ব্যবসার মালের যাকাত
ব্যবসার মালের নেসাবও তাই যা সোনা চাঁদির নেসাব। অর্থাৎ সোনা অথবা চাঁদির নেসাবের ভিত্তিতে যাকাত দিতে হবে। যেমন ধরুন আপনার কাছে মোট চারশ টাকা মওজুদ আছে। এত সোনার নেসাব তো হয় না কিন্তু চাঁদির নেসাব হয়, তাহলে সেই নেসাব অনুযায়ী যাকাত দিতে হবে।
ব্যবসার মালের যাকাতের পদ্ধতি এই যে, ব্যবসা শুরু করার দিন থেকে এক বছর হয়ে গেলে মওজুদ মালে Stock in trade মূল্য হিসেব করতে হবে। তারপর দেখতে হবে নগদ তহবিল Cash in hand কি আছে। এখন উভয়ের সমষ্টির ওপর যাকাত বের করতে হবে। যদি মওজুদ স্টক এবং নগদ তহবিল নেসাবের কম হয় এবং তারপর হঠাৎ ব্যবসার পণ্যের দাম বাড়তে থাকায় নেসাব পরিমাণ কিংবা তার অধিক হয়ে যায়, তাহলে যে তারিখ থেকে দাম বেড়েছে সে তারিখ থেকে যাকাতের বছর শুরু হবে।
যদি কোন ব্যবসায় কয়েকজন অংশীদার থাকে,তাহলে ব্যবসার সামগ্রিক স্টক এবং নগদ তহবিলের ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে না। বরঞ্চ প্রত্যেক অংশীদারের অংশ এবং মুনাফার টাকার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে। যদি এ অংশ এবং তার মুনাফা নেসাব পরিমাণ হয় তাহলে যাকাত ওয়াজিব হবে নতুবা হবে না।
এমনিভাবে কিছু মাল যদি কয়েক ব্যক্তির অংশীদারিত্বে হয় তাহলে তার ওপর যাকাত তখনই হবে, যখন প্রত্যেক অংশীদারের অংশ নেসাব পরিমাণ হবে। যেমন ধরুন, দু ব্যক্তির মিলে চল্লিশ ছাগল আছে অথবা ষাট তোলা চাঁদি দু ব্যক্তির মালিকানায় আছে। তাহলে তার ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে না।
ব্যবসার কাজে প্রয়োজনীয় সাজসরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি, ফার্নিচার, ষ্টেশনারী দ্রব্যাদি, দালানকোঠা, অর্থাৎ উৎপাদনের উপাদানের ওপর যাকাত ওয়াজিব হয় না। শুধু ব্যবসার মালপত্র এবং নগদ তহবিল মিলে যে মূল্য হবে তার যাকাত ওয়াজিব হবে। (ইমাম শাফেয়ীর অভিমত এই যে, কারবারে সামগ্রিক স্টক এবং নগদ তহবিল যদি নেসাব পরিমাণ হয় তাহলে তার যাকাত দিতে হবে। প্রত্যেক অংশীদারের অংশ নেসাব পরিমাণ হোক বা না হোক। ইমাম মালেকের মতেও যাকাত সামষ্টিক মাল থেকেই আদায় করতে হবে। কিন্তু ঐসব অংশীদারকে গণনার বাইরে রাখাতে হবে যারা সাহেবে নেসাব নয় অথবা যে এক বছরের কম সময়ে তার অংশের মালিক হয়েছে। এ অভিমতই বেশী মুনাসিব এবং বাস্তব)যাকাত দেয়ার সময় এসব কাজের টাকা পয়সাও হিসেবের মধ্যে ধরতে হবে যা ব্যবসা করা কালীন আদান প্রদান হয়েছে। হযরত সামরা বিন জুন্দুব বলেন, নবী (স) আমাদেরকে ব্যবসার মালের যাকাত দিতে বলেছেন। (আবু দাউদ)
