অধিকারের সমাজতান্ত্রিক ধারণা
অধিকারের পাশ্চাত্য ধারণা সম্পর্কে আলোচনা করার সাথে সাথে অধিকারের সমাজতান্ত্রিক ধারণা সম্পর্কেও কিছুটা আলোচনার অবতারণা করা সঙ্গত মনে হয়। কার্লমার্ক্স ও লেনিনের পেশকৃত মতবাদ অনুযায়ী মৌলিক অধিকারের আসল উৎস ইতিহাসের দ্বান্ধিক সংঘাত। এসব অধিকার প্রকৃতি প্রদত্ত নয়, বরং ঐ সংঘাতের ফলে সৃষ্ট। তা ইতিহাসের বিভিন্ন পর্যায়ে নিজের ভূমিকা পালন করতে করতে অবশেষে কমিউনিজমের শ্রেণীহীন সমাজে পৌছে শেষ হয়ে যাবে। তারা সর্বপ্রথম বুর্জোয়া শ্রেণীকে সামন্তবাদী সমাজব্যবস্থা খতম করার জন্য এবং পুঁজিবাদী সমাজ কায়েমে সহায়তা করে। পরবর্তী পর্যায়ে এদেরকে শ্রমিকরা নিজেদের শ্রেণী সংগ্রামে পুঁজিপতিদের বিরুদ্ধে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। এখন তা সমাজতন্ত্রের অধীনে মেহনতি মানুষের স্বার্থ সংরক্ষণ করেছে এবং শেষ পর্য্ন্ত পূর্ণ স্বাধীনতা ও সাম্যের লক্ষ্যে স্বয়ং কমিউনিজমে(সাম্যবাদে)পরিণত হবে।
উপরোক্ত দর্শন অনুযায়ী এসব অধিকারের না প্রকৃতির সাথে কোনো সম্পর্ক আছে, না সেগুলো মানুষের সত্তার অপরিহার্য্য অংশ, আর না তা অবিচ্ছেদ্য। এর কোনো বিশেষ মর্যাদা ও গুরুত্ব নাই। তা দেশের সাধারণ আইনের একটি অংশ। এসব অধিকার নির্দিষ্টকরণের এখতিয়ার কেবল ক্ষমতাসীন দলেরই রয়েছে যা দেশের সাধারণ মেহনতী মানুষের স্বার্থের সংরক্ষক এবং তাদের আকাঙ্খা পূরণের একমাত্র মাধ্যম। মেহনতি মানুষের স্বার্থের সাথে সংগতিপূর্ণ সীমা পর্য্ন্তই শুধু মৌলিক অধিকার বাস্তবায়নের অনুমতি দেওয়া যেতে পারে। এই মৌল নীতিমালা ব্যতীত অন্য কিছুর বরাতে এসব অধিকার দাবী সম্পূর্ণ বেআইনী। শ্রমজীবি মানুষের সামাজিক স্বার্থ সমস্ত মৌলিক অধিকারের সীমা নির্দেশ করার একমাত্র ভিত্তি এবং এই স্বার্থ নির্ধারণ করে কমিউনিস্ট পার্টি। কারণ এটাই শ্রমিকদের প্রগতিশীল ও দায়িত্বশীল প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে গঠিন একমাত্র প্রতিনিধিত্বশীল সংগঠন। তার সম্পর্কে আশা করা যায় যে, সে মেহনতি মানুষের স্বার্থের প্রতি লক্ষ্য রাখবে এবং তাদের সামাজিক স্বাচ্ছন্দ্য নিশ্চিত করার জন্য সংগতিপূর্ণ আইন রচনা করবে, যার মধ্যে মৌলিক অধিকারসমূহ নির্ধারণের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত। ওয়াই ভেসিনেস্কি অ্যান্ড্রে রাশিয়ার আইন দর্শনের ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে লিখেছেনঃ
“রুশ আইন সে আচরণবিধির সমষ্টি যা শ্রমিক শ্রেণীর সার্বভৌমত্ব এবং তাদের ব্যক্ত উদ্দেশ্য দ্বারা আইনগত কাঠামো লাভ করে। এসব বিধানের কার্যকর প্রয়োগের গ্যারান্টি সমাজতান্ত্রিক সরকারের পূর্ণ একনায়কতন্ত্রী সরবরাহ করে এবং তাদের উদ্দেশ্য (ক) সেই সম্পর্ক ও ব্যবস্থাপনার প্রতিপালন, প্রতিরক্ষা ও উন্নতি সাধন যা শ্রমিকদের জন্য উপকারী ও পছন্দনীয় এবং (খ) অর্থনৈতিক ব্যবস্থা, জীবনধারা ও মানবীয় চেতনার দ্বারা পুঁজিবাদ ও তার অবশিষ্ট প্রভাবের পরিপূর্ণ ও চূড়ান্ত উৎখাত করা, যাতে কমিউনিস্ট সমাজ কাঠামো নির্মাণ করা যায়।”(Vyshinsky Andrie Y., The Law of the Soviet State, 1948, P. 74)।
