেন: “আমি তোমাদেরকে স্বৈরাচারী ও যালিম শাসকরূপে নয়, বরং নেতা ও পথপ্রদর্শক হিসাবে পাঠাচ্ছি। মুসলমানদের নির্যাতন করে লাঞ্ছিত করবে না; অযথা প্রশংসা করেও তাদের বিপদে ফেলবে না। তাদের অধিকার হরণ করে তাদের প্রতি যুলুম করবে না। মুসলমানদের আরাম আয়েশ ও সুখ স্বাচ্ছন্দের জন্য সম্ভাব্য সকল প্রকার পদক্ষেপ গ্রহণ করবে” (ঐ , পৃ. ৩৬৭)।
৪. বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা
উলিল আমর (শাসক) এমন ব্যক্তি হবেন যিনি বুদ্ধিমত্তা, বিচক্ষণতা, দূরদর্শিতা, প্রজ্ঞা ও জ্ঞান ইত্যাদি গুণের অধিকারী।
“হে রসুল! বল, যারা জ্ঞানে সমৃদ্ধ, আর যারা জ্ঞান বঞ্চিত তারা কি সমান হতে পারে” (সূরা যুমার: ৯)?
(আরবী***)
অর্থ: “তোমাদের সম্পদ, যা আল্লাহ তোমাদের অস্তিত্ব রক্ষার উপকরণ বানিয়েছেন, তা নির্বোধ লোকদের হাতে ন্যস্ত কর না” ( সূরা নিসা: ৫)।
সার্বিকভাবে মুসলমানদের উলিল-আমর ( সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ, নির্দেশদাতা) কে কিরূপ হওয়া উচিত তা হযরত আবু বাকর রা: ও হযরত উমার রা:-র মুখে শোনা যাক। হযরত উমার রা: কে খলীফা মনোনয়নের সময় হযরত আবু বাকর রা: নসীহত করে:
(আরবী***)
অর্থ: “হে উমার! প্রথম যে জিনিস সম্পর্কে তোমাকে সতর্ক থাকার নসীহত করছি তা হচ্ছে তোমার নিজের নফস। প্রত্যেক নফসেরই কিছু কিছু চাহিদা থাকে এবং যখন তুমি তার এই চাহিদা পূর্ণকরে দিবে তখন সে আরেকটি চাহিদা পূরণের জেদ করবে। দেখ, রসুলুল্লাহ সা: এর সাহাবীদের মধ্যে সেইসব লোক সম্পর্কে সতর্ক থাকবে যাদের ভুঁড়ি বেড়ে গেছে, দৃষ্টিশক্তিকে লালসা-বাসনা আচ্ছন্ন করে ফেলেছে এবং এদের প্রত্যেকের শুধু নিজ নিজ ব্যক্তিগত স্বার্থই প্রিয়। তাদের মধ্য কারো পদস্খলন ঘটলে তারা সবাই অস্থির ও পেরেশান হয়ࣇ পড়ে। খবরদার! তুমি এদের দলভূক্ত হয়ো না যেন। ভালোভাবে বুঝে নাও, যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আল্লাহকে ভয় করবে ততক্ষণ এরাও তোমার জন্য সোজা হয়ে থাকবে। এই হচ্ছে তোমার প্রতি আমার অন্তিম উপদেশ এবং তোমার কাছে আমার সালাম রইল” ( ঐ, পৃ.১২৬)।
হযরত উমার ফারুক রা: তাঁর পরবর্তী খলিফার জন্য যে দীর্ঘ অসিয়তনামা লিখিয়েছিলেন তাতে নিম্নোক্ত উপদেশ সমূহ উল্লেখ আছে।