অলংকারের যাকাত
সোনা চাঁদি যে আকারেই হোক তার ওপর যাকাত ওয়াজিব। তা সে মুদ্রা হোক, খন্ড, তারব্রকেড হোক, অথবা কাপড়ের ওপর সোনার জরির কাজ হোক, অথবা কাপড় বুনোনে সোনা বা সোনা চাঁদির চিকন তার হোক, অথবা মেয়েদের ব্যবহারের অলংকার হোক, প্রত্যেক বস্তুর ওপর যাকাত ওয়াজিব হবে।
ইয়ামেনের জনৈকা মহিলা নবী (স) এর খেদমতে হাজির হলো, তার সাথে তার মেয়ে ছিল যার হাতে সোনার দুটি মোটা কঙ্কণ ছিল। নবী (স) জিজ্ঞেস করলেন, তুমি এর যাকাত দাও? সে বলল, জি না, যাকাত তো দিই না। নবী (স) বললেন, তুমি কি এটা পছন্দ করো যে, কেয়ামতের দিন ঐ অপরাধে তোমাকে আগুনের কঙ্কণ পরিয়ে দেয়া হবে। একথা শুনে মহিলাটি দুটি কঙ্কণ খুলে নবীর হাতে দিয়ে বললো, এগুলো আল্লাহ ও রাসূলের সন্তুষ্টির জন্যে পেশ করছি। (নাসায়ী)
হযরত উম্মে সালমা (রা) বলেন, আমি কঙ্কণ পরতাম এবং একদিন নবী (স)কে জিজ্ঞেস করলাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ। এটা কানয (যে সঞ্চিত সম্পদে যাকাত দেয়া হয় না) বলে গণ্য হবে? তিনি বললেন, যে মাল যাকাত দেয়ার পরিমাণে পৌছে এবং তার যাকাত দেয়া হয় তা কানয নয়। (আবু দাউদ)
অলংকারের যাকাত সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে আল্লামা মওদূদী বলেনঃ অলংকারের যাকাত সম্পর্কে কয়েকটি অভিমত আছে। একটি অভিমত এই যে, এর ওপর যাকাত ওয়াজিব নয়। কর্জ হিসেবে তা দেয়াটাই তার যাকাত। এ হচ্ছে আনাস বিন মালেক, সাঈদ বিন মুসাইয়্যের এবং শাবীব উক্তি। দ্বিতীয় অভিমত এই যে, অলংকারের যাকাত জীবনে একবার দিলেই যথেষ্ট হবে। তৃতীয় অভিমত এই যে,যে অলংকার সর্বদা ব্যবহার করা হয় তার ওপর যাকাত নেই। যা অধিক সময়ে তুলে রাখা হয় তার ওপর যাকাত ওয়াজিব। চতুর্থ অভিমত এই যে, সব রকমের অলংকারের যাকাত ওয়াজিব। আমাদের মতে এ সর্বশেষ অভিমতটি সঠিক। প্রথমত, যেসব হাদীসে সোনা চাঁদির ওপর যাকাত ওয়াজিব হওয়ার হুকুম রয়েছে তার শব্দগুলো সাধারণ। যেমন চাঁদির ওপর শতকরা আড়াই ভাগ যাকাত এবং পাঁচ উকিয়ার কম হলে তার ওপর যাকাত নেই। বিভিন্ন হাদীস ও আসার থেকে জানা যায় যে, অলংকারের ওপর যাকাত ওয়াজিব। আবু দাউদ, তিরমিযি ও নাসায়ীতে নির্ভরযোগ্য সূত্রে বর্ণিত আছে যে, একজন নারী নবী (স) এর দরবারে আসে এবং তার সাথে তার মেয়ে ছিল। তার দুটি হাতে সোনার কঙ্কণ ছিল। নবী (স) বললেন, তুমি এর যাকাত দাও? সে বললো না। তখন নবী (স) বলেন, তুমি কি পছন্দ কর যে, কেয়ামতের দিন আল্লাহ তোমাকে তার বদলে আগুনের কঙ্কণ পরিয়ে দেবেন?