রুশ সংবিধানের ভাষ্যকার গ্রেগরিয়ান ও ডলগোপোলরি মৌলিক অধিকারের নিম্নোক্ত সংজ্ঞা পেশ করেনঃ “রুশ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য মূলত সোভিয়েত সরকারের সমাজতান্ত্রিক প্রাণসত্তার প্রকাশমাত্র।”(Grigorian L. & Dolgopolory, Fundamentals of Soviet State Law, Progressive Publishers, Moskow 1971, P. 1950)
আসলে রাশিয়ায় ব্যক্তির উপর সরকারের পূর্ণ প্রাধান্য রয়েছে। সে তার জন্য যে অধিকার নির্ধারণ করে দিবে সেটাই কেবল তার অধিকার এবং তার রাষ্ট্রের আইন প্রণয়নের সাধারণ আওতা বহির্ভুত নয়।
অধিকারের এই তত্ত্ব পাশ্চাত্য দেশসমূহের মৌলিক অধিকার তত্ত্বের সম্পূর্ণ বিপরীত, বরং তার একেবারেই পরিপন্থী। পশ্চিমা দেশগুলোতে এসব অধিকারের আসল উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যক্তিকে রাষ্ট্রের হস্তক্ষপ হতে রক্ষা করে। এজন্য সেখানে এসব অধিকারকে রাষ্ট্র কর্তৃক রচিত সাধারণ আইনের উর্ধ্বে স্থান দেওয়া হয়। এগুলোকে দেশের আইনের অন্তর্ভুক্ত করে রাষ্ট্রের আইন প্রণয়নের এখতিয়ারকে সীমাবদ্ধ করে দেওয়া হয় এবং মৌলিক অধিকারসমূহ বাস্তবায়নের দায়িত্ব বিচার বিভাগের উপর ন্যস্ত করা হয়।
পক্ষান্তরে রাশিয়া ও অন্যান্য সমাজতান্ত্রিক দেশে এসব অধিকারের কি মর্যাদা তা সি.ডি. কারনিগ এর মুখে শুনুনঃ “মৌলিক অধিকার রাষ্ট্র কর্তৃক প্রণীত ও বাস্তবায়িত আইনের মাধ্যমে অস্তিত্ব লাভ করে। প্রাকৃতিক আইনের ভিত্তিতে তার কোনো বৈধতা এখানে কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে। এভাবে রাষ্ট্রের বিপরীতে নাগরিকদের কার্য্কর হেফাজতের গ্যারান্টি এখানে অসম্ভব করে তোলা হয়েছে। কারণ কি পরিমাণ হেফাজতের ব্যবস্থা করা হবে তা স্বয়ং রাষ্ট্রের মর্জির উপর নির্ভরশীল। পাশ্চাত্য ধারণা অনুযায়ী প্রত্যেক ব্যক্তি এসব অধিকার লাভের যোগ্য। কারণ একটি জীবন্ত চেতনা সম্পন্ন ও সম্মানযোগ্য সত্তা হিসেবে তার একটা স্বাধীনতা রয়েছে। পক্ষান্তরে কমিউনিস্ট মতবাদ অনুযায়ী ব্যক্তি হিসেবে মানুষের মূল্য ও মর্যাদা আপেক্ষিক। তার স্থান সমাজের প্রয়োজনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্ধারিত হয়। মৌলিক অধিকার কোনো মানুষের জন্য নয়, বরং তা সামগ্রিকভাবে মানবজাতির জন্য।
যুগোশ্লাভিয়া ছাড়া সমস্ত কমিউনিস্ট রাজ্যের বিচারালয়সমূহ খুবই সীমিত আইনগত নিরাপত্তার ব্যবস্থা করতে পারে এবং তথায় মানবাধিকারের সংরক্ষণের জন্য কোনো আন্তর্জাতিক সংস্থাও নেই। পাবলিক প্রসিকউটরের মাধ্যমে নাগরিক অধিকারের হেফাজতের ব্যবস্থা প্রতারণা মাত্র। কারণ এই পাবলিক প্রসিকিউটরের কোনো স্বাধীন এখতিয়ার নাই, সে সরকারের হুকুমের দাস মাত্র।(Kerning CD, Marxism Communism & Western Society, P.63)।
