কয়েকটি চমৎকার অভিরুচি
এ পর্যায়ে রসূল সা.এর এমন কিছু আদত অভ্যাস ও অভিরুচির উল্লেখ করতে চাই, যা অন্য কোন শিরোনামের আওতায় আনা হয়নি।
কোন জিনিস দেয়া ও নেয়ার কাজ ডান হাত দিয়েই সম্পন্ন করতেন।চিঠি লিখতে হলে প্রথমে বিছমিল্লাহ লেখাতেন।তারপর প্রেরকের নাম ও তার নিচে যাকে চিঠি লেখা হচ্ছে তার নাম থাকতো।
তিনি কল্পনা বিলাসিতা থেকে মুক্ত ছিলেন এবং কোন ‘শুভলক্ষন’ বা ‘অশুভলক্ষনে’ বিশ্বাস করতেননা।তবে ব্যক্তি ও স্থানের ভাল অর্থবোধক ও শ্রুতি মধুর নাম পছন্দ করতেন।খারাপ নাম পছন্দ করতেননা।বিশেষত সফরে যাত্রা বিরতির জন্য এমন জায়গা নির্ধারন করতেন।যার নাম আনন্দ বরকত বা সাফল্যের অর্থসূচক।অনুরূপভাবে, যে ব্যাক্তির নাম ঝগড়া, লড়াই বা ক্ষতির অর্থবোধক,তাকে কোন কাজ সোপর্দ করতেননা।যাদের নামের অর্থে আনন্দ বা সাফল্য ইত্যাদি আছে,তাদেরকেই কাজের দায়িত্ব অর্পণ করতেন।বহুনাম তিনি পাল্টে দিয়েছেন।
-বাহক জন্তুর মধ্যে ঘোড়াই বেশী প্রিয় ছিল।বলতেন, ঘোড়ার মধ্যে কেয়ামত পর্যন্ত কল্যান ও বরকত নিহিত রয়েছে।ঘোড়ার চোখ,মুখ ও নাকের বিশেষ যত্ন নিতেন এবং নিজে হাতে পরিষ্কার করতেন।
– হৈ চৈ ও হাঙ্গামা পছন্দ করতেননা।সব কাজে ধীরস্থির থাকা, নিয়ম শৃংখলা ও সময়ানুবর্তিতা ভালোবাসতেন।এমনকি নামাজ সম্বন্ধে ও বলেছেন যে, দৌড়াদৌড়ি করে এসনা।শান্তশিষ্ট ও ধীরস্থিরভাবে এস।আরাফার দিন অনেক হৈ-চৈ হলে তিনি নিজের ছড়ি উচিয়ে শান্ত থাকা ও শৃংখালা মেনে চলার নির্দেশ দেন এবং বলেন তাড়াহুড়োয় কোন পূণ্য নেই। [বুখারী ও মুসলিম]
স্বভাব চরিত্র
রসূল সা. এর আখলাক বা স্বভাব চরিত্র ও নৈতিকতার বিবরণ কোন উপশিরোনামে দেয়া সম্ভব নয়।কেননা তার গোটা জিবনইতো সৎ চরিত্রের নামান্তর।হযরত আয়েশা বলেছিলেনঃ ‘কোরআনই ছিল তার চরিত্র।হযরত আনাস ইবনে মালেক বলেনঃ ‘তিনি সবার চেয়ে ন্যায়পরায়ণ, দানশীল ও বীর ছিলেন।’
সবার চেয়ে ন্যায়পরায়ণ ছিলেন এভাবে যে,সারাজীবনে ও কাওকে কষ্ট দেননি, (আল্লাহর হুকুম অনুসারে যা দিয়েছেন, তা বাদে)এবং অন্যদের অত্যাচারের কোন প্রতিশোধ নেননি।সবাইকে ক্ষমা করেছেন, এমনকি মক্কা ও তায়েফের নজীরবিহীন অত্যাচারকারীদেরকেও এবং সকল মোনাফেক ও দুর্বৃত্তকেও।সবচেয়ে দানশীল ছিলেন এভাবে যে, হযরত জাবের রা. বলেন, রসূলুল্লাহর কাছে যে যা-ই চেয়েছে, তিনি তা দিতে অস্বীকার করেননি।হাতে থাকলে তৎক্ষণাত দিতেন, কখনো অন্যের কাছ থেকে ধার করে দিতেন, আর না থাকলে পরে আসতে বলতেন অথবা চুপ থাকতেন।সবার চেয়ে বীর ছিলেন, একথার প্রমাণ হিসেবে আপাতত এটুকু বলাই যথেষ্ট যে, সত্য আদর্শ নিয়ে একবোরেই একাকী মাঠে নেমেছিলেন এবং সমগ্রদেশ বাসীর বিরোধীতা ও অত্যাচারের মুখে ও অটল থেকেছিলেন।কখনো কোন কঠিনতম যুদ্ধের মুখে ও ভীতি বা দুর্বলতা প্রকাশ করেননি।সূর পর্বতের গুহায়ই হোক কিংবা ওহুদ ও হুনায়েনের রণাঙ্গনেই হোক, সবত্র অবিচল প্রত্যয় ও বিশ্বাসের পরিচয় দিয়েছেন।