উপরন্তু মুয়াত্তা, আবু দাউদ ও দারে কুতনীতে নবী (স) এর এ উক্তি নকল করা হয়েছে ********** আরবী ************ যে অলংকারের যাকাত তুমি দিয়েছ তা কানয নয়। ইবনে হাযম বলেন, হযরত ওমর (রা) ও তার গভর্নর আবু মূসা আশয়ারীকে যে ফরমান পাঠান, তাতে এ হেদায়েত ছিল মুসলমান মেয়েলোকদেরকে আদেশ কর তারা যেন তাদের অলংকারের যাকাত দেয়।
হযরত আবদুল্লাহ বিন মাসউদ (রা) কে জিজ্ঞেস করা হয়েছিল অলংকার সম্পর্কে হুকুম কি? তিনি বলেন, যখন তা দুশ দিরহাম পরিমাণ হবে তখন তার যাকাত দিতে হবে। এ ধরনের উক্তি সাহাবাদের মধ্যে হযরত ইবনে আব্বাস (রা) হযরত আবদুল্লাহ বিন ওমর (রা) এবং আয়েশা (রা) এবং তাবেঈনদের মধ্যে সাইদ বিন মুসাইয়্যেব, সাঈদ বিন বুহাইব, আতা, মুজাদি, ইবনে সিরীন ও যুহরী এবং ফেকার ইমামদের মধ্যে সুফিয়ান সাওরী, আবু হানিফা ও তার সঙ্গীদের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে।
যাকাতের হার
১. সোনা, চাঁদি, ব্যবসার মাল, ধাতু মুদ্রা, নোট, অলংকার প্রভৃতির শতকরা আড়াই ভাগ হারে যাকাত ওয়াজিব হবে।
২. সোনা চাঁদি অথবা অলংকারে চল্লিশ ভাগের একভাগ সোনা অথবা যাকাত হিসেবে দেওয়া ওয়াজিব। কিন্তু জরুরী নয় যে সোনা চাঁদি যাকাত হিসেবে দিতে হবে। তার মূল্য হিসেব করে নগদ অর্থ দেওয়া যেতে পারে। কাপড় অন্যান্য বস্তু দেওয়া যেতে পারে। নগদ অর্থ ও তেজারতি মালের মূল্য সোনা অথবা চাঁদির কোনটির নেসাব পরিমাণ হয় তাহলে তার শতকরা আড়াই ভাগ যাকাত দিতে হবে।
৩. সোনা চাঁদি নেসাব পূর্ণ হয়ে কিছু বেশী সোনা চাঁদি অথবা তেজারতি মাল কারো কাছে যদি থাকে তাহলে তার উপর এ অবস্থায় যাকাত ওয়াজিব হবে। যদি তা নেসাবের এক পঞ্চমাংশ হয়। তার কম হলে যাকাত মাফ। (ইলমুল ফেকাহ)
৪. যদি কোন অলংকার দলা অথবা কাপড়ে সোনা বা চাঁদি উভয়ে থাকে তাহলে দেখতে হবে কার পরিমাণ বেশী। যার পরিমাণ বেশী হবে তার হিসেব ধরতে হবে। যদি সোনা ধরতে তাহলে সব সোনা মনে করে সোনার নেসাবনুযায়ী যাকাত দিতে হবে। যদি চাঁদির পারিমাণ বেশী হয় তবে সমুদয় চাঁদি মনে করে চাঁদির নেসাব অনুযায়ী যাকাত দিতে হবে।
৫. সোনা, চাঁদির অলংকারাদীতে যদি অন্য কোন ধাতু মিশ্রিত থাকে এবং তার পরিমাণ যদি সোনা চাঁদির কম হয় তাহলে তা ধর্তব্যের মধ্যে হবে না। তা সোনা চাঁদি মনে করে যাকাত দিতে হবে। আর যদি তার মধ্যে সোনা চাঁদি কম থাকে তাহলে শুধু সোনা চাঁদির হিসেব করতে হবে। তা যদি নেসাব পরিমাণ হয় তাহলে যাকাত দিতে হবে, নতুবা দিতে হবে না।
৬. একজনের নিকট কিছু সোনা ও কিছু চাঁদি আছে। তার মধ্যে যেটারই নেসাব পুরো হবে তার সাথে অন্যটার মূল্য হিসেব করে শতকরা আড়াই ভাগ যাকাত দিতে হবে।