রুশ সংবিধানে নাগরিকদের যেসব মৌলিক অধিকারের উল্লেখ আছে তা নিম্নরূপঃ (১) কর্মের অধিকার (২) বিশ্রামের অধিকার (৩)বার্ধক্য, রোগ-ব্যাধি অথবা অক্ষমতার ক্ষেত্রে বৈষয়িক প্রয়োজনীয় জিনিসের ব্যবস্থা করে দেওয়ার অধিকার (৪) শিক্ষার অধিকার (৫) নারী-পুরুষের মধ্যে সমতার অধিকার (৬)গোত্র ও সম্প্রদায় নির্বিশেষে সকল রুশ নাগরিকদের মধ্যে সমতার অধিকার (৭) বিবেকের স্বাধীনতা (৮) বক্তৃতা-বিবৃতি, সংবাদপত্র, সভা-সমিতি ও বিক্ষোভ মিছিলের অধিকার (৯) সামাজিক সংগঠন ও সংস্থাসমূহে অংশগ্রহণের অধিকার (১০) ব্যক্তি ও পরিবার, পত্র বিনিময় ও লেখার ক্ষেত্রে হস্তক্ষেপ না করার অধিকার এবং (১১) আশ্রয় লাভের অধিকার।
এসব অধিকারের সাথে সাথে রুশ সংবিধানে দায়িত্ব ও কর্তব্যের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে এবং তা নিম্নরূপঃ
১. সংবিধানের প্রতি সম্মান প্রদর্শন, আইনের আনুগত্য, শ্রমের সংগঠনের প্রতি নজর, সামাজিক দায় দায়িত্ব সম্পর্কে যুক্তিসংগত দৃষ্টিভঙ্গী, সমাজতান্ত্রিক সামাজিক মূলনীতির প্রতি সম্মান প্রদর্শন।
২. সমাজতান্ত্রিক মালিকানা ব্যবস্থার হেফাজত এবং তা সুদৃঢ়করণ।
৩. বাধ্যতামূলক সামরিক সেবা এবং মাতৃভূমির প্রতিরক্ষা। রুশ সংবিধানে অধিকারের তালিকায় দল গঠনের অধিকার অন্তর্ভুক্ত নেই। তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে Vyshinsky বলেন, “নাগরিকদের স্বাধীনতা দিতে গিয়ে সোভিয়েত সরকার শ্রমিকদের স্বার্থকে সর্বাগ্রে স্থান দেয়। আর এটা স্বাভাবিক কথা যে, এই স্বাধীনতার মধ্যে তারা রাজনৈতিক দলসমূহের স্বাধীনতাকে অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনা। রাশিয়ার বর্তমান প্রেক্ষাপটে যেখানে শ্রমিকদের কমিউনিস্ট পার্টির উপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে সেখানে এই স্বাধীনতা কেবল ফ্যাসিস্টদের এজেন্টদের এবং বাইরের গোয়েন্দাদেরই দাবী হতে পারে, যাদের একমাত্র উদ্দেশ্য শ্রমিকদের যাবতীয় স্বাধীনতা হতে বঞ্চিত করা এবং তাদের ঘাড়ে পূর্ণবার পুঁজিবাদের জোয়াল চাপিয়ে দেওয়া।”(Vyshinsky, পূ.গ্র. পৃ. ৬১৭)।
রাশিয়া এবং অন্যান্য কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে একদলীয় ব্যবস্থা, রাজ্যের সমস্ত উপায়-উপকরণ ও সংস্থাসমূহের উপর ক্ষমতাসীন দলের একক আধিপত্য, মৌলিক অধিকারের কোনো নৈতিক ও আদিভৌতিক ধারণার অনুপস্থিতি, রাষ্ট্রকেই অধিকারসমূহ নির্ধারণের পূর্ণ ক্ষমতা দান এবং বিচার বিভাগের মাধ্যমে এসব অধিকার আদায় ও বাস্তবায়নের কোনো গ্যারান্টি ব্যবস্থা না থাকার কারণে তাদের সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত নামেমাত্র অধিকারগুলোও সম্পূর্ণ অর্থহীন থেকে গেছে। এখানে কোনো নাগরিক সংবিধানে প্রদত্ত অধিকার থেকে বঞ্চিত হওয়ার ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের নিকট কোনো দাবী উত্থাপন করতে পারেনা। কারণ এই দাবীর শুনানির জন্য না কোনো আদালতের অস্তিত্ত্ব আছে আর না রাষ্ট্রকে বিবাদী বানানো যেতে পারে। কেননা স্বয়ং রাষ্ট্রই তো অধিকারের আসল উৎস, তা যেটাকে অধিকার সাব্যস্ত করবে সেটাই হবে অধিকার এবং যেটাকে অধিকার হিসেবে স্বীকার করবেনা অথবা স্বীকার করার পর বাতিল, সীমিত বা স্থগিত করবে সেই অধিকার ছিনিয়ে নেওয়ার অভিয়োগ দায়েরের অবকাশ কিভাবে অবশিষ্ট থাকতে পারে? এখানে রাষ্ট্রের মর্জির অপর নাম অধিকার, এই মর্জির সীমার বাইরে স্বয়ং অধিকারের নিজস্ব কোনো অস্তিত্ব নেই।
