ওমরা
ওমরা অর্থ প্রতিষ্ঠিত গৃহের যিয়ারত করা এবং শরীয়াতের পরিভাষায় ওমরার অর্থ ছোট হজ্জ যা সবসময়ে হতে পারে। তার জন্যে কোনো মাস ও দিন নির্ধারিত নেই। যখনই মন চাইবে ইহরাম বেধে বায়তুল্লাহর তাওয়াফ করে, সায়ী করবে এবং মস্তক মুণ্ডন বা চুল ছেঁটে ইহরাম খুলবে। ওমরা হজ্জের সাথেও করা যায় এবং আলাদাও করা যায়। কুরআন বলে-
*******আরবী*********
এবং আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে হজ্জ ও ওমরা করি। (সূরা আল বাকারা)
হাদিসে ওমরার বিরাট ফযিলত বয়ান করা হয়েছে। নবী (স) বলেন, সবচেয়ে উৎকৃষ্ট আমল ঈমানের সাক্ষ্যদান। তারপর হিজরত ও জিহাদের মর্যাদা। তারপর দুটো আমলের চেয়ে উৎকৃষ্ট আমল আর কিছু নেই। একটি হজ্জে মাবরুর এবং দ্বিতীয়টি ওমরাহ মাবরুর। (মুসনাদে আহমদ)
ওমরাহ মাবরুর অর্থ এমন ওমরাহ যা নিছক আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে তার সকল নিয়ম নীতি ও শর্তগুলোসহ পালন করা হয়।
নবী (স) আরও বলেন, যে ব্যক্তি হজ্জ অথবা ওমরার নিয়তে বাড়ী থেকে রওয়ানা হলো এবং তারপর সে পথেই মৃত্যুবরণ করলো, সে বিনা হিসেবে বেহেশতে যাবে। আল্লাহ তায়ালা বায়তুল্লাহ যিয়ারতকারীদের জন্যে গর্ববোধ করেন। (বায়হাকী, দারুকুতনী)
নবী (স) বলেন, হজ্জ ও ওমরাহকারী আল্লাহর মেহমান। তারা আল্লাহর দাওয়াতে আসে। অতএব, তারা যা কিছু তার কাছে চায়, তা পায়। (আল বাযযার)
এক ওমরাহ দ্বিতীয় ওমরাহ পর্যন্ত গুনাহগুলোর কাফফারা হয়ে যায়। (বুখারী, মুসলিম)
ওমরার মাসায়েল
১. জীবনে একবার ওমরা করা সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। তাছাড়া তা যখনই করা হোক, তার জন্যে প্রতিদান ও বরকত রয়েছে। হযরত জাবের (রা) বলেন, নবী (স) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল- ওমরাহ কি ওয়াজিব? নবী (স) বলেন- না, তবে ওমরা করো, এর বড়ো ফযিলত রয়েছে।
২. ওমরার জন্যে কোনো মাস, দিন ও সময় নির্ধারিত নেই যেমন হজ্জের জন্যে রয়েছে। যখনই সুযোগ হবে ওমরাহ করা যেতে পারে।
৩. রমযানে ওমরাহ করা মুস্তাহাব। নবী (স) বলেন, রমযানে ওমরা করা এমন যেন আমার সাথে হজ্জ করা। (আবু দাউদ) বুখারীতে আছে, রমযানে ওমরা হজ্জের সমান।
৪. ওমরার জন্যে মীকাত হচ্ছে হিল এবং সকলের জন্যেই তাই, চাই তারা আফাকী হোক অথবা মীকাতের ভেতরের হোক অথবা মক্কার অধিবাসী হোক। হজ্জের মীকাত মক্কাবাসীদের জন্যে হিল।
৫. ওমরার আমল শুধু ইহরাম বাধা, তাওয়াফ করা, সায়ী করা এবং মাথা মুণ্ডন করা অথবা চুল ছোট করা।