৭. যদি কারো নিকটে সোনাও নেসাবের কম এবং চাঁদিও নেসাবের কম আছে। তাহলে চাঁদিকে সোনার সাথে মিলিয়ে অথবা সোনাকে চাঁদির সাথে মিলিয়ে যে নেসাব পুরো হবে তার শতকরা আড়াই ভাগ হিসেবে যাকাত দিতে হবে। এমনি কিছু নগদ টাকা আছে, কিছু চাঁদি আছে, কিছু তেজারতি মাল আছে। তাহলে সব মিলিয়ে যদি চাঁদি অথবা সোনার নেসাব পুরো তাহলে যাকাত দিতে হবে।
৮. অলংকারের যেসব মণিমুক্তা প্রভৃতি থাকবে তার যাকাত নেই। ওজনে সেগুলো বাদ দিয়ে বাকী সোনা চাঁদির শতকরা আড়াই ভাগ হিসেবে যাকাত দিতে হবে।
যে সবের উপর যাকাত নেই
১. বাঁশের বাড়ি ঘরের উপর যাকাত নেই তা যতই মূল্যবান হোক না কেন।
২. যে কোন প্রকারের মণিমুক্তা ইত্যাদির উপর যাকাত নেই।
৩. কৃষি সেচ কাজের জন্য যে পশু, যেমন- গরু, মহিষ, উট প্রতি পালন করা হয় তার উপর যাকাত নেই। এ ব্যাপারে মূলনীতি এই যে এক ব্যক্তি তার কারবারে উৎপাদনের যেসব উপাদান ব্যবহার করে তা যাকাত বহির্ভূত। হাদীসে আছে ********** আরবী******* যেসব উঠ দিয়ে কৃষি কাজ করা হয় তার উপর যাকাত নেই। কারণ তার যাকাত যমীন থেকে উৎপন্ন ফসল থেকে আদায় করা হয়। এরূপ উৎপাদনের যন্ত্রপাতির উপর যাকাত নেই।
৪. কল-কারখানা মেশিন যন্ত্রপাতির উপর যাকাত নেই। উপরুন্ত কারখানার দালান কোটা, ব্যবসার ব্যবহৃত ফার্নিচার, দোকান ঘর এসবের উপর যাকাত নেই।
৫. ডেইরী ফার্মের পশুর উপর যাকাত নেই। কারণ সেগুলো তো উৎপাদনের উপাদানের মধ্যে পড়ে। অবশ্য ডেইরী থেকে উৎপাদিত বস্তুর উপর যাকাত ওয়াজিব আছে।
৬. মূল্যবান কোন জিনিস কেউ যদি শখ করে ঘরে রাখে তার উপর যাকাত নেই। তবে যদি ব্যবসা করা হয় তার উপর যাকাত আছে। যেমন তেজারতি মালের উপর।
৭. কেউ যদি চৌবাচ্চায় বা পুকুরে সৌখিন মাছ পুষে তাহলে তার উপর যাকাত নেই। কিন্তু তার ব্যবসা করলে যাকাত দিতে হবে।
৮. গৃহপালিত পশু যদি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে রাখা হয়, যেমন দুধ পানের জন্য গাভী, বোঝা বহনের জন্য গরু –মহিষ, যানবাহনের জন্য ঘোড়া হাতি উঠ থাকলে তার সংখ্যা যতই হোক না কেন তার যাকাত দিতে হবে না।
৯. চড়ে বেড়াবার জন্য মোটর সাইকেল কার বাস থাকলে তার উপর যাকাত নেই।
১০. ডিম বিক্রির জন্য হাঁস-মুরগির ফার্ম করলে হাঁস-মুরগির উপর যাকাত নেই। তবে বিক্রি করা ডিমের উপর যাকাত ওয়াজিব হবে যেমন অন্যান্য ব্যবসার উপর হয়।
১১. সখ করে মুরগি অথবা কোন পাখি পুষলে তার উপর যাকাত নেই।