১. তাকওয়া (আল্লাহ ভীতি), ২. সৎ কাজের প্রতি মনোযোগ এবং অন্যায় পশ্চাদপসরণ ৩. যিম্মীদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত সম্পদের উপরই কেবল কর ধার্য করা এবং তাদের সাথে সৌজন্যমূলক ব্যবহার, ৪. বেদুঈনদের মধ্যেকার ধনবান লোকদের সম্পদ থেকে যাকাত আদায় করে তাদের মধ্যেকার গরীবদের মাঝে বিতরণ, ৫. প্রজাসাধারণদের সাথে ন্যায়বিচার এবং তাদের প্রয়োজন পূরণের যিম্মাদারী গ্রহণ, ৬. দেশের সীমান্ত রক্ষা, ৭. বিত্তবানদেরকে বিত্তহীনদের উপরে প্রাধান্য না দেওয়া, ৮. আল্লাহর নির্দেশ ও অনুশাসনের বাস্তবায়নে কঠোরতা এবং তাঁর নির্দেশ অবমাননাকারীদের অবমাননা করা, ৯. সবাইকে নিজের সমান মর্যাদাদান, ১০, অধিকার আদায়ের ক্ষেত্রে কারো ব্যক্তিত্ব ও তিরষ্কারের পরোয়া না করা, ১১. গণীমতের সম্পদের সকলকে সমান অংশ দেওয়া এবং নিজকে বঞ্চিত রাখা, ১২. যিম্মীদের উপর না নিজে যুলুম করবে, ১৩. যিম্মীদের উপর না নিজে জুলুম করবে, না অপরকে অনুমতি দিবে, ১৩. আখেরাতের আকাঙ্খী এবং দুনিয়ার প্রতি অনাসক্তি, ১৪. নফসের প্রাধান্য থেকে নিরাপদ থাকা, ১৫. সত্য ন্যায়ের খাতিরে সর্ব প্রকার বাধা বিপত্তির মোকাবিলা করা, ১৬. মুসলিম উম্মাহর প্রতি অনুগ্রহ করা, ১৭, বড়দের প্রতি সম্মান করা ও ছোটদের স্নেহ করা এবং আলেমদের সম্মান করা, ১৮. কাউকে প্রহার এবং অপদস্থ না করা, ১৯. সরকারী অনুদান থেকে মুসলমানদের বঞ্ছিত না করা, ২০. সেনাবাহিনীকে সীমান্ত অঞ্চলে ফেলে না রাখা, আল্লাহ না করুন, এতে বংশ বিস্তার নিপাত হয়ে যেতে পারে, ২১. ধনীদের মধ্যে সম্পদ কুক্ষিগত হয়ে না থাকতে দেওয়া, ২২. গরীবদের জন্য নিজের দরজা সব সময় খোলা রাখা, অন্যথায় সবলেরা দুর্বলদের গ্রাস করে ফেলবে” (উমার ইবনুল খাত্তাব, পৃ. ৩১২)।
হযরত উমার ফারুক রা: খিলাফতের মসনদে আসীন হওয়ার পরে হযরত আলী রা: তাঁকে নিম্নোক্ত পরামর্শ দেন: “আপনি যদি আপনার বন্ধু ( হযরত আবু বাকর রা:) নিকটে পৌঁছতে চান তাহলে নিজের জামায় তালি লাগান, লুঙ্গী উঁচু করে পরুন, আপন জুতায় নিজেই ফিতা বাঁধুন, মোজায় জোড়া লাগান, আশা-আকাংখা কম করুন এবং কখনও উদর পূর্তি করে পানাহার করবেন না” (কিতাবুল খারাজ, পৃ. ১৩৫)।
হযরত উমার রা: তাঁর গোটা খিলাফতকালে এই পরামর্শ অনুসরণ করে গেছেন।
নেতা নির্বাচনের এই হচ্ছে ইসলাম অনুমোদিত মাপকাঠি এবং তাদের প্রয়োজনীয় গুণাবলী। মুসলিম উম্মাহ যদি এই মাপকাঠি অনুযায়ী তাদের নেতৃবৃন্দ ও শাসক নির্বাচন করে এবং তারাও যদি এই মাপকাঠিতে উত্তীর্ণ হন তাহলে ব্যক্তি ও রাষ্ট্রের মধ্যে সংঘাতের পরিবর্তে পারষ্পরিক কল্যাণকামিতা ও সহযোগিতার পরিবেশ সৃষ্টি হবে এবং মৌলিক অধিকার সংরক্ষণের ক্ষেত্রে কোন প্রকার বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না।