সফরের সহযাত্রীর অধিকার
কোন জাতির সরদার তাদের সেবক হয়ে থাকে
(আরবী******)
১৯৯.রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন: কোন জাতি বা দলের সরদার তাদের সেব হয়ে থাকে। সুতরাং যে ব্যক্তি মানুষের সেবা ও উপকারে অগ্রণী হয়, একমাত্র আল্লাহর পথে শাহাদাত বরণ করা ছাড়া আর কোন কাজ দ্বারা কেউ তার ওপর শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারে না।
ব্যাখ্যা:যে ব্যক্তি কোন দলের সাথে সফর করে, তার কর্তব্য এই যে, সে যেন ঐ দলের সেবা করে, তাদের প্রয়োজনের দিকে লক্ষ্য রাখে এবং সম্ভাব্য সকল উপায়ে তাদের সুখ ও স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা করে। এই সেবার জন্য সে অনেক সওয়াব পাবে। এর চেয়ে বেশী সওয়াব যদি কোন কিছুতে থেকে থাকে তবে তা একমাত্র আল্লাহর পথে লড়াই করে শহীদ হওয়াতেই রয়েছে।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাহনে সহযাত্রীর অধিকার
(আরবী**********)
২০০. আবু সাঈদ খুদরী(রা) বলেন: একবার আমরা যখন সফরে ছিলাম, তখন উষ্ট্রীর ওপর আরোহণকারী এক ব্যক্তি তাঁর কাছে এল এবং এসেই ডানে বামে তাকাতে লাগলো। তখন রাসূলুল্লাহ (সা) বললেন: যার কাছে নিজের প্রয়োজনের অতিরিক্ত বাহন আছে, তার কর্তব্য অতিরিক্ত বাহন সেই ব্যক্তিকে ধেয়া, যার বাহন নেই। আর যার কাছে অতিরিক্ত খাবার আছে, তার কর্তব্য যার খাবার নেই, তাকে সেই খাবার দেয়া। আবু সাঈদ খুদরী (রা) বলেন, রাসূল (সা) এভাবে এক এক করে বহু রকমের সামগ্রীর উল্লেখ করলেন, যা দ্বারা আমরা বুঝতে পারলাম যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত যে জিনিসই আমাদের কাছে থাকুক, তাতে আমাদের কোন অধিকার নেই। (মুসলিম)
আগন্তুক ডানে বামে তাকাচ্ছিল এ জন্য যে, আসলে তার কোন প্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাব ছিল এবং কেউ তাকে সাহায্য করুক এটা কামনা করছিল।
প্রয়োজনের অতিরিক্ত সামগ্রী শয়তানের
(আরবী*********)
২০১.রাসূলুল্লাহ(সা) বলেছেন: কিছু উট ও কিছু ঘরবাড়ী শয়তানের হয়ে থাকে। শয়তানের উঠ তো আমি দেখেছি। তোমাদের কেউ বহু সংখ্যক মোটাতাজা ও নাদুস নুদুস উট নিয়ে পথে বেরন হয়। সেই সব উটের একটিতেও সে নিজেও আরোহণ করে না, আবার তার যে ভাই এর কোন বাহন যার কোন বাহন নেই, তার কাছ দিয়ে যাওয়ার সময় তাকেও তাতে আরোহণ করায় না। (এই সব উট হলো শয়তানের উট) তবে শয়তানের বাড়ী আমি দেখিনি। (আবু দাউদ)
শয়তানের বাড়ী দ্বারা রাসূল (সা) সেই সব বাড়ীকে বুঝিয়েছেন, যা লোকেরা নিছক ধন সম্পদের বড়াই প্রদর্শনের জন্য নির্মাণ করে থাকে। সেগুলোতে নিজেও বাস করে না অন্য কোন বাড়িঘর বিহীন লোককেও বাস করতে দেয় না। এ ধরনের ঐশ্বর্য প্রদর্শনী ইসলাম পছন্দ করে না। রাসূল (সা) এ ধরনের লোক দেখানো বাড়িঘর দেখেননি। কেননা সে যুগে এ ধরনের প্রদর্শনী মনোভাবের অধিকারী লোক ছিল না। তবে পরবর্তীকালে এ ধরনের বাড়িঘর নির্মিত হয়েছে এবং আমাদের পূর্ব পুরুষরা তা দেখেছেন। আমরাও আমাদের যুগের ধনাঢ্য পুঁজিপতি মুসলমানদের এ ধরনের প্রদর্শনীমূলক অট্টালিকা দেকতে পাচ্ছি।
মানুষের চলাচলের পথ বন্ধ
(আরবী*********)
২০২. হযরত মুয়ায (রা) বলেন: আমরা রাসূল (সা) এর সাথে কোন এক যুদ্ধে গিয়েছিলাম। আমাদের সাথীরা এমন গাদাগাদি করে অবস্থান করতে লাগলো যে, চলাচলের রাস্তাই বন্ধ হয়ে গেল। রাসূল (সা) একজন ঘোষণাকারী পাঠিয়ে ঘোষণা করিয়ে দিলেন যে, যে ব্যক্তি অবস্থান স্থলকে সংকীর্ণ করে দেবে বা চলাচলের পথ বন্ধ করে দেবে, সে জেহাদের সওয়াব পাবে না।
এ হাদীস দ্বারা বুঝা গেল যে, মুসলিম মুজাহিদগণ এমনভাবে অবস্থান করছিলো যে, পথিকদের চলাচলে অসুবিধার সৃষ্টি হওয়ার উপক্রম হয়েছিল। এ জন্যই এরূপ ঘোষণা জারী করান। যারা কোন সৎ কাজের উদ্দেশ্যে সফরে বের হবে, তাদের উচিত পথিমধ্যে কোথাও যাত্রাবিরতি করতে হলে যেন বেশী ছড়িয়ে ছিটিয়ে অবস্থান না করে, বরং কেবল প্রয়োজনীয় পরিমাণ জায়গা ব্যবহার করে। অন্য সফর সঙ্গীদের স্থান সংকুলান হয় না বা যাতায়াত ও চলাচলে সমস্যার সৃষ্টি হয় এমনভাবে অবস্থান করা ঠিক নয়।