১২. যেসব জিনিষের ভাড়া খাটানো হয়, যেমন সাইকেল, রিক্সা, ট্যাক্সি, বাস, ফার্নিচার, ক্রয়কারী প্রভৃতির উপর যাকাত নেই। তবে এসব থেকে যা মুনাফা হবে তা যদি নেসাব পরিমাণ হয় তাহলে বছরে অতীত হওয়ার পর যাকাত দিতে হবে। ঐসব জিনিষের মূল্যের উপর কোন যাকাত নেই।
১৩. দোকান ও বাড়ি ঘর থেকে যে যাকাত আদায় করা হয় তার উপর কোন যাকাত নেই, তার মূল্য যতই হোক না কেন।
১৪. পরনের কাপড়, কোট, প্যান্ট, চাদর, কম্বল, টুপি, জুতা, ঘড়ি, ঘরের আসবাবপত্র, কলম প্রভৃতির উপর যাকাত উপর যাকাত নেই,তার মূল্য যতই হোক না কেন।
১৫. গাধা, খচ্চর, ঘোড়ার উপর যাকাত নেই, যদি তা ব্যবসার জন্য না হয়।
১৬. ওয়াকফের পশুর ওপরও যাকাত নেই। যেসব ঘোড়া জেহাদের জন্য পালা হয় এবং যেসব অস্ত্রশস্ত্রও জেহাদও দীনের খেদমতের জন্য, তার ওপরও যাকাত নেই।
পশুর যাকাত
সাধারণ মাঠে ময়দানে চরে বেড়ানো গৃহপালিত পশু বংশ বৃদ্ধি ও দুধের জন্য প্রতিপালিত হলে তাকে পরিভাষায় সায়েমা বলে। তার ওপর যাকাত ওয়াজিব। যেসব পশু গোশত খাওয়ার জন্য পালা হয় এবং বন্য পশু যেমন হরিণ, নীল গাই, চিতা প্রভৃতির উপর যাকাত নেই। তবে এ বন্য পশু যদি ব্যবসার জন্য হয়,তাহলে তার উপর তেমনি যাকাত ওয়াজিব হবে যেমন তেজারতের মালের উপর। অর্থাৎ ব্যবসার মূলধন যদি বছরের সূচনায় ও শেষে দিরহাম অথবা তার বেশী হয় তাহলে যাকাত নতুবা হবে না।
যে পশু গৃহপালিত ও বন্য পশুর সংগমে পয়দা হয় তার উপর যাকাত ওয়াজিব এবং শর্তে যে, সংগমকারী পশুগুলোর মধ্যে মাদা গৃহ পালিত হয় এবং নর বন্য হয়। যেমন ছাগল ও নর হরিণের সংগমে যে পশু পয়দা হয় তার উপর যাকাত ওয়াজিব হবে।
যেসব সায়েমা পশু ওয়াকফ করা তার উপর যাকাত নেই। এভাবে যে ঘোড়া ওয়াকফ করা অথবা জেহাদের জন্য পালা হয় তার উপর যাকাত নেই।
সায়েমা পশু যদি যাকাতের জন্য পালা হয় তাদের উপর ঐরূপ যাকাত ওয়াজিব হবে যা তেজারতি মালের উপর হয়।
যদি কেউ বংশ বৃদ্ধির জন্য সায়েমা পশু পালন করে তারপর বছরের মাঝখানে ব্যবসার ইচ্ছা করলো। তাহলে সে বছরে যাকাত ওয়াজিব হবে না। কিন্তু যে দিন থেকে ব্যবসার ইচ্ছা করছে সেদিন থেকে তার তেজারতি বছর শুরু হবে। এবং বছর পুরো হওয়ার পর তেজারতি যকাত দিতে হবে।
ভেড়া ছাগলের নেসাব ও যাকাতের হার
যাকাতের ব্যাপারে ভেড়া ছাগল দুম্বা সকলের একই হুকুম। সকলের একই নেসাব এবং যাকাতের হার একই। যদি কারো কাছে দুম্বাও আছে এবং ছাগলও আছে এবং তা নেসাব পরিমাণ হয়েছে তাহলে উভয়ের পৃথক পৃথক যাকাত দিতে হবে।আর যদি উভয়ের একত্র করলে নেসাব পূর্ণ তাহলে যর সংখ্যা বেশী যাকাতে সেই পশুটি দিতে হবে। উভয়ের সংখ্যা সমান হলে যেটা ইচ্ছা দেয়া যায়।