অধিকারের এই সমাজতান্ত্রিক ধারণাও মূলত মানুষ সম্পর্কে সমাজতান্ত্রিক ধারণার উপর নির্ভরশীল। সমাজতান্ত্রিক চিন্তাবিদগণের জীবনদর্শন নিরেট বস্তুবাদী। তাদের মতে এই বিশ্বচরাচরের অন্যান্য জড় পদার্থের ন্যায় মানুষও একটি জড় জীব। তার মূল্য ও মর্যাদা তার সৃজনশীল যোগ্যতা অনুযায়ী নির্ধারিত হয়। যেভাবে মেশিনের একটি অংশ তার কর্মদক্ষতা ও উৎপাদনী যোগ্যতার প্রদর্শনীর জন্য বিদ্যুৎ, পানি, তৈল, উপযুক্ত রক্ষণাবেক্ষণ এবং অন্যান্য প্রয়োজনের মুখাপেক্ষী, তেমনি মানুষও তার সৃজনশীল যোগ্যতার উন্নতি ও তার বাস্তব প্রদর্শনীর জন্য খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা-প্রশিক্ষণ, বাসস্থান, চিকিৎসা ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসের পৃষ্ঠপোষকতার মুখাপেক্ষী। এই পৃষ্ঠপোষকতা কেবল এমন একটি সমাজ ব্যবস্থায়ই সহজলভ্য হতে পারে যেখানে সমাজের সকল সদস্য উৎপাদনশীল ব্যক্তি হিসেবে নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে থাকবে এবং একটি কেন্দ্রীয় ব্যবস্থা তাদের সকলের জন্য ভাত, কাপড়, বাসস্থান এবং জীবনের অন্যান্য জৈবিক প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থা করে থাকবে।
উৎপাদনের উপকরণের চেয়ে অধিক কোনো মর্যাদা মানুষের নাই। ধর্ম, চরিত্র, নৈতিকতা, আত্মা, ঈমান, আখেরাত এবং এই ধরনের অন্য সব পরিভাষা সাধারণ মানুষগুলোকে শোষণের জন্য পুঁজিপতি ও তাদের এজেন্টদের অধিকার। লেনিনের কথাঃ “আমরা এমন চরিত্র নৈতিকতার বিরোধী যেগুলোর ভিত্তি পুঁজিপতিরা খোদায়ী বিধানের উপর স্থাপন করেছে। আমরা এমন সব নৈতিক মূল্যবোধ প্রত্যাখ্যান করি যার ভিত্তি মানবীয় এবং শ্রেণীগত দৃষ্টিভঙ্গীর উর্ধ্বে। আমরা বলি যে, এটা একটা ধোঁকা মাত্র এবং এর মাধ্যমে কৃষক ও শ্রমিকদেরকে ভূস্বামী ও পুঁজিপতিদের স্বার্থে নির্বোধ বানানো হয়। আমরা ঘোষণা করি যে, আমাদের নৈতিক মূল্যবোধ গরীবদের শ্রেনী সংগ্রামের অনুসারী। আমাদের নৈতিক মূল্যবোধের উৎস হচ্ছে গরীব জনগণের শ্রেণী সংগ্রামের স্বার্থে। তাই আমরা বলি যে, এমন কোনো নৈতিক মূল্যবোধ বর্তমান নেই যা মানব সমাজের আওতার বাইরে থাকতে পারে।” (Marxs & Engels, Selected Correspondence, Progressive Publishers, Moscow 1965, P 423)।
সমাজতান্ত্রিক মতবাদ অনুযায়ী মানুষ কেবলমাত্র পেট সর্বস্ব জড় পদার্থের সমষ্টি এবং অর্থনৈতিক কার্য্ক্রম ও চেষ্টা তদবীরই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য। সমাজে মানুষের যখন এই মর্যাদা নির্ধারিত হয়ে গেল তখন একটু চিন্তা করে দেখুন যে, ভাত-কাপড়-বাসস্থান ও চিকিৎসা ব্যতীত তার আর কি অধিকার প্রাপ্য থাকতে পারে। সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রগুলো যদি কেবলমাত্র এসব জৈবিক অধিকারের গ্যারান্টি দেয় এবং নৈতিক মূল্যবোধের উপর ভিত্তিশীল অন্য কোনো অধিকার স্বীকার না করে তবে এটা তাদের জীবনদর্শনের একটা যৌক্তিক পরিণতি। তারা যতক্ষণ পর্য্ন্ত মানুষ সম্পর্কে নিজেদের জীবনদর্শনের পরিবর্তন না করবে ততক্ষণ তাদের কাছে মৌলিক অধিকারের সীমা সম্প্রসারিত করার আশা করা যায়না।